এসএসসি(ভোকেশনাল) - আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগ - আত্মকর্মসংস্থান | NCTB BOOK

বাংলাদেশে আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বাংলাদেশ বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত ও বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য আত্মকর্মসংস্থানের গুরুত্ব অপরিসীম ।

উদ্যোগের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হলো:

১। বেকারত্ব দূরীকরণ: বর্তমানে বেকারত্ব বাংলাদেশের প্রধান সমস্যাগুলোর অন্যতম। এ দেশের জনসংখ্যা অনুপাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই বললেই চলে। সরকারের একার পক্ষে বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে আত্মকর্মসংস্থান ছাড়া ব্যাপক জনগোষ্ঠীর বেকারত্ব মোকাবিলার আর কোনো পথ নেই। মোট কথা, আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমেই বিপুল বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান করা সম্ভব । 

২। দারিদ্র্য দূরীকরণঃ আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মকাণ্ড বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে জনগণকে উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা সচল করে দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । 

৩। অর্থনৈতিক উন্নয়ন: আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নতুন নতুন ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও আত্মকর্মসংস্থান মূলক কার্যক্রম ব্যক্তি পর্যায়ে সঞ্চয় ও মূলধন গঠনে সহায়তা করে 

৪। জনশক্তির সদ্ব্যবহার: জনশক্তি একটি দেশের সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হয় তখনই, যখন তাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়। কিন্তু এ জনশক্তিকে কাজে লাগাতে না পারলে তা দেশ ও জাতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায় । যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ব্যাহত করে । উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনশক্তির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে আত্মকর্মসংস্থানের গুরুত্ব রয়েছে। 

৫। সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিঃ কর্মহীন বেকারদের কেউ পছন্দ করে না । আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে কর্ম কাজের সংস্থান হলে উদ্যোক্তার সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায় ।

৬। মানবসম্পদ উন্নয়ন: যুবসমাজকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করা যায় । এ জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে আত্মকর্মসংস্থানের গুরুত্ব অপরিসীম । 

৭। জাতীয় আয় বৃদ্ধি: আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে যার ফলে দেশের মোট জাতীয় আয় বৃদ্ধি পায় । 

৮। উদ্যোক্তা সৃষ্টি: আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবসায় নিয়োজিত হওয়ার মাধ্যমে মানুষ মুনাফা অর্জন করে । এতে করে দেশে নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হয়। উদ্যোক্তা সৃষ্টির সাথে সাথে সংস্থান বৃদ্ধি পায়। 

৯। সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা : আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে সমাজের ব্যাপক বেকার লোককে স্বকর্মে নিযুক্ত করার মাধ্যমে সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা যায় ।

পরিশেষে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে আত্মকর্মসংস্থানের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে এদেশে শুধু দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যা দূরীভূত হবে তা নয় বরং সামাজিক শৃঙ্খলা, অর্থনৈতকি নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে।

Content added By