পলিয়েস্টার

এসএসসি(ভোকেশনাল) - উইভিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

পলিয়েস্টার ফাইবার পলিমারিক এস্টার ফাইবারের একটি উদাহরণ। আমেরিকাতে যে পলিয়েস্টার ফাইবার উৎপাদন হয় তাকে বাণিজ্যিকভাবে ড্যাকরন, যুক্তরাষ্ট্রে টেরিলিন, ইন্ডিয়াতে টেরিন বলে। 

অ্যাসিড ও অ্যালকোহল বিক্রিয়া করে অ্যাস্টার গঠন করা হয়। পলিয়েস্টার ফাইবার তৈরির বেলায় অ্যাসিড হিসেবে ইথিলিন গ্লাইকল ব্যবহার করা হয়। পলিয়েস্টার ফাইবার যথেষ্ট শক্তিশালী ফাইবার কিন্তু আর্দ্রতা ধারণ ক্ষমতা (মাত্র ০.৪%) বলে ইহা ব্যবহারের দিক থেকে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ফলে পলিয়েস্টার ফাইবার দ্বারা পোশাক তৈরি করা হয় না বললেই চলে। তবে ফার্নিশিং ক্লথ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লথ ইত্যাদি কাজে বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। কটন পলিয়েস্টার বেন্ডেড করে যে কাপড় হচ্ছে তা পোশাক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

রাসায়নিক প্রকৃতি 
এটি একটি উচ্চ পলিমার বিশিষ্ট কৃত্রিম ফাইবার যা এস্টারিকেশন -এর মাধ্যমে তৈরি হয়। সাধারণত ইথিলিন গ্লাইকল ও টেরিপথেলিক অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে পলিইথিলিন ট্যারিপথ্যালেট গঠন করে। এ পলিইথিলিন ট্যারিপথ্যালেটের পর্যায়ক্রমিক ইউনিটকেই পলিয়েস্টার পলিমার বলে ।

পুনরায় পেট্রোলিয়াম থেকে ন্যাপথা ডিস্টিলড করে প্যারাজাইলিন সংগ্রহ করা হয় এবং প্যারাজাইলিন বাতাসে ক্যাটালিস্ট-এর উপস্থিতিতে অক্সিডাইজড হয়ে প্রথমে টেরিপথ্যালিক অ্যাসিড ও পরে ডাইমিথাইল ট্যারিপথ্যালেট উৎপন্ন করে। এ ডাইমিথাইল ট্যারিপথ্যালেট দ্বারা টেরিলিন অথবা ড্যাকরণ উৎপন্ন করা হয়।

ট্যারিপখালিক এস্টার ও ইথিলিন গ্লাইকল পলিমারাইজড হয়ে পলিয়েস্টার উৎপন্ন করে। পলিয়েস্টার ১০০ ভাগ কৃত্রিম ফাইবার। এটা পলিইথিলিন ট্যারি পথ্যালেট-এর একটি পলিমার।


পলিয়েস্টা ফাইবার প্রস্তুত প্রণালী
পলিয়েস্টার তৈরির কাঁচামাল হিসেবে সাধারণত প্যারাজাইলিন, ইথিলিন গ্লাইকল ও মিথানল ব্যবহার করা হয় । প্যারাজাইলিন পেট্রোলিয়াম থেকে পাওয়া যায়। প্যারাজাইলিন বাতাস ও সাইট্রিক অ্যাসিডের সাথে বি করে ট্যারিপখ্যালিক অ্যাসিড গঠন করে। এই ট্যারিপথ্যালিক অ্যাসিড মিথাইল অ্যালকোহলের সাথে ভাই মিথাইল ট্যারিপখ্যালেট তৈরি করে যা পরবর্তীতে ইথিলিন গ্লাইকলের সাথে পলিইথিলিন ট্যারিপখ্যালেট-এর পলিমার গঠন করে যা রিবনের আকৃতিতে পাওয়া যায়। অতঃপর এই রিবনের মতো পলিমারকে চিপস আকারে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। এ ভিজা চিপসগুলো প্রথমে শুকানো হয়, পরে এই শুকানো চিপসগুলো একটি ডেলিভারি হপারে নিয়ে লাগানো হয়। এবং পলিত পলিমারকে উচ্চ চাপে স্পিনারেটের মধ্যে পাঠানো হয়। স্পিনারেটে ২৪টি ছিদ্র বা ০.০৫-০১ মিমি (মিলিমিটার) ব্যাস যুক্ত থাকে। প্রতিটি ছিদ্র (Hole) থেকে এক একটি ফিলামেন্ট বের হয়। বা পরবর্তীতে ফিলামেন্টরূপে পাইড রোলারের মাধ্যমে বৰিলে জড়ানো হয় অথবা ক্রিমপিং ও হিট সেটিং (Heat setting) ও সর্বশেষ কেটে ছোট ছোট ফাইবারের আকারে নেওয়া হয়। নিচে পলিয়েস্টার ফাইবার প্রস্তুতপ্রণালির ফ্লো নিট দেখানো হলো।

পলিয়েস্টার ফাইবারের ব্যবহার 

১. বিভিন্ন অ্যাপারেল ফার্নিশিং, বাড়িতে সজ্জামূলক কাপড় এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাপড় তৈরিতে ব্যবহৃত হয় । 
২. ওভেন ও নিটেড তৈরিতে এবং ক্রিজ প্রুফ কাপড় ও ফার্নিশিং কাপড় তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 
৩. কটন, উল ও ভিসকোসের সাথে ব্লেন্ডেড করে বিভিন্ন অ্যাপারেলস পর্দায় ব্যবহৃত হয়। 
৪. স্টাপল পলিয়েস্টার ও কটন-এর সাথে মিশ্রিত করে বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 
৫. ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহারের জন্য টায়ার কর্ড, কনভেয়র বেল্ট, স্ক্রিন কাপড়, ফিল্টার ক্লথ, মাছ ধরার জাল ইত্যাদি তৈরি হয় । 
৬. অ্যাসিড হ্যান্ডলিং প্লান্টে প্রোটেকটিভ রুথ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 
৭. গলিত পলিয়েস্টার দ্বারা কাগজ তৈরির মেশিন, ইনসুলেটিং টেপ ও উচ্চ হর্স পাওয়ার যুক্ত মোটর তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 
৮. ফায়ার এক্সটিংগুইশার (Extinguisher) এর পিভিসি পাইপের সাথে পলিয়েস্টার হোজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। 
৯. দড়ি, মাছ ধরার জাল, পালের কাপড় ইত্যাদি তৈরি হয়।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion

Promotion