'আমার ভাই পড়তে বসেছে।'- বাক্যের 'আমার ভাই' হচ্ছে-
বাক্যের মধ্যে একাধিক শব্দ দিয়ে গঠিত বাক্যাংশকে বর্গ বলে। বর্গ হলো ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত শব্দের গুচ্ছ। বর্গকে বলা যায় বাক্যের একক, কেননা মানুষ কথা বলতে গিয়ে শব্দের পরে শব্দ না বসিয়ে প্রায়ই বর্গের পরে বর্গ বসায়। যেমন -
মালা ও মায়া খুব সকালে বাড়ির সামনে থাকা স্কুল-বাসে উঠে পড়ল।
এই বাক্যে 'মালা ও মায়া', 'খুব সকালে', 'বাড়ির সামনে থাকা', 'স্কুল-বাসে', 'উঠে পড়ল' প্রভৃতি শব্দগুচ্ছ এক একটি বর্গ।
কোনো একটি বর্গ বাক্যের মধ্যে যে পদের মতো আচরণ করে, সেই পদের নাম অনুযায়ী বর্গের নাম হয়। উপরের উদাহরণে 'মালা ও মায়া' ও 'স্কুল-বাসে' হলো বিশেষ্যবর্গ; 'বাড়ির সামনে থাকা' হলো বিশেষণবর্গ, 'খুব সকালে' ক্রিয়াবিশেষণ-বর্গ এবং 'উঠে পড়লো' হলো ক্রিয়াবর্গ।
নিচে বিভিন্ন ধরনের বর্গের পরিচয় দেওয়া হলো:
বিশেষ্যের আগে এক বা একাধিক বিশেষণ বা সম্বন্ধপদ যুক্ত হয়ে বিশেষ্য বর্গ তৈরি হয়। যেমন-
অসুস্থ ছেলেটি আজ স্কুলে আসেনি।
আমার ভাই পড়তে বসেছে।
আবার, যোজক দ্বারা দুইটি বিশেষ্য যুক্ত হয়ে বিশেষ্যবর্গ তৈরি হয়। যেমন-
রহিম ও করিম বৃষ্টিতে ভিজছে।
২. বিশেষণবর্গ
বিশেষণজাতীয় শব্দের গুচ্ছকে বলা যায় বিশেষণবর্গ। যেমন -
আমটা দেখতে ভারী সুন্দর।
ভদ্রলোক সত্যিকারের নির্লোভ।
পোকায় খাওয়া কাঠ দিয়ে আসবাব বানানো ঠিক নয়।
৩. ক্রিয়াবিশেষণ-বর্গ
যে শব্দগুচ্ছ ক্রিয়াবিশেষণ হিসেবে কাজ করে, তাকে ক্রিয়াবিশেষণ-বর্গ বলে।
সকাল আটটার সময়ে সে রওনা হলো।
তারপর আমরা দশ নম্বর প্লাটফর্মে গিয়ে দাঁড়ালাম।
আমি সকাল থেকে বসে আছি।
বেঁচে থাকার মতো সামান্য কয়টা টাকা বেতন পাই।
সে খেয়ে আর ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে।
৪. ক্রিয়াবর্গ
বাক্যের বিধেয় অংশের ক্রিয়া প্রায় ক্ষেত্রেই ক্রিয়াবর্গ তৈরি করে। যেমন-
অস্ত্রসহ সৈন্যদল এগিয়ে চলেছে।
সে লিখছে আর হাসছে।
সে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর বসে পড়লো।
বাচ্চাটা অনেকক্ষণ ধরে চিৎকার করছে।