পিতা যদি Rh+ হয় এবং মাতা যদি Rh- হয় তবে তাদের ঔরসজাত প্রথম সন্তানের পরেরগুলিতে যে অবস্থা হতে পারে তাকে বলে -

Created: 2 years ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

Rh ফ্যাক্টরের কারণে সৃষ্ট সমস্যা (Problems due to Rh Factor):

১. রক্ত সঞ্চালনে জটিলতা (Complexity in Blood Transfusion) : Rh রক্তবিশিষ্ট ব্যক্তির রক্তে Rh+ বিশিষ্ট রক্ত দিলে প্রথমবার গ্রহীতার দেহে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না, কিন্তু গ্রহীতার রক্তরসে ক্রমশ Rh+ অ্যান্টিজেনের বিপরীত অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হবে। এই অ্যান্টিবডিকে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর বলে।

গ্রহীতা যদি দ্বিতীয়বার দাতার Rh+ রক্ত গ্রহণ করে তা হলে গ্রহীতার রক্তরসের অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টরের প্রভাবে দাতার লোহিত রক্তকণিকা জমাট বেঁধে পিন্ডে পরিণত হবে। তবে একবার সঞ্চারণের পর যদি গ্রহীতা আর ঐ রক্ত গ্রহণ না করে তা হলে ধীরে ধীরে তার রক্তে উৎপন্ন সমস্ত অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর নষ্ট হয়ে যায় এবং গ্রহীতা স্বাভাবিক রক্ত ফিরে পায়।

২. গর্ভধারণজনিত জটিলতা (Complexity in Pregnancy): সন্তানসম্ভবা মহিলাদের ক্ষেত্রে Rh ফ্যাক্টর খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন Rh (Rh নেগেটিভ) মহিলার সঙ্গে Rh+ (Rh পজিটিভ) পুরুষের বিয়ে হলে তাদের প্রথম সন্তান হবে Rh+, কারণ Rh+ একটি প্রকট বিশিষ্ট্য। ভ্রূণ অবস্থায় সন্তানের Rh+ ফ্যাক্টরযুক্ত লোহিত কণিকা অমরার মাধ্যমে মায়ের রক্তে এসে পৌঁছাবে, ফলে মায়ের রক্ত Rh হওয়ায় তার রক্তরসে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর (অ্যান্টিবডি) উৎপন্ন হবে।অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর মায়ের রক্ত থেকে অমরার মাধ্যমে ভ্রূণের রক্তে প্রবেশ করলে ভ্রূণের লোহিত কণিকাকে ধ্বংস করে, ভ্রূণও বিনষ্ট হয় এবং গর্ভপাত ঘটে। এ অবস্থায় শিশু জীবিত থাকলেও তার দেহে প্রচন্ড রক্তাল্পতা এবং জন্মের পর জন্ডিস রোগ দেখা দেয় । এ অবস্থাকে এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস ( erythroblastosis foctalis) বলে।

যেহেতু Rh বিরোধী অ্যান্টিবডি মাতৃদেহে খুব ধীরে ধীরে উৎপন্ন হয় তাই প্রথম সন্তানের কোনো ক্ষতি হয় না এবং সুস্থই জন্মায়। কিন্তু পরবর্তী গর্ভাধান থেকে বিপত্তি শুরু হয় এবং ভ্রূণ এ রোগে ভুগে মারা যায়। তাই বিয়ের আগে হবু বর-কনের রক্ত পরীক্ষা করে নেয়া উচিত এবং একই Rh ফ্যাক্টরভুক্ত (হয় Rh+ নয়তো, Rh) দম্পতি হওয়া উচিত । তবে সুখের কথা এই যে, পৃথিবীর বেশীর ভাগ অংশে Rh বৈশিষ্ট্য দুর্লভ।

কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ককেশিয়ানদের ১৫% Rh T বৈশিষ্ট্য বহন করে। তবে যাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় তারা হচ্ছে পাইরেনীজ-এর বাস্ক (২৫-৩৫%), আফ্রিকার বার্বার এবং সাইনাই-উপদ্বীপের বেদুইন (১৮-৩০%)।

Content added By
Promotion