Admission
রসায়ন - রসায়ন - দ্বিতীয় পত্র - অ্যালিফেটিক অ্যারোমেটিক যৌগের মধ্যে পার্থক্য

অ্যালিফেটিক যৌগঃ

অ্যালিফেটিক শব্দটির অর্থ চর্বিজাত। গ্রিক শব্দ ‘অ্যালিফার’ অর্থাৎ চর্বি থেকে এটি এসেছে। চর্বিজাত হউক বা না হউক সকল মুক্ত শিকল হাইড্রোকার্বন ও সম্পৃক্ত চাক্রিক হাইড্রোকার্বন এবং তাদের জাতককে অ্যালিফেটিক যৌগ বলে। অথাৎ যে সব জৈব যৌগের অণুতে কার্বন পরমাণুসমূহের মুক্ত শিকল বিদ্যমান তাদের অ্যালিফেটিক যৌগ বলা হয়। যেমন: CH3-CH3 (ইথেন), CH3-CH2-OH (ইথানল), সাইক্লোপ্রপেন ইত্যাদি। গঠনের উপর ভিত্তি করে অ্যালিফেটিক যৌগসমূহকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

ক. মুক্ত শিকল অ্যালিফেটিক যৌগ ও

খ. বদ্ধ শিকল বা চাত্রিক অ্যালিফেটিক যৌগ।

অ্যালিফ্যাটিক যৌগগুলি কার্বন-কার্বন একক বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সম্পৃক্ত যৌগ (অ্যালকেন) অথবা কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে অসম্পৃক্ত যৌগ গঠন করে। হাইড্রোজেন ছাড়াও অন্যান্য মৌলও কার্বন শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে পারে। সাধারণত অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার এবং ক্লোরিনই সবচেয়ে বেশি যুক্ত হয়। সর্বনিম্ন জটিল অ্যালিফ্যাটিক যৌগটি হল মিথেন (CH4)।

অ্যারোমেটিক যৌগ:

যে সব চাক্রিক বা হেটারোচাক্রিক যৌগে (4n+2) সংখ্যক সঞ্চারণশীল পাই (π) ইলেকট্রন থাকে, তাদেরকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলে। 4n+2 সূত্রে n= 123 হলে সঞ্চারণশীল পাই ইলেকট্রন দাড়ায় যথাক্রমে 6, 10, 14। বেনজিন, ফেনল ও টলুইনে 6টি করে সঞ্চারণশীল পাই ইলেকট্রন থাকে। ন্যাপথালিন যৌগ 10টি পাই ইলেকট্রন থাকে। তাই এরা সবাই অ্যারোমেটিক যৌগ।

 

অ্যারোমেটিক যৌগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো বেনজিন(C6H6), ন্যাপথ্যালিন(C10H8)এবং অ্যানথ্রাসিন(C14H10)^১। অ্যারোমেটিক যৌগগুলো সাধারণত 5, 6 অথবা 7 সদস্যের সমতলীয় যৌগ। অর্থাৎ হাইড্রোকার্বন গুলোকে একটি সুষম পঞ্চভূজ,ষড়ভুজ অথবা সপ্তভূজ দিয়ে গাঠনিক বন্ধন বোঝানো হয়। অ্যারোমেটিক যৌগে কখনো ত্রিবন্ধন ব্যবহৃত হয় না।

অ্যালিফেটিক ও অ্যারোমেটিক যৌগের মধ্যে পার্থক্য:

যে সব জৈব যৌগের অণুতে কার্বন পরমাণুসমূহের মুক্ত শিকল বিদ্যমান তাদের অ্যালিফেটিক যৌগ বলা হয়। অ্যালিফেটিক ও অ্যারোমেটিক যৌগের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১. অ্যালিফেটিক যৌগ প্রধানত মুক্ত শিকলবিশিষ্ট। অন্যদিকে অ্যারোমেটিক যৌগসমূহ চাক্রিক বা বলয় আকৃতির হয়।

২. অ্যালিফেটিক যৌগ সম্পৃক্ত বা অসম্পৃক্ত হতে পারে। অন্যদিকে সকল অ্যারোমেটিক যৌগ অসমম্পৃক্ত।

৩. অ্যালিফেটিক যৌগে কার্বনের পরিমাণ কম থাকে। অন্যদিকে অ্যারোমেটিক যৌগে কার্বনের পরিমাণ বেশি থাকে।

 

৪. অ্যালিফেটিক যৌগে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া সহজে সংঘটিত হয় না। অন্যদিকে অ্যারোমেটিক যৌগে সহজেই প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটে।

৫. অ্যালিফেটিক হ্যালাইড অত্যন্ত সক্রিয়। অন্যদিকে অ্যারোমেটিক হ্যালাইড তুলনামূলকভাবে কম সক্রিয়।

৬. অ্যালিফেটিক হাইড্রক্সি যৌগ নিরপেক্ষ। অন্যদিকে অ্যারোমেটিক হাইড্রক্সি যৌগ অম্লীয়।