একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - বাংলা - সাহিত্যপাঠ | NCTB BOOK

বনফুলের “তাজমহল” গল্পটি তাঁর ‘অদৃশ্যলোকে’ গল্প-সংকলন থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গল্পে অবিস্মরণীয় মহিমা পেয়েছে সমাজের নিচুতলার মানুষ ফকির শাজাহানের পত্নীপ্রেম । সে সম্রাট শাহজাহানের মতো তাজমহল নির্মাণ করতে না পারলেও ইট-বালি দিয়ে নিজের মতো করে মৃত বেগমের কবর গড়েছে। কাহিনি, ঘটনা ও চরিত্র রূপায়ণের দিক থেকে “তাজমহল” গল্পটি বিস্তৃত পরিসরের নয়। খুব সংহত শিল্প বিন্যাসই এ গল্পের বৈশিষ্ট্য। বনফুল তাঁর অন্যান্য গল্পের মতো এ গল্পেও অত্যন্ত সচেতনভাবে মিতবাক। এ গল্পের শেষ দুটি বাক্য না পড়লে গল্পের অন্তগূঢ় তাৎপর্য ধরা পড়ে না। অদ্ভুত চমকের ভেতর দিয়ে সেখানে প্রকাশিত হয় এক গভীর জীবনসত্য। এখানে মানবিক অনুভূতির বাস্তব চিত্রের প্রকাশ ঘটেছে, যেখানে লেখক যুগযুগ ধরে গড়ে ওঠা মানবিক সম্পর্ককে মহিমান্বিত করেছেন। এ গল্পে লেখক নিরপেক্ষ দর্শকের মতো ঘটনা সাজিয়েছেন নিরাসক্ত বর্ণনায়। গল্পটি উত্তম পুরুষে বর্ণিত হওয়ায় কাহিনি, ঘটনা, চরিত্র কোনো কিছু সম্পর্কেই লেখক কোনো মন্তব্য ও বিশ্লেষণ যোগ করেননি। নিতান্ত প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য বর্ণনা ও সংলাপের বাইরে নেই কোনো বাহুল্য। সবচেয়ে বড় কথা, এ গল্পে যে জীবনসত্য ফুটে উঠেছে তা গল্পকার পাঠককে সরাসরি বলেননি। গল্প তার নিজস্ব প্রক্রিয়ায়ই পাঠককে দিয়ে তা উপলব্ধি করিয়ে নেয়।

Content added By

Promotion