কখনো কখনো সমাজে এমনও সমস্যা দেখা দেয় যার সমাধানে কুরআন ও হাদিস থেকে কোন সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। তখনো সমাজের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে কোনো না কোনো উপায় বের করতেই হয়। কারণ, সমাজ শান্ত ও স্বাভাবিক থাকলেই কেবল মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
উদ্দীপকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির সঙ্গে ইসলামি শরিয়তে ইজমার মিল খুঁজে পাওয়া যায় এবং ইসলামি শরিয়তে এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ইজমা শব্দের অর্থ ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ঐকমত্য পোষণ করা বা একমত হওয়া। 'ইজমা' হলো- শরিয়তের কোনো হুকুম বা বিধানের ব্যাপারে একই যুগের উম্মতে মুহাম্মদির মুজতাহিদগণের একমত হওয়া। উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনায় ইজমারই প্রতিফলন ঘটেছে।
ইজমার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ইসলামি আইনের উৎস হিসেবে কুরআন ও সুন্নাহর পরেই ইজমার স্থান। আল্লাহ তায়ালা এবং রাসুলুল্লাহ (স) ইজমার এ অবস্থান, গ্রহণযোগ্যতা, নির্ভরতা ও মর্যাদা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, 'আর এমনিভাবে আমি তোমাদের করেছি মধ্যমপন্থি জাতি, যেন তোমরা অন্যান্য মানুষের ওপর (হেদায়াতের) সাক্ষী হয়ে থাকতে পার এবং রাসুলও তোমাদের ওপর সাক্ষী হয়ে থাকতে পারে' (সুরা আল-বাকারা: ১৪৩)। এ প্রসঙ্গে মহানবি (স) বলেন, 'বিভ্রান্তি বা ভুল বিষয়ের ওপর আমার উম্মত একমত হবে না' (আহকামুল কুরআন)। এসব ঘোষণা থেকে শরিয়তের উৎস হিসেবে ইজমার গুরুত্ব বোঝা যায়। তাছাড়া ইজমার মাধ্যমে গৌণ সমস্যার সমাধানে নতুন আইন যেমন উদ্ভাবিত হয় তেমনি মুসলিমদের মধ্যে ঐকমত্য তথা জাতীয় ঐক্য সংরক্ষিত হয়। ইজমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি ইসলাম ধর্মের প্রগতিশীলতা ও পরিপূর্ণতার অন্যতম পরিচায়ক।
উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, শরিয়তের তৃতীয় উৎস ইজমার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ইসলামে একটি স্বীকৃত বিষয় এবং এটি ইসলামের অনন্যতাকেই নির্দেশ করে।