নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - অর্থনীতি - বাংলাদেশের অর্থনীতি | NCTB BOOK

রমিজ একজন ধনি কৃষক।  তিনি ফলনশীল ধান চাষ করেন, গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচের স্থান এবং ব্যবহার করে অধিক ধান উৎপাদন করেন। উৎপাদিত যান- পাটের আঁশ দিয়ে তৈরী করে বাজার থেকে খাদ্য ক্রয় করে  তাদের খাদ্যর অভাব করেন।
উপরের অনুচ্ছেদ থেকে আমরা বলতে পারি, কৃষি খাতের উন্নতি ও মাধুনিক ও সাজের যোগান দেয় শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আসে কৃষি খাত থেকে।


বাংলাদেশে কৃষি ও শিল্প খাতের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা নিচে আলোচনা করা হলো;


আমাদের দেশের অধিকাংশ শির কৃষিভিত্তিক। এ দেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন- পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি শিল্প প্রধান কাঁচামালের জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের দেশ কোনো  কোনো আঞ্চলিক শিল্পায়ন ঘটে, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পাট শিল্প  , চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে  ,উত্তরবঙ্গে চিনিশিল্প গড়ে উঠেছে। এ শিল্পের প্রসারে ফলে কাঁচামালের বর্ধিত চাহিদার কারণে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে । জনগণের আয় বৃদ্ধির ফলে সঞ্চয় ও মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে এবং শিল্পক্ষেত্রে বেশি করে বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে ।
আমাদের ক্ষুদ্র শিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি। কৃষিতে উৎপাদিত বাঁশ-বেত ক্ষুদ্র শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে শিল্পে উৎপাদিত চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক, ওষুধ ইত্যাদি কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয় । তাই শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পজাত অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়, যা শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে, যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় করা যাবে ।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, আমাদের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অপরের পরিপূরক । তাই আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের জন্য দুটি খাতের একই সঙ্গে উন্নতি একান্তভাবে কাম্য ।

Content added By