একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত | NCTB BOOK

মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে সংস্কৃতি এবং সৃজনশীলতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ইতিহাস পর্যালোচনায় এটি নানাভাবে প্রমাণিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিও উল্লেখ করার মতো। আমাদের বাংলা ভাষা হাজার বছর আগে এখনকার মতো ছিল না। কালের বিবর্তনে এ ভাষা বর্তমান রূপ পরিগ্রহ করেছে। বর্তমান বিশ্বায়ন ব্যবস্থার প্রভাব সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেও ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। একসময় আমাদের দেশে “ভালোবাসা দিবস বলে কোনো দিবস পালিত হতো না, এখন এদেশের তরুণদের কাছে এটি জনপ্রিয় একটি দিবস। আজকের বাংলাদেশি একজন কিশোর এবং একজন মার্কিন কিশোর একই সময়ে, একই ধরনের প্রযুক্তি এবং পদ্ধতি ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ফলে একইভাবে যে কোনো বিষয় অবলোকন, চিন্তাভাবনা, মতবিনিময় করতে সক্ষম হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে ভিন্ন জাতি, বর্ণ, ধর্মের মানুষ একটি একক সমাজে বসবাসের ফলে মানুষের যোগাযোগের ব্যাপকভা এবং বিশ্বের সকল সংস্কৃতির মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া সুযোগ ঘটেছে, যেটি বিশ্বগ্রামের ধারণার সাথে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ।

অবশ্য এর বিরূপ প্রভাবও লক্ষ করা যাচ্ছে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মুখে পড়ছে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর ভাষা ও সংস্কৃতি। বিলুপ্ত হতে বসেছে অনেক ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি। আমাদের দেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যও রিমিক্স, ফিউশন কিংবা পপ কালচারের ক্ষতিকারক প্রভাবে প্রভাবান্বিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে নিজস্ব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এবং ঐতিহ্যগত দিক ব্লগ, ওয়েবসাইট, চ্যানেল ইত্যাদিতে ভুলে ধরতে হবে। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা, সুস্থ ও আকর্ষণীয় বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার এবং এ বিষয়ে সচেতনতামূলক ও আগ্রহ সৃষ্টির কাজ চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই বৈশ্বিক সাংস্কৃতিক বিশ্বায়নে কোনো দেশের মানুষের পক্ষে আমাদের দেশের আমাদের সাংস্কৃতি স্বমহিমায় জায়গা করে নিতে পারবে ।

Content added By