বেশির ভাগ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বা বর্তনী পরিচালনার জন্য নিরবচ্ছিন্ন একমুখী প্রবাহ বা ডিসি প্রবাহ প্রয়োজন হয়। ব্যাটারি বা শুষ্ক কোষই হচ্ছে ডিসি প্রবাহের প্রধান উৎস। কিন্তু এদের ভোল্টেজ বেশ কম এবং এগুলো প্রায়ই পরিবর্তন করতে হয় বলে বেশ ব্যয়বহুল। এ কারণে আমরা যদি আমাদের বৈদ্যুতিক লাইনের দিক পরিবর্তী তথা এসি ভোল্টেজকে একমুখী তথা ডিসি ভোল্টেজ-এ রূপান্তরিত করতে পারি তা ব্যবহারে যেমন সুবিধাজনক হয় তেমনি সাশ্রয়ীও হয়। এসি ভোল্টেজকে ডিসি ভোল্টেজে রূপান্তর করার পদ্ধতিকে বলা হয় রেকটিফিকেশন বা একমুখীকরণ।
বর্তনী সংযোগ : পূর্ণতরঙ্গ ব্রিজ রেকটিফায়ার তৈরি করার জন্য প্রয়োজন হয় চারটি ডায়োড। D1, D2,D3 এবং D4 ডায়োড চারটি দিয়ে ১০.১৭ চিত্রের ন্যায় একটি ব্রিজ গঠন করা হয়। যে এসি উৎসকে রেকটিফাই বা একমুখী করতে হবে সেটি একটি ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে ব্রিজের দুই বিপরীত কৌণিক বিন্দুতে চিত্রানুযায়ী সংযোগ দেওয়া হয়। ব্রিজের অন্য দুই কৌণিক বিন্দুতে ভূ-সংযুক্তির মাধ্যমে লোড রেজিস্টান্স, RL যুক্ত করা হয় ।
কার্যনীতি : পূর্ণতরঙ্গ ব্রিজ রেকটিফায়ারে এসি অন্তর্গামী উৎসের দুই চক্রই কাজে লাগানো হয়। গৌণ ভোল্টেজের ধনাত্মক অর্ধচক্রের জন্য ট্রান্সফার্মারের P প্রান্ত ধনাত্মক এবং প্রাস্ত Q ঋণাত্মক হয়। ফলে D1 ও D3 ডায়োড সম্মুখ ঝোঁক প্রাপ্ত হয়। সুতরাং শুধুমাত্র D1 ও D3 ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এই ডায়োড দুটি লোড রেজিস্টান্স RL এর সাথে শ্রেণি সমবায়ে সংযুক্ত হবে। (চিত্র ১০.১৮ ক)। তড়িৎ প্রবাহ তীর চিহ্ন দিয়ে দেখানো হয়েছে। তড়িৎ A থেকে লোড রেজিস্ট্যান্সের মধ্য দিয়ে B এর দিকে প্রবাহিত হবে। RL এর দুই প্রান্তে ডিসি বহির্গামী পাওয়া যাবে।
গৌণ কুণ্ডলীর ঋণাত্মক অর্ধচক্রের জন্য P প্রান্ত ঋণাত্মক এবং Q প্রাপ্ত ধনাত্মক হয়। ফলে D2 ও D4 ডায়োড সম্মুখী ঝোঁক প্রাপ্ত হয় এবং D1 ও D3 ডায়োড বিমুখী ঝোঁক প্রাপ্ত হয়। সুতরাং শুধুমাত্র D2 ও D4 ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এই দুটি ডায়োড লোড রেজিস্ট্যান্স RL এর সাথে শ্রেণি সমবায়ে সংযুক্ত হয় (চিত্র ১০.১৮খ)। তড়িৎ প্রবাহ তীরচিহ্ন দিয়ে দেখানো হয়েছে। তড়িৎ A থেকে লোড রেজিস্ট্যান্স RL এর মধ্য দিয়ে B এর দিকে প্রবাহিত হবে। RL এর দুই প্রান্তে ডিসি বহির্গামী পাওয়া যাবে।
আরও দেখুন...