Subject Content

ADDED

প্রশ্ন-১। LPG এর পূর্ণরূপ লেখো।
উত্তরঃ LPG এর পূর্ণরূপ হলো— Liquefied Petroleum Gas।

 

প্রশ্ন-২। সারফেস ওয়াটার কাকে বলে?
উত্তরঃ নদী-নালা, খাল-বিল, হ্রদ, লেক, পুকুর, ঝর্ণা... প্রভৃতির পানিকে সারফেস ওয়াটার বলে।

প্রশ্ন-৩। খর পানি কাকে বলে?
উত্তরঃ সাধারণত যে পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ধাতুর বাইকার্বনেট, ক্লোরাইড বা সালফেট লবণ দ্রবীভূত থাকে, তাকে খর পানি বলে।

 

প্রশ্ন-৪। পানির খরতা কাকে বলে?
উত্তরঃ পানিতে Ca2+ ও Mg2+ এর উপস্থিতিকে পানির খরতা বলে।

প্রশ্ন-৫। DDT কি?
উত্তরঃ ডিডিটি (DDT) হচ্ছে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, যার পুরো নাম ডাইক্লোরো ডাইফেনাল ট্রাইক্লোরো ইথেন। এটি একটি কীটনাশক।

 

প্রশ্ন-৬। মোল ভগ্নাংশ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো মিশ্রণের একটি উপাদানের মোল সংখ্যাকে উক্ত মিশ্রণের মোট মোল সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যায়, তাকে সে উপাদানের মোল ভগ্নাংশ বলে।

প্রশ্ন-৭। আদর্শ গ্যাস কাকে বলে?
উত্তরঃ যে গ্যাস সকল তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসের সূত্রসমূহ অর্থাৎ বয়েলের সূত্র চার্লসের সূত্র, অ্যাভোগেড্রোর সূত্র প্রভৃতি সঠিকভাবে মেনে চলে তাদেরকে আদর্শ গ্যাস বলে।

 

প্রশ্ন-৮। নিঃসরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ চাপ প্রয়োগে সরু ছিদ্র পথে কোনো গ্যাসের নির্গত বা বের হওয়ার প্রক্রিয়াকে নিঃসরণ বা অণুব্যাপন বলে।

প্রশ্ন-৯। গ্রাহামের ব্যাপন সূত্রটি কী?
উত্তরঃ নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে যে কোন আদর্শ গ্যাসের ব্যাপন হার তার ঘনত্বের বর্গমূলের ব্যস্তানুপাতিক।

 

প্রশ্ন-১০। সমতাপীয় রেখা কাকে বলে?
উত্তরঃ স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের উপর বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করে এবং সংশ্লিষ্ট চাপে ঐ গ্যাসের আয়তন লিপিবদ্ধ করে X অক্ষ বরাবর চাপ ও Y অক্ষ বরাবর আয়তন স্থাপন করলে যে সব রেখাসমূহ পাওয়া যায়, তাদের আইসোথার্ম বা সমতাপীয় রেখা বলে।

প্রশ্ন-১১। সমচাপ রেখা কাকে বলে?
উত্তরঃ স্থির চাপে কোনো গ্যাসের আয়তন ও তার পরম তাপমাত্রার বিপরীতে লেখচিত্র অঙ্কন করলে একটি মূলবিন্দুগামী সরলরেখা পাওয়া যায়, এই প্রক্রিয়াটিকে সমচাপ রেখা বলে।

 

প্রশ্ন-১২। অনুবন্ধী ক্ষারক কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো এসিড থেকে একটি প্রোটন অপসারণের ফলে যে ক্ষারকের সৃষ্টি হয় তাকে ঐ এসিডের অনুবন্ধী ক্ষারক বলে।

প্রশ্ন-১৩। প্রাকৃতিক পাতিত পানি কাকে বলে?
উত্তরঃ বৃষ্টির পানিকে প্রাকৃতিক পাতিত পানি বলে।

 

প্রশ্ন-১৪। সম-আয়তনীয় লেখ কাকে বলে?
উত্তর : স্থির আয়তনে কোনো গ্যাসের চাপ (P) ও তাপমাত্রা (T)-এর সম্পর্ক যে লেখচিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়, তাকে সম-আয়তনীয় লেখ বলে।

প্রশ্ন-১৫। R এর ভৌত তাৎপর্য কী?
উত্তর : 1K তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য প্রতিমোল আদর্শ গ্যাস থেকে যে পরিমাণ কাজ বা শক্তি পাওয়া যায়, তার মান R-এর সমান। এটিই R এর ভৌত তাৎপর্য।

 

প্রশ্ন-১৬। দুর্বল ক্ষারকের অনুবন্ধী অম্ল সবল হয় কেন?
উত্তরঃ সাধারণত দুর্বল ক্ষারকের অনুবন্ধী অম্ল সবল হয়। কারণ, দুর্বল ক্ষারক প্রোটন গ্রহণ করার পর যে এসিডের সৃষ্টি হয় তার প্রোটন দান করার প্রবণতা বেড়ে যায়।

প্রশ্ন-১৭। মৃত্তিকা গঠনকারী উপাদান কি?
উত্তরঃ যেকোনো স্থানের মৃত্তিকা যে উপাদানগুলোর যুগপৎ ক্রিয়ার ফলে গঠিত হয় সে উপাদানগুলোই মৃত্তিকা গঠনকারী উপাদান। এগুলো হলো– ১. খনিজ পদার্থ (৪৫%) Al, Ca, Mg, Fe, Si, K, Na ইত্যাদি; ২. পানি (২৫%); ৩. বায়ু (২৫%); ৪. জৈব পদার্থ (৫%)।

 

প্রশ্ন-১৮। জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের সুবিধা কি কি?
উত্তরঃ জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের সুবিধাগুলো হলো–

  • প্রাকৃতিক গ্যাস জ্বালানি হিসেবে সাশ্রয়ী।
  • এটি পরিবেশের জন্য কম ক্ষতিকর।
  • রান্নাবান্নার কাজে এ গ্যাসের ব্যবহার অন্যান্য গ্যাসের তুলনায় স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ।

 

প্রশ্ন-১৯। সমস্যাযুক্ত মাটি কাকে বলে? বাংলাদেশে কত ধরনের সমস্যাযুক্ত মাটি পাওয়া যায়?
উত্তরঃ মাটির pH ৬.৫ এর কম বা ৭ এর বেশি হলে অথবা অতিরিক্ত লবণ মাটিতে থাকলে সে মাটিকে সমস্যাযুক্ত মাটি বলে। বাংলাদেশে সাধারণত তিন ধরনের সমস্যাযুক্ত মাটি পাওয়া যায়। যথা : ১. অম্লীয় মাটি, ২. ক্ষারীয় মাটি এবং ৩. লবণাক্ত মাটি।

প্রশ্ন-২০। ক্লোরোসিস কাকে বলে?

উত্তরঃ বায়ুমণ্ডলে দূষকরূপে SO2 এর উপস্থিতিতে উদ্ভিদের পাতার ক্লোরোফিল উৎপাদন-প্রক্রিয়া মন্দীভূত হওয়া এবং পাতার সবুজ রং লুপ্ত হওয়ার ঘটনাকে ক্লোরোসিস (Chlorosis) বলে।

প্রশ্ন-২১। বাংলাদেশে খাবার পানিতে আর্সেনিকের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা কত ppm?

উত্তরঃ বাংলাদেশে খাবার পানিতে আর্সেনিকের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা 0.05 ppm।

প্রশ্ন-২২। BOD5 কী?

উত্তরঃ পরীক্ষাগারে BOD5 নির্ণয় প্রক্রিয়াটি 5 দিন ব্যাপী সম্পন্ন করা হলে তা BOD5 লিখে প্রকাশ করা হয়।

প্রশ্ন-২৩। BOD কাকে বলে?

উত্তরঃ জৈব পদার্থের ভাঙনের প্রাক্কালে জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ব্যবহৃত পানিতে বিদ্যমান দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণকে BOD বলে।

প্রশ্ন-২৪। উদ্বায়ী জৈব যৌগ কাকে বলে?

উত্তরঃ সমষ্টিগতভাবে সহজে বাম্পায়নযোগ্য কার্বন এবং এদের উপজাতসমূহকে উদ্বায়ী জৈব যৌগ বলে।

প্রশ্ন-২৫। বায়োডিগ্রেডেবল দূষক কাকে বলে?

 

উত্তরঃ যেসব দূষক ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে যায়, তাদের বায়োডিগ্রেডেবল দূষক বলে। যেমন– গৃহস্থালির আবর্জনা, গোবর ইত্যাদি।

প্রশ্ন-২৬। নন বায়োডিগ্রেডেবল দূষক কাকে বলে?

 

উত্তরঃ যেসব দূষক, ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয় না অথবা অত্যন্ত মন্থর গতিতে বিশ্লিষ্ট হয় সেগুলিকে নন বায়োডিগ্রেডেবল দূষক বলে। যেমন— পারদ, ডিডিটি, গ্যামাক্সিন, অলড্রিন ইত্যাদি। এগুলো পরিবেশে অতি সামান্য পরিমাণে থাকলেও মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হয়।

প্রশ্ন-২৭। দূষকের নিরাপদ মাত্রা কাকে বলে?

উত্তরঃ পরিবেশে উপস্থিত কোনো দূষক যে নির্দিষ্ট মাত্রা (ঘনমাত্রা) অতিক্রম করলে জীবজগতের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় বা জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, সেই নির্দিষ্ট মাত্রাটিকে ঐ দূষকের নিরাপদ মাত্রা বলে। যেমন— CO ও CO2 এর নিরাপদ মাত্রা হল যথাক্রমে 40 ppm ও 5000 ppm. আবার অতি বিষাক্ত ফসজিন (COCl2) এর নিরাপদ মাত্রা হল 0.1 ppm.

প্রশ্ন-২৮। কোনো পানির নমুনায় BOD এর মান 60 বা 60 mg/L বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ কোনা পানির নমুনায় BOD এর মান 60 বা 60 mg/L বলতে বোঝায় যে, ঐ পানির প্রতি লিটারে উপস্থিত জৈব পদার্থের জৈব রাসায়নিক বিয়োজনের জন্য 60 mg অক্সিজেন প্রয়োজন।

প্রশ্ন-২৯। CO2-এর সন্ধি তাপমাত্রা 31.1°C বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ CO2 এর সন্ধি তাপমাত্রা 31.1°C বলতে বুঝা যায় যে, 31.1°C তাপমাত্রার উপরে যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করেও CO2 কে তরলীভূত করা সম্ভব নয় কিন্তু 31.1°C বা তার নিচের তাপমাত্রায় প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগে CO2 গ্যাসকে তরলে রূপান্তরিত করা যায়।

প্রশ্ন-৩০। আদর্শ গ্যাস সমীকরণের ২টি ব্যবহার লেখো।

উত্তরঃ আদর্শ গ্যাসের সমীকরণ হলো PV = nRT। নিম্নে আদর্শ গ্যাস সমীকরণের দুটি ব্যবহার দেওয়া হলো:

i. আদর্শ গ্যাসের মাধ্যমে গ্যাসের আণবিক ভর নির্ণয় করা যায়।

ii. আদর্শ গ্যাসের মাধ্যমে মোল সংখ্যা নির্ণয়ের মাধ্যমে গ্যাসে উপস্থিত অণুর সংখ্যা নির্ণয় করা হয়।

প্রশ্ন-২৮। সাধারণ পানি ও ভারী পানির পার্থক্য কি?

উত্তরঃ দুই পরমাণু হাইড্রোজেন ও এক পরমাণু অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত পানি হলো সাধারণ পানি (H2O)। আর দুই পরমাণু ভারী হাইড্রোজেন বা ডিউটেরিয়াম (D2) এবং এক পরমাণু অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত পানি হলো ভারী পানি (D2O)।
সাধারণ পানির ঘনত্বের চেয়ে ভারী পানির ঘনত্ব বেশি। ভারী পানি পারমাণবিক চুল্লিতে মডারেটর হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন-২৯। ডাল্টনের আংশিক চাপ সূত্রটি লেখো।

উত্তরঃ কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় পরস্পর বিক্রিয়াহীন দুই বা ততোধিক গ্যাসের একটি মিশ্রণের মোট চাপ মিশ্রণে উপস্থিত উপাদান গ্যাসসমূহের আংশিক চাপের সমষ্টির সমান।

প্রশ্ন-৩০। CO2 দাহ্য নয় কেন?

উত্তরঃ CO2 এ কার্বনের সর্বোচ্চ জারণ মান (+4)। ফলে CO2-এ কার্বনের জারণ মান বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ এটি বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয় না। তাই CO2 দাহ্য নয়।

প্রশ্ন-৩১। চারকোল কী থেকে তৈরি করা হয়?

উত্তরঃ বিশেষ চুল্লির মাধ্যমে পাটখড়ি পোড়ালে ছাই তৈরি হয়, যা থেকে চারকোল তৈরি করা হয়। ২০১১ সালে নিবন্ধন নিয়ে প্রথম চীনা নাগরিক ওয়াংফেই বাংলাদেশে এ বিকল্প জ্বালানি চারকোলের কারখানা স্থাপন করেন এবং ২০১২ সালে প্রথম চীনে এটা রপ্তানি করা হয়।

প্রশ্ন-৩২। একটি টিউবওয়েলের পানির খরতা 200 ppm বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ একটি টিউবওয়েলের পানির খরতা 200 ppm বলতে বোঝায় ওজন হিসেবে টিউটবওয়েলের পানির দশ লক্ষ ভাগে যে পরিমাণ খরতা সৃষ্টিকারী পদার্থ (যেমন— Ca, Mg, Fe-এর লবণ) উপস্থিত থাকে তা 200 ভাগ CaCO3 এর সমান। অর্থাৎ টিউবওয়েলের পানির নমুনার প্রতি লিটারে 200 mg CaCO3 এর তুল্য পরিমাণ খরতা সৃষ্টিকারী লবণসমূহ উপস্থিত রয়েছে।


ADDED&UPDATED

পৃথিবীকে বেষ্ঠন করে যে বিভিন্ন রকম গ্যাসের অবস্থান লক্ষ্য করা যায়, তাকেই বায়ুমণ্ডল বলে। এই গ্যাস গুলি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষন শক্তির দ্বারা পৃথিবীর উপর স্তর সৃষ্টির মাধ্যমে অবস্থান করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল গঠন করেছে। এই বায়ুমণ্ডল সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে, তাপ শোষণ... র মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠ কে উত্তপ্ত করে ও দৈনিক উষ্ণতার প্রসরকে হ্রাসের মাধ্যমে পৃথিবীকে প্রানধারনের উপযুক্ত করে তুলেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা প্রায় ১৬ থেকে ২৯ কিলোমিটার। বায়ুমণ্ডলীয় বিভিন্ন গ্যাস তথা বায়ুমণ্ডলের গঠনগত উপাদান এবং বিভিন্ন উচ্চতায় এই উপাদান গুলির অবস্থানের উপর ভিত্তিকে করে বিভক্ত বিভিন্ন বায়ুমণ্ডলীয়  স্তর গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।  এটি অনুমান করা হয় পৃথিবী বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৯৭% সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২৯ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত।


 

বায়ুমণ্ডলের উপাদান সমূহ –


পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল মূলত তিন ধরণের উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত – ১. বিভিন্ন রকমের গ্যাস ২. জলীয় বাষ্প ৩. ধূলিকনা

১. গ্যাসীয় উপাদান – বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন ধরণের গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত । যেমন – নাইট্রোজেন (৭৮%), অক্সিজেন (২১%) বায়ুমণ্ডলের প্রধান গ্যাস যা মোট গ্যাসের প্রায় ৯৯% দখল করে আছে।  বাকি ১% অধিকার করে আছে আর্গন (০.৯৩%), কার্বন-ডাই-অক্সাইড (০.০৩%), নিয়ন (০.০০১৮%), হিলিয়াম, ওজোন, হাইড্রোজেন, মিথেন প্রভৃতি।

ক. অক্সিজেন – জীবজগতের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য কারণ জীব তাদের শ্বাসকার্যের জন্য বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন গ্রহন করে। অক্সিজেন ছাড়া জীব জগতের বেঁচে থাকা সম্ভব হত না।

খ. নাইট্রোজেন – বায়ুমণ্ডলের অপর একটি গুরুত্বপূর্ন গ্যাস হল নাইট্রোজেন যা বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসের প্রায় ৭৮% দখল করে আছে। নাইট্রোজেন উদ্ভিদ ও প্রানীর কোশের গঠনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।

গ. কার্বন ডাই অক্সাইড – বায়ুমণ্ডলের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ন গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড যা বায়ুমণ্ডলের শুষ্ক গ্যাসের মাত্র ০.০৩% দখল করে আছে। সবুজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার সময় বায়ুমণ্ডলের সময় বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহন করে। কার্বন ডাই অক্সাইড পার্থিব বিকিরনের কিছু অংশ শোষণ করে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই এই গ্যাস পৃথিবীর জলবায়ু নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।

ঘ. ওজোন – অপর একটি গুরুত্বপূর্ন গ্যাস হল ওজোন, যা খুব অল্প পরিমানে উদ্ধ বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত রয়েছে। যার পরিমান মাত্র ০.০০০৫% । ওজোন গ্যাসের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায় ২০ থেকে ২৫ কিমি উচ্চতার মধ্যে। এই ওজোন গ্যাস সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে জীবজগতকে তার ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

২. জলীয় বাষ্প – বায়ুমণ্ডলের একটি পরিবর্তনশীল উপাদান হল জলীয় বাষ্প, বায়ুতে যার পরিমান অতি সামান্য। বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের পরিমান শীতল শুষ্ক জলবায়ুতে মাত্র ০.০২%  এবং ক্রান্তীয় আর্দ্র জলবায়ুতে ৪% মতো হয়ে থাকে।  

কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো জলীয় বাষ্পও কোন স্থানের জলবায়ু ও আবহাওয়ার পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা গ্রহন করে থাকে। জলীয় বাষ্প কেবলমাত্র পার্থিব বিকিরনের দীর্ঘ তরঙ্গ শোষণ করে না তা আগত সৌর বিকিরনের কিছু অংশ শোষণ করতেও সক্ষম। এই জলীয় বাষ্প মেঘ ও বৃষ্টিপাতের প্রধান উৎস।

এই জলীয় বাস্পের প্রায় ৯০% রয়েছে মাত্র ৬ কিলোমিটারের মধ্যে এবং মাত্র ১% বা তারও কম জলীয় বাষ্প ১০ কিমির উদ্ধে পাওয়া যায়।

৩. বায়ুমণ্ডলে ক্ষুদ্র কঠিন কনা বা অ্যারোসল – বায়ুতে উপস্থিত সমস্ত রকম কঠিন কনা গুলি কে অ্যারোসল বলা হয়ে থাকে। আবহবিদদের মতে এই সূক্ষ্ম কনা গুলি বায়ুমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন – এই কনা গুলি সূর্য থেকে আগত তাপের কিছু অংশ শোষণ করতে যেমন সক্ষম তেমনি এই কনা গুলির দ্বারা সৌর তাপের কিছু অংশ প্রতিফলিত হয়ে আবার মহাশূন্যে ফিরে যায়। আকাশের যে নীল রঙ দেখা যায় তার মূল কারণ হচ্ছে এই ক্ষুদ্র ধূলিকনার দ্বারা সূর্যের আলোর বিচ্ছূরন। এই ধূলিকনা গুলি আকাশে মেঘ ও কুয়াশা সৃষ্টি তে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।         


 

বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস

তাপমাত্রা ও বায়ুর চাপের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমণ্ডল কে মোট পাঁচটি স্তরে ভাগ করা হয়। যথা – ১. ট্রপোস্ফিয়ার   ২. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার  ৩. মেসোস্ফিয়ার  ৪. থার্মোস্ফিয়ার  ৫. এক্সোস্ফিয়ার


১. ট্রপোস্ফিয়ার – বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরকে ট্রপোস্ফিয়ার বলা হয় । Teisserene de Bore ট্রপোস্ফিয়ার নামকরন করেন। ট্রপোস্ফিয়ার শব্দটির অর্থ region of mixing ।

ক. ট্রপোস্ফিয়ারের গড় উচ্চতা নিরক্ষরেখার উপর ১৬ কিমি এবং মেরুর উপর ৮ কিমি।

খ. এটি একটি গুরুত্বপূর্ন স্তর কারণ এখানে সমস্ত রকম আবহাওয়াগত ঘটনা ঘটে থাকে । যেমন – বৃষ্টিপাত, ঝড়, কুয়াশা, মেঘ, বর্জ্রপাত প্রভৃতি।

গ. ট্রপোস্ফিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ন বৈশিষ্ট্য হল এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা হ্রাস পায়, প্রতি হাজার মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে। এই ঘটনাকে বলা হয় তাপমাত্রার স্বাভাবিক হ্রাস বা Normal Lapse rate ।

ঘ. ট্রপোস্ফিয়ারের উদ্ধ অংশ কে বলা হয় ট্রপোপজ। যা প্রায় ১.৫ কিমি গভীর। ট্রপোপজের উচ্চতা নিরক্ষরেখার উপর ১৭ কিমি এবং মেরুর ওপর ৯ থেকে ১০ কিমি। ট্রপোপজ কথার অর্থ হল “ সেখানে মিশ্রন বন্ধ হয়ে যায়”।


২. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার – ট্রপোস্ফিয়ারের ওপরের অংশকে বলা হয় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার। যার উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০ কিমি।

ক. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উষ্ণতা বাড়তে থাকে এবং ৫০ কিমি উচ্চতায় তাপমাত্রা গিয়ে পৌঁছায় শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

খ. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার তেমন কোন আবহাওয়া গত ঘটনা লক্ষ্য করা যায় না, তাই একে শান্ত মণ্ডল বলা হয়।

গ. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিম্ন অংশে (১৫ থেকে ৩৫ কিমির মধ্যে) ওজোন গ্যাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, যা আমাদের সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে।

ঘ. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওপরের অংশ কে বলা হয় স্ট্র্যাটোপজ।


৩. মেসোস্ফিয়ার  - মেসোস্ফিয়ারের বিস্তৃতি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে।

ক. মেসোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উষ্ণতা আবার কমতে থাকে।

খ. বায়ুমণ্ডলের সমস্ত স্তরের মধ্যে মেসোস্ফিয়ার সবচেয়ে শীতল। মেসোস্ফিয়ারের উদ্ধে তাপমাত্রা – ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নেমে যায়।


৪. থার্মোস্ফিয়ার বা আয়নোস্ফিয়ার – মেসোস্ফিয়ারের পরবর্তী অংশকে থার্মোস্ফিয়ার বলা হয়। যেখানে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে। এটি অনুমান করা হয় যে থার্মোস্ফিয়ারের উপরের অংশে তাপমাত্রা প্রায় ১৭০০ ডিগ্রি। এই স্তরটি বিস্তৃতি ৮০ কিমি থেকে ৬৪০ কিমি পর্যন্ত।

৫. এক্সোস্ফিয়ার – বায়ুমণ্ডলের সর্বশেষ স্তর কে বলা হয় এক্সোস্ফিয়ার। এই স্তরে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।


ADDED

ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস

 

জলোচ্ছ্বাস হলো সমুদ্রের জল ফুলে উঁচু হয়ে উপকূলে আঘাত হানা। এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিভিন্ন কারণে এটা হতে পারে, সাধারণত ঘূর্ণিঝড়, সুনামির কারণে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। সুনামির ক্ষেত্রে সমুদ্রের ... ল সর্বোচ্চ প্রায় ৬৫ মিটার উঁচু হয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।


ADDED&UPDATED

সাধারণ তাপমাত্রায় যেসব পদার্থ বায়বীয় অবস্থায় থাকে তাদেরকে গ্যাস বলা হয়। এটি সাধারণভাবে পদার্থের একটি ত্রিমাত্রিক অবস্থা হিসেবেই গণ্য হয়। উপরন্তু এটি পদার্থের একটি ভৌত অবস্থা মাত্র, কারণ চাপ বাড়িয়ে এবং তাপমাত্রা কমিয়ে একে তরলে এবং পরবর্তিতে কঠিনেও পরিণত করা যায়।... ttps://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC_%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5#cite_note-1">[১] গ্যাসের উদাহরণ হল :- H2, N2, O2, CO2 ইত্যাদি।

 

বৈশিষ্ট্য-

  1. গ্যাসের ঘনত্ব কম এবং সংকোচন ক্ষমতা (Compressibility) উচ্চ। এ কারণে গ্যাসকে অল্প চাপ প্রয়োগের মাধ্যমেই অনেক সংকুচিত করা যায়।
  2. গ্যাসের সম্প্রসারণ ক্ষমতা (Expansibility) খুবই বেশি। যেকোন পাত্রে গ্যাস রাখলে তা অতি দ্রুত সমস্ত পাত্রে ছড়িয়ে পড়ে।
  3. গ্যাসের ব্যাপন ক্ষমতা অত্যধিক। দুই বা ততোধিক গ্যাস পরস্পরের মধ্যে অতি দ্রুত পরিব্যপ্ত হয়ে সমসত্ত্ব মিশ্রণ তৈরি করে।
  4. সকল গ্যাসই সেটিকে যে পাত্রে রাখা হয় তার দেয়ালে সমানভাবে চাপ প্রয়োগ করে।
  5. কঠিন ও তরল পদার্থের তুলনায় গ্যাসের আপেক্ষিক আয়তন অনেক বেশি। গ্যাসের অণুগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক স্থান যথেষ্ট বেশি থাকে এবং এদের অণুগুলোর মধ্যেকার আন্তঃআণবিক বল নেই বললেই চলে।

ADDED

গ্যাসের মোল সংখ্যা (n), আয়তন (V), চাপ (P) ও তাপমাত্রা (T), এদের মাঝে যে কোনো দুটি রাশিকে স্থির রেখে অপর দুটির উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা গ্যাসের ভৌত ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন সূত্র আবিষ্কার করেন। এ সূত্র গুলো গ্যাসসূত্র নামে পরিচিত। এরা হচ্ছে-


বয়েলের সূত্র : যা স্থির তাপমাত্রায় গ্... াসের আয়তনের উপর চাপের প্রভাব প্রকাশ করে।


চার্লসের বা গে লুস্যাকের সূত্র : যা গ্যাসের আয়তনের উপর তাপমাত্রার প্রভাব প্রকাশ করে।


অ্যাভোগাড্রোর সূত্র : যা গ্যাসের অণুর সংখ্যা ও মোলার আয়তনের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে তথ্য প্রকাশ করে।


এছাড়া কেবল মিশ্র গ্যাসের জন্য আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র রয়েছে। যেমন-
ডালটনের আংশিক চাপ সূত্র : যা গ্যাস মিশ্রণের মোট চাপ এবং মিশ্রণে থাকা উপাদান গ্যাসের আংশিক চাপের মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশ করে।


গ্রাহামের ব্যাপন সূত্র : যা গ্যাসের ঘনত্ব ও ব্যাপন হার সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে।


প্রতিটা সূত্র থেকে আমরা কিছু নির্দিষ্ট সমীকরণ, সূত্রকে মেনে চলে এমন গ্রাফ, প্রতিটা গ্রাফের বিভিন্ন অবস্থা এসব নিয়ে পরের লেখা গুলোতে আলোচনা করবো।


ADDED&UPDATED

1662 খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী রবার্ট বয়েল স্থির উষ্ণতায় গ্যাসের চাপ ও আয়তনের পারস্পরিক সম্পর্ক যুক্ত একটি সূত্রের অবতারণা করেন। এই সুত্রটিকে বয়েলের সূত্র বলে।

বয়েলের সূত্র-

... স্থির উষ্ণতায়, নির্দিষ্ট ভরের যে কোনো গ্যাসের আয়তন ওই গ্যাসের চাপের সঙ্গে ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়।

বয়েলের সূত্রের গাণিতিক রূপ-

মনে করি, নির্দিষ্ট উষ্ণতায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের আয়তন V এবং চাপ P; তাহলে বয়েলের সূত্র অনুসারে, V α 1/P, যখন উষ্ণতা T স্থির। অতএব, V = K/P, যেখানে K একটি ধ্রুবক। অর্থাৎ, PV= ধ্রুবক, যখন উষ্ণতা T স্থির। এটি বয়েলের সূত্রের গাণিতিক রূপ।

এখন যদি উষ্ণতায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের P1 চাপে আয়তন V1 এবং P2 চাপে আয়তন V2 হয়, তবে বয়েলের সূত্র অনুসারে, P1V1 = P2V2 = K (ধ্রুবক) হয়।

সুতরাং, বয়েলের সূত্র থেকে বলা যায় যে, স্থির উষ্ণতায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের ক্ষেত্রে গ্যাসের আয়তন এবং চাপের গুণফল সর্বদা ধ্রুবক। অর্থাৎ, গ্যাসের চাপ বাড়ালে আয়তন কমে এবং চাপ কমালে আয়তন বাড়ে।

বয়েলের সূত্রের ধ্রুবক দুটি হল: (1) গ্যাসের ভর এবং (2) গ্যাসের ধর্ম।


ADDED

1787 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিজ্ঞানী জাক আলেকসান্দ্রা সেজার চার্লস (Jacques Alexandre Cesar Charles ), স্থির চাপে, কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে আয়তন প্রসারণের সম্পর্ক পরীক্ষা করে দেখেন। তিনি এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, স্থির চাপে, কোনো নির্দিষ্ট আয়তনের যে – কোনো গ্যাস সমান উষ্ণতা বৃদ... ধিতে সমপরিমাণে প্রসারিত হয়। 1802 খ্রিস্টাব্দে গে লুসাক (Gay Lussac) প্রায় - একই সিদ্ধান্তে উপনীত হন। তিনি দেখান যে স্থির চাপে সকল গ্যাসের আয়তন প্রসারণ গুণাঙ্ক সমান। 1842 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী আরি ভিক্টর রেনো (Henri Victor Regnault) পরীক্ষা করে দেখান যে এই গুণাঙ্কের মান প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াসে 273। গে লুসাক ও রেনোর পরীক্ষালব্ধ ফলের সমন্বয় ঘটিয়ে চার্লসের সূত্রটি প্রকাশ করা হয়।
চার্লসের সূত্র – স্থির চাপে, কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াস উন্নতা বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য ওই গ্যাসের 0°C- এর আয়তনের 1/273 অংশ বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়
 

চার্লসের সূত্রের গাণিতিক রূপ
ধরা যাক, স্থির চাপে ° C উন্নতায় কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন Vol
চার্লসের সূত্রানুযায়ী,°C উষ্ণতায় ওই গ্যাসের আয়তন, V1 = (Vo+Vo×1/273)
2°C উষ্ণতায় ওই গ্যাসের আয়তন, V2=(Vo+Vo×2/273)
t°C উষ্ণতায় ওই গ্যাসের আয়তন,
Vt= (Vo+Voxt/273) বা
Vt= Vo(1+t/273)
অনুরূপে t°C উষ্ণতা হ্রাস, অর্থাৎ -t°C উষ্ণতায়, ওই গ্যাসের আয়তন, Vt = Vo (1-t/273) সুতরাং স্থির চাপে কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন উষ্ণতার সঙ্গে রৈখিকভাবে (linearly) পরিবর্তিত হয়।

গ্যাসের আয়তন ও উষ্ণতার পরম স্কেলের সম্পর্ক

ধরা যাক, স্থির চাপে কোনো নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের ০°C উষ্ণতায় আয়তন Vo, t1°C উষ্ণতায় আয়তন V1 এবং t2°C উষ্ণতায় আয়তন
V21
চার্লসের সূত্রানুসারে,V = Vo (1+ t1/273)
V1= Vo{(273+t1)/273}
V1= Vo×T1/273 [ যেখানে T1= (273 + t1) ]
স্পষ্টতই সেলসিয়াস স্কেলের t1°C উষ্ণতা এবং পরম স্কেলের TIK উন্নতা অভিন্ন
অনুরূপ ভাবে, V2=Vo×T2/273
উপরোক্ত সমীকরণ থেকে পাই –
V1/V2=T1/T2

চার্লসের সূত্রের v-t লেখচিত্র

 

পরমশূন্য উষ্ণতা বা পরমশূন্য তাপমাত্রা কাকে বলে?
পরমশূন্য উষ্ণতা ( Absolute zero temperature ) : কোনো গ্যাসকে - 273°C উষ্ণতা পর্যন্ত শীতল করা সম্ভব হলে গ্যাসটির আয়তন ও চাপের মান তাত্ত্বিকভাবে শূন্য হয়ে যায় এবং গ্যাসের অণুগুলির গতিশক্তির মানও শূন্য হয়। এই বিশেষ ঊয়তাটিকে পরমশূন্য
বা চরমশূন্য উয়তা বলে। এর মান 273°C বা OK

চার্লসের সূত্র থেকে পরমশূন্য তাপমাত্রার ধারণা
চার্লসের সূত্রানুযায়ী আমরা জানি, স্থির চাপে প্রতি 1°C উয়তা বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন, 0°C উষ্ণতায় ওই গ্যাসের যা আয়তন হয় তার 1/273 অংশ বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়।
ধরি, স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের O°C উষ্ণতায় আয়তন Vo 3 t° C উয়তায় আয়তন Vt,
চার্লসের সূত্রানুযায়ী, Vt= Vo ( 1 + t/273)
চাপ স্থির রেখে উষ্ণতা কমিয়ে - 273°C- এ আনলে চার্লসের সূত্রানুযায়ী, -273°C উয়তায় ওই গ্যাসের আয়তন হবে
V=Vo(1+-273/273) =} V=0


ADDED

১৮১১ খ্রিস্টাব্দে ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী অ্যাভোগাড্রো গ্যাসের আয়তন ও অণুর সম্পর্কীয় একটি সূত্র প্রস্তাব করেন। অ্যাভোগাড্রোর সূত্রটি হচ্ছে-
“স্থির তাপমাত্রায় ও স্থির চাপে সমআয়তনের মৌলিক ও যৌগিক সকল গ্যাসে সমসংখ্যক অণু থাকে।”
এ সূত্র থেকে পরীক্ষা দ্বারা সহজেই প্রমাণ করা যায় যে, স্থির তাপ... াত্রায় ও চাপে সকল গ্যাসেরই মোলার আয়তন সমান এবং প্রমাণ তাপমাত্রায় ও চাপে তার পরিমাণ হচ্ছে 22.4 Litter। অ্যাভোগাড্রোর সূত্র মতে পাওয়া যায়, স্থির তাপমাত্রায় ও চাপে কোন গ্যাসের আয়তন এর মোল সংখ্যার সমানুপাতিক হয়। এই সূত্রানুযায়ী-
Van (যখন গ্যাসের চাপ ও তাপমাত্রা স্থির)
এখানে n = গ্যাসের মোল সংখ্যা এবং V = n মোল যুক্ত ঐ গ্যাসের আয়তন।


অ্যাভোগাড্রো সংখ্যা
অ্যাভোগাড্রো সূত্র অনুযায়ী একই তাপমাত্রায় ও চাপে সমআয়তনের সকল গ্যাসে সমান সংখ্যক অণু থাকে। আবার একই তাপমাত্রায় ও চাপে সকল গ্যাসেরই মোলার আয়তন সমান। এ দুটি সূত্র ও সিদ্ধান্তকে সংযুক্ত করে বলা যায়-
একই তাপমাত্রায় ও চাপে যেকোনো গ্যাসের 1 মোলে সমান সংখ্যক অণু থাকে। যেহেতু তাপমাত্রা ও চাপের হ্রাস বৃদ্ধিতে অণুর সংখ্যা বাড়ে না বা কমে না, সেহেতু সকল গ্যাসের মোল (mole) পরিমাণে সমান সংখ্যক অণু থাকে। এ সকল গ্যাসকে শীতল করলে তারা প্রথমে তরল এবং পরে কঠিন পদার্থে পরিণত হবে, কিন্তু অণুর সংখ্যা কমবে-বাড়বে না। সুতরাং সকল পদার্থের (কঠিন, তরল বা গ্যাসীয়) এক মোল পরিমাণে নির্দিষ্ট সংখ্যক অণু থাকে, এ সংখ্যাকে অ্যাভোগাড্রো সংখ্যা বলা হয়। এ সংখ্যাকে 'N' দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এটি একটি ধ্রুবক সংখ্যা, তাই N কে অ্যাভোগাড্রো ধ্রুবক-ও বলা হয়।
বিভিন্ন পরীক্ষা দ্বারা এর মান বের করা হয়েছে 6.022 × 1023। অর্থাৎ-
NA 1 = 6.022 × 1023 অণু প্রতি মোল (Atom mol-1)
মনে রাখতে হবে, n দিয়ে সাধারণত কোনো পদার্থের মোল সংখ্যাকে প্রকাশ করা হয়। আবার কোনো নমুনায় উপস্থিত মোট অণুর সংখ্যাকে N দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অ্যাভোগাড্রো সংখ্যাকে NA দ্বারা প্রকাশ করা হয় এবং নমুনা পদার্থের পরিমাণ এক মোল হলে তখন N = NA হয়। তাই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এখানে NA এবং N এর মধ্যে সম্পর্ক দেখানো হল, N = NA xn


ADDED

বয়েলের সূত্র ও চার্লসের সূত্রের সমন্বয় করার ক্ষেত্রে বয়েলের সূত্র অনুসারে স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন ঐ গ্যাসের উপর যে চাপ কাজ করে
তার ব্যস্তানুপাতিক।
আবার চার্লসের সূত্র অনুসারে, স্থির চাপে নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন তার কেলভিন তাপমাত্রা বা পরম তাপমাত্রার ... মানুপাতিক। এবার আমরা বয়েলের সূত্র ও চার্লসের সূত্রের সমন্বয় বের করবো।
এখন নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের আয়তন VI, চাপ P1 এবং কেলভিন তাপমাত্রা T1 হলে বয়েলের সূত্র মতে-
V1 x 1/P1 (যখন তাপমাত্রা T স্থির থাকে)
চার্লসের সূত্র মতে,
V1 x T1 (যখন চাপ P স্থির থাকে)
এই দুটো সূত্রকে একসাথে আমরা লিখতে পারি-
V1 x P1 / T1 (যখন T ও P উভয় পরিবর্তিত হয়)
or, V1 = kP1 / T1 (এক্ষেত্রে K একটি আনুপাতিক ধ্রুবক)
or, k = P1V1 / T1
আবার ঐ একই পরিমাণ গ্যাসের চাপ পরিবর্তিত হয়ে P2. তাপমাত্রা পরিবর্তিত হয়ে T2 এবং আয়তন পরিবর্তিত হয়ে V3 হলে অনুরূপভাবে আমরা পাই-
k = P2V2 / T2
তাহলে লিখা যায়-
P1V1 / T1 = P2V2 / T2 = k (ধ্রুবক)
অর্থাৎ সাধারণভাবে, PV = KT লিখা যায় যার মানে অর্থাৎ PV - • T। এখানে বয়েলের সূত্র ও চার্লসের সূত্র-এ দুটি গ্যাস সূত্রকে সমন্বয় করা হয়েছে বলে PV = KT সমীকরণটিকে গ্যাসের সমন্বয় সূত্রের সমীকরণ বলা হয়। এ সমীকরণটি নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের চাপ, আয়তন ও পরম তাপমাত্রার মধ্যে সম্পর্ক প্রকাশ করে।
এবার আরেকটা বিষয় নিয়ে বলবো। স্থির তাপমাত্রায় বয়েলের সূত্র মতে গ্যাসের আয়তন এর ঘনত্বের বিপরীত অনুপাতে পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ V1 আয়তনের গ্যাসের
ঘনত্বকে d1 দিয়ে প্রকাশ করলে-

V1 x 1/d1
or, V1 = k/d1
or, k = V1d1
একইভাবে V2 আয়তন যুক্ত গ্যাসের জন্য ঘনত্ব d2 হলে-
V2 = k/d2
or, V2d2 = k
তাহলে আমরা বলতে পারি-
V1/V2= d2/d1
এবার বয়েল-চালসের সমন্বয় সূত্র হতে দেখি-
P1V1/T1 = P2V2/T2
or, V1/V2 = P2T1/P1T2
or, d2/d1 = P2T1/P1T2
or, d1T1 / P1 = d2T2 / P2


এটাই বয়েলের সূত্র ও চার্লসের সূত্রের সমন্বয়।


ADDED

একই পরিমাণের বিভিন্ন গ্যাস একই আয়তনের বিভিন্ন পাত্রে একই তাপমাত্রায় রেখে যদি চাপ পরিমাপ করা হয় তাহলে প্রত্যেকের চাপ প্রায় সমান পাওয়া যায়। তাপমাত্রা আরো বাড়িয়ে যদি আবার চাপ পরিমাপ করা হয় তাহলে গ্যাসগুলোর চাপের মান আরো কাছাকাছি পাওয়া যায়। তাপমাত্রা যত বাড়ানো যাবে চাপের পার্... ক্য ততই কমতে থাকবে।

তাপমাত্রা আরো বাড়িয়ে চাপ পরিমাপ করতে থাকলে একসময় দেখা যাবে প্রত্যেকটি গ্যাসই  pV=nRT সমীকরণ মেনে চলছে। এখানে p= গ্যাসের চাপ, V= গ্যাসের আয়তন, n= গ্যাসের মোল সংখ্যা, R= সার্বজনীন গ্যাস ধ্রুবক, প্রত্যেক গ্যাসের জন্যে যার মান 8.31Jmol−1K1 এবং T= কেলভিন এককে গ্যাসের তাপমাত্রা। এ সমীকরণকে বলা হয় আদর্শ গ্যাস সমীকরণ।

যে সকল গ্যাস সকল তাপমাত্রা ও চাপে এই সমীকরণ মেনে চলে তারাই আদর্শ গ্যাস। প্রকৃতিতে অবশ্য এমন কোনো গ্যাসের অস্তিত্ব নেই যা প্রকৃতপক্ষে আদর্শ। উচ্চতাপমাত্রা ও নিম্নচাপে সকল গ্যাসই আদর্শ গ্যাসের ন্যায় আচরণ করে। 

 

আদর্শ গ্যাস সমীকরনের বিভিন্ন ব্যবহার-

কোনো গ্যাসের আণবিক ভর M হলে W গ্রাম ভরের সেই গ্যাসের মোল সংখ্যা n = W/M। আবার W গ্রাম ভরের কোন গ্যাসের আয়তন V হলে, তার ঘনত্ব d = W/V। সুতরাং PV=nRT এ আদর্শ গ্যাস সমীকরণকে বিভিন্নভাবে প্রকাশ করা যায়। যেমন-
P1V1 / T1 = P2V2 / T2 (যে কোন পরিমাণ গ্যাসের ক্ষেত্রে)
PV = nRT (যে কোন পরিমাণ (n মোল) গ্যাসের ক্ষেত্রে)
PVm = RT (যখন n=1 অর্থাৎ এক মোল পরিমাণ গ্যাসের ক্ষেত্রে)
PV = WRT / M (M আণবিক ভর বিশিষ্ট w গ্রাম পরিমাণ গ্যাসের ক্ষেত্রে)
M = WRT / VP (d ঘনত্ব বিশিষ্ট গ্যাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
= dRT / P
মনে রাখা প্রয়োজন গ্যাসের এ সকল সমীকরণে চাপ ও আয়তনের পরিমাণ বিভিন্ন এককে প্রকাশ করা যায়, কিন্তু তাপমাত্রা T-কে সবসময় পরম তাপমাত্রা স্কেলে
প্রকাশ করতে হবে।
আদর্শ গ্যাস সমীকরণের ব্যবহার
আদর্শ গ্যাস সমীকরণ PV=nRT ব্যবহার করার মাধ্যমে-
(১) গ্যাসের আণবিক ভর ও
(২) গ্যাসের ঘনত্ব নির্ণয় করা যায়।
গ্যাসের আণবিক ভর নির্ণয়: আদর্শ গ্যাস সমীকরণের সাহায্যে গ্যাস ও উদ্বায়ী তরলের আণবিক ভর নির্ণয় করা যায়। কোন গ্যাসের আণবিক ভর M হলে এর মোলার ভর হবে M গ্রাম। তখন w গ্রাম ভরের সে গ্যাসের মোল সংখ্যা n = W / MI এখন আদর্শ গ্যাস সমীকরণকে নিম্নরূপ লেখা যায়-
PV = nRT
= WRT / M
অতএব, M= WRT / PV
এ সম্পর্ক হতে দেখা যায় যে, যদি কোন নির্দিষ্ট ভরের (W) গ্যাস বা বাষ্পের আয়তন (V)-কে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা (T) ও চাপে (P) নির্ণয় করা যায়, তবে উপরিউক্ত সমীকরণ ব্যবহার করে সে গ্যাস বা উদ্বায়ী তরলের আণবিক ভর গণনার সাহায্যে নির্ণয় করা যায়। ফরাসি বিজ্ঞানী ডুমা এ মূলনীতি প্রয়োগ করে উদ্বায়ী তরলের আণবিক ভর নির্ণয়ের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডুমার আণবিক ভর নির্ণয় প্রণালী নামে পরিচিত।

গ্যাসের ঘনত্ব নির্ণয় : আদর্শ গ্যাস সমীকরণের সাহায্যে গ্যাসের ঘনত্ব নির্ণয় করা যায়। কোন গ্যাসের আণবিক ভর M হলে, W গ্রাম ভরের সে গ্যাসের আয়তন v হলে, সে গ্যাসের ঘনত্ব, d = W / V হয়। এখন আদর্শ গ্যাস সমীকরণকে নিম্নরূপে লেখা যায়
PV = nRT = WRT / M
or, W/V = PM/RT
অতএব, d = PM / RT
অর্থাৎ কোন গ্যাসের আণবিক ভর (M) জানা থাকলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা (T) ও নির্দিষ্ট চাপে (P) ঐ গ্যাসের ঘনত্ব নির্ণয় করা যায়