মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) মূলত তিনভাবে পরিমাপ করা যায়। যথা: উৎপাদন পদ্ধতি (Production Approach), আয় পদ্ধতি (Income Approach) ও ব্যয় পদ্ধতি (Expenditure Approach)।


১. উৎপাদন পদ্ধতি (Production Approach): একটি দেশের অর্থনীতি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিভক্ত । এসব খাতে এক বছরে উৎপাদিত চূড়ান্ত দ্রব্য ও সেবার মূল্য যোগ করে মোট দেশজ উৎপাদ নির্ধারণ করা হয় । বাংলাদেশে অর্থনীতিকে ১৫টি খাতে বিভক্ত করা হয় এবং খাতওয়ারি উৎপাদনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পরিশেষে ১৫টি খাতের উৎপাদনের মূল্য যোগ করে মোট দেশজ উৎপাদন নির্ধারণ করা হয় ।


২. আয় পদ্ধতি (Income Approach) : এ পদ্ধতিতে মোট দেশজ উৎপাদন হলো উৎপাদন কার্যে ব্যবহৃত উপকরণসমূহের প্রাপ্ত আয়ের সমষ্টি । উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মৌলিক উপকরণ ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন। এদের প্রাপ্ত আয় যথাক্রমে খাজনা, মজুরি, সুদ ও মুনাফা। অতএব মোট দেশজ উৎপাদন খাজনা + মজুরি + সুদ + মুনাফা । 


৩. ব্যয় পদ্ধতি (Expenditure Approach) : এ পদ্ধতিতে জিডিপি হলো কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সমাজের সব ধরনের ব্যয়ের যোগফল । সমাজের মোট ব্যয় বলতে ব্যক্তি খাতের ভোগ ও বিনিয়োগ ব্যয় এবং সরকারি ব্যয় ও নিট রপ্তানিকে বোঝায় । অতএব, ভোগ + বিনিয়োগ + সরকারি ব্যয় + নিট রপ্তানি (= রপ্তানি – আমদানি) = মোট দেশজ উৎপাদন। মোট দেশজ উৎপাদন বা Y= C + I + G + (X-M) এখানে C = ভোগ, I = বিনিয়োগ, G = সরকারি ব্যয়, (X-M) (রপ্তানি - আমদানি) = নিট রপ্তানি ।
উপরিউক্ত তিনটি পদ্ধতিতে পরিমাপকৃত মোট দেশজ উৎপাদন মোটামুটি কাছাকাছি হলে পরিমাপ সঠিক হয়েছে বলে ধরা হয়। গণনা বা হিসাবের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে খানিকটা পার্থক্য হতে পারে, তবে প্রকৃত অর্থে তা একই ফলাফল বহন করে ।