Academy

এই নিষ্ঠুর অভিযোগে গফুর যেন বারোধ হইয়া গেল। ক্ষণেক পরে ধীরে ধীরে কহিল, কাহন খানেক খড় এবার ভাগে পেয়েছিলাম। কিন্তু গেল সনের বকেয়া বলে কর্তামশায় সব ধরে রাখলেন? কেঁদে কেটে হাতে পায়ে পড়ে বললাম, বাবু মশাই, হাকিম তুমি, তোমার রাজত্ব ছেড়ে আর পালাব কোথায়? আমাকে পণদশেক বিচুলি না হয় দাও। চালে খড় নেই। বাপ বেটিতে থাকি, তাও না হয় তালপাখার গোঁজাগাঁজা দিয়ে এ বর্ষা কাটিয়ে দেব, কিন্তু না খেতে পেয়ে আমার মহেশ যে মরে যাবে।

উদ্দীপকে ‘অভাগীর স্বর্গ' গল্পের যে সমাজচিত্রের ইঙ্গিত রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।

Created: 2 years ago | Updated: 2 years ago
Updated: 2 years ago

উদ্দীপকে 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পের দরিদ্র ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের সামাজিক জীবনের ইঙ্গিত রয়েছে। 

আমাদের সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। এই বৈষম্য ছাড়াও ধর্ম-বর্ণ, জাতি-সম্প্রদায়ের মধ্যেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা যায়। অতীতে হিন্দুধর্মের বিভিন্ন সামাজিক রীতিনীতিতে মানুষে মানুষে অনেক বৈষম্য ছিল। সমাজ সংস্কারের রীতিতে তা সিদ্ধ হলেও মানবিকতার দিক থেকে তা ছিল অত্যন্ত হীন- অমানবিক।

উদ্দীপকে তৎকালীন হিন্দু জমিদার শাসিত সমাজব্যবস্থায় একজন দরিদ্র মুসলমানের অসহায়ত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে সমাজের সচ্ছল মানুষের শোষণচিত্র প্রকাশ পেয়েছে। বাবা-মেয়ের সংসারে একমাত্র গরু মহেশকে বাঁচাতে সে বিচুলি প্রার্থনা করেছে। 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পে কাঙালী তার মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে কাঠের জন্য অনেক মিনতি কান্নাকাটি করেও পায়নি। গফুরও পায়নি এক আঁটি বিচুলি বা খড় মহেশকে খাওয়ানোর জন্য। কাঙালী নীচ জাত বলে মায়ের সৎকারে কাঠ চেয়ে বঞ্চিত হয়েছে। গফুর অন্য জাতের বলে শোষণের শিকার হয়েছে। এভাবে উদ্দীপক ও 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পে গরিব, বঞ্চিত ও শোষিত মানুষের সমাজচিত্র সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

2 months ago

বাংলা সাহিত্য

Please, contribute to add content.
Content
Promotion