SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

তৃতীয় শ্রেণি (প্রাথমিক স্তর ২০২৪) - খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - NCTB BOOK

ঈশ্বর আমাদের সবাইকে খুব ভালোবাসেন। তিনি চান আমরা প্রকৃতভাবে সুখী মানুষ হই। ঈশ্বর চেয়েছেন ইস্রায়েল জাতির মানুষও যেন সুখী হয়। সেজন্য তিনি মোশীর মাধ্যমে মিশর দেশ থেকে মরুভূমির মধ্য দিয়ে তাদের সিনাই পর্বতে নিয়ে এলেন। সেখানে তারা আগুন, ধোঁয়া ও মেঘগর্জনের মধ্যে ঈশ্বরের উপস্থিতি অনুভব করলো। ইস্রায়েল জাতি তখন খুবই ভয় পেয়েছিলো। মোশী ঈশ্বরের নির্দেশে পর্বতের উপরে উঠলেন। সেখানেই সদাপ্রভু মোশীর মাধ্যমে গোটা ইস্রায়েল জাতি অর্থাৎ আমাদের সবার জন্য দশটি আজ্ঞা দিলেন।

Content added || updated By

ঈশ্বর আমাদের ভালোবাসেন বলে তিনি চান আমরা যেন তাঁর কথা মতো চলি। তাঁর একান্ত ইচ্ছা আমরা যেন আজ্ঞাগুলো যত্ন সহকারে পালন করি। আজ্ঞাগুলো পালন করে আমরা ঈশ্বরের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও আনুগত্য প্রকাশ করি। ঈশ্বরের দেওয়া দশটি আজ্ঞা মনে রাখবো এবং তা পালন করতে চেষ্টা করবো।

 

খ) শুদ্ধ/অশুদ্ধ লিখি। 

i) ঈশ্বর দশটি আজ্ঞা দিয়েছেন। 

ii) ব্যভিচার করবে না। 

iii) বিশ্রামবারে কাজ করা ভালো।

iv) ঈশ্বর আমাদের ভালোবাসেন।

গ) নিচের গাছটিতে মা/বাবা আমার জন্য যা করেন তা লিখি।

এ পাঠে শিখলাম

  • ঈশ্বর সিনাই পর্বতে মোশীর কাছে আমাদের জন্য দশটি আজ্ঞা দিয়েছেন।
Content added By

পাঠ: ২

প্রথম, দ্বিতীয়/তৃতীয় আজ্ঞা

 

ঈশ্বর দশটি আজ্ঞা আমাদের দিয়েছেন যেন আমরা সেগুলোর অর্থ প্রথম থেকেই বুঝতে শিখি। তিনি চান আমরা তাঁর আজ্ঞাগুলোর প্রতি ভালোবাসার মনোভাব পোষণ করি। আজ আমরা বিশেষভাবে কয়েকটি আজ্ঞা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

প্রথম আজ্ঞা

"তুমি আপন প্রভু ঈশ্বরকে পূজা করবে ও কেবল তাঁরই সেবা করবে।"/ "আমা বিনা আর কাহাকেও ঈশ্বর বলিয়া মান্য করিও না।"

ঈশ্বর আমাদের জন্য এই আজ্ঞাটি দিয়েছেন যেন আমরা তাঁকে সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করি যে, তিনি সর্বদা ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। কোনদিন তাঁর কোন পরিবর্তন হয়নি এবং হবেও না। তিনি পবিত্র ও ন্যায়বান ঈশ্বর সুতরাং তাঁর মধ্যে কোন মন্দতা নেই। তিনি সর্বশক্তিমান, দয়ালু ও মঙ্গলময় ঈশ্বর। তাই আমরা তাঁর আরাধনা ও উপাসনা করবো। আমরা অন্য কাউকে ঈশ্বর বলে মান্য করবো না। ঈশ্বরের সম্মানও অন্য কাউকে দিবো না। কারণ ঈশ্বর অদ্বিতীয়। আমরা ঈশ্বরকে সম্মান করবো ও পবিত্রভাবে জীবন যাপন করবো। সবসময় আমরা স্বীকার করি যে, তিনি আমাদের পালনকর্তা, রক্ষাকর্তা, ক্ষমাশীল ও প্রেমময়। তাই সর্বদা আরাধনার মাধ্যমে তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদন করবো। একই সাথে শয়তানের/মন্দ আত্মার প্রলোভন থেকে বিরত থাকবো। আমরা আমাদের সমস্ত প্রাণ, মন, শক্তি এবং চিন্তা দিয়ে ঈশ্বর প্রভুকে ভালোবাসবো।

দ্বিতীয় আজ্ঞা (প্রোটেস্ট্যান্ট বিশ্বাস অনুযায়ী)

"প্রতিমা পূজা করবে না"

সদা প্রভু ঈশ্বর চান, আমরা যেন একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কোন দেবতাকে মান্য না করি। আমরা তাঁর সাক্ষাতে অন্য কোন দেবতা, প্রতিমা বা মূর্তি নির্মাণ না করি। তাদের সামনে কখনো প্রণিপাত না করি। সদাপ্রভু ঈশ্বর আমাদেরকে একমাত্র তাঁরই সেবা ও আরাধনা করতে প্রেরণা দেন। তিনি চান আমরা যেন, একমাত্র ঈশ্বর প্রভুকেই সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রর্দশন করি।

দ্বিতীয়/তৃতীয় আজ্ঞা

"ঈশ্বরের নাম অনর্থক নিবে না"

ঈশ্বর প্রভু সর্বশক্তিমান ও মহান। তিনি পবিত্র। তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। আমরা প্রতিনিয়ত তাঁর প্রতি বাধ্য থাকি এবং তাঁর পবিত্রতা ও বিশুদ্ধতা ধারণ করি। আমরা যেন তাঁর প্রতি আরও বিশ্বস্ত ও শ্রদ্ধাশীল হই। তাঁকে কোনভাবেই যেন অবমাননা না করি। ঈশ্বরের নাম অনর্থক মুখে নিয়ে তাঁর সম্মান নষ্ট ও তাঁকে অপবিত্র করবো না। ঈশ্বরের নাম অবজ্ঞা করবো না। অনেক সময় দেখা যায় আমরা নিজের সুবিধা বা স্বার্থের জন্য ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করে থাকি। ঈশ্বরের নামে কাউকে অভিশাপ দিবো না। সর্বদা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ভাব রক্ষা করবো। কোনভাবেই ঈশ্বরের নাম অনর্থক উচ্চারণ করবো না।

খ) ডান পাশের সঠিক তথ্য দিয়ে ছকটি পূরণ করি।

 

গ) ঈশ্বরের প্রথম আজ্ঞাটি একসাথে বলি।

 

 

ঘ) একসাথে গান করি।

মোরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে করি ভজন

 

এ পাঠে শিখলাম

- ঈশ্বর ছাড়া কারও আরাধনা করবো না।

- ঈশ্বরের নাম অনর্থক নিবো না।

- প্রতিমা পূজা থেকে বিরত থাকবো।

Content added By

পাঠ: ৩

আরও দুইটি আজ্ঞা

 

 

আমরা ইতিমধ্যে দশ আজ্ঞার কয়েকটি আজ্ঞা সম্পর্কে জেনেছি। আজ আরও দুইটি আজ্ঞা সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করবো।

তৃতীয়/চতুর্থ আজ্ঞা

 

"বিশ্রামবারে বিশ্রাম করে তা শুদ্ধভাবে পালন করবে।"

ঈশ্বর তাঁর সব সৃষ্টিকাজ শেষ করে সপ্তম দিনে বিশ্রাম নিলেন। তিনি সপ্তম দিনটিকে আশীর্বাদ করে পবিত্র করলেন। মানুষের জন্যই বিশ্রামবার সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার দিন হলো প্রভুর দিন ও বিশ্রামবার। যীশু নিজেও পবিত্রভাবে বিশ্রামবার পালন করেছেন। রবিবার দিন প্রভুর পুনরুত্থানের দিন। আমাদের সবাইকে বিশ্রামবার হিসেবেই তা পবিত্রভাবে পালন করতে বলা হয়েছে। আমরা সবাই যেন তা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে পালন করি। ঐদিন আমরা উপাসনা ও প্রভুর ভোজে অংশগ্রহণ করি। কঠিন বা ভারি কাজকর্ম করা থেকে বিরত থাকি। তাছাড়াও বিভিন্ন সেবাকাজ ও দয়ার কাজ করে থাকি। আমাদের প্রত্যেকের পবিত্র দায়িত্ব হলো, আমরা যেন দিনটি যথাযথভাবে পালন করি।

চতুর্থ/পঞ্চম আজ্ঞা

 

"তুমি পিতামাতাকে সম্মান করবে।"

পিতামাতা আমাদের প্রত্যেকের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। কারণ তাদের জন্যই আমরা পৃথিবীতে আসতে পেরেছি। তাদেরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো আমাদের একটি পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এই আজ্ঞার মাধ্যমে ঈশ্বর আমাদের নির্দেশ দেন আমরা যেন আমাদের পিতামাতাকে তাঁর দেয়া মহাদান হিসেবে গ্রহণ করি। আমরা যেন তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। পিতামাতার প্রতি সর্বদা সন্তানসুলভ মনোভাব রক্ষা করে তাদের বাধ্য থাকি। তাদের অবদান সর্বদা স্বীকার করি, মর্যাদা দেই ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সাথে যথাযথ আচরণ করে ভালোবাসার বন্ধন শক্তিশালী করে তুলি। একইসাথে পরিবারে সবার মধ্যে পবিত্রতা বজায় রাখতে চেষ্টা করি। পিতামাতার অসুস্থতা বা যে কোন প্রয়োজনে সবসময় সাহায্য সহযোগিতা করতে চেষ্টা করবো। বাবা মার বৃদ্ধ বয়সে আমরা অবশ্যই তাদের সেবা-যত্ন করবো। তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল হবো।

ক) বাম পাশের খালি ঘর ডান পাশের তথ্য অনুযায়ী পুরণ করি

 

 

 

খ) সঠিক উত্তরটিতে টিক (✓) চিহ্ন দিই।

i) বিশ্রামবার শুদ্ধভাবে/অশুদ্ধভাবে/অপবিত্রভাবে পালন করবো। 

ii) বিশ্রামবার পালন করা শিক্ষকের/মা-বাবার/সবার জন্য। 

iii) রবিবার দিন হলো পরিশ্রমের/অলসতার/উপাসনার দিন। 

iv) পিতামাতা হলেন- গুরুত্বপূর্ণ/শ্রদ্ধার/অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তি। 

v) পিতামাতার সুসময়ে/অসময়ে/অসুস্থতায় যত্ন করবো।

 

গ) নিজে নিজে বাবা-মার মঙ্গলের জন্য একটি প্রার্থনা বলি। 

ঘ) বাবা-মার সাথে উপাসনালয়ে যাচ্ছি এমন একটি ছবি আঁকি।

 

এ পাঠে শিখলাম

 

- পিতামাতাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করবো।

- বিশ্রামবার শুদ্ধভাবে পালন করবো।

Content added || updated By

পাঠ: ৪

একমাত্র ঈশ্বরের সেবা ও পূজা করা

 

 

সদা প্রভু ঈশ্বর মোশীর কাছে দশটি আজ্ঞা দিয়েছেন। আজ্ঞাগুলো হলো ঐশবিধান। সমাজে বা পরিবারে বাস করতে গেলে আমাদের বেশ কিছু নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। ঠিক একইভাবে আমাদের বিশ্বাস ও বাস্তব জীবনের জন্য ঐশী বিধানগুলোর প্রয়োগ দরকার।

"তুমি আপন প্রভু ঈশ্বরকে পূজা করবে ও কেবল তাঁরই সেবা করবে।"

সুমন প্রতিদিন সন্ধ্যায় খুব ভক্তিসহকারে মা বাবা ও পরিবারে সবার সাথে একত্রে প্রার্থনা করে। প্রার্থনার সময় কোন ধরনের দুষ্টুমী করে না বা অমনোযোগী হয় না। প্রার্থনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। নিয়মিত বাইবেল পাঠ মনোযোগ দিয়ে শোনে। বাইবেলের শিক্ষা অনুসারে জীবন যাপন করে। সুমন জানে ও বোঝে ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁর সেবা করাই আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। সে কোনো মন্দ পথে চলে না ও মন্দ কাজ করে না। সর্বদা সে গুরুজনের আদেশ-নির্দেশ পালন করে ঈশ্বরের পথে চলতে চায়। তার এ ধরনের জীবন যাপন দেখে পরিবারের সবাই খুশি। এমনকি তার বন্ধু ও সহপাঠীরা, শিক্ষক ও পাড়া-প্রতিবেশীরাও খুবই খুশি। তাকে দেখে অন্যেরাও ঈশ্বরকে ভালোবাসতে ও সেবা করতে চেষ্টা করে।

 

"প্রতিমা পূজা করবে না।" (প্রোটেস্ট্যান্ট বিশ্বাস অনুযায়ী)

 

সীমার পরিবার খুবই ধার্মিক। প্রতিদিন প্রার্থনা করে ও পবিত্র বাইবেল পাঠ করে। পবিত্র বাইবেলের বাণী সহভাগিতা করে। এইভাবে খুব শান্তিতে তাদের দিন চলছিল। গত কয়েক দিন ধরে তার ভাই রবিন নানা অজুহাতে প্রার্থনায় অনুপস্থিত থাকে। সীমার মা বেশ চিন্তিত হন। হঠাৎ সীমা একদিন দেখতে পায় তার ভাই রবিন একটি সাপের মূর্তি এনে ঘরে রাখলো। সীমা অবাক হলো। রবিনকে নানা প্রশ্ন করলো। সে উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলো। সীমা চুপি চুপি দেখতে পেলো রবিন সাপের মূর্তিটাকে পূজা করছে। সীমা দৌড়ে রবিনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। সে বললো, দাদা! তুমি কী করছো?" আমরা তো সবাই জানি একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া কোন প্রতিমাকে পূজা করবো না। সীমা আরও কাঁদতে কাঁদতে বললো, - রবিন যেন আর কোনদিন এ ধরনের মূর্তি পূজা না করে। সীমার কান্না দেখে রবিন বেশ কষ্ট পেলো। - দুঃখিত হয়ে সে সীমার কাছে ক্ষমা চাইলো। সীমা রবিনকে জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করলো। সে সীমাকে কথা দিলো আর কোনদিন এ ধরনের কাজ করবে না।

 

"ঈশ্বরের নাম অনর্থক নিবে না"

 

শুভ্র খুব বুদ্ধিমান ছেলে কিন্তু খুবই দরিদ্র। তবে সে খুব ভদ্র। কাউকে কখনও তিরস্কার করে না। দরিদ্র হলেও সবসময় ঈশ্বরকে স্মরণ করে এবং সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ জানায়। কোনভাবেই বা কোন কারণেই শুধু শুধু ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ করে না বা অযথা তার বিরুদ্ধে কোন কথাও বলে না। একদিন তার বন্ধু সমীর তাকে পরীক্ষা করার জন্য বললো, তুই তো অনেক ভালো ছেলে তুই দিনে কতবার ঈশ্বরের নাম মুখে উচ্চারণ করতে পারবি? শুভ্র সমীরের চালাকি বুঝতে পেরে, খুব সরল মনে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় বললো আমার প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রদ্ধাভরে তা স্মরণ করি। অযথা আমি তা করি না। শুভ্রর কথা শুনে সমীর একটু লজ্জিত হয়ে বললো, আমি খুবই দুঃখিত তোকে এভাবে পরীক্ষা করার জন্য। আমার ভুলের জন্য আমি ক্ষমা চাই। আজ থেকে আমিও ঈশ্বরের নাম অনর্থক নেবো না।

ক) চিন্তা করে লিখি

i) সুমন প্রতিদিন কী করে? 

ii) রবিন কিসের মূর্তি এনে ঘরে রাখলো?

iii) সীমার কান্না দেখে কে কষ্ট পেলো?

iv) আমরা কার পূজা করবো না?

v) অযথা কার নাম নেয়া যাবে না?

 

খ) বাম পাশের সাথে ডান পাশের মিল করি

গ) প্রথম আজ্ঞার গল্পের মত একটি গল্প বলি। 

এ পাঠে শিখলাম

 

- এক ঈশ্বরের সেবা ও পূজা করবো, প্রতিমা পূজা করবো না এবং ঈশ্বরের নাম অনর্থক নিবো না।

Content added By

পাঠ: ৫

বিশ্রামবার শুদ্ধভাবে পালন

 

"বিশ্রামবারে বিশ্রাম করে তা শুদ্ধভাবে পালন করবে।"

৩য় শ্রেণির ছাত্রী স্নেহা প্রতি রবিবার এবং বিশিষ্ট উৎসবের দিনগুলোতে যথারীতি ভক্তিসহকারে উপাসনায় অংশগ্রহণ করে- কারণ তার পরিবার খুবই ধার্মিক। ছোটবেলা থেকেই তার বাবা-মা সবসময় স্নেহা সঙ্গে নিয়ে উপাসনালয়ে যায়।  

প্রভুর ভোজে অংশগ্রহণ করে। তার মা বাবা প্রতিদিন বাড়িতে একসাথে প্রার্থনা করে। স্নেহা ও তার ভাই পরেশ তাতে যোগ দেয়। রবিবার দিন স্কুল খোলা থাকলেও বা তার বাবার কাজে যেতে হলেও যেকোন মূল্যে তারা উপাসনায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে না। তাদের পারিবারিক বন্ধন খুবই সুদৃঢ়। তাদের সুন্দর ব্যবহারে সবাই খুব খুশি হতো। এভাবে আশে-পাশের অনেকেই তাদের মতো হতে চেষ্টা করতে থাকে।

সজল ৫ম শ্রেণিতে পড়ে। প্রতি শুক্রবার সেবক ক্লাসে যাবার নাম করে বাড়ি থেকে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে চলে যায়। এভাবেই প্রতি রবিবার মা বাবাকে ফাঁকি দিয়ে, সেবক হবার কথা বলে, সকালের উপাসনায় যোগদান করতে আসে। সেবক না হয়ে পিছনে বসে বন্ধুরা গল্প করে ও মোবাইল ব্যবহার করে। দানের টাকাগুলো দান বাক্সে না দিয়ে টিফিন কিনে খায়। একদিন তার মার মনে একটু সন্দেহ হলো। সজল চলে আসার পর তার মাও গির্জায় এসে তার ছেলের অবস্থা দেখে খুব কষ্ট পেলেন। উপাসনা শেষ করে বাড়ি ফিরে গিয়েও সজলকে কিছু বলেননি। সান্ধ্য প্রার্থনার সময় তার মা দশ আজ্ঞাটি বাইবেল থেকে পাঠ করলেন। প্রার্থনা শেষে সজলের মা সবাইকে নিয়ে একটু আলোচনা করলেন। সারাদিন মূল্যায়নের ভিত্তিতে সজল তার ভুল মা ও পরিবারের সবার কাছে স্বীকার করলো। সে প্রতিজ্ঞা করলো আর কোনদিন উপাসনায় যোগদান করতে অবহেলা করবে না সাথে কাউকে ফাঁকিও দিবে না।

ক) সঠিক উত্তরে টিক (✓) চিহ্ন দেই।

i) স্নেহা প্রতি রবিবার উপাসনায় যোগদান করে/করে না/মাঝে মাঝে করে। 

ii) তার পরিবার অধার্মিক/ধার্মিক/অবিশ্বস্ত। 

iii) স্নেহা রাস্তায়/বাড়িতে/গির্জায়, রীতিমত দান দেয়। 

iv) তাদের পারিবারিক কলহ/বিবাদ/বন্ধন খুবই সুদৃঢ়। 

v) স্নেহার পরিবার বাড়িতে একা/একসাথে/আলাদা প্রার্থনা করে।

 

খ) ডান পাশের সঠিক তথ্য দিয়ে ছকটি পূরণ করি।

গ) বাম পাশের সাথে ডান পাশের মিল করি।

এ পাঠে শিখলাম

- কীভাবে পবিত্র ও বিশ্বস্তভাবে বিশ্রামবার পালন করা যায়।

Content added By

পাঠ: ৬

পিতামাতাকে সম্মান প্রদর্শন

 

"পিতামাতাকে সম্মান করবে"

 

সাগর পরিবারের ছোট ছেলে। ৩য় শ্রেণিতে পড়ে। সবসময় মা বাবা যে কাজ দেয় তা করে, তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে এবং তাদের অনুগত থাকে। মা বাবার নির্দেশে রীতিমত পড়াশুনা করে। মা বাবার অনুমতি ছাড়া অযথা কোথাও যায় না। কোন সমস্যা হলে বা কাউকে কষ্ট দিলে, মাকে তা জানায়। তার বাবা একদিন গভীর রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাগরের মা অস্থির হয়ে পড়েন। সাগর মাকে শান্ত হতে বলে দৌড়ে জগদীশদের বাড়ি যায়।

 

তার বাবাকে অনুরোধ জানায় ডাক্তার ডাকতে। জগদীশের বাবা সাগরের অনুরোধে তাড়াতাড়ি সাগরকে নিয়ে কাছের হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার নিয়ে আসেন। ডাক্তার এসে দেখেন তার প্রেসার খুব বেড়ে গেছে। তিনি তাড়াতাড়ি তাঁকে প্রেসারের ঔষধের সাথে একটি হালকা ঘুমের ঔষধ দেন। সাগরের বাবা ঘুমিয়ে গেলেও সাগর তার মা এবং জগদীশেরর বাবা সকাল পর্যন্ত জেগে থাকেন। ঘুম থেকে জেগে সাগরের বাবা সম্পূর্ণ সুস্থতা অনুভব করেন। তিনি তখন সাগরসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সাগরও প্রথমত ঈশ্বরকে, পরে মা বাবাকে ও জগদীশেরর বাবাকে ধন্যবাদ জানায়। মা বাবার প্রতি সাগরের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দেখে রোমিও খুবই খুশি হয়। সেও মা বাবার বাধ্য থেকে তাদের যত্ন নিতে প্রতিজ্ঞা করে।

ক) নিচের ছকে সাগরের পরিচয় লিখি।

খ) সাগরের মতো আমরা মা বাবার জন্য কী কী করি তা নিচের ছকটিতে লিখি।

গ) মা বাবাকে কীভাবে সম্মান করি সেরকম একটি ছবি সংগ্রহ করি।

 

এ পাঠে শিখলাম

 

-  যথাযথভাবে পিতা-মাতাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করবো।

Content added By