সংজ্ঞা শব্দের ব্যুৎপত্তি । সমৃ + অ + সিয়াম আপু। 'সম্যক আয়তে অনয়া ইতি' সংজ্ঞা (যার দ্বারা কোন বিষয়ে সম্যক জ্ঞান হয়)। সংজ্ঞা : যার দ্বারা কোন বিষয়ের স্বরূপ সম্পর্কে বিশেষভাবে জানা যায় তাকে সংজ্ঞা বলে।
নিম্নে কয়েকটি বিষয়ের সংজ্ঞা ও উদাহরণ প্রদত্ত হল।
১। আদেশ প্রকৃতি বা প্রভাবের কিংবা তার কোন অংশের যে রূপ পরিবর্তন হয়, তাকে বলা হয় আদেশ। যেমন- লট বিভক্তিতে স্থা- ধাতুর স্থানে 'ডিষ্ঠ' (তিষ্ঠতি, তিষ্ঠতা, তিষ্ঠন্তি ইত্যাদি) এবং দৃশ ধাতু স্থানে 'পশ্য' (পশ্যতি, পশ্যতঃ পশ্যন্তি) ইত্যাদি হয়। আবার বৃদ্ধ শব্দ স্থানে আদেশ হয় 'জ্য' (বৃদ্ধ > ) ।
২। আগম আগম শব্দটির অর্থ "আগমন করা"। প্রকৃতি বা প্রত্যয়ের সঙ্গে অতিরিক্ত বর্ণের আগমন বা উপস্থিতিকে আগম বলে। যেমন:- বনস্পতি শব্দে 'বন' ও 'পতি' শব্দের মধ্যে অতিরিক্ত বর্ণ 'স' এর উপস্থিতিকে বলা হয় আগম
৩। গুণ ঘরের গুণ বলতে ই, ঈ স্থানে 'এ' উ উ স্থানে 'ও'; য ঘৃ স্থানে 'অর' এবং ৯ স্থানে অন হওয়াকে বোঝায়। যেমন জিজ্ঞে, ভীডে, প্রো, কৃ= কর, বু= কল।
৪। বৃদ্ধি : অ স্থানে আ ই ঈ স্থানে ঐ উ উ স্থানে ঔ, খ, স্থানে আর এবং ৯ স্থানে আল
হওয়াকে বৃদ্ধি বলে। যেমন- মনু + অ = মানবঃ বিধি অবৈধঃ নীতি + অক = নৈতিক + মুখ + অক = মৌখিকা ( ঐ), শীত + ত = শীতার্ত (ঋ = আর)।
৫। উপধা শব্দের অন্তর্গত শেষ বর্ণের পূর্ব বর্ণকে উপধা বলে। যেমন- 'লতা' একটি শব্দ। এই শব্দের
শেষ বর্ণ আ এবং আ এর পূর্ববর্তী বর্ণ 'ত'। সুতরাং 'ত' একটি উপধা।
৬। পদ সুপ ও তিন্তু যুক্ত শব্দকে পদ বলে। যেমন- নর একটি শব্দ। এর সঙ্গে ঔ এই সুপ বা শব্দবিভক্তি যুক্ত হয়ে নরৌ 'পদ' গঠিত হয়েছে। আবার বন্ধু একটি ধাতু। এর সাথে 'ভি' এই তিন্তু বা ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে 'বদতি' পদ।
৭। সুপ যে সমস্ত বিভক্তি শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে পদ গঠন করে, তাদের বলা হয় সুপ। সুপ -এর অন্য নাম শব্দবিভক্তি। যেমন 'নর' একটি শব্দ। এর সাথে ঔ বিভক্তি যুক্ত হয়ে নিবৌ' পদ গঠিত হয়েছে। সুতরাং 'ঔ' একটি শব্দ বিভক্তি। আবার লতা একটি শব্দ। এর সঙ্গে ভিস্ (ভিন্ন) বিভক্তি যুক্ত হয়ে "লতাতি" পদ গঠিত হয়েছে। সুতরাং ভিস্ (ভিঃ) একটি শব্দবিভক্তি।
৮। ভিক্ যে সব বিভক্তি ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ গঠন করে সেগুলোকে 'ভি' বলে। তিন্তু -এর অন্য নাম ক্লিয়াবিভক্তি। যেমন- 'পঠ' একটি ধাতু; এর সঙ্গে তিন্তু বিভক্তি যুক্ত হয়ে পঠতি ক্রিয়াপদটি
গঠিত হয়েছে। আবার 'হস্' একটি ধাতু; এর সঙ্গে 'ভূ' যুক্ত হয়ে হসতু' ক্রিয়াপদ গঠিত হয়েছে। সুতরাং 'ভি' ও 'তু' তি বা ক্রিয়াবিভক্তি।
৯। প্রকৃতি শব্দ ও ক্রিয়ার মূলকে প্রকৃতি বলে। যেমন দেহ + অক = দৈহিকঃ এখানে দৈহিক শব্দটির মূল দেহ। সুতরাং দেহ একটি প্রকৃতি। আবার পিঠ + তি পঠতি। এখানে পঠতি ক্রিয়ার মূল "পর্ব"। সুতরাং পঠও একটি প্রকৃতি। ১০। প্রাতিপদিক যা ধাতুও ন্যয়, প্রত্যয়ও নয়, অথচ যার অর্থ আছে তার নাম প্রাতিপদিক। যেমন- চন্দ্র,
সূর্য, লতা, বৃক্ষ ইত্যাদি। ১১। প্রত্যয়। যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দ এবং শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাদের প্রত্যয় বলা হয়। যেমন- √পর + অন = পঠনম্। এখানে 'পঠ' একটি ধাতু। এর সঙ্গে 'অনট্' এই বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে পঠনম' শব্দটি গঠিত হয়েছে। সুতরাং 'অনট্' একটি প্রত্যয়। আবার 'পৃথিবী' + অ = 'পার্থিব'। এখানে 'পৃথিবী' একটি শব্দ। এর সঙ্গে অন প্রতায় যুক্ত হয়ে 'পার্থিব' এই নতুন শব্দ গঠিত হয়েছে। সুতরাং 'অর্থ' আরেকটি প্রত্যয়।
আরও দেখুন...