গৃহকে আসবাবপত্র দিয়ে সুসজ্জিত করলেই চলবে না গৃহের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষার কথাও চিন্তা করতে হবে। নিজ গৃহকে সুসজ্জিত করে রাখলে সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। তবে কেবল দামি, চমৎকার আসবাব দিয়ে ঘর সাজালেই চলবে না, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে হবে। ময়লা, ধুলা পড়া আসবাব ঘরের সৌন্দর্য নষ্ট করে। যত্নের অভাবে আসবাবের স্থায়িত্ব হ্রাস পায়, মাকড়সার জাল, পিঁপড়া, পোকার উপদ্রব হয় এবং রোগ-জীবাণু ছড়ায়।
তাই গৃহের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রয়োজন—
- গৃহে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা :
- আলো, উত্তাপ এবং জীবাণুনাশক শক্তির অফুরন্ত উৎস হলো সূর্য। সূর্যের আলো অন্ধকার দূর করে। উত্তাপ রোগ-জীবাণু ধ্বংস করে। আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষা করে। তাই ঘরের মধ্যে যাতে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে সেই দিকে লক্ষ রেখে আসবাব বিন্যাস করতে হবে ।
- বায়ুর অক্সিজেন আমাদের দেহ কোষকে বাঁচিয়ে রাখে। স্বাস্থ্যের উপর বায়ুর প্রভাব খুব বেশি। তবে গৃহে যাতে সূর্য কিরণ এবং বায়ু সহজেই প্রবেশ করতে পারে সেজন্য গৃহের অবস্থান দক্ষিণ অথবা পূর্বমূখী হলে ভালো হয়।
গৃহের মেঝে ও আসবাব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা :
প্রতিদিন গৃহের মেঝে ও আসবাব পরিষ্কার করা আবশ্যক। গৃহের মধ্যে চলাফেরার ফলে মেঝে ময়লা হয় আসবাবের উপর ধুলাবালি জমে। এই ধুলা থেকে সর্দি, কাশি হয়। তাই প্রতিদিন ঘরের মেঝে, রান্নাঘর, গোসলখানার মেঝে ও আসবাবপত্র ধোয়া, মোছা করা আবশ্যক। এক্ষেত্রে সপ্তাহে এক দিন জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। দরজা, জানালা, রান্নাঘরের দেয়াল, বেসিন, টয়লেটের প্যান/কমোড ইত্যাদি প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করা উচিত।
- পর্দা, বিছানার চাদর, টেবিল ক্লথ, বিভিন্ন আসবাবের কভার পরিষ্কার করা :
- ঘরের পর্দা, চাদরে ও কভারে ধুলা জন্মায়। প্রতি সপ্তাহে বিছানার ছাদর পরিষ্কার করা উচিত। ৩/৪ মাস পর পর ঘরের পর্দা ও আসবাবের কভার পরিষ্কার করা উচিত। এতে ঘরের ধুলাবালি দূর হয়ে ঘরের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
- রাতে কাজ অনুযায়ী পর্যাপ্ত কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা :
- কাজ অনুযায়ী পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকলে চোখের ক্ষতি হয়। তাই পড়াশোনা, রান্নাঘরের কাজ, খাবার টেবিল ইত্যাদি জায়গায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক ।
- গৃহের ভিতর ও চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা :
- ঘরের ময়লা ফেলার জন্য ঘরের ভিতর বিন রাখা প্রয়োজন। সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য গৃহের চারপাশের পরিবেশ-পরিষ্কার রাখাও আবশ্যক। ঘরের চারপাশে ময়লা, আবর্জনা, খোলা নর্দমা, ঝোপ-ঝাড় থাকলে পোকামাকড় ও মশার উপদ্রব হয়। মারাত্মক রোগ ছড়ায়। তাই ঘরের চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। ময়লা, আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থান বা ডাষ্টবিনে ফেলতে হবে। গৃহের চারপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে পোকামাকড় ধ্বংস করার ঔষধ স্প্রে করতে হবে। টবে বা চারপাশে পানি জমে যেন মশার উপদ্রব না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।