SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

কোনটি পানির জীবাণুনাশক হিসাবে ব্যবহার করা হয়?

Created: 2 years ago | Updated: 2 years ago

উদ্ভিদ বা প্রাণী দেহের বেশিরভাগ অংশ জৈব যৌগ দিয়ে গঠিত হয়। তাই জীবজগতের জীবন ক্রিয়ায় জৈব যৌগ বা রসায়নের গুরুত্ব অতুলনীয়। জীবনকে অব্যাহত রাখার জন্য জীবদেহের পুষ্টিসাধন, বৃদ্ধি, সংরক্ষণ, ক্ষয়পূরণ, বংশধারা, জীবের জন্ম, চলনশক্তি, দেহের মধ্যে নানা রাসায়নিক বিক্রিয়া ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। জীবনের এই প্রয়োজনগুলো জৈব যৌগের মাধ্যমেই পূরণ হয়। তাই জীবন ক্রিয়ায় জৈব যৌগের ভূমিকা আলোচনা করা অত্যাবশ্যকীয়।
নিচে জৈব যৌগের গুরুত্ব সম্পর্কে পয়েন্ট আকারে আলোচনা করা হলো

 

১. দেহের পুষ্টি, বৃদ্ধি ও গঠনে জৈব যৌগের ভূমিকা
দেহের পুষ্টি বৃদ্ধি গঠন করে প্রতিরোধের জন্য আমরা যেসব খাদ্য খেয়ে থাকি তাদেরকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। আর আমরা যা কিছু খাদ্য গ্রহণ করে থাকি তা সবই জৈব যৌগ। যথা
ক) কার্বোহাইড্রেট
আমাদের খাদ্যের প্রধান উপাদান হলো জৈব যৌগ। চাল গম আলু ভুট্টা প্রভৃতির মূল উপাদান হলো শ্বেতসার জাতীয় পদার্থ।আখের চিনি মধু বা ফল থেকে চিনি জাতীয় পদার্থ বা কার্বোহাইড্রেট আমরা গ্রহণ করি প্রতিনিয়ত। এইসব খাদ্য অন্ত্রের রস যারা জীর্ণ হয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ার দ্বারা দ্রাক্ষা শর্করা বা গ্লুকোজে পরিণত হয়ে রক্তের সঙ্গে মিশে যায় এবং দেহের পুষ্টি সাধন করে।
খ) আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাদ্য
দেহের গঠন এবং ক্ষয়প্রাপ্ত কোষের পূনর্গঠনের জন্য আমিষ জাতীয় খাদ্য যেমন মাছ, মাংস, ছানা, দুধ, নানা রকম ডাল প্রভৃতির প্রয়োজন। এই জাতীয় খাদ্যের প্রধান উপাদান হলো প্রোটিন। এর মধ্যে কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন থাকে। প্রটিন ইন্ধনরূপে ব্যবহৃত হয়ে দেহে শক্তি যোগায়।
গ) স্নেহ জাতীয় পদার্থ
নারকেল তেল, সরষের তেল, বাদামের তেল, ঘি, মাখন যা আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি সেগুলি সব স্নেহ জাতীয় পদার্থ। এগুলি সবই জৈব পদার্থ। এই জাতীয় খাদ্য দেহের শক্তি উৎপন্ন করে। ভিটামিন দেহের গঠন সংরক্ষণ এবং ক্ষয়পূরণে অপরিহার্য। ভিটামিনও জৈব পদার্থ ছাড়া আর কিছু নয়।

২. এনজাইম হিসেবে জৈব যৌগের গুরুত্ব
জীবদেহের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া অবিরাম ঘটে চলেছে। এই বিক্রিয়া গুলি ঘটায় কতকগুলি জৈব অনুঘটক বা এনজাইম। এই এনজাইমগুলি জটিল জৈব।
৩. হরমোন
দেহের নানা গ্রন্থি থেকে বিভিন্ন হরমোন নিঃসৃত হয়। দেহের স্বাভাবিক এবং সুষম বৃদ্ধির জন্য হরমোনের ক্রিয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এইসব হরমোনগুলি সবই জৈব যৌগ।
৪. জিন হলো জীবের বংশ পরম্পরা ধারক ও বাহক। জিন হল জৈব যৌগ। এই জিনের মধ্যে থাকে ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড বা ডিএনএ এবং রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড বা আরএনএ। এই দুই রকম নিউক্লিক অ্যাসিড জীবনের ধারাকে অক্ষুন্ন রাখে।
৫. প্রাণীদেহের চলাচল করার জন্য এবং দেহের পেশী সঞ্চালন করার জন্য যে শক্তি দরকার হয় তাই স্থিতি শক্তি হিসেবে দেহের মধ্যে জমা থাকে। দেহে এই স্থিতিশক্তি জমা থাকে একটি জৈব যৌগের মধ্যে— যার নাম এডিনোসিন ট্রাই ফসফেট বা এটিপি। এই এটিপি থেকেই জোনাকি পোকার দেহে আলোর সৃষ্টি হয় এবং সমুদ্রের বৈদ্যুতিক মাছের দেহে তড়িৎ শক্তি সৃষ্টি হয়।
৬. হিমোগ্লোবিন একটি জৈব যৌগ
দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন বয়ে নিয়ে যায় হিমোগ্লোবিন; এই হিমোগ্লোবিন প্রোটিন জাতীয় জৈব যৌগ।
৭. মানুষের স্বাচ্ছন্দ বিধানে ব্যবহৃত নানান জৈব যৌগ
মানুষের স্বাচ্ছন্দ বিধানের সাবান, বিভিন্ন অঙ্গরাগ ও রঞ্জক পদার্থ, কৃত্রিম সিল্ক, নাইলন, টেরিলিন প্রভৃতি আবিষ্কার জৈব রসায়নের অবদান। এছাড়া পেট্রোল, কেরোসিন, ডিজেল, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি জৈব যৌগ জ্বালানি হিসাবে সভ্যতায় যুগান্তর তৈরি করেছে।
৮. রোগ নিরাময়ে জৈব যৌগ
নানারকম জৈব যৌগ রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন ম্যালেরিয়ার কুইনাইন, নিউমোনিয়ায় পেনিসিলিন, যক্ষায় স্ট্রেপটোমাইসিন, টাইফয়েডে ক্লোরোমাইসিটিন প্রভৃতি। ক্লোরোফরম, ইথার প্রভৃতি চেতনানাশক পদার্থ অস্ত্রোপচারেরকে যন্ত্রণা শুন্য করেছে।


 

Related Question

View More