SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - খ্রিষ্টধর্ম শিক্ষা - NCTB BOOK

 

 

 

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী,

 

এই 'অঞ্জলি' চলাকালীন শিক্ষক তোমাকে ফিল্ড ট্রিপে নিয়ে যাবেন; ফিল্ড ট্রিপের অভিজ্ঞতার আলোকে পারস্পরিক ও দলগতভাবে আলোচনার সুযোগ পাবে; ফিল্ড ট্রিপে গিয়ে তোমরা নতুন কাজ ও বিষয়বস্তু জানারও সুযোগ পাবে। তুমি যীশুর যাতনাভোগ, ক্রুশীয় মৃত্যু, পুনরুত্থান, স্বর্গারোহণ ও পুনরাগমন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করবে। তুমি এই ঘটনাগুলোর চলচ্চিত্র/ভিডিও অথবা স্থিরচিত্র দেখবে। এছাড়াও অভিনয় করে, ছবি এঁকে এবং তথ্য সংগ্রহ করে বাইবেলের ঘটনা থেকে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি ও বিশ্বাস স্থাপন করতে পারবে। আর এভাবে তোমরা খ্রীষ্টধর্মের মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানবে। এ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তোমরা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও বিভ্রান্তি দূর করে নৈতিকভাবে দৃঢ় থাকতে পারবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added || updated By

উপহার ১

ফিল্ড ট্রিপ

 

এই 'অঞ্জলি'র অংশ হিসেবে শিক্ষক তোমার সহপাঠীদের সাথে তোমাকে নিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে কোথাও ফিল্ড ট্রিপে যেতে পারেন। ফিল্ড ট্রিপের স্থান, সময়, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিষয়ে শিক্ষকের কাছ থেকে আগেই ভালোভাবে বুঝে নিবে। শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফিল্ড ট্রিপে যেতে তোমার মা-বাবা/ অভিভাবকের অনুমতি নিতে কিন্তু ভুলবে না।

ফিল্ড ট্রিপে গিয়ে তোমার বন্ধুদের সাথে ঘুরে ঘুরে চারপাশ এবং সব মানুষকে দেখবে। শিক্ষক যা নির্দেশনা দেন তা মনোযোগ দিয়ে শুনবে। শিক্ষক কোনো প্রশ্ন করলে তোমার উত্তর জানা থাকলে উত্তর দিতে পারো। আর তোমার মনে কোনো প্রশ্ন আসলে তুমি তা শিক্ষককে জিজ্ঞেস করতে পারো। পূর্বের শ্রেণিগুলোতেও তোমাদের এভাবে প্রশ্ন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তোমার মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে তুমি শিক্ষককে নিঃসংকোচে তা জিজ্ঞেস করতে পারো।

শিক্ষক যদি তোমাদের শ্রেণিকক্ষের বাইরে নিয়ে যান তবে নিজের এবং পাশের বন্ধুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করো ও যত্ন নাও। তোমার উপর তোমার শিক্ষক, তোমার মা-বাবা/অভিভাবক এবং প্রিয় সকল মানুষের আস্থা আছে। যে কাজ তুমি জানো যে ভুল, তা করতে যেয়ো না। ফিল্ড ট্রিপ শেষে সরাসরি ঘরে ফিরে গিয়ে মা-বাবা/অভিভাবকের সাথে দেখা করবে যেন তারা দুশ্চিন্তামুক্ত হন।

ফিল্ড ট্রিপে তোমার প্রধান কাজ হলো চারপাশের সবাইকে মনোযোগ দিয়ে দেখার চেষ্টা করা, সেখানকার পরিবেশ, মানুষ, কর্তৃপক্ষ সকল কিছু ভালোমতো বোঝার চেষ্টা করা। মানুষের পরস্পর কথোপকথন তুমি মনোযোগসহকারে শুনতে চেষ্টা করো। স্থানীয়দের প্রশ্ন করে আরও বেশি কিছু জানার চেষ্টা করো। মনে রেখো, তোমার অনুভূতি, আচরণ ও অংশগ্রহণের উপর তোমার মূল্যায়ন হবে। পরিদর্শনকৃত প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক ও সহপাঠীদের প্রতি কৃতজ্ঞ হও।

Content added || updated By

উপহার ২

পোস্টার উপস্থাপন

 

অঞ্জলির এই অংশে ফিল্ড ট্রিপের অভিজ্ঞতার উপর তোমাদের দলগতভাবে আলোচনা করতে হবে। তোমাদের দল থেকে একজন প্রতিনিধি মনোনীত করবে। সে তোমাদের দলের আলোচনা সবার সামনে উপস্থাপন করবে। চেষ্টা করবে তুমি যেন সেই প্রতিনিধি হতে পারো। ভালো কাজের ফল বা পুরস্কারও কিন্তু তোমরা পেতে পারো।

দলগত কাজের নির্দেশনা শিক্ষকের কাছ থেকে মনোযোগসহকারে শুনবে। তিনি দলগতভাবে আলোচনা করে একটি তালিকা প্রস্তুত করতে বলবেন। সেই তালিকায় কী কী বিষয় থাকবে প্রশ্ন করে শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নেবে। তালিকাটি দলের সকলের সাথে আলোচনা করে প্রস্তুত করবে। পরে দলের একজন সে তালিকাটি একটি পোস্টার পেপারে লিখবে এবং দলের প্রতিনিধি সেই পোস্টারটি শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে।

উপস্থাপনার নিয়মগুলো ভালোভাবে জেনে নেবে। শিক্ষকের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী তালিকা উপস্থাপন করবে। মনে রাখবে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তোমার উপস্থাপনা শেষ করতে হবে। তাই স্পষ্ট ভাষায়, অল্প সময়ে, সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করবে। খেয়াল রাখবে যে, তোমার কথা যারা শুনছে তারা যেনো তোমার কথা সঠিকভাবে বুঝতে পারে।

যদি একক উপস্থাপন হয়, মানে তুমি একা উপস্থাপন করবে এমন হয়, তবে তোমার নাম ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর দলগত উপস্থাপনের ক্ষেত্রে সহপাঠী বা বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে উপস্থাপন করবে।

তোমার সহপাঠী বা বন্ধুদের উপস্থাপনাগুলোও মনোযোগসহকারে শুনবে। তাদের উপস্থাপনায় যে বিষয়গুলো নতুন মনে হবে বা তোমার ভালো লাগবে তা নিচে প্রদত্ত বক্সে লিখে রাখতে পারো।

Content added || updated By

উপহার ৩

খেলা ও অভিনয়

 

শিক্ষক তোমাদের একটি খেলা খেলতে বলবেন। কার্ড দিয়ে খেলাটি খেলতে হবে। কার্ডে খেলার বিষয়বস্তু উল্লেখ করা থাকবে। কার্ডে উল্লেখিত বিষয়বস্তুটি শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে তোমাকে একক বা দলে আলোচনা করতে হবে। পরে অভিনয়ের মাধ্যমে তোমার বিষয়টি শ্রেণিতে উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষকের নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে শোনো। তোমার বিষয়বস্তুটি উপস্থাপনার জন্যে আনন্দসহকারে খেলায় অংশগ্রহণ করো।

 

কার্ডের মাধ্যমে খেলার বিষয়বস্তু শিক্ষক তোমাকে শ্রেণিতে অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে বলবেন। একদিকে কার্ডের খেলা অন্যদিকে অভিনয়! কী সুন্দর আজকের বিষয়টি, তাই না? কার্ডে উল্লিখিত যে বিষয়বস্তুটি তোমাকে দেওয়া হয়েছে, একক অভিনয়ের বিষয় হলে তুমি নিজে প্রস্তুতি গ্রহণ করো। আর যদি অভিনয়টি দলগত হয় তবে তা নিয়ে দলে আলোচনা করো, একটু সময় নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করো এবং অভিনয়ের মাধ্যমে সবার সামনে উপস্থাপন করো।

 

তুমি কোন বিষয়ে এবং কোন চরিত্রে অভিনয় করবে তা ঠিক করে নেবে। তোমার চরিত্রটি অর্থপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তুলতে তোমার কী কী করা দরকার মনে মনে সাজিয়ে নেবে।

 

যদি তুমি কোনো চরিত্রে অভিনয় করার দায়িত্ব পেয়ে থাকো, তবে তোমার চরিত্রের সংলাপগুলো আত্মস্থ করে নেবে। আর যদি নির্বাক চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব পেয়ে থাকো, তাহলে মঞ্চে তোমার অবস্থান, অঙ্গভঙ্গি এবং গতিবিধি দলে আলোচনা করে বুঝে নিবে। তোমার অভিনয়ের অনুভূতি বা আচরণের উপর কিন্তু একটি মূল্যায়ন হবে।

 

তোমরা অন্য সহপাঠীদের কার্ডের বিষয়বস্তুগুলো এবং অভিনয়ের আকর্ষণীয় দিকগুলো নিচে লিখে রাখতে পারো।

 

Content added || updated By

উপহার ৪-৫

যীশু খ্রীষ্টের যাতনাভোগ ও ক্রুশীয় মৃত্যু

 

প্রিয় শিক্ষার্থী,

এখন চলো খ্রীষ্টধর্মের মৌলিক জ্ঞান ও আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তি এবং মণ্ডলীর শিক্ষাসমূহ একটু জানা যাক। তোমাদের শিক্ষক এই বিষয়গুলো বাইবেল থেকে পাঠ ও ব্যাখ্যাসহ জানাবেন। কিছু এনিমেশন বা ভিডিও দেখাতে পারেন। একই সাথে কিছু প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে বিষয়গুলো স্পষ্ট করবেন। এই বইয়েও তোমরা বিষয়গুলো চাইলে পড়তে পারো। যখনই কোনো কিছু বুঝতে কষ্ট হবে তোমার মা-বাবা/অভিভাবক বা ভাই/ বোন বা শিক্ষককে জিজ্ঞেস করতে পারো। কোনো ছবি দেখে মনে প্রশ্ন আসলেও জিজ্ঞেস করতে সংকোচ করবে না।

তোমার বাসায় যদি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন থাকে তাহলে তার মাধ্যমেও শিক্ষকের দেখানো ভিডিওগুলো তোমরা দেখতে পারো। এই সেশন দু'টোতে শিক্ষক তোমাদের কিছু প্রশ্নোত্তর ও ছবি অঙ্কন করার কাজ দিতে পারেন। কাজগুলো গুরুত্বের সাথে করার চেষ্টা করবে। মনে রাখবে এই কাজের উপর তোমাদের মূল্যায়ন হবে।

খ্রীষ্টধর্ম গ্রন্থ পবিত্র বাইবেল থেকে এবং পূর্ব জ্ঞান ও বিশ্বাস থেকে আমরা জানি যে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বহু যাতনাভোগ করেছেন। গেৎ শিমানী বাগানে তাঁর মর্ম বেদনা, গ্রেপ্তার, যুদাসের (যিহুদা) বিশ্বাসঘাতকতা, পিতরের অস্বীকার, প্রভু যীশুর বিচার, মৃতুদণ্ড এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর উদ্দেশ্য ছিলো মানব জাতির পরিত্রাণ।

 

 

 

যীশুকে ক্রুশে গেঁথে দেওয়া হল

মথি ২৭:৩২-৩৮

 

'সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে তারা সামনে দেখতে পেল সাইরিনির একজন লোককে, যার নাম সিমোন। তাকে তারা যীশুর ক্রুশখানি বয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য করলো। যখন তারা গলগথা অর্থাৎ খুলিতলা ব'লে পরিচিত একটি জায়গায় এসে পৌঁছল, তারা তখন যীশুকে পিত্তি-মেশানো দ্রাক্ষারস খেতে দিলো, কিন্তু একটু চেখে দেখার পর তিনি তা খেতে চাইলেন না। তারা এবার তাকে ক্রুশে গেঁথে দিল। তারপর দান চেলে তাঁর জামাকাপড় তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিল। তারপর সেখানে বসে তাঁকে পাহারা দিতে লাগলো। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের লিপিফলকটি তাঁর মাথার ওপর টাঙিয়ে দেওয়া হল। তাতে লেখা ছিল: 'এই যে ইহুদীরাজ যীশু।' সেই সময় তাঁর সঙ্গে দু'জন দস্যুকেও ক্রুশে দেওয়া হল একজনকে তাঁর ডান পাশে আর একজনকে বাঁ পাশে।' 

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

শিক্ষার্থীরা, তোমরা পূর্বের শ্রেণিতে জেনেছো যে, যীশু খ্রীষ্ট পবিত্র ত্রিত্বের দ্বিতীয় ব্যক্তি। তিনি পুত্র ঈশ্বর। তিনি মানব জাতিকে পাপ থেকে উদ্ধারের জন্যে এ জগতে এসেছেন। কিন্তু মানুষ এত স্বার্থপর যে, তারা ঈশ্বরপুত্রকে চিনতে পারেনি বরং তাকে ক্রুশে দিয়েছে। তিনি যে বারোজন শিষ্য নিয়ে শিষ্যদল গঠন করেছিলেন তাদের মধ্যে একজন যার নাম 'যুদাস (যিহুদা)' তিনি যীশুকে গেৎশিমানি বাগানে ধরিয়ে দিয়েছিলো। আরেকজন শিষ্য, যার নাম 'পিতর' তিনি যীশুকে তিনবার অস্বীকার করেছিলেন। যে ইহুদীদের মাঝে যীশু এতো আশ্চর্য কাজ করেছেন, তারাই চিৎকার করে যীশুর ক্রুশ মৃত্যুর দাবি জানিয়েছিলো। যীশুর কাঁধে এক ভারি ক্রুশ চাপিয়ে দিয়ে সৈন্যরা তাকে চাবুক মারতে মারতে কালভেরিতে নিয়ে গিয়েছিল এবং 'খুলিতলা' নামক স্থানে দুইজন দস্যুর মাঝে ক্রুশে টাঙিয়েছিল। যন্ত্রণার এখানেই শেষ নয়, ক্রুশে টাঙিয়ে নিষ্ঠুর সৈন্যগণ তাকে জলের পরিবর্তে সিকা খেতে দিয়েছিলো, তার জামা-কাপড় সৈন্যরা দান চেলে ভাগ করে নিয়েছিলো। যীশুর কষ্ট হচ্ছে দেখে সাইরিনির 'সিমোন' নামে একজন যীশুভক্ত, যীশুর ক্রুশ বহনে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন।

যীশুর শিষ্যগণ পালিয়ে গেলেও তার প্রতি গভীর বিশ্বাস ও ভালোবাসা থেকেই এই 'সিমোন' যীশুর ক্রুশের পথের সাথী হয়েছিলেন। তাঁর ক্রুশ বহন করার যে কষ্ট সেটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। যীশুর মর্মবেদনার সমব্যথী হয়েছিলেন। সিমোনের এ উদাহরণ কি তোমাদের কোনো অনুপ্রেরণা দেয় না, সমাজের দুঃখী, দরিদ্র, অভাবী ও অসহায় মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়াতে?

আমরা যেন আমাদের মুক্তিদাতাকে তিরস্কার, অবিশ্বাস বা অপমান না করি বরং আমরাও যেনো তার মতো পরিত্রাণকারী, দয়ালু, ক্ষমাশীল ও সেবার মানুষ হতে পারি। সিমোন যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, আমরাও যেনো যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

 

 

ক্রুশবিদ্ধ যীশুর প্রতি বিদ্রূপ ও অপমান

মথি ২৭:৩৯-৪৪

 

'যারা সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল, তারা তাঁকে যা-তা ব'লে অপমান করতে লাগলো; মাথা নাড়তে নাড়তে বলতে লাগল: "মহামন্দির ভেঙে ফেলে তুই নাকি তিন দিনের মধ্যেই আবার তা গড়ে তুলতে পারিস! বেশ তো, তুই যদি সত্যিই ঈশ্বরের পুত্র হোস, এখন তাহলে নিজেকে বাঁচা, ক্রুশ থেকে নেমে আয়।” প্রধান যাজকেরাও শাস্ত্রী ও প্রবীণদের সঙ্গে একইভাবে উপহাস করে বলছিলেন: "ও অপরকে বাঁচিয়েছে, অথচ নিজেকে বাঁচাতে পারছে না! ও নাকি ইস্রায়েলের রাজা! দেখি, ও এখন ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তাহলেই ওকে আমরা বিশ্বাস করব। ও তো ঈশ্বরের ওপর ভরসা রেখেছে! তা ঈশ্বর যদি সত্যিই ওর জন্যে ভাবেন, তাহলে তিনিই এখন ওকে উদ্ধার করুন। ও তো বলেছেই: 'আমি ঈশ্বরের পুত্র!'" এমন কি, যে দু'জন দস্যুকে তাঁর সঙ্গে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল, তারাও সেই একইভাবে তাঁকে বিশ্রী ভাষায় টিটকিরি দিচ্ছিল।'

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

 

ঈশ্বরপুত্র প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে ক্রুশে টাঙানো হলো। ক্রুশের উপর প্রভু যীশুর কী মর্মযন্ত্রণা! কোনো দিকে মাথা ঘুরালে যন্ত্রণা কমে না বরং বাড়ে। এমন যন্ত্রণার মাঝে সৈন্যরা, প্রধান যাজকেরা, শাস্ত্রবিদগণ ও সাধারণ পথচারীগণ প্রভু যীশুর সমালোচনা করেছিলো। এমনকি একই শাস্তি ভোগ করছে সেই দুইজন দস্যুর একজন যীশুকে বিদ্রূপ ও অপমান করেছিলো। যীশুর কথা দিয়েই যীশুকে আক্রমণ করেছিলো; তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলো, “মহামন্দির ভেঙে ফেলে তুই নাকি তিন দিনের মধ্যেই আবার তা গড়ে তুলতে পারিস! বেশ তো, তুই যদি সত্যিই ঈশ্বরের পুত্র হোস, এখন তাহলে নিজেকে বাঁচা, ক্রুশ থেকে নেমে আয়!” আসলে যীশু 'মহামন্দির' বলতে দেহ মন্দিরকে এবং "তিন দিন” বলতে মৃত্যুর তিন দিন পর তার আবার ফিরে আসার কথাই বুঝিয়েছিলেন।

 

যীশুর ঐশ্বরিক পরিচয় না জেনে এবং ক্ষমতা না বুঝেই যীশুকে নিয়ে তারা পরিহাস করেছিলেন। ঈশ্বর মানুষ হয়ে এ জগতে এসেছেন নিজেকে বাঁচানোর জন্যে নয়; বরং তিনি এসেছেন মানব জাতিকে বাঁচানোর জন্যে, পাপ থেকে উদ্ধারের জন্যে, মানুষের পরিত্রাণের জন্যে। হে মানব, তোমার প্রভুকে তুমি এমন যন্ত্রণা ও দুঃখ-কষ্ট দিয়েছিলে!

 

আমরাও কি যীশুকে কষ্ট দিই না? যখন আমরা বিশ্বাসের পথে না চলি, ধর্ম-কর্ম না করি, যখন আমরা অন্যের সমালোচনা করি, যখন আমরা বাইবেল পাঠ না করি, ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো অস্বীকার করি বা বিষয়গুলো নিয়ে দ্বন্দ্ব-কোলাহল করি, তখন আমরা যীশুকে কালভেরিতে নিয়ে যাই না, তাকে আমরা পুনরায় ক্রুশ বিদ্ধ করি এবং তাঁকে আমরা কষ্ট দিই?

 

 

যীশুখ্রীষ্টের ক্রুশীয় মৃত্যু

মথি ২৭:৪৫-৫০

 

'সেদিন বেলা বারোটা থেকে সারা দেশ ছেয়ে নামল অন্ধকার; বেলা তিনটে পর্যন্ত এমনি অন্ধকারই রইল। বেলা তিনটের কাছাকাছি সময়ে যীশু জোরে চিৎকার করে উঠলেন; 'এলি, এলি, লামা শবাক্তানী!' অর্থাৎ, 'ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, কেন আমাকে পরিত্যাগ করেছ?' যারা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল, তাদের কেউ কেউ এই কথা শুনে বলল: 'এখনও কিনা এলিয়কে ডাকছে!' তাদের একজন তখনই ছুটে গিয়ে একটা স্পঞ্জ নিয়ে সির্কায় তা ভাল ক'রে ভিজিয়ে নিল; তারপর একটা নলডাঁটার আগায় স্পঞ্জটা লাগিয়ে যীশুকে পান করতে দিল। কিন্তু অন্যেরা বলল: 'দাঁড়াও! দেখা যাক, এলিয় ওকে রক্ষা করতে আসেন কি না!' তখন যীশু আর একবার জোরে চিৎকার করে উঠলেন; তারপর তিনি প্রাণত্যাগ করলেন।'

 

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

 

পিলাতের দরবারে যীশুর বিচারের পর ইহুদী সৈন্যরা যীশুকে মারতে মারতে কালভেরিতে নিয়ে গিয়েছিলো। তার কাঁধে ভারি ক্রুশ চাপিয়ে দিয়েছিলো মাথায় কাঁটার মুকুট পরিয়ে দিয়েছিলো। সৈন্যরা জোর করে তার বহন করা ক্রুশের উপর শুইয়ে তাঁর দুহাত ও দুপা পেরেক বিদ্ধ করে বেলা বারোটার সময় যীশুকে ক্রুশে টাঙিয়েছিলো। ক্রুশে টাঙানো অবস্থায় সৈন্যরা বর্শা দিয়ে যীশুর বুকে আঘাতও করেছিলো। যেখান থেকে বের হয়ে এসেছিল রক্ত ও জল। এভাবে অকথ্য যন্ত্রণা সহ্য করে যীশু শুক্রবার বেলা তিনটের সময় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আমাদের মুক্তিদাতা প্রভু যীশু যে দিনটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন, সেই দিনটিকে বলা হয় 'পুণ্য শুক্রবার' বা 'গুড ফ্রাইডে'।

ঈশ্বরপুত্রের এমন যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুতে সেদিন ঈশ্বরের সৃষ্ট প্রকৃতি বেলা ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অন্ধকারময় হয়েছিল। মন্দিরের পর্দাটি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুভাগ হয়ে গিয়েছিল। আরও অনেক আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছিল। যীশু ক্রুশের উপর যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর পূর্বে পিতা ঈশ্বরকে ডেকেছিলেন, সকল অপরাধীকে ক্ষমা করেছিলেন এবং সমস্তই সমাপ্ত হয়েছে বলে প্রাণত্যাগ করেছিলেন।

আমাদের প্রভু যীশু কত মহাপ্রাণ। যারা তাঁকে এত কষ্ট দিয়েছিলেন, হত্যা করেছিলেন, মৃত্যুর পূর্বে তিনি তাদের ক্ষমা করেছিলেন। এমন মহানুভবতার পরিচয় আমরা কি এই পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি দেখতে পাই? যীশু ক্রুশের উপর থেকেও আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন, যেন আমরাও মহানুভব হই, অনুভূতিপ্রবণ মানুষ হই, মানুষকে ভালোবাসি ও ক্ষমা করি।

Content added || updated By

উপহার ৬

এসো মুভি দেখি

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, মেল গিবসন-এর তৈরি "The Passion of the Christ" মুভিটির কিছু অংশ শিক্ষক শ্রেণিতে তোমাদের দেখাবেন। এই মুভির মধ্য দিয়ে তোমরা যীশু খ্রীষ্টের যাতনাভোগ ও যন্ত্রণাদায়ক ক্রুশীয় মৃত্যুর করুণ দৃশ্য দেখতে পাবে। মুভিটি দেখার জন্যে নিচের Link-টি ব্যবহার করতে পারো।

The Passion of the Christ: https://www.bilibili.tv/en/video/2004546074

 

মুভিটি দেখার পূর্বে শিক্ষকের পরিচালনায় প্রভু যীশুর যাতনাভোগের একটি গান গাইতে পারো।

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, যীশু খ্রীষ্টের যাতনাভোগ এবং যীশু খ্রীষ্টের ক্রুশীয় মৃত্যুর বিষয়ে বাইবেল থেকে তোমরা পাঠ করেছো এবং শিক্ষকের নিকট থেকে ব্যাখ্যা শুনেছো। এই বিষয়ে কয়েকজন চলচ্চিত্র পরিচালক বেশ কয়েকটি মুভি তৈরি করেছেন। তার মধ্যে মেল গিবসন-এর তৈরি "The Passion of the Christ" মুভিটির কিছু অংশ তোমরা দেখবে। মুভিটি ইংরেজি ভাষায় তৈরি, তবে ইতোমধ্যে যেহেতু তোমরা ঘটনা জানো, তাই তোমাদের বুঝতে সমস্যা হবে না। মুভি চলাকালে যদি কোনো অংশ তোমরা না বুঝতে পারো তবে শিক্ষককে প্রশ্ন করবে, যেন শিক্ষক তোমাদের বুঝিয়ে দিতে পারেন। তোমরা মনোযোগ দিয়ে মুভিটির অংশ বিশেষ দেখবে। মুভিটি দেখার সময় তোমাদের যে অনুভূতি হয়েছে পরে সবার সাথে তা আলোচনা করতে পারো।

 

 

বাড়ির কাজ

 

বাড়িতে গিয়ে তোমরা যীশু খ্রীষ্টের যাতনাভোগ এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর বিষয়ে মেল গিবসন-এর তৈরি 'The Passion of the Christ' যে মুভিটি দেখেছো তা নিয়ে পরিবারের মা-বাবা/অভিভাবকের সাথে আলোচনা করবে। আলোচনার সময় যদি তোমরা কোনো নতুন তথ্য বা ধারণা পেয়ে থাকো তবে তা নিচে লিপিবদ্ধ করবে।

 

Content added || updated By

উপহার ৭

মুক্ত আলোচনা

 

শিক্ষক তোমাদের জন্যে একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করতে পারেন। এই আলোচনায় যীশু খ্রীষ্টের যাতনাভোগ ও ক্রুশীয় মৃত্যু সম্পর্কে যে বিষয়বস্তু তুমি জেনেছো তার আলোকে মুক্ত আলোচনা হতে পারে। এই আলোচনায় তোমরা স্বাচ্ছন্দে অংশগ্রহণ করো। শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসরণ করে কোনো বিশ্লেষণ করতে বলা হলে তোমার অর্জিত ধারণা ব্যবহারে সংকোচবোধ কর না।

এটা তোমাকে বলছি কারণ তোমার ধারণায় যদি কোনো অস্পষ্টতা থেকে থাকে তাহলে তোমার নিঃসংকোচ ব্যবহারে বা খোলামেলা আলোচনায় তা বের হয়ে আসবে। আলোচনা চলাকালে যে বিষয়ের উত্তর তোমার কাছে এখনও স্পষ্ট নয় সেগুলো তোমার খাতায় এক বা একাধিক প্রশ্ন লিখে ফেলো, এরকম প্রশ্ন যে তোমাকে লিখে ফেলতেই হবে, তা নয়। কিন্তু খ্রীষ্টধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো জানার জন্যে এই সেশনটি উপযুক্ত সময়।

এখানে পূর্বের ২টি বিষয় প্রথমত তোমাদের ফিল্ড ট্রিপের অভিজ্ঞতা, দ্বিতীয়ত বাইবেল থেকে যীশুর যাতনাভোগ ও ক্রুশীয় মৃত্যুর উপর পাঠ ও ব্যাখ্যা এবং তৃতীয়ত মুভির অংশ বিশেষ দেখাকে সমন্বয় করা হবে। যীশু খ্রীষ্টের জীবনের যন্ত্রণা এবং মানুষের জীবনের দুঃখ-কষ্টও সমন্বয় করে ভাবা হবে। এক্ষেত্রে তোমাদের প্রশ্নের আলোকে খোলামেলা আলোচনা হবে। এরূপ প্রশ্নোত্তর ও আলোচনা থেকে তোমাদের ধারণায় কোনো অস্পষ্টতা থাকলে তা শিক্ষক পরিষ্কার করে দেবেন, যেন বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বা বিভ্রান্তি না থাকে।

Content added || updated By

উপহার ৮-৯

যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষের প্রতি সেবা

 

শিক্ষক তোমাদের সমবেত কণ্ঠে সেবার মাধ্যমে যীশুর আদর্শ অনুসরণ করার একটি গান গাইতে বলবেন। মন প্রাণ খুলে তুমিও এই গানে অংশগ্রহণ করো।

কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন

প্রিয় শিক্ষার্থী,

তোমার শিক্ষক তোমাকে একটি কাজের পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন করার কথা বলবেন। শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে বাস্তবধর্মী একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। সে পরিকল্পনা অনুসারে তোমাকে যে কাজের কথা বলা হবে সেই কাজগুলো তুমি করবে। তুমি কী পরিকল্পনা করেছো এবং কীভাবে তা বাস্তবায়ন করেছো তার একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে। তোমার কাজগুলোর তথ্য প্রমাণের জন্যে তুমি কয়েকটি ছবি তুলে রাখবে। তোমার প্রতিবেদনটি সচিত্র হতে হবে এবং শ্রেণিতে উপস্থাপন করতে হবে।

 

উপস্থাপন

এবার তোমার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকৃত কার্যক্রমের ভিত্তিতে প্রণীত সচিত্র প্রতিবেদনটি শিক্ষককে দেখাবে। তোমার জন্যে নির্ধারিত সময়ে তুমি শ্রেণিতে উপস্থাপন করো। উপস্থাপনার সময় তোমার অনুভূতিও প্রকাশ করো। মনে রাখবে, তোমার এই কাজের উপর তোমাকে মূল্যায়ন করা হবে।

তোমার লিখিত প্রতিবেদনে তোমার মা-বাবা/অভিভাবকের স্বাক্ষর ও মতামত সংগ্রহ করতে হবে।

Content added || updated By

উপহার ১০

ভিডিও দেখি

 

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমার শিক্ষক এ সেশনটি নিজে প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শুরু করবেন বা তোমাদের মধ্যে কাউকে প্রার্থনা করতে বলতে পারেন। তাই তুমি প্রার্থনা করার জন্যে প্রস্তুত থেকো।

 

এরপর শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে দুটি আকর্ষণীয় ভিডিও দেখানোর ব্যবস্থা করবেন। যদি তিনি ভিডিও দেখানোর ব্যবস্থা করতে না পারেন তবে ঐ ভিডিওটির লিংক তোমাকে দিয়ে দেবেন, তুমি ঘরে বসে Youtube এ ভিডিওগুলো দেখতে পারবে।

 

ভিডিও দুটি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখা শেষ হলে শিক্ষক তোমাকে কী কাজ দেবেন তা বুঝিয়ে বলবেন।

 

 

 

অভিনয় করবে

 

শিক্ষক তোমাকে বলতে পারেন, যে ভিডিওটি দেখেছো সে বিষয়ে ইতোমধ্যে তোমরা গির্জায় বা চার্চে ও পরিবারের কাছ থেকে শুনেছো। তাই সে বিষয়ে ব্রেইনস্টর্মিং বা মাথাখাটানোর মাধ্যমে আগামী সেশনে দলগত ভূমিকাভিনয়/নাটক করে মূল বিষয়টি উপস্থাপন করবে। তুমি ভিডিওর দৃশ্যগুলোকে এবং মূল চরিত্রকে অভিনয়ের মাধ্যমে দেখাবে। একজন মৃত ব্যক্তিকে কীভাবে কবর দেয়া হলো এবং মৃত্যু থেকে আবার জেগে উঠলো এবং স্বর্গে উঠে গেলো। তোমরা দলগত নাটকের একটি স্ক্রিপ্ট লিখবে। শিক্ষক তোমাদের বুঝিয়ে দেবেন এবং তিনি তোমাদের দলগতভাবে মহড়া দিতে বলবেন, যাতে পরবর্তী সেশনে তোমরা নাটকটি উপস্থাপন করতে পারো। নাটকের জন্যে যদি মঞ্চ সাজাতে হয় এবং পোশাকের প্রয়োজন হয় তবে সেগুলো পূর্ব থেকে প্রস্তুত করে রাখবে।

 

শিক্ষককে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় জানাও।

Content added || updated By

উপহার ১১-১২

ভূমিকাভিনয়

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী,

 

এই সেশনে তোমরা দলগতভাবে ভূমিকাভিনয় করতে যাচ্ছো। এর আগে শিক্ষক তোমাদের গীতাবলী/ খ্রীষ্ট-সঙ্গীত/ধর্মগীত থেকে নিচের গান অথবা অনুরূপ যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের একটি গান গাইতে বলতে পারেন এবং এরপর প্রার্থনার মাধ্যমে সেশন শুরু করবেন।

 

১) কি মহানন্দ উপস্থিত, কি জয় যীশুর উত্থানে। 

পাপ অন্ধকার হয় অন্তর্হিত, কাল নিশি অবসানে

ধুয়া হাল্লিলুয়া, বল জয়। 

যীশু হইলেন মৃত্যুঞ্জয়।

পাপীর জন্যে ত্রাণোদয়, 

ধন্য ধন্য ধন্য।

 

 

২) প্রভাতী তারা প্রকাশ পায়, প্রভুর পুনরুত্থানে, 

ঐ ব্রান-সূর্য দেখা যায়, তাঁহার স্বর্গারোহণে।

 

 

৩) তায় গেল মৃত্যুর অধিকার কি শান্তি ত্রিভুবনে।

আর খোলা হইল স্বর্গ-দ্বার আনন্দ পাপীর মনে!

 

 

৪) ঐ স্বর্গে দূতগণে গায়, পুণ্য পুণ্য পুণ্য! 

আর প্রতিধ্বনি এই ধরায় ধন্য ধন্য ধন্য

 

খ্রীষ্ট-সঙ্গীত ৯৪ সংখ্যা-বিজয় নাথ সরকার

 

 

প্রার্থনা শেষে ভূমিকাভিনয়ের জন্যে শিক্ষকের সহযোগিতায় শ্রেণিকক্ষের সামনের অংশটি খালি করো এবং তোমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী মঞ্চ সাজাও। যদি শ্রেণিকক্ষে যথেষ্ট জায়গা না হয় তবে শিক্ষক যে স্থানে ব্যবস্থা করবে সেখানে তোমাদের মঞ্চ সাজাবে। শিক্ষক তোমাদের কিছু সময় দেবেন, সেই সময়ের মধ্যে ভূমিকাভিনয়ের জন্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করো।

 

নিচে একটি মঞ্চের ছবি দেখানো হয়েছে, নিচের ছবিটির মত একটি পুনরুত্থানের নাট্যমঞ্চ তৈরি করতে পারো। যদি এরকম ব্যবস্থা করা না যায় তবে বড় কার্টুন বক্স কেঁটে তোমরা কবরের মুখ বানাতে পারো এবং কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে পারো। এছাড়াও কর্কশিট পাওয়া গেলে সেগুলো দিয়েও কবর ও ক্রুশ বানাতে পারো। কবর তৈরি হয়ে গেলে এর আশেপাশে গাছের ডাল বা গাছের টব রেখে কবরে বাগানের পরিবেশ তৈরি করবে। এই মঞ্চ তৈরির অভিজ্ঞতা তোমাদেরকে অনুভব করতে সাহায্য করবে যে-যীশুর কবরটির পরিবেশ কেমন ছিলো। 

 

 

 

ভূমিকাভিনয়

 

শিক্ষার্থীরা, তোমরা এবার দলগতভাবে অভিনয় করবে। শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি দল অভিনয় করে যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান, স্বর্গারোহণ ও পুনরাগমনের অভিনয় করে দেখাবে। তোমরা ভিডিওতে যা দেখেছো এবং গির্জা/চার্চে যা শুনেছো সেই অভিজ্ঞতা অনুসারে ঘটনাগুলো তুলে ধরো।

 

বাড়ি থেকে যা আনতে হবে

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, আগামী সেশনে তোমাকে চিত্রাঙ্কন করতে হবে, যার বিষয়বস্তু শিক্ষক জানাবেন। চিত্রাঙ্কনের জন্যে প্রয়োজনীয় রং, তুলি, রং পেন্সিল এবং আর্ট পেপার নিয়ে আসবে। অথবা শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে ব্যবস্থা করবে।

সেশন শেষে শিক্ষক অথবা তোমার একজন সহপাঠী সমাপনী প্রার্থনা করবেন। শিক্ষককে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রার্থনার মাধ্যমে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

উপহার ১৩-১৪

ছবি আঁকি

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমার শিক্ষকের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করো। তিনি তোমাদের মধ্যে একজনকে প্রার্থনা করতে বলতে পারেন। তুমি আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারো।

ইতোমধ্যে তোমার যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান, স্বর্গারোহণ এবং দ্বিতীয় আগমন সম্পর্কে বেশ অভিজ্ঞতা ও ধারণা হয়েছে। এ সেশনে তুমি ছবি আঁকবে, আশা করি, শিক্ষক যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছো। শিক্ষক তোমাকে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছবি আঁকা শেষ করতে বলতে পারেন। কারণ ছবিগুলো গুছিয়ে রাখার জন্যে এবং আগামী সেশনে কী করতে হবে তার জন্যে কিছু সময় প্রয়োজন হতে পারে।

 

ছবি আঁকার নির্দেশনা

 

শিক্ষক এখন তোমাকে একটি ছবি আঁকতে বলবেন। ছবি আঁকার জন্যে তোমার প্রস্তুতি নেয়া শেষ হলে তিনি বলবেন কী বিষয়ের উপরে তোমরা ছবি আঁকবে। তোমার নিজের চিন্তা ও অভিজ্ঞতা থেকে বিষয়গুলোর উপরে অঙ্কন করতে বলবেন। এই ছবি আঁকার জন্যে শিক্ষক যে নির্দেশনা দেবেন তা আগ্রহের সাথে শুনে মনোযোগ দিয়ে চিত্রাঙ্কন করবে।

 

 

ছবি প্রদর্শনী

 

ছবি আঁকা শেষে শিক্ষক ছবিগুলো রশিতে ঝুলিয়ে অথবা দেয়ালে মাস্কিং টেপ দিয়ে লাগিয়ে দিতে বলতে পারেন। তোমরা দ্রুত শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে ছবিগুলোকে সাজিয়ে কিছুটা আর্ট গ্যালারীর মত তৈরি করবে। এবার শিক্ষক তোমাদের এক এক করে ছবি ব্যাখ্যা করতে বলবেন। তুমি এ ছবির মাধ্যমে কী ফুঁটিয়ে তুলেছো এবং তোমার উপলব্ধি ও ধারণা ব্যাখ্যা করবে। কারণ পরবর্তী সেশনগুলোতে শিক্ষক যখন বাইবেল পাঠ করে আরও সহজভাবে বুঝিয়ে দেবেন তখন তোমার এই অভিজ্ঞতার আলোকে বাইবেলের ঘটনাগুলোকে আরও গভীরভাবে বুঝতে পারবে।

শিক্ষককে এ চমৎকার এবং উৎসাহমূলক কার্যক্রমের জন্যে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাও। 

Content added || updated By

উপহার ১৫

যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান

 

প্রস্তুতি

প্রিয় শিক্ষার্থী, শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানাও এবং প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করো।

 

তুমি যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের বিষয়ে ইতোমধ্যে গির্জা/ চার্চের যাজক এবং মা-বাবা/অভিভাবকের কাছ থেকে শুনেছো। আর পূর্ববর্তী সেশনগুলোতে ভিডিও ক্লিপ, নাটক ও ছবি অঙ্কনের মধ্য দিয়ে ধারণা পেয়েছো। এবার তোমার প্রিয় শিক্ষক পবিত্র বাইবেলে এ বিষয়ে কী লেখা আছে তা তোমাদের সহজ করে বুঝিয়ে দেবেন। তুমি ইচ্ছে করলে বাড়িতে বসে মথি ২৮: ১-১৫ পদ পাঠ করে আসতে পারো। শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের যে কোনো শিক্ষার্থীকে বাইবেলের এই অংশটুকু পাঠ করতে বলতে পারেন, তাই প্রস্তুত থেকো।

 

যীশু খ্রীষ্ট মৃত্যু থেকে জীবিত হলেন

মথি ২৮:১-১৫

"বিশ্রামবারের পরে সপ্তাহের প্রথম দিনের ভোরবেলায় মগদলীনী মরিয়ম ও সেই অন্য মরিয়ম কবরটা দেখতে গেলেন। তখন হঠাৎ ভীষণ ভূমিকম্প হল, কারণ প্রভুর একজন দূত স্বর্গ থেকে নেমে এলেন এবং কবরের মুখ থেকে পাথরখানা সরিয়ে দিয়ে তার উপরে বসলেন। তাঁর চেহারা বিদ্যুতের মত ছিল আর তাঁর কাপড়-চোপড় ছিল ধবধবে সাদা। তাঁর ভয়ে পাহারাদারেরা কাঁপতে লাগল এবং মরার মত হয়ে পড়ল।

স্বর্গদূত স্ত্রীলোকদের বললেন, "তোমরা ভয় কোরো না, কারণ আমি জানি, যাঁকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তোমরা সেই যীশুকে খুঁজছ। তিনি এখানে নেই। তিনি যেমন বলেছিলেন তেমনভাবেই জীবিত হয়ে উঠেছেন। এস, তিনি যেখানে শুয়ে ছিলেন সেই জায়গাটা দেখ। তোমরা তাড়াতাড়ি গিয়ে তাঁর শিষ্যদের বল তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন এবং তাদের আগে গালীলে যাচ্ছেন। তারা তাঁকে সেখানেই দেখতে পাবে। দেখ, কথাটা আমি তোমাদের জানিয়ে দিলাম।"

সেই স্ত্রীলোকেরা অবশ্য ভয় পেয়েছিলেন, কিন্তু তবুও খুব আনন্দের সংগে তাড়াতাড়ি কবরের কাছ থেকে চলে গেলেন এবং যীশুর শিষ্যদের এই খবর দেবার জন্যে দৌড়াতে লাগলেন। এমন সময় যীশু হঠাৎ সেই স্ত্রীলোকদের সামনে এসে বললেন, "তোমাদের মংগল হোক।"

তখন সেই স্ত্রীলোকেরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর পা ধরে প্রণাম করে তাঁকে ঈশ্বরের সম্মান দিলেন। যীশু তাঁদের বললেন, "ভয় কোরো না; তোমরা গিয়ে ভাইদের গালীলে যেতে বল। তারা সেখানেই আমাকে দেখতে পাবে।"

সেই স্ত্রীলোকেরা যখন চলে যাচ্ছিলেন তখন সেই পাহারাদারদের কয়েকজন শহরে গেল এবং যা যা ঘটেছিল -তা প্রধান পুরোহিতদের জানাল। তখন পুরোহিতেরা ও বৃদ্ধ নেতারা একত্র হয়ে পরামর্শ করলেন এবং সেই 

 

 

সৈন্যদের অনেক টাকা দিয়ে বললেন, "তোমরা বোলো, 'আমরা রাতে যখন ঘুমাচ্ছিলাম তখন তাঁর শিষ্যেরা এসে তাঁকে চুরি করে নিয়ে গেছে।' এই কথা যদি প্রধান শাসনকর্তা শুনতে পান তবে আমরা তাঁকে শান্ত করব এবং শাস্তির হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করব।"

তখন পাহারাদারেরা সেই টাকা নিল এবং তাদের যেমন বলা হয়েছিল তেমনই বলল। আজও পর্যন্ত সেই কথা যিহুদীদের মধ্যে ছড়িয়ে আছে।

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

বাইবেলের এই পদগুলোতে যীশু খ্রীষ্ট যে মৃত্যুর পর আবার জীবিত হয়েছেন সেই বিষয়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যীশু খ্রীষ্ট মৃত্যুবরণ করে আবার জীবিত হয়ে প্রমাণ করেছেন যে তিনি ঈশ্বরের পুত্র। কারণ এই পৃথিবীতে এমন কোন মানব নেই যে, মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে অনেক মানুষকে দেখা দিয়েছে এবং স্বর্গে সশরীরে গিয়েছে। ঐ সময়ে পাহারাদার রোমীয় সৈনিকরা একটি মিথ্যে সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলো যে, শিষ্যরা যীশুর দেহকে চুরি করেছিলো। প্রকৃত পক্ষে, যীশুর দেহকে শিষ্যরা চুরি করার সাহস পায়নি এবং পাওয়ার কথাও নয়। কারণ রোমীয়দের ঐ সময়ে সবচেয়ে দক্ষ সৈন্যবাহিনী ছিলো। শিষ্যরা এতো ভয় পেয়েছিলো যে, যীশু গেৎশিমানী বাগানে শত্রুদের হাতে ধরা পরার পরেই তারা পালিয়ে গিয়েছিল। রোমীয় সৈন্যদের পাহারাকে ফাঁকি দিয়ে এবং ঐ পাথর সরিয়ে যীশুকে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব ছিল। আর একটি বিষয় লক্ষ্য রাখা দরকার, ঐ সময় বিশাল আকারের পাথরটা গড়িয়ে সরাতে গেলে অবশ্যই অনেক শব্দ হত। রাতের পাহারাদারেরা সাধারণত না ঘুমিয়ে পায়চারী করে। অতএব, যে ভুল ধারণা ও তথ্য ঐ পুরোহিতেরা ও বয়ষ্ক নেতারা সৈন্যদের বলতে বলেছিল তা মোটেই সঠিক নয়।

বাইবেল ছাড়াও যিহুদীদের সেই সময়ের ইতিহাসেও যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের বিষয়ে লেখা হয়েছে। ৯৩-৯৪ এ.ডি. (খ্রি.) তে যিহুদী ইতিহাসবিদ ফ্লাভিয়াস যোষেফাস (Flavius Josephus) যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে বর্ণনা করে গিয়েছেন। যীশুকে যে রোমীয় সৈন্যরা হত্যা করেছিল এবং তিনি আবার তিন দিনের দিন জীবিত হয়েছিলেন সে বিষয়ে তার পুস্তক 'এন্টিকুইটিস অব দ্যা জিউস' এ লিখেছেন।

 

 

নিচের লিংক থেকে তোমরা বিষয়টি সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে পারবে।

 

লিংক: "Josephus on Jesus" https:/en.wikipedia.org/wiki/Josephus_on_Jesus-text-About 20 this%20time020there 20lived He 620was%20the%20Christ,

 

ঈশ্বরের পুত্র কোনো মানুষের সাহায্য ছাড়াই তাঁর ঐশ্বরিক শক্তি দিয়ে পুনরুত্থিত হয়েছেন, কারণ তিনি নিজেই বলেছিলেন যে তিনি পুনরুত্থিত হবেন। বাইবেল নিজেই সবচেয়ে বড় প্রমাণ, কেননা মথি, মার্ক লুক, যোহন পুস্তকে শিষ্যরা সেই সময়ে যা দেখেছিলো তাই লিখেছিলো।

 

 

দলগত কাজ

 

শিক্ষক যে বিষয়ের উপর এই সেশনে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সে বিষয়ের উপর তোমরা এখন জোড়ায় জোড়ায় আলোচনা করবে। এরপর তোমরা যা শিখেছো সেখান থেকে কিছু প্রশ্ন করবেন। তোমরা সেগুলোর উত্তর চিরকুটে লিখবে। এরপর শিক্ষক তোমার উত্তরগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।

 

স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষককে সহায়তা করো, দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করে শিক্ষককে বিদায় জানাও।

Content added || updated By

উপহার ১৬

যীশু খ্রীষ্টের স্বর্গারোহণ

 

 

শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করো।

প্রিয় শিক্ষার্থী, এই সেশনে যীশু খ্রীষ্টের স্বর্গারোহণের বিষয়ে তুমি বাইবেলে শিষ্যচরিত/প্রেরিত ১:৬-১১ পদে কি বলেছে সে বিষয়ে ধারণা পাবে। শিক্ষক বাইবেল পাঠের পাশাপাশি তোমাকে সহজভাবে বুঝিয়ে দেবার সময় কিছু ছবি দেখাতে পারেন, যাতে তোমরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারো। তোমার ভালোভাবে জানার জন্যে বাইবেলের এই অংশটি (শিষ্যচরিত/প্রেরিত ১:৬-১১) বাড়িতে বসে পাঠ করে আসতে পারো। 

 

যীশু খ্রীষ্ট স্বর্গে গেলেন

 

শিষ্যচরিত/প্রেরিত ১:৬-১১

'পরে শিষ্যেরা একসংগে মিলিত হয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, 'প্রভু, এই সময় কি আপনি ইস্রায়েলীয়দের হাতে রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন?' যীশু তাঁদের বললেন, 'যে দিন বা সময় পিতা নিজের অধিকারের মধ্যে রেখেছেন তা তোমাদের জানতে দেওয়া হয়নি। তবে পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে এলে পর তোমরা শক্তি পাবে, আর যিরূশালেম, সারা যিহুদিয়া ও শমরিয়া প্রদেশে এবং পৃথিবীর শেষ সীমা পর্যন্ত তোমরা আমার সাক্ষী হবে।'

'এই কথা বলবার পরে শিষ্যদের চোখের সামনেই যীশুকে তুলে নেওয়া হল এবং তিনি একটা মেঘের আড়ালে চলে গেলেন। যীশু যখন উপরে উঠে যাচ্ছিলেন তখন শিষ্যরা একদৃষ্টে আকাশের দিকে তাকিয়েছিলেন। এমন সময় সাদা কাপড়-পরা দু'জন লোক শিষ্যদের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, "গালীলের লোকেরা, এখানে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন? যাকে তোমাদের কাছ থেকে তুলে নেওয়া হল সেই যীশুকে যেভাবে তোমরা স্বর্গে যেতে দেখলে সেইভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।'

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত হবার চল্লিশ দিন পর স্বর্গে গিয়েছিলেন। স্বর্গে যাবার আগে শিষ্যরা প্রশ্ন করেছিলো, তিনি ইস্রায়েলের হাতে রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন কি না। শিষ্যরা এবং যিহুদিরা মনে করতো যে যীশু খ্রীষ্ট রোমীয় শাসকদের হাত থেকে ইস্রায়েল জাতিকে তাদের রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন। যীশু কবে আসবেন তা যীশু জানতেন না, শুধু তাঁর স্বর্গস্থ পিতা জানতেন। যীশু খ্রীষ্ট জগতের কোনো রাজার মতো নন, বরং তিনি পৃথিবীতে শান্তি স্থাপন করার জন্যে এসেছেন।

যীশু খ্রীষ্ট স্বর্গ থেকে মানবরূপে এ পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং আবার স্বর্গে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি তাঁর শিষ্যদের একা রেখে যাননি, তিনি শিষ্যদের জন্যে এবং আমাদের জন্যে সেই সহায় পবিত্র আত্মাকে পাঠিয়েছেন। পঞ্চাশত্তমীর দিনে পবিত্র আত্মা আগুনের জিহ্বার মত শিষ্যদের মাথার উপরে এসে বসেছিলো (প্রেরিত/ ২:১- ১১)। সেই পবিত্র আত্মার আসার প্রতিজ্ঞা তিনি স্বর্গে যাবার আগে যেমন করেছিলেন সেভাবে পবিত্র আত্মা নেমে এসেছিলো। এখনও আমাদের মধ্যে পবিত্র আত্মা অবস্থান করে, শক্তি দেয়, সবকিছু মনে করিয়ে দেয়, বিপদ থেকে রক্ষা করে এবং সঠিক পথে পরিচালনা করে। যীশু শিষ্যদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তিনি আবার ফিরে আসবেন এবং ঐ দুজন স্বর্গদূতও একই কথা বলেছিলো। যীশুর প্রতিজ্ঞার প্রতিটি কথা পূর্ণ হয়েছে এবং তিনি যে আবার আসবেন সেই প্রতিজ্ঞাও পূর্ণ হবে।

যীশু জগতের কাজ শেষ করে চলে গেছেন। কারণ তিনি যে দায়িত্ব নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন তা শেষ করেছেন। তিনি ঈশ্বরের পুত্র তাই পিতার কাছে আবার ফিরে গেছেন-যাতে পৃথিবীতে তাঁর অনুসারীদের জন্যে জায়গা ঠিক করতে পারেন, যীশু বলেছেন- তাঁর পিতার বাড়িতে অনেক জায়গা আছে (যোহন ১৪:২ পদ)। যীশু শিষ্যদের রেখে গেছেন যেন তারা তাঁর বাকি কাজগুলো শেষ করে। আর সেই বাকি কাজগুলো এখনও শেষ হয়নি। যতদিন না যীশুখ্রীষ্ট ফিরে আসেন ততদিন তাঁর রাজ্যের জন্যে কাজ করার দায়িত্ব আমাদের।

মুক্ত আলোচনা

প্রিয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক বাইবেলের অংশ ব্যাখ্যা করার পর তোমাদের মুক্ত আলোচনা করতে বলবেন। তোমরা দলগতভাবে আলোচনা করে তোমাদের মধ্যে যে প্রশ্ন বা দ্বিধা আসবে সেই প্রশ্নগুলো শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করবে। অবশ্যই তোমার প্রশ্নগুলো বিষয়ের উপরে হবে।

তোমার প্রিয় শিক্ষককে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

উপহার ১৭

যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমন

 

 

সুপ্রিয় শিক্ষার্থী, তোমার সহপাঠীদের ও শিক্ষককে শুভেচ্ছা জানাও। এরপর গীতাবলী/খ্রীষ্ট-সঙ্গীত/ধর্মগীত থেকে নিচের গানটির অনুরূপ একটি যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমনের গান তোমার শিক্ষক গাইতে বলবেন। তুমি সক্রিয়ভাবে অংশ নিও কিন্তু।

 

একটি নমুনা গান নিচে দেওয়া হলো

 

আসবেন প্রভু মেঘরথে আবার ফিরে ধরাতলে 

মহাতুরি ধ্বনি সহ, পাঠাবেন দূত দলে দলে।।

রবি শশী গ্রহ তারা নভে হবে জ্যোতি হারা। 

বিলাপকারী মানবেরা, দেখবে তখন কুতূহলে।।

হানাহানি হিংসা দ্বেষে, ভরে যাবে ভুবনখানি। 

মহামারী ভূ-কম্পনে, ধ্বংস হবে জগৎ জানি।।

পাপী তাপী ত্রাণকামী, হওগো প্রভুর অনুগামী। 

তাঁরই আগমনের তরে, জেগে থাক প্রতি পলে।।

 

 

খ্রীষ্ট সঙ্গীত- ১১৪; ধর্মগীত - ১৬০

মানিক নাথ

 

 

 

গানের পরে তোমার শিক্ষক প্রার্থনার মাধ্যমে সেশনটি শুরু করবেন।

তুমি বুঝতে পারছো কি, শিক্ষক তোমাকে আজকে কোন মজার ভিডিও দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন? এ সেশনে যীশুর স্বর্গ থেকে ফিরে আসার একটি ভিডিও ক্লিপ তুমি দেখতে পাবে। এ ভিডিওর মাধ্যমে তোমরা যীশু খ্রীষ্টের দ্বিতীয় আগমনের সময় ও কেমন ঘটনা ঘটবে সে বিষয়ে চমৎকার ধারণা লাভ করবে। এরপর শিক্ষক তোমাকে বাইবেলের পূর্ণ ধারণা দেয়ার জন্যে ১ থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৭ পদের আলোকে যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমনের বিষয়ে ব্যাখ্যা করে বলবেন।

 

 

 

এসো ভিডিওটি দেখি

 

তোমার শিক্ষক ভিডিও শুরু করার আগে তোমাদেরকে হয়ত কিছুটা ধারণা দিতে পারেন। তোমরা একসাথে ভিডিওটা দেখো।

ভিডিওটি নিচে দেওয়া লিংক থেকে ডাউনলোড করে অথবা ইন্টারনেট সংযোগে সরাসরি দেখতে পারবে।

https://www.youtube.com/watch?v=k4u-og MB9k&t=217 "Jesus will come again"

ভিডিওটি দেখার সময় যীশু খ্রীষ্টের পুনরাগমন বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করবে।

এরপর শিক্ষক হয়ত তোমাদের মধ্যে থেকে একজন শিক্ষার্থীকে ১ থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৭ অংশটুকু পাঠ করতে বলতে পারেন, তাই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রেখো।

 

যীশু খ্রীষ্ট আবার ফিরে আসবেন

১ থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৭

'প্রভুর শিক্ষামতই আমরা তোমাদের বলছি, আমরা যারা জীবিত আছি এবং প্রভু ফিরে আসা পর্যন্ত জীবিত থাকব, আমরা কোনমতেই সেই মৃতদের আগে যাব না। জোর-গলায় আদেশের সংগে এবং প্রধান দূতের ডাক ও ঈশ্বরের তৃরীর ডাকের সংগে প্রভু নিজেই স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন। খ্রীষ্টের সংগে যুক্ত হয়ে যারা মারা গেছে তখন তারাই প্রথমে জীবিত হয়ে উঠবে। তার পরে আমরা যারা জীবিত ও বাকি থাকব, আমাদেরও আকাশে প্রভুর সংগে মিলিত হবার জন্যে তাদের সংগে মেঘের মধ্যে তুলে নেওয়া হবে। আর এভাবে আমরা চিরকাল প্রভুর সংগে থাকব।'

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

প্রভু যীশুখ্রীষ্টের স্বর্গারোহণের সময় দুইজন স্বর্গদূত শিষ্যদের বলেছিলো যে, যীশু যেভাবে স্বর্গে গিয়েছেন সেইভাবে তিনি ফিরে আসবেন। পুনরাগমনের সময়ে মহাতুরী বা ট্রাম্পেটের আওয়াজের সাথে সাথে যীশুখ্রীষ্ট স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন। এই শব্দ হঠাৎ করে হবে, প্রধান দূত ও ঈশ্বরের তৃরীর আওয়াজ বিকট আকারে হবে এবং কেউ কিছু আগে থেকে বুঝবে না। যীশুকে আকাশে মেঘের মধ্যে দেখা যাবে। যীশুকে দেখা যাবার সাথে সাথে, যে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা ইতোমধ্যে মারা গেছে তারা প্রথমে কবর থেকে জেগে উঠবে। আমাদের হতাশ হবার কারণ নাই। মৃতরা জীবিত হয়ে যীশু খ্রীষ্টের সাথে মিলিত হওয়ার পরপরই আমরা যারা জীবিত থাকবো আমাদেরকেও প্রভুর সাথে মিলিত হবার জন্যে তুলে নেয়া হবে। আমরা সকলে যীশুখ্রীষ্টের সাথে মিলিত হবার জন্যে মেঘের মধ্যে উঠে যাবো। যীশুখ্রীষ্ট বাইবেলে প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, তিনি আমাদের জন্যে জায়গা প্রস্তুত করতে যাচ্ছেন। তিনি জায়গা প্রস্তুত করে আবার ফিরে আসবেন এবং আমাদেরকে তাঁর কাছে নিয়ে যাবেন যেন আমরা তাঁর সাথে চিরকাল থাকতে পারি (যোহন ১৪:২-৩ পদ)।

আমাদের যীশু খ্রীষ্ট মৃত্যুকে জয় করেছেন। তিনি পুনরুত্থিত হয়েছেন, মৃত্যু ও কবর তাঁকে ধরে রাখতে পারেনি। মৃত্যুর আগে যীশু খ্রীষ্ট শিষ্যদের অনেকবার বলেছেন যে, তাঁকে হত্যা করা হবে এবং তিন দিনের দিন তিনি আবার জীবিত হয়ে উঠবেন। তিনি ঈশ্বরের পুত্র, সমস্ত ঐশ্বরিক ক্ষমতা তাঁকে দেওয়া হয়েছে, তাই মানুষ তাঁকে হত্যা করেও শেষ করতে পারেনি বরং তিনি আরও শক্তিতে জেগে উঠেছেন। তিনি খুব শ্রীঘ্রই ফিরে আসবেন এবং এই জগতের বিচারের ভার তাঁকে দেওয়া হয়েছে। যারা প্রভু যীশুকে মুক্তিদাতা-ত্রাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ করেছে এবং তাঁকে অনুসরণ করেছে তাদেরকে তিনি স্বর্গে বাস করার নিশ্চয়তা ও অধিকার দিয়েছেন।

আমাদেরও উচিৎ যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করে মনে প্রাণে গ্রহণ করা এবং তাঁকে অনুসরণ করা। আমরাও যেনো যীশু খ্রীষ্টের সাথে স্বর্গে চিরকাল শান্তি ও আনন্দে থাকতে পারি।

জেনে রেখো

আগামী সেশনে যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান, স্বর্গারোহণ ও পুনরাগমনের উপর একটি কুইজ খেলা হবে, সে বিষয়ে শিক্ষক তোমাদের বিস্তারিত বলবেন।

তোমরা শিক্ষককে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

উপহার ১৮

খেলার মাধ্যমে কুইজের উত্তর দেবো

 

সুপ্রিয় শিক্ষার্থী, শ্রেণিকক্ষের সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করো। শিক্ষকের সাথে প্রার্থনার মাধ্যমে সেশনটি শুরু করবে।

আজ তোমরা কুইজ খেলার জন্যে নিশ্চয়ই প্রস্তুত হয়ে এসেছো। তোমরা পূর্বের সেশনগুলোতে যে সমস্ত বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও ধারণা পেয়েছো সে বিষয়ের উপর কুইজ খেলার জন্যে নিচের নমুনার মত একটি উত্তর কার্ড শিক্ষক তোমাদের দেবেন। এরপর শিক্ষক এলোমেলো করে প্রশ্ন করবেন। তুমি ঘটনার ক্রমানুসারে উত্তরগুলো কার্ডের নম্বর ঘরে ক্রমান্বয়ে লিখবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করার চেষ্টা করবে।

 

কুইজের খেলা

 

প্রিয় শিক্ষার্থী, নমুনা 'উত্তর কার্ড' নিচে দেওয়া হলো।

 

কার্ডে উত্তর দেওয়ার পরে শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী পরের কাজগুলো করবে। কুইজ শেষ হয়ে গেলে তোমার উত্তরকার্ডটি তোমার হাতে রাখো। কারণ, তোমার শিক্ষক তোমাদের উত্তরপত্র দিয়ে মজার কিছু করতে পারেন।

বাড়ির কাজ

 

শিক্ষক তোমাকে গির্জা বা উপাসনায় অংশগ্রহণ করে যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান, স্বর্গারোহণ এবং পুনরাগমন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে বলবেন। এছাড়াও তোমার স্কুলের ও চার্চের পাঠাগারের এবং ধর্মীয় সংগঠনের পাঠাগারের অন্যান্য খ্রীষ্টধর্মীয় বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে বলবেন। তোমরা প্রত্যেকে যে সমস্ত ধারণা ইতোমধ্যে পেয়েছো, সে সমস্ত বিষয় থেকে নিজের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর হওয়া, উপলব্ধি, এবং বিশ্বাসের একটি এক পৃষ্ঠার প্রতিবেদন আগামী সেশনে নিয়ে আসবে এবং শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করবে।

শিক্ষক তোমাকে হয়তো শেষ প্রার্থনা করতে বলতে পারেন, তাই প্রস্তুত থাকো। এরপর শিক্ষককে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By

উপহার ১৯

প্রতিবেদন উপস্থাপন

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী,

তোমার শিক্ষক এবং সহপাঠীদের শুভেচ্ছা জানাও। এই সেশনটি 'অঞ্জলি ১' এর শেষ সেশন। গীতাবলী/ খ্রীষ্ট-সঙ্গীত/ধর্মগীত থেকে সমবেতভাবে নিম্নলিখিত গানটির অনুরূপ একটি গান দিয়ে শুরু করো।

 

এসো গান গাই

প্রেমী পিতা তুমি অন্তরযামী, তোমার সম্মুখে আসি আমি 

তুমি প্রভু সবল, আমি দুর্বল, সবলে মোর হৃদে এস নামি।

পাপীর বন্ধু, কৃপা সিন্ধু, দাও মোরে শান্তি পাপ ক্ষমি, 

কর তব আত্মায়, পূর্ণ আমায়, তব গুণ গাব দিনযামী।

 

খ্রীষ্ট সংগীত- বাংলা কোরাস ৬১ সংখ্যা

এরপর তোমার প্রিয় শিক্ষক সকলকে এক এক করে সামনে ডেকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে বলবেন। তোমার উপস্থাপনের পর শিক্ষক তোমাকে দু'একটি কথা বলতে পারেন। প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর শিক্ষকের হাতে প্রতিবেদনের কাগজটি দেবে।

তোমার শিক্ষককে ধন্যবাদ জানাও। কারণ এই অঞ্জলিতে তুমি অনেক কিছু জানতে ও উপলব্ধি করতে পেরেছ। এবার বিদায় সম্ভাষণ জানাও।

Content added || updated By