পরমাণুর কেন্দ্রস্থলে একটি ধনাত্মক আধানযুক্ত ভারী বস্তু আছে। এই ভারী বস্তুকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। পরমাণুর মোট আয়তনের তুলনায় নিউক্লিয়াসের আয়তন অতিশয় নগণ্য। নিউক্লিয়াসে পরমাণুর সমস্ত ধনাত্মক আধান এবং প্রায় সমস্ত ভর কেন্দ্রীভূত।
পরমাণু তড়িৎ নিরপেক্ষ। অতএব নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধানের সমান সংখ্যক ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ঘিরে থাকে।
সৌরজগতে সূর্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান গ্রহসমূহের মতো পরমাণুর ইলেকট্রনগুলো এর কেন্দ্রে থাকা নিউক্লিয়াসের চারদিকে অবিরত ঘুরছে (চিত্র ৯.৩)। নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনের মধ্যে বিদ্যমান স্থিরতড়িৎ আকর্ষণ বল এক্ষেত্রে কেন্দ্রমুখী বল হিসেবে কাজ করছে।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল আলফা কণা বিক্ষেপণ পরীক্ষার ফলাফলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হলেও তাত্ত্বিক দিক দিয়ে মডেলটি যথেষ্ট বিরোধিতার সম্মুখীন হয়। এ মডেলের বিরোধীরা বলেন,
সৌরমণ্ডলের গ্রহসমূহ সামগ্রিকভাবে আধানবিহীন অথচ ইলেকট্রনগুলো ঋণাত্মক আধানযুক্ত এবং পরস্পরকে কুলম্ব বল দ্বারা বিকর্ষণ করে। অপরদিকে গ্রহগুলো মহাকর্ষ বল দ্বারা পরস্পরকে আকর্ষণ করে। সুতরাং গ্রহের সাথে ইলেকট্রনের তুলনা সঠিক হয় না।
ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বানুসারে কোনো আধানযুক্ত বস্তু বা কণা বৃত্তাকার পথে ঘুরলে তা ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ করবে এবং তার গতিপথের ব্যাসার্ধ ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রনসমূহ ক্রমাগত শক্তি হারিয়ে নিউক্লিয়াসে পতিত হবে (চিত্র ৯.৪)। ফলে পরমাণুর অস্তিত্ব থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে পরমাণু হতে ক্রমাগত শক্তি বিকিরণ বা ইলেকট্রনের নিউক্লিয়াসে পতন কখনোই ঘটে না। আবর্তনশীল ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার সম্পর্কে কোনো ধারণা রাদারফোর্ডের মডেলে দেওয়া হয়নি।
আরও দেখুন...