এসএসসি(ভোকেশনাল) - আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগ - ক্যারিয়ার গাইডেন্স সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা | NCTB BOOK

আমরা প্রায়ই বিভিন্ন পেশা, বৃত্তি বা নির্দিষ্ট চাকরিতে প্রবেশের স্বপ্ন দেখি। এরূপ স্বপ্নের পেশা নির্ধারণে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ভালোভাবে জেনে নিই । এক্ষেত্রে আমার কোন কোন দক্ষতা কতটুকু আছে তা নির্ধারণপূর্বক নিম্নের ছকটি পূর্ণ করি ।

এবার চিহ্নিত যে যে বিষয়ে আমার আরও যোগ্যতা বা দক্ষতা অর্জন করতে হবে, সেগুলো কীভাবে করতে পারি তা নিয়ে চিন্তা করি ।

এক্ষেত্রে আরও কিছু বিষয় চিন্তা করে দেখি:

  • আমি কি সঠিক পথে এগোচ্ছি? আমার যে ধারায় পড়া শেখার কথা, যা যা এর মধ্যে শেখার কথা তা কি পড়তে শিখতে পারছি ?
  • পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কি?
  • কী ধরনের সহশিক্ষা ক্রমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারি যা আমাকে অতিরিক্ত যোগ্যতা অর্জনে সাহায্য করবে?
  • আমার পড়ার অভ্যাসে কি কোনো পরিবর্তন আনা প্রয়োজন? সেগুলো কী ধরনের পরিবর্তন?

যোগ্যতা ও দক্ষতা

এসো দেখি এমন কিছু যোগ্যতা ও দক্ষতা যা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য শর্ত হিসেবে দেখা যায় -

লেখার মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে যোগাযোগ স্থাপনতাড়না, প্রেরণা, সক্রিয়তা
মৌখিক যোগাযোগনমনীয়তা
দলে কাজের যোগ্যতাপেশাদারী মনোভাব
আত্মসচেতনতাব্যবসায়িক সচেতনতা
সংখ্যা জ্ঞান বা গাণিতিক দক্ষতাহিসাব-নিকাশ
সমস্যা সমাধান বা অনুসন্ধান বিশ্লেষণপরিকল্পনা ও সংগঠিত করা
নেতৃত্বসময়নিষ্ঠা

এসো দেখি এ যোগ্যতাগুলোর কতটুকু আমার আছে, কোথায় আমার ঘাটতি আছে, আমার সুযোগগুলো কী এবং কোন বিষয়টিতে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

SWOT (Strengths, Weakness, Opportunities, Threats) Analysis এর মাধ্যমে জানার চেষ্টা করি ।

আমার শক্তি

আমার দুর্বলতা

আমি দলের মধ্যে ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারিউপস্থাপনা আমাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়
আমি আমার লেখাপড়ায় অত্যন্ত মনোযোগীআমি খুব সূক্ষ্ম ব্যাপারে মনোযোগী নই
ভবিষ্যতে আমি যে চাকরি করতে চাই তার বাজার খুব ভালোআমার পছন্দের চাকরির বাজারে অনেক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে

উপরোক্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ পূর্বক তা সমাধানের উপায় নির্ধারণ করতে হবে ।

সমাধানের উপায় নির্ধারণ

আমাদের জীবনে সব সময়ই কোনো না কোনো সমস্যা সমাধান করতে হয়। যে যত পরিকল্পিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমস্যা সমাধানে সক্ষম সে তত সাফল্যের দেখা পায় ।

নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারলে সাফল্য নিশ্চিত ।

  • তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ 
  • অনুমান পরীক্ষা বা যাচাই করা 
  • সমস্যাকে চিহ্নিত এবং এর পেছনের কারণ খুঁজে বের করা 
  • সৃজনশীল, উদ্ভাবনী আর কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করা 
  • সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন পন্থা কাজে লাগানো 
  • বিকল্প পরিকল্পনা রাখা বিভিন্ন ধরনের বিকল্প পন্থা নির্ধারণ ও তার মূল্যায়ন 
  • বিভিন্ন গাণিতিক জ্ঞান ও দক্ষতা ব্যবহার করে সমস্যা সমাধান করা 
  • জটিল সমস্যা সমাধানে ভোক্তা বা সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর উৎকণ্ঠাকে নজর দেওয়া ।

সময় গতিশীল । সময়ের এই গতিময়তার সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় সমাজ, পরিবর্তিত হয় আমাদের চারপাশ, কাজের পরিবেশ ও প্রেক্ষাপট । আমাদের দেশের কর্মক্ষেত্রেও এসেছে অনেক পরিবর্তন । আজ থেকে চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর আগেও আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষের পেশা ছিল কৃষিকাজ কিংবা কৃষিভিত্তিক শিল্পে শ্রম দেওয়া। আজ বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে কর্মক্ষেত্রে এসেছে ব্যাপক বৈচিত্র্য । আজকের দিনে আমাদের দেশে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে কী কী ধরনের কাজের সুযোগ আছে, কোন কোন পেশা গ্রহণ করা সম্ভব তা এই পাঠ থেকে আমরা জেনে নেব । পাশাপাশি, আমাদের জন্য ভবিষ্যতে কী ধরনের কাজের সুযোগ তৈরি হতে পারে, সে বিষয়েও জানার চেষ্টা করব । কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে গভীরভাবে জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন । তবেই আমাদের স্বপ্ন ও আগ্রহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পেশা গ্রহণ করতে পারব ।

Content added By