শিহাব বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিষয়ে অধ্যয়ন করে সে বিষয়টির উৎপত্তি সম্পর্কে সন্ধান করতে গিয়ে দেখলেন ল্যাটিন শব্দ Socius ও গ্রিক শব্দ Logos থেকে এর উদ্ভব। ১৮৩৯ সালে একজন ফরাসি দার্শনিক তাঁর 'কোর্স-ডি-ফিলোসফি পজিটিভ' গ্রন্থে সর্বপ্রথম এ বিষয়টিকে বিজ্ঞান হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়টি সামাজিক বিজ্ঞানের নবীনতম শাখা সমাজবিজ্ঞানকে নির্দেশ করে। এ কথা অনস্বীকার্য যে, বিষয়টি মানব সমাজের সামগ্রিক পাঠ।
সমাজবিজ্ঞান শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ Sociology, যা ল্যাটিন শব্দ Socius (অর্থ-সমাজ) ও গ্রিক শব্দ Logos (অর্থ-বিজ্ঞান বা বিশেষ জ্ঞান) এই দুটি শব্দ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। তাই উৎপত্তিগত অর্থে বলা যায়, সমাজ সম্পর্কিত বিশেষ জ্ঞানই সমাজবিজ্ঞান। পারিভাষিক অর্থে বলা যায়, সমাজবিজ্ঞান হলো ঐ বিজ্ঞান যা সমাজের সাথে সম্পর্কিত সব বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা করে।
সমাজবিজ্ঞানের আলোচনার পরিধি ব্যাপক। বস্তুত, মানব সমাজের এমন কোনো দিক নেই যা সমাজবিজ্ঞানে আলোচিত হয়নি। মানুষের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি দিক নিয়ে সমাজবিজ্ঞান পুঙ্খানুপুঙ্খ অধ্যয়ন করে। সমাজবিজ্ঞানের আলোচনার ব্যাপকতার কারণে শাস্ত্রটিকে বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত করে আলোচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যেমন- ঐতিহাসিক সমাজবিজ্ঞান সমাজের অতীত ইতিহাস নিয়ে, বিবাহ ও পরিবার সমাজবিজ্ঞান পরিবারের বিভিন্ন দিক নিয়ে, নগর সমাজবিজ্ঞান নগরের স্বরূপ, গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান গ্রামের স্বরূপ, ধর্মের সমাজবিজ্ঞান ধর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে। এমনিভাবে সমাজবিজ্ঞানের আরো বহু শাখা রয়েছে যেগুলো বিষয়কেন্দ্রিক আলোচনা করে। অর্থাৎ সমাজবিজ্ঞানের আলোচনায় মানবসমাজের সাথে জড়িত সব বিষয়ই আলোচিত হয়। এ কারণেই সমাজবিজ্ঞানকে মানবসমাজের সামগ্রিক পাঠ বলা হয়।
উপরের আলোচনা শেষে বলা যায়, সমাজবিজ্ঞান মানবসমাজের সামগ্রিক পাঠ, এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই।