তৃতীয় শ্রেণি (প্রাথমিক স্তর ২০২৪) - হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - নৈতিক ও মানবিক গুণাবলি | NCTB BOOK

যা যথার্থ, যা সঠিক তাই ন্যায়। যা ঠিক নয় তাই অন্যায়। 'ন্যায়' মূল্যবোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ন্যায় হলো ভালো কাজ করা। অন্যায় না করা। সুস্থ সমাজ গঠনে প্রয়োজন ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। অন্যায় প্রতিরোধ করা। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য নৈতিক শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন। এ থেকে ধর্মীয় মূল্যবোধও অর্জিত হয়। ফলে আমরা ভালো-মন্দ বিচার করতে পারব। সত্য-মিথ্যা, উচিত-অনুচিতের পার্থক্য করতে পারব। কল্যাণ-অকল্যাণ, পাপ-পুণ্য বুঝতে পারব। দোষ-গুণের পার্থক্য করতে পারব। ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হলেই উন্নত জাতি গঠিত হবে। তাই নৈতিক মূল্যবোধ খুব প্রয়োজন। সমাজ- জীবনে মূল্যবোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মূল্যবোধের অভাবে সমাজে সৃষ্টি হয় নৈতিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা। এর ফলে মানুষ অন্যায়ের দিকে যায়। সমাজের মঙ্গলের জন্য মূল্যবোধ চর্চা করতে হবে। মানুষের মধ্যে ন্যায়বোধ জাগ্রত করতে হবে। এতে জীবনে পরিপূর্ণতা ও সার্থকতা আসবে।

 

 

বলতো ছবিটি কীসের?

 

এটা মহাভারতের যুদ্ধের ছবি। এসো মহাভারতের যুদ্ধের একটি গল্প পড়ি।

 

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ন্যায়-অন্যায়

অনেকদিন আগে হস্তিনাপুর নামে এক রাজ্য ছিল। ঐ রাজ্যের রাজা ছিলেন শান্তনু। শান্তনুর তিন পুত্র। দেবব্রত, চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্য। দেবব্রত বিয়ে করেননি। চিত্রাঙ্গদ অবিবাহিত অবস্থায় মারা যান। বিচিত্রবীর্যের দুই পুত্র। ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডু। ধৃতরাষ্ট্র বড় কিন্তু জন্মান্ধ ছিলেন। তাই পাণ্ডু রাজা হন। ধৃতরাষ্ট্রের একশত পুত্র ও একজন কন্যা ছিল। এদের কৌরব বলা হতো। পাণ্ডুর ছিল পাঁচ পুত্র। এদের পাণ্ডব বলা হতো। কৌরবরা লোভী ও স্বার্থপর ছিল। অপরদিকে পাণ্ডবরা ন্যায়পরায়ণ ছিল।

কৌরব ও পাণ্ডবদের মধ্যে রাজ্যের অধিকার নিয়ে বিবাদ হয়। কৌরবরা সম্পূর্ণ রাজ্য নিতে চায়। তখন তাদের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধের নাম কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ। এই যুদ্ধ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের যুদ্ধ। আঠারো দিন যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাণ্ডবরা জয়লাভ করে। তারা রাজ্য ফিরে পায়। কৌরবরা পরাজিত হয়। এই যুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

Content added || updated By

Promotion

Promotion