এসএসসি(ভোকেশনাল) - ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবল কাল্টিভেশন-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

প্রাথমিক তথ্য হরমোন- ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন ও আধুনিক কলাকৌশলের মধ্যে হরমোনের ব্যবহার ও হাইব্রিড বীজ ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি। হরমোন এক প্রকার জৈব রাসায়নিক পদার্থ, যা উদ্ভিদে কিছু কিছু স্থানে অল্প পরিমাণে উৎপন্ন হয় এবং সমস্ত শরীরে প্রবাহিত হয়ে শরীরবৃত্তীয় অনেক প্রকারের কাজ করে থাকে। হরমোন উদ্ভিদের বর্ধনশীল অংশে অর্থাৎ কাণ্ডের শীর্ষে, মুলের অগ্রভাগে এবং যেখান হতে শাখা প্রশাখা উৎপত্তি হয় সে সমস্ত স্থানের কোষে একপ্রকার বৃদ্ধিকারী পদার্থ (হরমোন নিঃসৃত হয় ।

হরমোন কৃষি ক্ষেত্রে ফসলের বৃদ্ধি ও পুষ্টি ঘটায়। 

যেমন- ১. গাছের কলমে নতুন মূল গজাতে সাহায্য করে। 

২. ক্যামবিয়াম স্তরের সৃষ্টি করে ও শাখা প্রশাখা বিস্তারে সহায়তা করে। 

৩. গাছের ক্ষতস্থান পূরণে সাহায্য করে। 

৪. আগাছা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। 

৫. আলুর দ্রুত অঙ্কুরোদগম বিঘ্নিত করে। 

৬. দ্রুত পুষ্প ধারন ও ফলে পরিণত হতে সাহায্য করে। 

৭. গাছে শস্য ধারন ক্ষমতা বাড়ায়।

উদ্ভিদের বৃদ্ধি, প্রজনন, ফুল, ফল ধারণ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ হয় যে সমস্ত জৈব রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা তা হলো- (ক) অক্সিন (খ) জিবারেলিন গ) কাইনিন বা সাইটোকাইনিন, ঘ) ডরমিন ঙ) ইথিলিন ।

হাইব্রিড- বৈসাদৃশ্যমূলক গুণসম্পন্ন দুইটি একই জাতীয় ফসলের মধ্যে সংকরায়ন করে প্রথমে এমন এফ-১) উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যার গুণাবলি হবে উন্নত ধরনের। যেমন- সতেজ, পীড়ন সহিষ্ণুতা, ফলন ও

 দানার গুণ বেশি ইত্যাদি। যখন এফ-১ উন্নত ধরনের হয় তখন তাকে শংকর সাবল্য বলে। শংকর সাবল্য প্রকাশ করা হয়, সেই ফসলের ফলন, গাছের বৈশিষ্ট্য, ফলের সংখ্যা ও আকার ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

 ১। হরমোন ২। কাঁচি/চাকু ৩। বিভিন্ন ধরনের সবজির ক্ষেত ৪। স্প্রে মেশিন ৫। বালতি ৬। পানি ৭। হাইব্রিড বীজ কাজের ধাপ

হরমোন 

১. ফসলের ধরন (পাতাজাতীয়, ফলজাতীয়, কন্দজাতীয়) অনুসারে হরমোন নির্ধারণ করতে হবে। 

২. উদ্ভিদের শেকড় গজানোর কাজে, ফুল থেকে ফল ধারনের কাজে, আগাছা নিধনে অক্সিন হরমোন প্রয়োগ করতে হবে। 

৩. দ্রুতবর্ধনশীল কাণ্ডের অগ্রভাগ ভেংগে বা কেটে দিলে তার নিচের অংশে অক্সিন ক্রিয়াশীল হয়ে অনেক মুকুল ও শাখা গজায়ে দিবে। এ কাজটি লতানো সবজিতে, টমেটো, পেঁপে গাছের মাথা কেটে বা ভেঙ্গে দিয়ে প্ৰমাণ করা যাবে।

৪. গাছের বৃদ্ধি ধীর হলে হরমোন জিবারেলিন ব্যবহার করে গাছকে দীর্ঘ ও অনেক বড় আকার করা যাবে। বীজ অঙ্কুরোদগম ও গাছের সুপ্তাবস্থা দূর করতে এটি ব্যবহার করা যাবে। 

৫. উদ্ভিদের মূল উন্নত করতে বেশি পরিমাণ অক্সিন ও অল্প পরিমাণ কাইনিন ব্যবহার করতে হবে। 

৬. মুকুল ও বীজের সুপ্তাবস্থা দূর করে, স্বল্প দিবসীয় গাছের ফুল ফোটা ত্বরান্বিত করার জন্য ডরমিন হরমোন ব্যবহার করতে হবে। 

৭. ছায়াতে জন্মানো চারায় ইথিলিন চারাকে স্ফীত করে। ফুল ফোঁটাতে ও ফল পাকাতে ইথিলিন ব্যবহার করা যাবে।

হাইব্রিড বীজ 

১. হাইব্রিড বীজ বপন। রোপণের জন্য নির্দিষ্ট সময় জেনে নিতে হবে। কেননা বৃদ্ধি পর্যায়ে, ফুল ফেঁটা, ফল ধারন ইত্যাদি পর্যায়ে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা না থাকলে ফলনে ভীষণ প্রভাব পড়বে । 

২. হাইব্রিড বীজ ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়াতে হলে মাটি খুব উর্বর হতে হবে। 

৩. হাইব্রিড বীজ দ্বারা ফসল জন্মানোর পর সেই ফসল হতে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য বীজ হিসেবে রাখা যাবে না। 

৪. হাইব্রিড বীজ ব্যবহার করে ফসল ফলাতে হলে সকল ধরনের পরিচর্যা সঠিকভাবে সঠিক সময়ে করতে হবে, অন্যথা ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হবে। 

৫. সব কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে খাতায় লিখতে হবে।

Content added || updated By

আরও দেখুন...