(৫টি প্রশ্নের ৩টির উত্তর দিতে হবে।)
হিতোপদেশ ২২:৬-এ বলা হয়েছে, "ছেলের বা মেয়ের প্রয়োজন অনুসারে শিক্ষা দাও; তাহাতে সে বয়োবৃদ্ধ হইলেও তাহা হইতে বিচ্যুত হইবে না।" এই বাক্যের মূল উদ্দেশ্য হলো সন্তানদের সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া, যাতে তারা বড় হয়ে সঠিক পথে চলতে পারে এবং জীবনের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষাগুলোর প্রতি অনুগত থাকে।
এই পদটির ব্যাখ্যা:
পদটির প্রথমাংশে বলা হয়েছে, "ছেলের বা মেয়ের প্রয়োজন অনুসারে শিক্ষা দাও।" এখানে প্রতিটি শিশুর আলাদা প্রয়োজন, যোগ্যতা এবং ব্যক্তিত্বের কথা বোঝানো হয়েছে। প্রত্যেকটি শিশুর মানসিক গঠন, প্রতিভা এবং দুর্বলতা ভিন্ন, তাই তাদের শিক্ষার ধরনও আলাদা হওয়া উচিত। এটি বোঝায় যে একজন পিতামাতা বা শিক্ষককে শিশুর চাহিদা ও গুণাবলির প্রতি নজর রেখে তাকে নির্দেশনা দিতে হবে, যাতে শিশুটি তার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারে।
শিক্ষা শুধু একাডেমিক জ্ঞান নয়, বরং নৈতিক, আধ্যাত্মিক এবং মানসিক গঠনের মাধ্যমেও হতে হবে। যখন একটি শিশু ছোট থাকে, তখন তাকে জীবনের সঠিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা এবং আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ। এই শিক্ষাগুলো শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনে তার আচরণ, সিদ্ধান্ত এবং বিশ্বাসের ভিত্তি তৈরি করে।
এই পদটি ভবিষ্যতের দিকে ইঙ্গিত দেয়। এটি বলে যে শিশুকে যে পথ দেখানো হবে, সেই পথেই সে চলবে, এমনকি সে বৃদ্ধ হলেও। অর্থাৎ শৈশবকালে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা প্রদান করা হয়, তা শিশুর জীবনভর চলার পথকে প্রভাবিত করবে। যদি সঠিকভাবে তাকে নৈতিকতা, সততা, এবং আধ্যাত্মিকতার ভিত্তিতে শিক্ষা দেওয়া হয়, তবে সে পরবর্তী জীবনে সঠিক পথে চলবে এবং এই নৈতিকতা ও মূল্যবোধের থেকে বিচ্যুত হবে না।
এই পদটি পিতামাতার প্রতি একটি দায়িত্ব তুলে ধরে। পিতামাতা বা শিক্ষকদের দায়িত্ব হলো তাদের সন্তানদের ভালো করে পর্যবেক্ষণ করা, বুঝতে পারা যে কোন ক্ষেত্রে তাদের শক্তি এবং দুর্বলতা আছে, এবং সেই অনুযায়ী তাদের শেখানো। একটি শিশুর সঠিক গঠন ও বিকাশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
"বয়োবৃদ্ধ হইলেও তাহা হইতে বিচ্যুত হইবে না" এই অংশটি শেখায় যে সঠিক শিক্ষা এবং দীক্ষার প্রভাব মানুষের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী হয়। শৈশবে যা শেখা হয়, তা বড় হলে জীবনের সিদ্ধান্ত ও আচরণে প্রভাব ফেলে। এজন্য শৈশবে সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার গুরুত্ব রয়েছে।
হিতোপদেশ ২২:৬ শিক্ষা দেয় যে প্রতিটি শিশুর নিজস্ব প্রয়োজন, যোগ্যতা, এবং সীমাবদ্ধতার প্রতি লক্ষ রেখে তাকে সঠিকভাবে শিক্ষিত করা উচিত। যদি শৈশবকালেই তাকে সঠিক দিকনির্দেশনা ও নৈতিক শিক্ষায় গড়ে তোলা হয়, তবে সেই শিক্ষা তার সারাজীবনের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে। এটি পিতামাতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, কারণ তারা শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়তে মূল ভূমিকা পালন করে।