প্রাসঙ্গিক তথ্য
ফল বাগানের জন্য জমির উপযুক্ততা বিবেচনা করতে হবে । কেননা কোন কোন ফল উঁচু জমি এবং কোন কোন নিচু জমি পছন্দ করে । আবার কোন কোন ফল শুষ্ক আবহাওয়া এবং কোন কোন ফল আর্দ্র আবহাওয়া পছন্দ করে । এছাড়া অনেক ফলের জন্য মাটির অম্লত্ব বা ক্ষারত্ব বিশেষ উপযোগী । তাই ফন্তু বাগানের জন্য এ সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে ফল চাষের জন্য সুপারিশ করা যাবে ।
তথ্যভিত্তিক উপকরণ
(১) জমির অবস্থানের তথ্য ও যেমন জমির প্রকৃতি (উঁচু বা নিচু বা ব্যবসায়িকভাবে বাগান স্থাপন উপযোগী হবে কিনা, বাগানের স্থানে আলো বাতাস খোলামেলাভাবে লাগে কিনা, রাস্তাঘাটের সুবিধাদি বিদ্যমান অথবা একেবারেই নেই প্রক্রিয়াধীন)
(২) আর্থ সামাজিক তথ্য ও ঋণ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, জমির দাম, শ্রমিক সুবিধা, সামাজিক অবস্থা, মানুষের রুচি ও চাহিদা, বাড়ির আঙ্গিনা বা বাঁধের ধারে বাগান করার জন্য জমি প্রাপ্তি ।
(৩) কারিগরি তথ্য ও ফল গাছের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী উপযোগী আবহাওয়া, মাটির বুনট, মাটির গুণাগুণ, পানির উৎস, বীজ/চারা কলম প্রান্তির সুবিধা, সেচ সুবিধা ও সেচ যন্ত্রপাতি, সার, বীজ, কীটনাশকের সহজলভ্যতা ।
কাজের ধাপ
(১) উঁচু জমিতে বৃষ্টিপাত বেশি হলেও পানি জমার সম্ভাবনা থাকে না । তাই ফল গাছের জন্য উঁচু জমি চিহ্নিত করে কাগজে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
(২) নিচু জমি এবং বৃষ্টির পানি দাঁড়ায় এমন স্থানে যে সকল গাছ দাঁড়ানো পানি সহ্য করতে পারে না সেগুলো লাগানো যাবে না ।
(৩) ভূ-গর্ভস্থ পানিতল কাছে হলেও যে সকল গাছ দাঁড়ানো পানি সহ্য করতে পারে না সে সমতু গাছ লাগানো যাবে না । কেননা সেখানে অল্প বৃষ্টিতেই পানিতল উপরে উঠে আসতে পারে ।
(৪) অধিকাংশ ফল গাছই খোলামেলা আলো বাতাস ও সূর্যালোক না পেলে ঠিকমত ফল দিতে পারে না । তাই সূর্যালোক পড়ে এবং আলো বাতাস লাগে তা দিনের বেলায় সূর্য উঠার পরে পর্যবেক্ষণ করে চিহ্নিত করতে হবে । এরপর কাগজে এলাকার মাপ লিখে নিতে হবে এবং মাপে কাঠি পুঁতে চিহ্নিত করতে হবে।
(৫) রাস্তাঘাটের ম্যাপ নিতে হবে, যা ফল উৎপাদনকালে সম্ভাব্য স্বল্প সময়ে ভালো রাস্তা দিয়ে যোগাযোগের পরিকল্পনা প্রণয়নে সুবিধা হবে। এমনকি নার্সারি হতে চারা কলম আনয়ন করাও সহজ হবে ।
(৬) সেচের সুবিধা আছে, জমির দাম কম, কাজ করার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাবে, বাগানের ফল চুরি হবে না বা গাছ পালা নষ্ট হবে না, উৎপাদিত ফল বিক্রয় করা যাবে এমন বিষয়গুলো জরিপ করে চিহ্নিত করতে হবে ও নিশ্চিত হতে হবে ।
(৭) ইটের ভাটা বা ধোয়া নির্গত হয় এমন কারখানার কাছে ফলের বাগান করা যাবেনা ।
(৮) বর্ষায় পাবিত হয় এমন স্থান বাগানের জন্য নির্বাচন করা যাবে না। পরবর্তীতে বাগান স্থাপনের জন্য কারিগরি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। যেমন-
(ক) মাটি এঁটেল, বেলে বা বেলে দোঁয়াশ তা জেনে লিপিবদ্ধ করতে হবে ।
(খ) মাটি কাঁকর যুক্ত, মাটিতে পানি প্রবেশ ক্ষমতা, মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা ইত্যাদি জানতে হবে ।
(গ) মাটির জৈব পদার্থ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানতে হবে ।
(ঘ) মাটির অম্লমান বা ক্ষারমান জেনে এলাকা চিহ্নিত করতে হবে ।
এরপর বিভিন্ন ফল চাষের বর্ণনা দেখে জমির ধান ও মাটির অবস্থা জেনে ফল গাছ নির্বাচন করে লাগানো উচিত হবে । তাতে লাভজনকভাবে ফল চাষ বা ফল বাগান করা সম্ভব হবে।
ছক: ফল বাগানের জন্য স্থান নির্বাচনী জরিপ ফরম ।
বাগানের জন্য প্রধান প্রধান বিবেচ্য বিষয় | নির্বাচিত বিষয় |
ফুল গাছের পছন্দনীয়: (ক) জমি-উঁচুনিচু (খ) জমি খোলামেলা/ছায়াযুক্ত /অন্ধকারভাব (গ) মাটির অমত্ব ক্ষারত্ব । (ঘ) মাটি এঁটেল/বেলেদোঁয়াশ পলি দোঁয়াশ/দোঁয়াশ/বেলে কাকরময় যোগাযোগ : (ক) রাস্তাঘাট--আছে/নেই (খ) যানবাহন-গ্রামীণ/আধুনিক (গ) সেচ সুবিধা আছে/নেই (ঘ) পানিতল-কাছে/গভীর অন্যান্য: (ক) বাজার ব্যবস্থা আছেনেই ( খ) শ্রমিক প্রাপ্তির সুবিধা আছে/নেই (গ) জমির মূল্য-বেশি/কম (ঘ) উপকরণ প্রাপ্তি-সহজ কঠিন (ঙ) আশেপাশে কলকারখানা-আছে নাই । (চ) অন্য কোন বিবেচ্য বিষয় (যদি থাকে) |
আরও দেখুন...