SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - ডিজিটাল প্রযুক্তি - Digital Technology - NCTB BOOK

 

 

প্রতিদিন ছোট বড় যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বা যে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য তথ্যের প্রয়োজন হয়। তবে এই তথ্য নেওয়ার প্রক্রিয়ায় কখনো কখনো আমাদের কাছে ভুল তথ্য চলে আসে। যার ফলে অনেক সময়ই আমরা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। এখন আমরা সঠিক তথ্য যাচাই করে কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি তার প্রক্রিয়া জানব।

 

যে কোনো তথ্য বিশ্বাস করার আগে আমরা যাচাই করে নিব সেই সাথে আমাদের পরিবার বা আশেপাশের মানুষ যে সব তথ্যের যথার্থতা নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছেন তাদেরকেও সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করব। এটিই হবে আমাদের 'তথ্য যাচাই অভিযান'।

Content added || updated By

 

আমরা যেহেতু তথ্য যাচাই করে সঠিক তথ্য খুঁজে বের করব, তাই কী কী প্রক্রিয়ায় ভুল তথ্য আসতে পারে সেটি বুঝে নিব। ইতোপূর্বে আমরা কোনো তথ্য সঠিক কিনা তা যাচাই এর কিছু সাধারণ নিয়ম জেনে তথ্য যাচাই করেছিলাম। এখন আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্যের যথার্থতা যাচাই করব।

 

 

পরিস্থিতি ১

 

 

একটি সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনামে সংবাদ ছাপানো হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন 'ক' নামক একজন ব্যক্তি। সেই সংবাদের নিচে একজনের ছবি ছাপানো হয়েছে যেটি 'ক' নামক ব্যক্তির ছবি না। এটি একটি ভুল তথ্য কিন্তু সংবাদ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করে এই ভুলটি করেননি। এটিকে অনিচ্ছাকৃত ভুল তথ্য বা মিসইনফরমেশন বলা হয়।

 

 

 

 

 

 

 

পরিস্থিতি ২

 

 

একটি ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে একটি রেস্টুরেন্টে 'নিরাপদ খাদ্য অভিযান' পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিবেদন যিনি বর্ণনা করছেন তিনি বলছেন এই রেস্টুরেন্টের নাম 'গ', এখানে মেয়াদোত্তীর্ণ মসলা দিয়ে খাবার বানানো হয়। প্রকৃতপক্ষে যেই রেস্টুরেন্ট ভেজাল খাবার তৈরি করছে সেই রেস্টুরেন্ট এর নাম 'ঘ'। 'গ' রেস্টুরেন্ট এর ক্ষতি করার জন্য একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান 'ঘ' রেস্টুরেন্টের উপর তৈরি ওই ভিডিও প্রতিবেদনটি ডাউনলোড করে শব্দ (ভয়েস ওভার) পরিবর্তন করে 'গ' রেস্টুরেন্টের নাম ব্যবহার করে ইন্টরনেটে আপলোড দিয়েছে। এই ধরনের ইচ্ছাকৃত প্রচারিত ভুল সংবাদকে ভুল তথ্য বা ফেইক নিউজ বা ডিসইনফরমেশন বলা হয়।

 

 

 

 

 

 

 

পরিস্থিতি ৩

 

 

অনেক সময় কোনো সঠিক সংবাদও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করতে পারে। 'ক' নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চোয়ারম্যানকে তার ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করা হল। এই সময় 'পরিকল্পিত অপরাধের তদন্ত চলছে 'ক' প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে' শিরোনামে পূর্বের একটি খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করা শুরু করলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। সংবাদটি সঠিক কিন্তু ওই সময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন অন্য আরেকজন ব্যক্তি। কিন্তু অনেকে ভাবলেন এই পুরস্কার প্রাপ্ত চেয়ারম্যানই অপরাধ করেছেন। অর্থাৎ সঠিক সংবাদটি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াল। ব্যক্তি, দল, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে সঠিক সংবাদকে ভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করলে একে অপতথ্য বা ম্যালইনফরমেশান বলা হয়।

 

 

 

 

 

এখানে আমরা তিনটি ভিন্ন কাল্পনিক পরিস্থিতির উদাহরণ পড়লাম। কীভাবে আমরা বুঝতে পারব উপরের বিভিন্ন পরিস্থিতির তথ্যগুলো ভুল? নিচে আমাদের ধারণাগুলো লিখি।

পরিস্থিতি ১

 

একই সংবাদ অন্য একটি সংবাদ মাধ্যমে কীভাবে প্রচার হয়েছে তা যাচাই করার জন্য অন্য ২টি সংবাদ মাধ্যম যাচাই করতাম। তাহলে ছবিটি যে ভুল তা আমি বুঝতে পারতাম। সংবাদটির শিরোনাম বা শিরোনামের কী-ওয়ার্ড দিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দিলে আরও কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের একই খবর চলে আসবে।

 

পরিস্থিতি ২

 

আমি যেভাবে সঠিক তথ্য যাচাই করতে পারতাম (এই ঘরে আমার ধারণাগুলো লিখি)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পরিস্থিতি ৩

 

আমি যেভাবে সঠিক তথ্য যাচাই করতে পারতাম (এই ঘরে আমার ধারণাগুলো লিখি)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শিক্ষকের কাছ থেকে আমার উত্তর মিলিয়ে নিই।

 

যাচাই করার লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ:

 

কিছু তথ্য যাচাই করার মাধ্যমে তথ্য যাচাই এর প্রক্রিয়া জানব। কিন্তু তার জন্য আমাদের প্রথমে ঠিক করতে হবে আমরা কী তথ্য যাচাই করব। আমাদের পরিচিত জনের কাছ থেকে জানতে চাইব কোন কোন তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন। এর জন্য আমরা গুগল ফর্ম ব্যবহার করব।

গুগল ফর্ম তৈরির জন্য আমাদেরকে জিমেইল একাউন্ট লগইন করে গুগল ড্রাইভে যেতে হবে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে চলো আমরা কাজটি করি।

 

 

চিত্র ১.২ ও ১.৩: গুগল ড্রাইভে গিয়ে 'New' তে ক্লিক করলে গুগলের অনেকগুলো ফিচারের নাম আসবে। সেখান থেকে 'Google Form' সিলেক্ট করলে ডানপাশে আরও কিছু ফিচার আসবে। সেখান থেকে 'Blank Form' সিলেক্ট করব।

 

 

উপরে যে প্রশ্নগুলো দেওয়া আছে সেগুলো আমাদের কাজের সুবিধার্থে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রশ্নগুলো নিজেদের মতো করেও লিখতে পারি।

গুগল ফর্ম তৈরি হয়ে গেলে আমরা ফর্ম এর লিংকটি ফর্মের ডান কোণায় থাকা Send বাটনে ক্লিক করে আমাদের পরিচিত জনদের ই-মেইল ঠিকানায় পাঠাব এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপযুক্ত তথ্যসহ সাবমিট করতে বলব। এক্ষেত্রে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া যেতে পারে।

Content added || updated By

আমরা আমাদের তৈরি গুগল ফর্মটি নিশ্চয়ই পরিচিতজনদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। ফর্ম এর মাধ্যমে কিছু তথ্য আসবে যা আমরা তাদের যাচাই করে দিব। এর মধ্যে আমরা কিছু সময় পাবো যে সময়ের মধ্যে আমরা নিজেরা জেনে নিব কীভাবে যে কোনো তথ্যকে যাচাই করতে হয়।

অনেক সময় কোনো কনটেন্টের এর উদ্দেশ্য বুঝতে ভুল করলে কোনো তথ্য আমাদের কাছে ভিন্ন অর্থ তৈরি করতে পারে। তাই ভিন্ন ভিন্ন কনটেন্ট এর উদ্দেশ্য যে আলাদা হয় তা আমরা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করি –

 

 

 

তথ্য প্রচার: নিরপেক্ষ তথ্য প্রচারের জন্য যে ধরনের কনটেন্ট ব্যবহার হয় সেগুলো হলো, সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের প্রতিবেদন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, ব্রেকিং নিউজ, অনলাইন সংবাদ ইত্যাদি।

 

বিনোদন: কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যদলকে উদ্দেশ্য করে বিনোদনমূলক প্রচারণার উদাহরণ হতে পারে- নাটক, চলচ্চিত্র, ছবি, গান, খেলা ইত্যাদি।

 

সচেতনতা তৈরি: সচেতনতামূলক নাটক, গান, বক্তব্য, বিবৃতি, প্রজ্ঞাপন যা নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে সচেতন। করতে ব্যবহৃত হয়।

 

মতামত প্রদান: পত্রিকার পাঠকের চিঠি, সাধারণ মানুষের সাক্ষাৎকার, ব্লগ বা স্লগে নিজের মতামত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ব্যক্তিগত মতামত।

 

ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রচারণা: টেলিভিশন, পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, কোনো নির্দিষ্ট একটি পণ্য বা সেবার উপর তৈরি ইতিবাচক সংবাদ প্রতিবেদন, কোনো নির্দিষ্ট একটি পণ্য সম্পর্কে কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির ইতিবাচক বক্তব্য।

 

নিচের ছকে কিছু নির্দিষ্ট কনটেন্ট এবং এগুলোর উদ্দেশ্য দেওয়া আছে। ডানপাশের খালি ঘরে আমার দেখা এই ধরনের একটি কনটেন্ট এর নাম লিখব-

 

 

আমরা কোনো তথ্য নেওয়ার ক্ষেত্রে কনটেন্ট এর উদ্দেশ্য বুঝে সে অনুযায়ী তথ্য নিব। তা নাহলে আমাদের ভুল তথ্য নেওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। যেমন আমি যদি খুঁজতে চাই 'বাংলাদেশের বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কত?' আমরা নিশ্চয়ই বাংলাদেশ ব্যাংক এর ওয়েবসাইটে গিয়ে অনুসন্ধান করব বা বিশ্বাসযোগ্য কোনো সংবাদ মাধ্যমে খুঁজব। কোনো বিজ্ঞাপন, কৌতুক কিংবা এই বিষয়ে ধারণা নেই এমন কোনো ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের স্ট্যাটাস দেখব না।

 

 

 

এবার তাহলে আমরা তথ্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ভুল উৎস ও সঠিক উৎস কী তা নিজেরা আলোচনা করে বের করি। সবাই মিলে শিক্ষককে নিজেদের মতামত বলব। তোমাদের মধ্যে একজন এই পয়েন্টগুলো বোর্ডে লেখার দায়িত্ব নিতে পার। বোর্ডে লেখা পয়েন্টগুলো বইতে নিচের ছকে লিখে নিতে পার।

 

 

আমাদের সঠিক তথ্য অনুসন্ধান করতে পারা এখন অনেকটা সহজ হয়ে যাচ্ছে। ভুল তথ্য দিয়ে যেন আমরা প্রভাবিত না হয়ে যাই সে ব্যাপারেও সচেতন হয়ে যাচ্ছি।

আগামী দিনের প্রস্তুতি: আমরা বাড়িতে গিয়ে দুটি নাটক দেখবো এবং দুটি সংবাদ প্রতিবেদন দেখব/পড়ব।

 

- আমাদের যাদের রোল নং অথবা আইডি জোড় সংখ্যা দিয়ে তারা 'ভুল তথ্যের ক্ষতিকর প্রভাব' বিষয়ে একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখব।

- শ্রেণিকক্ষের আমাদের যাদের রোল নং অথবা আইডি বিজোড় সংখ্যা দিয়ে তারা 'ভুল তথ্যের ক্ষতিকর প্রভাব' বিষয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন লিখব।

Content added || updated By

সোহা একদিন বিকেলে তার চাচাত বোন পুষ্পর সাথে খেলছিল। হঠাৎ সেখানে তাদের এক চাচা এসে বলল, 'জানিস শামপুর এলাকায় নদীর মাঝ থেকে একটি বাড়ি উঠে এসেছে।' সোহা আর পুষ্প এমন অদ্ভুত কথা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারল না। কিন্তু চাচা বড় মানুষ, তিনি নিশ্চয়ই ভুল কথা বলবেন না। তারপরও তারা চাচাকে জিজ্ঞেস করল, 'আপনি কার কাছ থেকে শুনেছেন এই ঘটনা?'। চাচা বললেন, 'আমি নিজের চোখে দেখেছি, মানে আমার মোবাইল ফোনে ভিডিও নিজের চোখে দেখেছি' এই বলে তিনি সোহা ও পুষ্পকে মোবাইল ফোনে একটি ভিডিও দেখালেন। তারা খুব অবাক হয়ে দেখল নদীর পানি থেকে সত্যিই একটি ঘর উঠে এসেছে। তারা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। পুষ্প বলল 'এটি কোনভাবেই সম্ভব না, চল আমরা আরেকটু মন দিয়ে ভিডিওটি দেখে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করি'। চাচা বললেন, যত ইচ্ছা দেখ 'নিজের চোখে দেখছি, এটি ভুল হয় কীভাবে? আর নিচে তো ক্যাপশানে লিখাই আছে শামপুরে ঘটেছে এই ঘটনা' এই বলে তিনিও সোহা আর পুষ্পর সাথে ভিডিওটি মন দিয়ে দেখতে লাগলেন। তারা ভিডিওটিতে কয়েকটি অসঙ্গতি দেখতে পেলেন-

১। বাড়িটি নদী থেকে উঠে এসেছে বলা হলেও বাড়িটি শুকনো। সত্যিই যদি নদী থেকে বাড়িটি উঠে আসত তাহলে এটি ভেজা দেখাত।

 

 

২। ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে আশেপাশের অনেক মানুষ বাড়িটি উঠে আসার আগে চিৎকার করছে। কিন্তু বাড়িটি নদী থেকে উঠে আসার আগে মানুষের জানার কথা না, এখানে একটি বাড়ি উঠে আসবে। তাই সেখানে আগে থেকে মানুষের ভিড় থাকা এবং চিৎকার করা স্বাভাবিক না।

৩। দেখা যাচ্ছে নদীর পাড় থেকে কিছু মাটিও উঠে আসছে।

ভিডিওটিতে এতগুলো অসঙ্গতি খুঁজে পেয়ে সোহা ও পুষ্পর নিজেদের বেশ গোয়েন্দা মনে হলো। চাচার সাথে তারা দুজন আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছালো যে 'এটি একটি নদী ভাঙনের দৃশ্য, একটি বাড়ি ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে আর কোনো একজন অসৎ ব্যক্তি ভিডিওটিকে শেষ থেকে শুরু করে বা রিভার্স করে দিয়ে ইন্টারনেটে আপলোড করেছে। এতে করে শেষের দৃশ্য আগে এবং শুরুর দৃশ্য পরে মনে হচ্ছে। তাই বাড়ি নদীতে তলিয়ে যাওয়াটাকে মনে হচ্ছে নদী থেকে বাড়ি উঠে আসা।

আমরাও সোহা ও পুষ্পর মত মাঝে মাঝেই এরকম ভুল তথ্য, ছবি, ভিডিও দেখতে পাই। কিন্তু সব সময় সোহা ও পুষ্পর মত যাচাই করে সঠিক তথ্য খুঁজে পাওয়া বা তথ্যটি যে ভুল তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয় না। তাই আমরা আজকে প্রযুক্তি দিয়ে কীভাবে সঠিক তথ্য যাচাই করা সম্ভব তার কয়েকটি পদ্ধটি অনুশীলন করব।

১। ছবির সত্যতা যাচাই: ইতোপূর্বে আমরা শিখেছি গুগল, বিং (Bing) বা এই ধরনের সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে কী-ওয়ার্ড দিয়ে কীভাবে সার্চ দিতে হয়। এই সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে ছবি দিয়েও সার্চ দেওয়া যায়। কোনো ছবি ভুল কিনা তা সন্দেহ হলে আমরা ছবিটির মাধ্যমে সার্চ দিয়ে ছবিটি প্রথম কবে ইন্টারনেটে আপলোড হয়েছিল এবং সত্যিকারের (অরিজিনাল) ছবি কি ছিল তা অনুসন্ধান করতে পারব।

একটি ছবি কী কী ভাবে ভুল ছবিতে রুপান্তর করা যায়?

 

 

ক। ছবির ক্যাপশান বা শিরোনাম পরিবর্তন করে দিয়ে। 

খ। ছবির তারিখ পরিবর্তন করে দিয়ে। 

গ। ছবির ভেতরের কোনো লিখা, সাইনবোর্ড, ঠিকানা এগুলো ছবি সম্পাদনার কোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পরিবর্তন করে অন্য কিছু লিখে দিয়ে। ঘ। ছবির ভেতরের কোনো ব্যক্তির ছবির মুখের জায়গায় অন্য একজনের মুখ বসিয়ে দিয়ে।

 

 

এসব ক্ষেত্রে সত্যিকারের ছবিটি যদি পূর্বে কখনো ইন্টারনেটে আপলোড হয়ে থাকে তাহলে আমরা ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে আসল ছবিটি খুঁজে বের করতে পারব। এখন আমরা গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষেই ইমেজ দিয়ে সার্চ দেওয়ার প্রক্রিয়াটি অনুশীলন করব-

 

১। যে ছবিটি নিয়ে আমরা সন্দিহান সে ছবিটি প্রথমে কম্পিউটারে সংরক্ষণ (সেইভ) করে রাখব। 

২। প্রথমে গুগলের হোম পেজে যাব। 

৩। হোমপেজ থেকে 'ইমেজ' অপশন সিলেক্ট করব। (চিত্র-১.১১) 

৪। এবার সার্চ বার থেকে থেকে ইমেজ এ ক্লিক করব। ক্লিক করলে কম্পিউটারের কোন জায়গায় আমরা ছবিটি রেখেছে সেখান থেকে ছবিটি সিলেক্ট করব। এছাড়া ছবিটির যদি কোনো লিংক থাকে সেটিও এখানে 'Paste' করতে পারি। (চিত্র-১.১২) 

৫। 'Enter' ক্লিক করলে ঐ ছবিটির সাথে সম্পর্কিত যত ছবি, ওয়েবসাইট, লিংক বা তথ্য আছে সব সাজেশান চলে আসবে। (চিত্র-১.১৩) 

৬। এবার আমরা এগুলো চেক করলে সর্বপ্রথম ছবিটি পেয়ে যাব অথবা সম্পর্কিত সব ছবি পেয়ে যাব। যার তারিখ দেখে আমরা বুঝতে পারব এই ছবিটি আসলে কবে, কীভাবে সর্বপ্রথম ইন্টারনেটে আপলোড হয়েছিল।

 

আমরা যে ছবিটির সত্যতা যাচাই করতে চাচ্ছি, সেটি ইন্টারনেটে আপলোড হলে তবেই আমরা এটির মূল সোর্স বা উৎস খুঁজে পাব। আমার ক্যামেরা থেকে ছবি তুলে সেটি অনুসন্ধান করলে কিন্তু কোন তথ্য পাব না। কারন তখন আমার ক্যামেরা বা আমিই হলাম এটির মূল উৎস।

২। ভিডিও সত্যতা যাচাই: প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিওর সত্যতা যাচাই এর জন্য কিছু প্রোগ্রাম আছে। বহুল পরিচিত একটি ফ্রি প্রোগ্রাম হচ্ছে InVID। এটি মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটারে ইন্সটল করে ব্যবহার করা যায়। ইন্সটল করার পর কম্পিউটার/ মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখা ভিডিও কিংবা ইন্টারনেটে থাকা ভিডিওর লিংক দিলে ডিভিওর মূল অংশের কিছু ছবি/ইমেজ বের করে দিবে সেই ছবিগুলো উপর রাইট ক্লিক করলে 'fake news debunker by InVID' অপশন আসবে (নিচের সর্বশেষ ছবি), এর উপর ক্লিক করলে ‘Image reverse search Google' ক্লিক করলে ভিডিওর মূল উৎস বের হয়ে আসবে বা মূল ভিডিও পাওয়া যাবে।

 

 

 

 

আমরা ইন্টারনেটে রয়েছে এমন ভুল ভিডিও খুঁজে সেটির মাধ্যমে এই প্রোগ্রাম ব্যবহার করে ভিডিও বিশ্লেষণ এর অনুশীলন করব। এই প্রোগ্রামটিতে আরও কিছু ফিচার আছে যেগুলো আমরা নিজে নিজে মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে বাড়িতে বা বিদ্যালয়ে অনুশীলন করতে পারি।

আমরা যাদের কাছে তথ্য যাচাইয়ের জন্য গুগল ফর্ম পাঠিয়েছিলাম সেগুলো খুব শিগগির আমরা পেয়ে যাব, তাদের সমাধান দেওয়ার আগে নিজেদের সকল প্রস্তুতি আমরা নিয়ে নিচ্ছি। আজকের অনুশীলন কেমন লাগলো তা আমরা বাড়িতে গিয়ে নিচের ঘরে লিখব-

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added || updated By

স্প্রেডশিট ব্যবহার করে তথ্যের সমন্বয় করা যায়, এটি আমরা আগেও জেনেছি। আজকে সরাসরি স্প্রেডশিট ব্যবহার করে উপাত্ত বা ডেটাকে সমন্বয় করার কিছু সহজ নিয়ম অনুশীলন করব। নতুন কিছু ফিচার সম্পর্কে ধারণা নিব। আমরা কঠিন কঠিন গাণিতিক সমাধানে পরবর্তীকালে ব্যবহার করতে পারব।

ইতোপূর্বে আমরা 'কলাম (Column)', 'রো (Row)', 'সেল (Cell)' কী তা জেনেছি।

নিচের চিত্র থেকে আমরা কলাম, রো ও সেল চিহ্নিত করি-

 

স্প্রেডশিট শেখার জন্য আমরা বহুল ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশন 'এক্সেল (Excel)' এর মাধ্যমে অনুশীলন করব। এখানে A,B,C,D,E,F, ঘরগুলো হচ্ছে 'কলাম' এবং 1,2,3,4,5... হচ্ছে 'রো'। এই ঘরগুলোকে 'সেল' বলা হয়। যেমন এই সেলগুলোর নাম হচ্ছে 'A6' 'B6'....... স্প্রেডশিটে এরকম সবগুলো সেলেরই একটি পরিচয় থাকে, যেটি রো ও কলামের সমন্বয়ে তৈরি একটি পরিচয়।

আমরা এক্সেল ব্যবহার করে যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগ অনুশীলন করব। এই কাজটি আমরা ক্যালকুলেটর ব্যবহার করেও করতে পারি, তাই না? তাহলে কেন এক্সেল ব্যবহার করা শিখছি? কারণ এক্সেলে একবার আমরা কোনো উপাত্ত বসিয়ে নিলে একবার ফর্মুলা ব্যবহার করলে একটি ফর্মুলা দিয়ে কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যে হাজার হাজার উপাত্তের গণনা করে ফেলতে পারব। ফর্মুলা কী তা একটু পরে জানা যাবে। প্রথমে আমরা এক্সেল এ যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগ কী চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয় তা দেখি-

যোগ, এটি আমাদের কী-বোর্ড এর সাধারণ'+' চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। 

বিয়োগ, এটি আমাদের কী-বোর্ড এর সাধারণ'-' চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। 

গুণ, এটি আমাদের কী-বোর্ডের এর '*' চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। 

ভাগ, এটি আমাদের কি-বোর্ড এর '/' চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়

 

 

আমরা এখানে একটি কাল্পনিক স্প্রেডশিট নিয়েছি। যেখানে A কলামে আছে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নাম, B তে তাদের উপস্থিতির সংখ্যা, C তে একই শিক্ষার্থীর সপ্তম শ্রেণিতে নাম, এবং D তে সপ্তম শ্রেণিতে তাদের উপস্থিতির সংখ্যা। আমরাও এরকম একটি শিট বানিয়ে নিতে পারি, এই শিটের উপরই আমরা অনুশীলন করব।

 

যোগ

ধরি আমরা 'B' কলামের সবগুলো সংখ্যা যোগ করতে চাই। এতে করে ১০ জন শিক্ষার্থী মিলে মোট উপস্থিত দিনের সংখ্যা বের হবে। এটি আমরা দুভাবে করতে পারি।

 

১। আমাদের মাউসের কার্সর ধরে 'B' কলামের একেবারে প্রথম সংখ্যা থেকে শুরু করে শেষ সংখ্যা পর্যন্ত সিলেক্ট করব। তারপর মেন্যুবারের ডানে পাশে ∑ চিহ্নটির পাশে খুব ছোট একটি চিহ্ন আছে, এটিতে ক্লিক করলে নতুন কিছু ফিচার দেখা যাবে, সেখান থেকে 'SUM' এ ক্লিক করলে সব সংখ্যা যোগ হয়ে B কলামের একেবারে নিচে চলে আসবে। ∑ চিহ্নটিতে 'SUM' ছাড়াও আরও কিছু ফিচার আছে, আমরা একটি একটি ফিচার ক্লিক করে দেখতে পারি কোন ফিচার ক্লিক করলে কী ঘটে।

 

 

 

২। এবার আমরা ফর্মুলা দিয়ে যোগ করব। ধরি, আমরা Student 4 এর ষষ্ঠ শ্রেণি ও সপ্তম শ্রেণির উপস্থিতি যোগ করব। যোগফল আমরা যে সেল এ দেখতে চাই, সেখানে- 

ক. প্রথমে কার্সর রাখব, তারপর আমার কী-বোর্ডে '=' চিহ্ন চাপব, 

খ. ষষ্ঠ শ্রেণিতে ঐ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি যে সেলে আছে সেখানে কার্সর রেখে ক্লিক করব 

গ. ক্লিক করলে ঐ সেলের নামটি '=' চিহ্নের পাশে চলে আসবে, 

ঘ. এবার আমরা কী-বোর্ডে '+' চিহ্ন চাপব 

ঙ. তারপর আমরা ওই শিক্ষার্থীর সপ্তম শ্রেণির উপস্থিতি যে সেলে আছে সেটিতে ক্লিক করব। এতে করে এই সেলের নামটি '+' চিহ্নের পাশে চলে আসবে।

চ. কী-বোর্ডে Enter চাপব।

 

আমরা যোগফল পেয়ে গেছি! এবার আমরা Student-4 এর উপস্থিতির সংখ্যাগুলো বাড়িয়ে কমিয়ে দেখি। দেখতে পাচ্ছি, যোগফলও নিজে নিজে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।

 

 

বিয়োগ, গুণ, ভাগ: 

একইভাবে আমরা ফর্মুলা ব্যবহার করে বিয়োগ, গুণ ও ভাগও করতে পারব। শুধুমাত্র '+' চিহ্নের জায়গায় '-' '*' ও '/' চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে।

নিচের কাজগুলো কম্পিউটারে করি, যা করলাম তা নিচে লিখি-

১। Student 1 এর ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণির উপস্থিতির পার্থক্য কত?

ফর্মুলাটি হবে এরকম, = B2 - D2, (Enter) ফলাফল = ২

২। ষষ্ঠ শ্রেণির Student 1 এর উপস্থিতির সাথে সপ্তম শ্রেণির Student 10 এর উপস্থিতির গুণ।

কম্পিউটারে যে ফর্মুলা ব্যবহার করেছি,  . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . 

৩। ষষ্ঠ শ্রেণির Student 9 এর উপস্থিতিকে ১০ দিয়ে ভাগ করলে ফলাফল হবে ১০।

কম্পিউটারে যে ফর্মুলা ব্যবহার করেছি,  . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . 

আমরা নিজেরা ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা বসিয়ে দেখতে পারি, কম্পিউটার কোনো ভুল করে কি না। আগামী সেশনে আমরা আরও কিছু স্প্রেডশিটের কাজ অনুশীলন করব।

আজকে আমরা যাদের কাছে তথ্য চেয়ে গুগল ফর্ম পাঠিয়েছি তাদের ফোন, ই-মেইল পাঠিয়ে বা সরাসরি দেখা করে বলব, তারা যে তথ্যগুলো যাচাই করতে চায় সেগুলো যেন পরবর্তী সেশনের পূর্বেই পাঠায়।

Content added || updated By

আমরা গত সেশনে আলোচনা করেছিলাম, কীভাবে একটি ফর্মুলা বসিয়ে শতহাজার গণনা এক মুহূর্তে করা যায়। কিন্তু আমরা যে অনুশীলন করেছি সেগুলোতে প্রতিটি হিসাবের জন্য আমার আলাদা ফর্মুলা বসিয়েছি। আজকে আমরা একটি মজার টুল এর ব্যবহার শিখব, যেটি ব্যবহার করে এই মুহূর্তে গাণিতিক সমাধান করার কাজগুলো করে ফেলা যায়। এই টুলটির নাম Fill Handle!

 

একটি সেলের নিচের ডান কোনায় মাউসটি নিয়ে গেলে কোনায় একটি যোগ চিহ্নের মত দেখা যায় এটির নামই ফিল হ্যান্ডেল। একটি সেল এ একটি ফর্মুলা দিলে, সেই ফর্মুলাটি যদি নিচের সেলগুলোর জন্যও প্রযোজ্য হয় তাহলে ফর্মুলা যে সেল এ দেওয়া আছে ঐ সেলটির কোনায় কার্সর রেখে ক্লিক করে নিচের দিকে যতদূর নামতে থাকব ততদূর এই ফর্মুলাটি সমাধান করে দিবে।

ধরি, আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির উপস্থিতিকে গুণ করব। আমরা যে রোতে Student 1 আছে, এর সর্ব ডানের কলামে ফর্মুলা বসাব এবং Enter চাপব।

 

Enter চাপার পর, Student 1 এর জন্য ফলাফল পেয়ে গেছি। এবার ফিল হ্যান্ডেলটি ব্যবহার করে Student 10 পর্যন্ত নিচে নামতে থাকব। দেখব যতই কার্সরটি নিচে নামাচ্ছি সবগুলো সমাধান হয়ে যাচ্ছে।

 

 

 

এবার আমরা বুঝতে পারলাম, হাজার হাজার সংখ্যার গণনা মুহূর্তে কীভাবে করে ফেলতে পারে, তাই না? আমরা নিজেরা আরও অন্যান্য ফর্মুলা বসিয়ে ফিল হ্যান্ডেলের কাজটি আরও কয়েকবার করব। শ্রেণিকক্ষের সবাই একবার করে চেষ্টা করব।

স্প্রেডশিটে অনেক ফিচার আছে, যেগুলো আমাদের পড়াশোনা এবং পেশাজীবনে অনেক কাজে লাগবে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রোগ্রাম তৈরি হচ্ছে, তাই আজকে আমরা যে অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে শিখছি, কিছু বছর পর হয়ত সেই অ্যাপ্লিকেশনগুলো নাও থাকতে পারে। তারজন্য আমরা খুবই প্রয়োজনীয় ফিচারগুলো জেনে নিচ্ছি যাতে যে নতুন অ্যাপ্লিকেশনই আসুক না কেন আমরা খুব দ্রুত আয়ত্ত করে নিতে পারি।

এখন আরেকটি টুল অনুশীলন করব, এটিকে বলে 'Sort & Filter' বাংলা করলে দাঁড়াবে বাছাই করা এবং ছেঁকে ফেলা। মনে করি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, 'ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল কার?'

১। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর উপস্থিতি যে কলামে আছে (B) সে কলামটি সিলেক্ট করব। 

২। মেন্যুবারের ডান কোনায় 'Sort & Filter' এ ক্লিক করব। 

৩। এখানে কিছু অপশন আসবে তার থেকে 'Sort largest to smallest' এ ক্লিক করব। 

৪। একটি উইন্ডো আসবে, যেখানে দুটি অপশন আসবে' * Expand the selection, *Continue with the current selection' আমরা প্রথম অপশনটিতে ক্লিক করব। দ্বিতীয়টি সিলেক্ট করলে শুধুমাত্র ওই কলামটিতে পরিবর্তন আসবে, অন্য কলাম অপরিবর্তিত থাকবে। অন্য কলাম অপরিবর্তিত থাকলে শিক্ষার্থীর নামের সাথে তার উপস্থিতির সামঞ্জস্যতা থাকবে না, এলোমেলো হয়ে যাবে। 

৫। ওই উইন্ডোতে ছোট করে 'Sort' লিখা থাকবে। Sort এ ক্লিক করলেই সবচেয়ে বেশি উপস্থিতির শিক্ষার্থীর ক্রম সবার উপরে চলে আসবে, আর কম উপস্থিতিরর ক্রম শিক্ষার্থী নিচে চলে যাবে।

 

Content added || updated By

আমরা যে গুগল ফর্মটি সবার কাছে পাঠিয়েছি, আজকে সে ফর্মটি খুলে দেখব কী কী তথ্য আমাদের পরিচিতরা পাঠিয়েছেন। শ্রেণিকক্ষের সবাই মিলে ৫/৬ টি দলে ভাগ হবো, একেকটি দল কয়েকটি তথ্য নিয়ে সেগুলো যাচাই করব।

প্রথমে গুগল ফর্মটি দেখা যাক। নিচে একটি ব্যবহৃত গুগল ফর্ম এর ছবি দেওয়া হলো আমাদের বোঝার সুবিধার্থে।

 

 

ফর্মটি দেখতে অনেকটা এরকম। ফর্মে 'Response' এ ক্লিক করলে, আমাদের কাছে কে কী প্রশ্ন পাঠিয়েছে সেগুলো আমরা দেখতে পাব। আমরা গুগল ফর্মেই একটি একটি করে দেখতে পারতাম কিন্তু কাজের সুবিধার্থে আমরা অন্যদের কাছ থেকে আসা তথ্যগুলোকে একটি স্প্রেডশিটে ওপেন করব। তাই 'View in sheet' এ ক্লিক করব। ক্লিক করলেই পাশের উইন্ডোতে নতুন একটি গুগল স্প্রেডশিট আসবে, শিটটি দেখতে অনেকটা এরকম হবে -

 

গুগল স্প্রেডশিটটি দেখেই আমরা বুঝতে পারছি, এটি এক্সেল (Excel) শিটের মতই যেটিতে আমরা গত দুই দিন স্প্রেডশিটের বিভিন্ন টুলস এর ব্যবহার অনুশীলন করেছি। এই শিটে সর্বডানে আমরা আরেকটি কলামে প্রাপ্ত তথ্যটি কি 'সঠিক তথ্য', অনিচ্ছাকৃত ভুল তথ্য (মিসইনফরমেশন), ভুল তথ্য (ডিসইনফরমেশন) নাকি অপতথ্য (ম্যালইনফরমেশন) তা উল্লেখ করব। মনে আছে আমরা প্রথম সেশনে এগুলো জেনেছিলাম? আমরা আরেকবার প্রথম সেশনের অংশটুকু পড়ে আসতে পারি।

ডান পাশের অন্য আরেকটি কলামে আমরা কেন এটিকে 'মিসইনফরমেশান' নাকি 'ডিসইনফরমেশান' বা 'ম্যালইনফরমেশান' মনে করছি তার ব্যাখ্যা লিখব-

 

আমাদের পাওয়া গুগল শিটের পাশে আরও দুটি কলামে আমরা উপরের ছবির মতো একটি একটি তথ্য যাচাই করে আমাদের সিদ্ধান্ত এবং ব্যাখ্যা লিখব। ব্যাখ্যা ঘরে আমরা বর্ণনা করব কীভাবে আমরা বুঝতে পারলাম যে ওই তথ্যটি ভুল বা সঠিক।

আজ এবং আগামী সেশন আমরা তথ্য যাচাই এর কাজ করব। কাজ শেষ হলে শেয়ার বাটনে ক্লিক করে যারা আমাদের কাছে তথ্যের যথার্থতা জানতে চেয়েছে তাদের কাছে এই গুগল শিটটির লিংক পাঠিয়ে দিব।

Content added || updated By
চিত্র ১.৩১: অভিযান শেষে যারা সঠিক তথ্য জানতে চেয়েছিলেন, তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা তথ্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে

 

আমাদের তথ্য যাচাই অভিযান শেষ হয়েছে, ইতোমধ্যে যারা আমাদের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছে তাদের কাছে নিশ্চয়ই যাচাইকৃত সিদ্ধান্ত পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু এখানেই আমাদের কাজ শেষ নয়। কারণ তথ্য যাচাই এর প্রয়োজনীয়তা আমাদের সব সময় থাকে। শুধুমাত্র ডিজিটাল প্রযুক্তি নয়, অন্যান্য বিষয়ের কাজ করতে গেলেও আমাদের তথ্য অনুসন্ধান ও যাচাই এর প্রয়োজন হবে। এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে কীভাবে তথ্য ভুলভাবে প্রচার হওয়ার আশংকা থাকে তা আমরা অনুসন্ধান করতে পেরেছি। পরবর্তী পৃষ্ঠার ঘরে আমরা কীভাবে তথ্য ভুলভাবে প্রচার হয় তার ১০ টি প্রক্রিয়া লিখব। এটি আমার নিজের ভাবনা এবং অভিজ্ঞতা থেকে লিখব পাশের বন্ধুর সাথে আলোচনা করে নেই। নিচে একটি উদাহরণ দেওয়া হলো:

 

ভুল তথ্য দিয়ে কোনো টেলিভিশনের লোগো যোগ করে একটি ভিডিও তৈরি করে এই ভিডিওটি একটি স্বনামধন্য টেলিভিশনের প্রতিবেদন দাবি করতে পারে।

 

১।

 

২।

 

৩।

 

৪।

 

৫।

 

৬।

 

৭।

 

৮।

 

৯।

 

১০। 

 

 

 

১০টি উপায় লেখা হয়ে গেলে আমার পাশের বন্ধুকে আমার বইটি পড়তে দিব এবং তার বইটি আমি নিয়ে সে কি লিখেছে পড়ব।

এই পুরো অভিজ্ঞতায় আমি কি নতুন জেনেছি যা আমার ভালো লেগেছে তা জানিয়ে আমার অভিভাবক বরাবর একটি চিঠি লিখব। চিঠিটি বাড়িতে গিয়েই লিখব। লিখা শেষ হলে আমার অভিভাবককে পড়ে শোনাবো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added || updated By