হযরত আবু বকর (রা) খিলাফতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন। তখন কতক ভণ্ডনবির আবির্ভাব হলো, অনেকে ইসলাম ত্যাগ করল, আবার অনেকে জাকাত দিতে অস্বীকার করল। হযরত আবু বকর (রা) জাকাত অস্বীকারকারীদের হত্যার সিদ্ধান্ত নিলে সব সাহাবা ঐকমত্য হলো। তবে কেউ কেউ নীরব রইলেন।
উদ্দীপকের ঘটনা ইসলামি শরিয়তের তৃতীয় উৎস ইজমাকে নির্দেশ করে। মানবজীবনের চাহিদা এবং সমস্যা পরিবর্তনশীল। নতুনভাবে উদ্ভূত এসব চাহিদা ও সমস্যার সমাধান কুরআন ও হাদিসে সরাসরি পাওয়া নাও যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা ইজমার সুযোগ রেখেছেন। উদ্দীপকেও ইজমার বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, হযরত আবু বকর (রা)-এর খিলাফতকালে ভণ্ডনবির আবির্ভাব ঘটে এবং অনেকে জাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়। এতে আবু বকর (রা) সব সাহাবাদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাকাত অস্বীকারকারীদের হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যা ইজমার অন্তর্ভুক্ত। কেননা জাকাত অস্বীকারীদেরকে হত্যার ব্যাপারে পবিত্র কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট কোন নির্দেশনা ছিল না। এছাড়া রাসুল (স) জীবিত থাকাকালীন সময়ে কোন সমস্যার দেখা দিলে মহান আল্লাহ ওহির মাধ্যমে কিংবা রাসুল (স) নিজেই এর সমাধান প্রদান করতেন। কিন্তু রাসুল (স) ও সাহাবিগণের অবর্তমানে ইসলাম যখন ব্যাপক বিস্তারের দ্বারা দশ দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে। তখন বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে উদ্ভূত নানা সমস্যার সমাধান কুরআন ও হাদিসের মধ্যে যখন পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন ইসলামের তদানীন্তন প্রজ্ঞাবান ধারক ও বাহকেরা হাদিসের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক রেখে ইজমা তথা ঐকমত্যের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান গ্রহণে রত হন। সুতরাং যুগের প্রয়োজনে নবোদ্ভাবিত সমস্যার সমাধানের জন্য ইজমার উৎপত্তি ঘটেছে।