নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান - আমাদের সম্পদ | NCTB BOOK

আমরা যে নানারকম খনিজ লবণ, পেন্সিলের সিস, ট্যালকম পাউডার, চীনা মাটির থালা-বাসন এরকম হাজারো জিনিস ব্যবহার করি, তার অধিকাংশই মাটি কিংবা শিলা থেকে পাওয়া খনিজ পদার্থ। বেশির ভাগ খনিজ পদার্থই কঠিন অবস্থায় পাওয়া যায়। এদের নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংযুক্তি থাকে। এখন পর্যন্ত প্রকৃতিতে প্রায় ২৫০০ রকমের খনিজ পদার্থ পাওয়া গেছে। খনিজ পদার্থ ধাতব কিংবা অধাতব দুটোই হতে পারে। ধাতব খনিজ পদার্থের মাঝে অন্যতম হলো লোহা (Fe), তামা (Cu), সোনা (Au) কিংবা রুপা (Ag)। অধাতব খনিজ পদার্থের মধ্যে রয়েছে কোয়ার্টজ (Quartz), মাইকা (Mica) কিংবা খনিজ লবণ।কয়লা, , গ্যাস, পেট্রোল এসব কী খনিজ পদার্থ? হ্যাঁ, অবশ্যই এগুলোও খনিজ পদার্থ। তবে এদেরকে জৈব খনিজ পদার্থ বলে। এদের সম্পর্কে তোমরা পরবর্তী পাঠে বিস্তারিত জানতে পারবে।
টেবিল ৮.১: কয়েকটি সাধারণ খনিজ পদার্থের ব্যবহার

খনিজ পদার্থের ভৌত ধর্ম
খনিজ পদার্থগুলো সাধারণত দানাদার বা কেলাসাকার হয়। অনেক খনিজ পদার্থ আছে, যাদের রাসায়নিক সংযুক্তি একই কিন্তু তাদের কেলাস গঠন ভিন্ন যে কারণে তাদের ভৌত ধর্মও ভিন্ন। যেমন- গ্রাফাইট ও ডায়মন্ড। যদিও দুটি পদার্থই কার্বন দিয়ে গঠিত, কিন্তু গঠনের ভিন্নতার কারণে গ্রাফাইট (যা আমরা পেন্সিলে ব্যবহার করি) নরম হয় কিন্তু ডায়মন্ড বা হীরা এখন পর্যন্ত জানা খনিজের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন খনিজ পদার্থ । খনিজ পদার্থগুলো সাধারণত কঠিন হয় এবং একেকটি খনিজের কাঠিন্য একেক রকম। বেশি কঠিন খনিজ খুব সহজেই কম কঠিন খনিজে দাগ কাটতে পারে; কিন্তু কম কঠিন খনিজ বেশি কঠিন খনিজে দাগ কাটতে পারে না। কাঠিন্য অনুযায়ী সবচেয়ে নরম খনিজ হলো ট্যালক (Talc), যা দিয়ে ট্যালকাম পাউডার তৈরি হয় এবং আগেই বলা হয়েছে, সবচেয়ে কঠিন খনিজ হলো হীরা বা ডায়মন্ড। খনিজ পদার্থের নির্দিষ্ট দ্যুতি থাকে। ধাতব খনিজ যেমন: পাইরাইটস ধাতুর মতোই দ্যুতি প্রদর্শন করে অর্থাৎ অনেকটা ধাতুর মতোই চকচক করে। খনিজ হীরা অধাতু এবং এটিকে দেখে সাধারণ কাচের মতো মনে হতে পারে কিন্তু এটি কাটার পর এর দ্যুতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।কিছু কিছু খনিজ পদার্থ আছে, যেগুলো খুব স্বচ্ছ এবং এর মধ্যে আলো প্রবেশ করতে পারে। যেমন: কোয়ার্টজ বা সিলিকা, আবার কিছু কিছু খনিজ পদার্থ আছে, যার মধ্য দিয়ে আলো প্রবেশ করলেও এর মধ্য দিয়ে কোনো বস্তু দেখা যায় না, যেমন: অ্যারাগনাইট। অন্যদিকে এমন খনিজও আছে, যার মধ্য দিয়ে মোটেই আলো প্রবেশ করতে পারে না, যেমন: ক্যালসাইট (Calcite) বা চুনাপাথর। সাধারণত প্রতিটি খনিজ পদার্থেরই একটা নির্দিষ্ট বর্ণ আছে, যা দিয়ে একটি থেকে আরেকটিকে আলাদা করা যায় ।
বেশির ভাগ খনিজ পদার্থে ফাটল থাকে, যা দেখে অনুমান করা যায় এটি ভাঙলে কী ধরনের আকার- আকৃতিবিশিষ্ট ছোট ছোট টুকরা পাওয়া যাবে। বেশির ভাগ খনিজ পদার্থের আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৫-৩.৫- এর মধ্যে হয়, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হতে পারে।
 

রাসায়নিক ধর্ম: খনিজ পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম নির্ভর করে এতে বিদ্যমান উপাদানের উপর।

 

Content added By