নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - অর্থনীতি - বাংলাদেশের অর্থনীতি | NCTB BOOK

উৎপাদন ভিত্তিতে নিরূপিত আমাদের দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) ১৫টি খাত নিয়ে গঠিত । খাতসমূহ কৃষি, শিল্প ও সেবা-এ তিনটি বৃহৎ খাতে বিভক্ত । বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তির একটি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি, কেননা এ দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠেছে কৃষি কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে । বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ইত্যাদি কৃষির অগ্রগতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত । কিন্তু কৃষি প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল বলে তা স্থিতিশীল অর্থনীতি নির্দেশ করে না । কারণ এ দেশে প্রতিবছরই বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও খরা ইত্যাদি নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন অনিশ্চিত থাকে । তাই বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে শিল্পায়িত অর্থনীতি গড়ে তোলা প্রয়োজন । কেননা শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকীকরণ, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বিদেশের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব । কৃষি ও শিল্প খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি সার্বিক সেবা খাতের বিভিন্নমুখী কার্যক্রম, যেমন শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ গড়ে তোলা, নারী ও শিশু উন্নয়ন, যুব উন্নয়ন, ক্রীড়া উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন করে বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব । এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কৃষি খাতে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে ব্যাপক সরকারি সহায়তা যেমন পর্যাপ্ত ভর্তুকি প্রদান, সেচের জন্য নরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, কৃষিঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি, প্রতিকূল আবহাওয়া ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু বীজ উদ্ভাবন এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশে সহায়তা প্রদান প্রভৃতি কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে । বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে শিল্প খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে । সার্বিক সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত প্রায় সবগুলো খাতই মোটামুটি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখায় এ খাতের প্রবৃদ্ধিও সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে ।
নিচের লেখচিত্রে বৃহৎ খাতভিত্তিক জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার উপস্থাপন করা হলো :


 


উপরোক্ত লেখচিত্রে ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ -এই তিন বছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারের কালানুক্রমিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। চিত্রে দেখানো হয়েছে যে ২০১৪-১৫ সালে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.৫৫ শতাংশ। ২০১৫-১৬ সালে তা ছিল ৭.১১ শতাংশ। ২০১৬-১৭ সালে ছিল ৭.২৮ শতাংশ। অর্থাৎ খুব ধীরে হলেও আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়ছে । জিডিপি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান যে তিনটি খাত অবদান রেখেছে, তারা হচ্ছে:- কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাত। উপরোক্ত চিত্রে স্তম্ভরেখার মাধ্যমে এই তিনটি খাতের প্রবৃদ্ধির হারের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। চিত্রে দেখা যাচ্ছে। কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধির হার এই তিন বছর যথাক্রমে ছিল ৩.৩৩ শতাংশ, ২.৭৯ শতাংশ এবং ২.৯৭ শতাংশ । অনুরূপভাবে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি হার ছিল যথাক্রমে ৯.৬৭ শতাংশ, ১১.০৯ শতাংশ এবং ১০.২২ শতাংশ। সেবা খাতের প্রবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৫.৮০শতাংশ, ৬.২৫ শতাংশ এবং ৬.৬৯ শতাংশ। অতএব দেখা যাচ্ছে, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্প্রতি নেতৃত্ব দিচ্ছে উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার সম্পন্ন সার্বিক শিল্প খ

 সার্বিক খাতসুমুহ ২০১৪-২০১৫ ২০১৫-২০১৬ ২০১৬-২০১৭
কৃষি ১৬.০১ ১৫.৩৫ ১৪.৭৪
শিল্প ৩০.৪২ ৩১.৫৪ ৩২.৪২
সেবা ৫৩.৫৭ ৫৩.১১ ৫২.৮৪
সর্বমোট ১০০ ১০০ ১০০


তালিকা থেকে বোঝা যায় যে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে কি ধারণ ভাবে প্রধান অবদান রাখছে সেবা থাক প্রায় ৫ শতাংশ। তার পরেই করেছে শিল্প খাতের অবদান প্রায় ৩২ শতাংশ । সবচোর কম এবং সমান गদান রাখছে কৃষি শীত পার ১৫  শতাংশ ।

Content added || updated By