বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ব্যাংকের ভূমিকা নিম্নে আলোচনা করা হলো-


বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম বাংলাদেশ ব্যাংক । স্বাধীনতা লাভের পর দেশের ব্যাংক ও মুদ্রাব্যবস্থায় নেতৃত্ব প্রদানের জন্য ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির “বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ ১৯৭২” -এর বলে বাংলাদেশে অবস্থিত সাবেক স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সকল সম্পদ ও দায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় । অর্থ ও ঋণব্যবস্থাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে স্থিতিশীল মুল্যস্তর বজায় রাখার মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়ন, শিল্পায়ন ও আত্মকর্মসংস্থান তথা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং জনগণের সামগ্রিক কল্যাপসাধনে এ ব্যাংক নিম্নোক্তভাবে ভূমিকা পালন করে :

দেশের কৃষি খাতে প্রয়োজনমাফিক কৃষিঋণ সরবরাহে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষিঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদারভাবে ঋণ তহবিল প্রদান করে । এ ছাড়া কৃষি উন্নয়নের জন্য গবেষণা পরিচালনা ও কৃষি পরিসংখ্যান তৈরি করে এ ব্যাংক প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা পালন করে ।
দেশের দ্রুত শিল্পায়নের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক শিল্প মূলধন সরবরাহকারী বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ তহবিল সরবরাহ করে । শিল্প উদ্যোক্তা শ্রেণি-বিকাশে উদ্বুদ্ধকরণ ঋণ সহায়তা করে থাকে । বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণপত্রের বিনিময়ে ঋণ প্রদান, নতুন ব্যাংক স্থাপন এবং অনুন্নত এলাকায় বাণিজ্যিক
ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের নতুন শাখা স্থাপন করে, ঋণের যোগান নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় খাতে ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি করে । ক্ষেত্রবিশেষে এ ব্যাংক নিজ উদ্যোগে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে ।
কাজ : অর্থব্যবস্থার অভিভাবক হিসেবে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক- ব্যাখ্যা কর ।


বাণিজ্যিক ব্যাংক


দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং উন্নয়ন, কৃষি উন্নয়ন ও শিল্পায়নে অর্থসংস্থানের পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার একটি বড় অংশীদার বাণিজ্যিক ব্যাংক। এ দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহকে মালিকানার দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারি ও বেসরকারি এ দুভাগে বিভক্ত করা যায় । নিম্নে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ভূমিকা উল্লেখ করা হলো-


কৃষি ও শিল্প খাতে বাণিজ্যিক ব্যাংক


বাংলাদেশে কৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত । ফলে কৃষি উন্নয়নের উপর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করে। এ দেশের অধিকাংশ কৃষক গরিব। তাই তাদের কৃষিকাজ পরিচালনার জন্য দরকার পর্যাপ্ত কৃষিঋণের। বর্তমানে কৃষি উন্নয়নের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে সরকার ঘোষিত কৃষি ঋণদান কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে । বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক ক্রয়, পানি সেচের জন্য গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন এবং কুটির শিল্প স্থাপনের জন্য বিভিন্ন মেয়াদি ঋণ প্রদান কর্মসূচি পরিচালনা করে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে দেশের কৃষক মাত্র ১০ টাকা জমা রেখে ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ পাচ্ছে । এতে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের সকল কৃষকের ডাটা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে ।

বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিক্ষিপ্ত ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যক্তিগত সঞ্চয়কে আমানত হিসেবে গ্রহণ করে । তা থেকে ব্যাংকসমূহ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পকারখানা নির্মাণ ও সম্প্রসারণে ঋণ সহায়তা দান করে থাকে । শিল্পের কাঁচামাল এবং উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে বাণিজ্যিক ব্যাংক সহজ শর্তে পর্যাপ্ত ঋণ প্রদান করে । এছাড়া নতুন নতুন কোম্পানির শেয়ার কিনে দেশে কলকারখানা গড়তে সহায়তা করে ।
বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও সহায়তা করে । বর্তমানে এ দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো রিক্সা ও ভ্যান ক্রয়, মুদির দোকান খোলা, চাল-ডাল-গম ভাঙানোর মিল স্থাপন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জামানতের বিপরীতে ঋণ প্রদান শুরু করেছে । এর ফলে অনেক লোকের কর্মসংস্থান সম্ভব হবে বলে আশা করা যায় ।
কাজ : দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার একটি বড় অংশীদার বাণিজ্যিক ব্যাংক- ব্যাখ্যা কর ।


বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক


কৃষি খাতের গতিশীলতা বৃদ্ধি, কৃষি স্বনির্ভরতা অর্জন এবং সার্বিক কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় । স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৭৩ রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে পাকিস্তান কৃষি ব্যাংকের সকল দায় ও সম্পদ নিয়ে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান । নিম্নে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা উল্লেখ করা হলো- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষি ও কৃষির সাথে জড়িত খাতের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে ।
ক. আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষক দরিদ্র । তাই কৃষকের ছোটখাটো প্রয়োজন মেটানোর জন্য (যেমন- সার, বীজ, কীটনাশক ঔষধ প্রভৃতি ক্রয় এবং জমি চাষ, ফসল নিড়ানো, ফসল কাটা, মাড়াই ইত্যাদি কাজের ব্যয় নির্বাহের জন্য) এ ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি ঋণ প্রদান করে । এ ঋণ সাধারণত ১৮ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হয় ।
খ. জমি সমতল করা, অগভীর নলকূপ স্থাপন, চাষের জন্য গবাদিপশু এবং হালকা কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করা প্রভৃতি কাজের জন্য এ ব্যাংক কৃষককে মধ্যম মেয়াদি ঋণ প্রদান করে । এ ঋণ সাধারণত ১৮ মাস থেকে ৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয় ।
গ. জমি ও ভারী যন্ত্রপাতি (যেমন- ট্রাক্টর, হারভেস্টর ইত্যাদি) ক্রয়, গভীর নলকূপ স্থাপন, গুদামঘর নির্মাণ, হিমাগার নির্মাণ, পানি সেচের উদ্দেশ্যে খাল খনন, চা বাগানের উন্নয়ন এসব কাজের জন্য কৃষি ব্যাংক কৃষককে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিয়ে থাকে । এ ঋণ ৫ বছর থেকে ২০ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয় ।

এ ব্যাংক কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপনে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে । এ ব্যাংক হাঁস-মুরগি ও পশুপালন, মৌমাছি ও গুটিপোকার চাষ, মৎস্য খামার তৈরি প্রভৃতি কাজের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে, যা নিয়ে আমাদের বেকার যুবকরা তাদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পায় ।
কাজ : বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কৃষিঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকায়ন সম্ভব-ব্যাখ্যা কর ।


বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড


গত ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে সরকার ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে Vendors Agreement স্বাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা নামক প্রতিষ্ঠান দুটি একীভূত করে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড গঠিত হয় । বিলুপ্ত প্রতিষ্ঠান দুটির দায়, সম্পদ ও জনবল নতুন প্রতিষ্ঠানের নিকট অর্পিত হয়েছে । নিম্নে এ ব্যাংকের ভূমিকা উল্লেখ করা হলো-
এ ব্যাংক সাধারণত আমাদের দেশের সাথে সম্পৃক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ঋণ প্রদান করে, যেমন- পাটশিল্প, চামড়াশিল্প, চিনিশিল্প ও সারশিল্প ইত্যাদি । পল্লি এলাকায় কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে অগ্রাধিকার প্রদান করছে, যা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষি উন্নয়নে সহায়ক ।
এই ব্যাংক সরকারি ও বেসরকারি খাতে নতুন শিল্প নির্মাণ, পুরাতন শিল্প সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিয়ে থাকে। এই ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা সর্বোচ্চ ২০ বছর । শিল্প কারখানার প্রয়োজনে এ ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি ঋণও প্রদান করে । উদ্যোক্তাকে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় কারিগরি পরামর্শ প্রদান এবং শিল্পায়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকার গবেষণা, পরিসংখ্যান ও তথ্য সংগ্রহ করে থাকে ।
স্বনির্ভরতা অর্জন, উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে মেয়াদি ঋণ প্রদান করছে। নারীকে আত্মনির্ভরশীল করার জন্য ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করছে। বেসরকারিভাবে শিল্প উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিনিয়োগ সুবিধা দান ও শিল্প কার্যক্রমের রূপরেখা প্রণয়ন করে ।
কাজ : উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের ভূমিকা লিখ ।


গ্রামীণ ব্যাংক


গ্রামের অতি স্বল্প জমির মালিক, ভূমিহীন এবং অন্যান্য অতি দরিদ্র নারী-পুরুষের মাঝে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি বিশেষ আর্থিক প্রতিষ্ঠান হলো গ্রামীণ ব্যাংক । জনসাধারণকে এ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে । ১৯৮৩ সালে একটি বিশেষ অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংক আত্মপ্রকাশ করে । এটি সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক নয়। আইনত এর প্রধান মালিক হচ্ছেন এর দরিদ্র ত্রিশ লক্ষ গ্রাহকবৃন্দ। নিম্নে এ ব্যাংকের ভূমিকা উল্লেখ করা হলো-

এ ব্যাংক গ্রামের ভূমিহীন দরিদ্র কৃষকদেরকে সহজ শর্তে ও জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান করে । কৃষি খাতের উন্নয়নের জন্য এ ব্যাংক শাকসবজি চাষ, গাভী পালন, মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগি পালন ও জমি চাষাবাদ ইত্যাদি খাতে ঋণ প্রদান করে । এ ব্যাংক পর্যাপ্ত ঋণ প্রদান করায় কৃষককে গ্রাম্য মহাজনদের কাছ থেকে কঠিন শর্তে ও চড়া সুদে ঋণ নিতে হয় না ।
দেশের অবহেলিত জনসাধারণকে অকৃষি খাতে সম্পৃক্ত করার জন্য গ্রামীণ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে (যেমন- বাঁশ ও বেতের কাজ, বিড়ি তৈরি, সাবান তৈরি, কাপড় তৈরি ও মিষ্টি তৈরি) ঋণ প্রদানসহ উপকরণ সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে। গ্রামীণ ফোনের কারিগরি সহায়তায় গ্রামের সাধারণ জনগণের মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার জন্য পল্লিফোন চালু করে ।
সুবিধাবঞ্চিত বেকার জনগোষ্ঠীকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় সংঘবদ্ধ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে পরিচালিত ব্যাংক হলো গ্রামীণ ব্যাংক। এ ব্যাংক ভিক্ষুককে সুদবিহীন ঋণ প্রদান করে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করে। নারীকে কর্মে উদ্বুদ্ধকরণ ও নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশে এ ব্যাংক সহায়তা করে। দরিদ্র অসহায় নারীদের ঋণ হিসেবে পল্লিফোন প্রদান করা হয় । এর আয় থেকে ঋণ পরিশোধ করে নারীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয়। প্রতিবছর এর লভ্যাংশ থেকে দরিদ্র গ্রাহক মালিকদের ডিভিডেন্ডও (Dividend) প্রদান করা হয়।


সমবায় ব্যাংক


সমবায়ের নীতিমালার ভিত্তিতে গঠিত এবং পরিচালিত ব্যাংককে সমবায় ব্যাংক বলে। পারস্পরিক সহায়তার ভিত্তিতে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান করাই সমবায় ব্যাংকের উদ্দেশ্য। সরকার ও দেশের সমবায়ীর যৌথ মালিকানায় পরিচালিত বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির শেয়ারের ৮৬% মালিক সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো এবং ১৪% সরকারের মালিকানায় । নিম্নে সমবায় ব্যাংকের ভূমিকা উল্লেখ করা হলো-
এ ব্যাংক দারিদ্র্য বিমোচন এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমবায় সমিতির সদস্যদের চাহিদা অনুযায়ী কৃষিঋণ প্রদান করে । ঋণ প্রদানের খাতগুলো হলো- কৃষি, ভূমি উন্নয়ন, আউশ, আমন ও বোরো ধান চাষ, শীতকালীন ফসল ও শাকসবজি উৎপাদন, বিভিন্ন ধরনের কৃষি উপকরণ যেমন- বীজ, সার, কীটনাশক, সেচযন্ত্র ও ট্রাক্টর ইত্যাদি। কৃষিঋণের মেয়াদ তিন ধরনের হয়, যেমন : স্বল্পকালীন - ৬ মাসের জন্য, মধ্যম মেয়াদি - ২ বছরের জন্য এবং দীর্ঘকালীন- ৫ বছরের জন্য প্রদান করে । সমবায়ের ভিত্তিতে সংগঠিত কৃষিভিত্তিক শিল্পসমূহে এবং নির্মাণশিল্পে এ ব্যাংক অর্থায়ন করে ।

এ ব্যাংক গ্রামীণ যুব ও যুব মহিলাদের কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম গ্রহণ করে । সরকারের ‘একটি বাড়ি একটি খামার' প্রকল্পের অংশীদার সমবায় ব্যাংক । এছাড়া দেশের আত্মকর্মসংস্থানের বিভিন্ন উপায়, যেমন- মাছ চাষ, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন এবং উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ প্রক্রিয়াজাতকরণে সমবায় ব্যাংক অর্থায়ন করে থাকে । যার ফলে দেশের বেকারত্ব লাঘবের পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনে এ ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ।