ফুসফুসের রোগ কোনটি?

Created: 2 years ago | Updated: 9 months ago

ধূমপায়ী ও অধূমপায়ী মানুষের ফুসফুসের এক্স-রের তুলনা (Comparison Between the X-Ray Film of the Lungs of Smoker and Nonsmoker): একটি সিগারেটের শলায় প্রায় ৪ হাজার বিভিন্ন রাসায়নিক থাকে। ধূমপানের ফলে এগুলো দেহের ভেতরে, বিশেষ করে ফুসফুসে প্রবেশ করে দেহকে অসুস্থ করা শুরু করে। (সিগারেটে রাসায়নিক থাকে তার মধ্যে নিকোটিন, আর্সেনিক, মিথেন, অ্যামোনিয়া, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড উ ইত্যাদি প্রধান। একজন অধূমপায়ী যে কাজ চটজলদি করতে পারে, সে কাজ ধূমপায়ীর জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ প্রমাণিত হয়। নিচে ধূমপায়ী ও অধূমপায়ী মানুষের এক্স-রের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো।

১. এক্স-রে ফিল্ম : ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে এটি কোথাও কোথাও সাদাটে বা সাদা, অধূমপায়ীর ক্ষেত্রে এটি কালো।

২. ফুসফুস : এক্স-রে দেখে চিকিৎসক ধূমপায়ী ব্যক্তির ফুসফুসে পানি জমা (pleural effusion) শনাক্ত করতে পারবেন। এ ধরনের কিছু অধুমপায়ীর এক্স-রে ফিল্মে থাকবে না ।

৩. অ্যালভিওলাই : ধূমপায়ীদের ফুসফুসের এক্স-রে ফিল্মে অ্যালভিওলাইয়ে সুষম স্বচ্ছতা দেখা যায় না কিন্তু অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে সুষম স্বচ্ছতা দেখা যায়। তাছাড়া ধূমপায়ীদের ফুসফুসে অধূমপায়ীর চেয়ে কম সংখ্যক অ্যালভিওলাই দেখা যায়। কারণ ধূমপানের ফলে অ্যালভিওলাই নষ্ট হয়ে যায়, কখনওই এগুলোর পূর্ণজন্ম হয় না।

৪. সিলিয়া : ফুসফুসের অন্ত:প্রাচীর জুড়ে চুলের মতো সিলিয়া (cilia) থাকে। ধূমপায়ীদের সিলিয়া অবশ হয়ে পড়ে, ফলে ধূলি ও কণা ভেতরে জমা হয়। অধূমপায়ীর ক্ষেত্রে এটি ঘটে না তাই ফুসফুস ধূলি-কণা মুক্ত থাকে । এক্স-রে তে এটিও ধরা পড়ে।

৫. প্রাচীর : এক্স-রে ফিল্মে ধূমপায়ীর ফুসফুস ও অ্যালভিওলাসের প্রাচীর পাতলা ও দুর্বল দেখায় । কিন্তু অধুমপায়ীর এদুটি অংশের প্রাচীর স্বাভাবিক পুরু এবং সবল ।

৬. এমফাইসোমা : সিগারেটের ধোঁয়ায় অ্যালভিওলাসের প্রাচীরে যে ক্ষতি হয় তার ফলে অ্যালভিওলাস আয়তনে উঠে বেড়ে যায় এবং কোনো কোনো স্থান ফেটে গিয়ে ফুসফুসে ফাঁকা স্থান সৃষ্টি করে। এদের এমফাইসোমা (emphysema) বলে। ধূমপায়ীদের এক্স-রে ফিল্মে এমফাইসেমার চিহ্ণ দেখা যায় যা অধূমপায়ীদের এক্স-রে ফিল্মে অনুপস্থিত ।

৭. ব্রঙ্কিওল : ধূমপায়ীর এক্স-রে ফিল্মে ব্রঙ্কিওলের মিউকাস গ্রন্থিগুলোতে বর্ধিত স্ফীতি দেখা যায়। অধূমপায়ীর হলে এক্স-রে ফিল্মে গ্রন্থিগুলোর গঠন স্বাভাবিক দেখায় ।

৮. টিউমার : ধূমপায়ীদের ফুসফুসের এক্স-রে ফিল্মে অনেক সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টিউমার উপবৃদ্ধির চিহ্ণ দেখা যায় যা অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

৯. ক্যান্সার কোষ : ধূমপায়ীদের ফুসফুসের এক্স-রে ফিল্মে অনেক সময় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের চিহ্ণ দেখা যায়।
অর্থাৎ কোথাও কোথাও সাদা ঘন জায়গা পরিলক্ষিত হয়। অধূমপায়ীদের এক্স-রে ফিল্মে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোনো ধরনের কোষের চিহ্ণ দেখা যায় না।

Content added || updated By

Related Question

View More

Promotion