নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - অর্থনীতি - জাতীয় আয় ও এর পরিমাপ | NCTB BOOK

মোট দেশজ উৎপাদন ( Gross Domestic Product বা GDP)


একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে একটি দেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে মোট যে পরিমাণ চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবা উৎপাদিত হয়, তার বাজার দামের সমষ্টিকে মোট দেশজ উৎপাদন বা GDP বলে।
মনে করি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বছরে তিনটি দ্রব্য উৎপাদিত হয়। যেমন- ১০০ কুইন্টাল ধান, ১০০০ জামা এবং ১০০০ কলম উৎপাদিত হয় । জিডিপি = ১০০ কুইন্টাল ধান × ধানের বাজার দাম + ১০০০ জামা × জামার বাজার দাম + ১০০০ কলম × কলমের বাজার দাম। এভাবে কোনো দেশে উৎপাদিত সকল দ্রব্যের পরিমাণকে নিজ নিজ দাম দ্বারা গুণ করে তার সমষ্টি বের করে জিডিপি নির্ণয় করা হয় । তবে ধান থেকে যদি চূড়ান্ত দ্রব্য হিসাবে চাল তৈরি হয়, তাহলে আমাদেরকে হিসাবের সময় ধানের বদলে চাল উৎপাদন এবং চালের দামকে হিসাবে নিতে হবে।
মোট জাতীয় আয় ( Gross National Income বা GNI)
কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত আর্থিক বছরে কোনো দেশের নাগরিকগণ কর্তৃক যে পরিমাণ চূড়ান্ত দ্ৰব্য ও সেবা উৎপন্ন হয় তার বাজার মূল্যের সমষ্টিকে মোট জাতীয় আয় (GNI) বলে ।
মোট দেশজ উৎপাদনের সাথে নিট উপাদান আয় যোগ করে মোট জাতীয় আয় পাওয়া যায় । নিট উপাদান আয় বলতে একটি দেশের নাগরিকগণ বৈদেশিক বিনিয়োগ ও শ্রম থেকে যে আয় করে এবং বিদেশি নাগরিকগণ আলোচ্য দেশে বিনিয়োগ ও শ্রম থেকে যে আয় করে এ দুয়ের বিয়োগ ফলকে বোঝায় । এই পরিমাণটি ঋণাত্মক হলে মোট জাতীয় আয় মোট দেশজ আয়ের চেয়ে কম হবে। আর এটি যদি ধনাত্মক হয়,তাহলে মোট জাতীয় আয় মোট দেশজ আয়ের চেয়ে বেশি হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে দ্বিতীয়টিই সত্য।


নিট জাতীয় আয় (Net National Income বা GNI)


কোনো জাতির মোট জাতীয় আয় থেকে মূলধন ব্যবহারজনিত অবচয় পুরণের ব্যয় ( Capital Consumption Allowance বা Depreciation) বাদ দিলে যা থাকে তাকে নিট জাতীয় আয় বলে । মূলধন ব্যবহারজনিত অবচয় ব্যয় বলতে উৎপাদন-ব্যবস্থায় মূলধনের ব্যবহারজনিত যে ক্ষয় হয়, তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে ব্যয় বহন করতে হয়, তাকে বোঝায় ৷