একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - বাংলা - সাহিত্যপাঠ | NCTB BOOK

আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে 

কেমন নিবিড় হয়ে । কখনো মিছিলে কখনো-বা

 একা হেঁটে যেতে যেতে মনে হয়-ফুল নয়, 

ওরা শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর । 

একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রংকে

এ-রঙের বিপরীত আছে অন্য রং, 

যে-রং লাগে না ভালো চোখে, যে-রং সন্ত্রাস আনে 

প্রাত্যহিকতায় আমাদের মনে সকাল-সন্ধ্যায়- 

এখন সে রঙে ছেয়ে গেছে পথ-ঘাট, সারা দেশ 

ঘাতকের অশুভ আস্তানা ।

আমি আর আমার মতোই বহু লোক

রাত্রি-দিন ভূলুণ্ঠিত ঘাতকের আস্তানায়, কেউ মরা, আধমরা কেউ, 

কেউ বা ভীষণ জেদি, দারুণ বিপ্লবে ফেটে পড়া । চতুর্দিকে

মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ

বুঝি তাই উনিশশো উনসত্তরেও

আবার সালাম নামে রাজপথে, শূন্যে তোলে ফ্ল্যাগ,

বরকত বুক পাতে ঘাতকের থাবার সম্মুখে।

সালামের চোখ আজ আলোচিত ঢাকা,

সালামের মুখ আজ তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা ।

দেখলাম রাজপথে, দেখলাম আমরা সবাই

জনসাধারণ

দেখলাম সালামের হাত থেকে নক্ষত্রের মতো মতো *

ঝরে অবিরত অবিনাশী বর্ণমালা |

আর বরকত বলে গাঢ় উচ্চারণে

এখনো বীরের রক্তে দুঃখিনী মাতার অশ্রুজলে

ফোটে ফুল বাস্তবের বিশাল চত্বরে

হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায় । সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ,

 শিহরিত ক্ষণে ক্ষণে আনন্দের রৌদ্রে আর দুঃখের ছায়ায় । [সংক্ষেপিত]

Content added By
২০ অক্টোবর ১৯২৯
২০ নভেম্বর ১৯২৯
২৩ অক্টোবর ১৯২৯
২৪ নভেম্বর ১৯২৯
দৈনিক বাংলায়
মাসিক দিগ্বিজয় পত্রিকা
দৈনিক ইত্তেহাদ
সাপ্তাহিক সোনার বাংলা