নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - অর্থনীতি - বাজার | NCTB BOOK

সুবেদ আলী একজন চাকরিজীবী। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে তাঁর সংসারের প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর জন্য নিউ মার্কেট গেলেন । মাছ, তরিতরকারি, চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবণ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের জিনিসের দাম যাচাই করে কিনলেন। বিক্রেতারা নগদ টাকার বিনিময়ে সুবেদ আলীর কাছে পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করলেন । শ্রাবণী অনলাইনে একটি পোশাক ক্রয়ের অর্ডার দেয় । যথাসময়ে পোশাকটি পেয়ে দাম পরিশোধ করে । ওপরের ঘটনা দুটিতে একটি পণ্যকে ঘিরে ক্রেতা ও বিক্রেতার যে সংযোগ ঘটে, তাকেই বাজার বলে ।


অর্থনীতিতে বাজার বলতে শুধু বেচা-কেনার নির্দিষ্ট স্থানকে বোঝায় না । বরং বাজার হলো একটি প্রক্রিয়া । যে প্রক্রিয়ায় বিভিন্নভাবে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দ্রব্য বা সেবা বেচা-কেনা হয় । যেমন অনলাইনে বেচা-কেনা, টেলিফোন ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে বেচা-কেনা । এ ধরনের বাজারে বিভিন্ন পণ্য বেচা-কেনা বা বিশেষায়িত পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় হতে পারে । যেমন টেলিফোনের মাধ্যমে সিমেন্ট কেনা- বেচা ইত্যাদি ।


দ্রব্যের ধরন অনুযায়ী বাজার ভিন্ন হতে পারে। যেমন, পাটের বাজার, চালের বাজার, শ্রমের বাজার, চায়ের বাজার, স্বর্ণের বাজার, শেয়ারবাজার ইত্যাদি। আবার সময় মেয়াদের পরিপ্রেক্ষিতে অতি অল্প সময়ের বাজার, স্বল্প সময়ের বাজার, দীর্ঘ সময়ের বাজার রয়েছে ।


ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে দরকষাকষির মাধ্যমে দ্রব্যের দাম নির্ধারিত হয় । এই নিয়মকে দামের নিয়ম বলে । এ দামের উপর দ্রব্যের বেচা-কেনা নির্ভর করে । দাম নির্ধারিত হলে ক্রেতা-বিক্রেতা দ্রব্য বা সেবা বেচা-কেনা করে । চাহিদা ও যোগান শক্তি দাম নির্ধারণ করে ।


ফরাসি অর্থনীতিবিদ কুর্নটের মতে, “অর্থনীতিবিদগণ বাজার শব্দ দ্বারা দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো বিশেষ স্থানকে বোঝাননি। বরং যেকোনো অঞ্চলের সমগ্রটিকে বোঝায়, যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতার অবাধ সংযোগের মাধ্যমে দ্রব্যের দাম সহজে ও দ্রুততার সাথে সমান হওয়ার প্রবণতা দেখা যায় ।” উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দোকানে চাল বিক্রি হচ্ছে – কিন্তু পরিবহন খরচের - তারতম্যটুকু বাদ দিলে মোটামুটি একই দামেই তা ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। এই হিসাবে এটি চালের বাজার হিসাবে গণ্য হতে পারে।

Promotion