সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক জনাব বি সি বিশ্বাস উক্ত শাস্ত্রের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের আলোচনায় বলেন, এ বিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞানের শাখাসমূহের মধ্যে নবীনতম। যা ল্যাটিন ও গ্রিক শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। এ বিষয়ে কোনো সর্বজনবিদিত সংজ্ঞা নেই। তবে বিভিন্ন মনীষী একটি বিষয়ে একমত, এ বিজ্ঞান সমাজ ও সামাজিক সম্পর্ক বিষয়ে অধ্যয়ন করে।
উদ্দীপকে উল্লেখিত বিজ্ঞান অর্থাৎ সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ বিশ্লেষণ করা হলো।
সমাজবিজ্ঞান একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে। তবে সমাজ সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনার ইতিহাস সমাজের মতই অতি প্রাচীন এবং দীর্ঘ দিনের। বস্তুত সমাজবিজ্ঞানের জন্ম হয় পাশ্চাত্যের শিল্প-বিপ্লবকালে।
ফরাসি চিন্তাবিদ অগাস্ট কোঁৎকে বলা হয় সমাজবিজ্ঞানের জনক। কেননা, তিনিই সর্বপ্রথম ১৮৩৯ সালে 'Sociology' শব্দটি চয়ন করেন। তিনি মানব সমাজের প্রকৃতি নির্ধারণ, সমাজের উদ্ভব এবং বিকাশের নিয়মনীতি ব্যাখ্যায় এবং সামাজিক ঘটনাসমূহের ব্যাখ্যায় তার জীবনের অনেক সময় ব্যয় করেন। তিনি সমাজ বিশ্লেষণের জন্য একটি পৃথক বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এই অনুভৰ থেকেই তিনি একটি বিজ্ঞানের জন্ম দেন এবং ঐ বিজ্ঞানের নাম দেন Social Physics. পরবর্তীতে তিনি এটিকে Sociology নামে অভিহিত করেন। এভাবেই সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব হয়। উল্লেখ্য সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভবে ম্যাকিয়াভেলি, টমাস ম্যুর, কার্ল মার্কসের মত সমাজবিজ্ঞানীদের অবদানও অস্বীকার করা যায় না। উপরের আলোচনা শেষে তাই বলা যায়, সমাজবিজ্ঞান একটি নবীন শাস্ত্র হলেও-এর উদ্ভব ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস সুপ্রাচীন।