SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র - ব্যাকটেরিয়ার গঠন

একটি আদর্শ ব্যাকটেরিয়ামের গঠন (Structure of a Typical Bacterium)

 ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রোক্যারিওটিক বা আদি প্রকৃতির। বিভিন্ন শ্রেণির ব্যাকটেরিয়ার দৈহিক গঠনেও ভিন্নতা রয়েছে। তবে সাধারণতভাবে একটি আদর্শ ব্যাকটেরিয়ামে যে সব উপাদান পাওয়া যায় তা নিচে বর্ণনা করা হলো।

১. ক্যাপসুল (Capsule) : (ব্যাকটেরিয়াম কোষের জটিল কোষপ্রাচীরের সর্বাপেক্ষা বাইরের স্তর হচ্ছে ক্যাপসুল। একে স্লাইম স্তর (slime layer)-ও বলে। পলিস্যাকারাইড বা পলিপেপটাইডে গঠিত এ স্তরটি সাধারণত পিচ্ছিল ও আঠালো । এটি ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিকূল অবস্থা থেকে রক্ষা করে।

২. কোষপ্রাচীর : ক্যাপসুলের নিচের পুরু, দৃঢ় ও স্থিতিস্থাপক কত গুরটি কোষপ্রাচীর। কোষপ্রাচীরের প্রধান উপাদান মিউকোপেপটাইড এবং গৌণ উপাদানগুলোর মধ্যে প্রোটিন, লিপিড, পলিস্যাকারাইড ইত্যাদি রয়েছে। প্রাচীরের বিভিন্ন জায়গায় Sum ব্যাসের ছিদ্র রয়েছে। ছিদ্রগুলোর মধ্য দিয়ে রাসায়নিক পদার্থ চলাচল করতে পারে। 

৩. কোষঝিল্লি : কোষপ্রাচীরের ঠিক নিচে অবস্থিত সজীব ঝিল্লির নাম কোষঝিল্লি বা প্লাজমা মেমব্রেন। এটি ফসফোলিপিড ও প্রোটিন নিয়ে গঠিত। কোষের ভেতরে ও বাইরে দ্রবীভূত পদার্থসমূহের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা কোষঝিল্লির কাজ ।

৪. সাইটোপ্লাজম : প্লাজমামেমব্রেনে বেষ্টিত অবস্থায় কোষের স্বচ্ছ ও বর্ণহীন অংশকে সাইটোপ্লাজম বলে। এতে নিম্নোক্ত বস্তুসমূহ পাওয়া যায়।

• রাইবোজোম : এটি প্রোটিন ও RNA-র সমন্বয়ে গঠিত । এর কাজ প্রোটিন সংশ্লেষণ।

• ক্রোম্যাটোফোর (Chromatophore ) : ব্যাকটেরিয়ারকোষে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে না। তবে কিছু ব্যাকটেরিয়ায়  ক্রোম্যাটোফোর থাকে। এগুলো সালোকসংশ্লেষণে সহায়তা করে।

• কোষ গহবর : ব্যাকটেরিয়ার সাইটোপ্লাজমে অত্যন্ত ক্ষুদ্র গহ্বর দেখা যায় । গহ্বরগুলো কোষরসে পূর্ণ।

• মেসোজোম : (ব্যাকটেরিয়া কোষের প্লাজমামেমব্রেন কখনও কখনও ভেতরের দিকে ভাঁজ হয়ে থলির মতো যে বিশেষ ধরনের গঠন তৈরি করে তাকে মেসোজোম বলে। এটি ব্যাকটেরিয়ার শ্বসন ও কোষ বিভাজনের সাথে জড়িত। প্রতিলিপনের (রেপ্লিকেশন) পর দুটি অপত্য DNA অণু বিচ্ছিন্নকরণের সাথেও মেসোজোম সংশ্লিষ্ট বলে ধারণা করা হয় ।

• ভলিউটিন (Volutene) : তরুণ ব্যাকটেরিয়ার সাইটোপ্লাজমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দানার আকারে ভলিউটিন থাকে। বয়স বৃদ্ধির সংগে সংগে এসব দানা কোষ গহ্বরে স্থানান্তরিত হয়। এগুলো খাদ্য সঞ্চয় করে।

৫. নিউক্লিওয়েড (Nucleoid) : ব্যাকটেরিয়ার নিউক্লিয়াস নিউক্লিয়ার ঝিল্লি, ক্রোমাটিন জালিকা ও নিউক্লিওলাস-বিহীন । সাইটোপ্লাজমে একটি মাত্র দ্বিসূত্রক DNA অত্যন্ত প্যাঁচানো, আবর্তাকারে থাকতে দেখা যায়, একে নিউক্লিওয়েড "বা সিউডোনিউক্লিয়াস বলে। এর কেন্দ্রে RNA থাকে। এ RNA অণুকে ঘিরে পলিঅ্যামিনস বা নিউক্লিওয়েড প্রোটিন থাকে । (হিস্টোন প্রোটিন থাকে না ফলে ইউক্যারিওটিক কোষের মতো ক্রোমাটিন বস্তু গঠিত হয় না, একে নগ্ন ব্যাকটেরিয়াল ক্রোমোজোমও বলা হয়। নিউক্লিওয়েডের বিভাজন ক্ষমতা, পরিব্যক্তি এবং বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ ক্ষমতা রয়েছে।

৬. ফ্ল্যাজেলা (Flagella) : সর্পিলাকার এবং দণ্ডাকার ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে সচরাচর এক বা একাধিক ফ্ল্যাজেলা দেখা যায় । ফ্ল্যাজেলা সাইটোপ্লাজমীয় বহিঃস্তর থেকে সৃষ্টি হয়ে কোষঝিল্লি ও কোষপ্রাচীর ভেদ করে বাইরে প্রসারিত সূক্ষ্ম দীর্ঘ সুতার মতো অংশ। এটি ফ্ল্যাজেলিন প্রোটিনে গঠিত এবং তিনটি অংশে বিভক্ত (i) সূত্র, (ii) সংক্ষিপ্ত হুক এবং (ii) ব্যাসাল বডি। ব্যাকটেরিয়ার চলনে ফ্ল্যাজেলা সক্রিয় অংশ গ্রহণ করে ।

৭. পিলি (Pilli) : (ফ্ল্যাজেলা ছাড়াও কোনো কোনো ব্যাকটেরিয়ার (গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাটেরিয়ার) বহির্গাত্রে অসংখ্য সূক্ষ্ম সূত্রাকার উপাঙ্গ দেখা যায়, এগুলোকে পিলি বা ফিমব্রি বলে।) ফ্ল্যাজেলার তুলনায় পিলি সংখ্যায় বেশি, দৈর্ঘ্যে ও দৃঢ়তায় কম । এগুলো পিলিন (pilin) নামক প্রোটিনে গঠিত । পিলি পোষক দেহের সাথে নিজেকে আটকে রাখতে সাহায্য করে।

৮. প্লাজমিড (Plasmid) (ব্যাকটেরিয়ার প্রধান বংশগতি বস্তু DNA ছাড়াও কিছু ক্ষুদ্র, গোলাকার, দ্বিতন্ত্রী DNA অণু সাইটোপ্লাজমে থাকতে দেখা যায়, এগুলো প্লাজমিড। এরা স্ববিভাজনক্ষম এবং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য নির্ধারিত জিন বহন করে। বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের ভিত্তিতে প্লাজমিড বিভিন্ন ধরনের হয়। (জীবপ্রযুক্তিতে ট্রান্সজেনিক ব্যাকটেরিয়া বা জীব সৃষ্টিতে ভেক্টর হিসেবে প্লাজমিড ব্যাপক ব্যবহৃত হয়।

Content added || updated By
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.