SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

Job

সাম্প্রতিক জাতিসংঘ কর্তৃক উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলাদেশকে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে- তা বিশদভাবে ব্যাখ্যা কর।

Created: 1 year ago | Updated: 10 months ago

উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় বাংলাদেশঃ চ্যালেঞ্জসমূহ ১৯৬০ সালে প্রথম আলোচনায় আসে স্বল্পোন্নত দেশের ধারণা। সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর জাতিসংঘের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে LDC গ্রুপ গড়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে ২৫টি দেশ নিয়ে প্রথম LDC তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত হয়। বর্তমানে বিশ্বের ৪৭টি দেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় রয়েছে।

LDC থেকে যেভাবে উত্তরণঃ স্বল্পোন্নত দেশের উত্তরণের সূচকগুলো হচ্ছে তিন বছরের গড় মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (GNI), পুষ্টি, স্বাস্থ্য, স্কুলে ভর্তি ও স্বাক্ষরতার হারের সমন্বয়ে তৈরি হারের সমন্বয়ে তৈরি মানব সম্পদ সূচক (HAI) এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক আঘাত, জনসংখ্যার পরিমাণ এবং বিশ্ববাজার থেকে একটি দেশের দূরত্বেরও পর ভিত্তি করে তৈরি আর্থিক ভঙ্গুরতা সূচক (EVI). একটি দেশ যেকোন দুটি সূচক অর্জন করতে পারলে, সে দেশটি LDC থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করে। তবে কোন দেশ ইচ্ছা করলে শুধু মাথাপিছু মোট জাতীয় আয়ের ভিত্তিতেও LDC থেকে বেরিয়ে আসার আবেদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে ঐ দেশটির মাথাপিছু জাতীয় মূল্যায়নের বছরে নির্ধারিত প্রয়োজনীয় আয়ের দ্বিগুণ, অর্থাৎ ২,৪৬০ মার্কিন ডলার বা তার বেশি হতে হবে ।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ২০১৮ সালের মানদণ্ড

উত্তরণের মানমাথাপিছু আয়মানব সম্পদঅর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা
জাতিসংঘের হিসাবে১২৩০ ডলার৬৬ বা এর বেশি৩২ বা এর কম
বাংলাদেশ১২৭৪ ডলার৭৩.২২৫.২
বিবিএসের হিসাবে বাংলাদেশ১২৭১ ডলার৭২.৯২৮.৮

বাংলাদেশের উত্তরণঃ বাংলাদেশই প্রথম LDC ভুক্ত দেশ, যে তিনটি সূচকেই জাতিসংঘের শর্ত পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। জাতিসংঘের দ্যা কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি (CDP) এর একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ৯- ১২ অক্টোবর ২০১৭ বাংলাদেশ সফর করে সদর দপ্তরে যে প্রতিবেদন জমা দেয়, তাতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার তিনটি শর্তই বাংলাদেশ পূরণ করে। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ECOSOC) এর আওতাধীন উন্নয়ন নীতি কমিটির (CDP) ২০তম ত্রিবার্ষিক বৈঠকে ১৬ মার্চ ২০১৮ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে প্রাথমিক স্বীকৃতিপত্র লাভ করে। এরপর ২০২১ সালে CDP দ্বিতীয় পর্যালোচনা করবে। সবশেষে ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ পর্যালোচনা করবে। সবশেষে ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ LDCs থেকে বাংলাদেশকে উত্তরণের অনুমোদন দিবে। এরপর আরও ৬ বছর পর্যাবেক্ষণে থাকবে বাংলাদেশ ।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণঃ বাংলাদেশের সম্ভাবনা বা সুবিধাঃ যেসব সুবিধা পেতে পারে, সেগুলো হলোঃ
১. উদ্যোক্তাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব তৈরি হবে। এর ফলে দেশের অভ্যন্তরে ছোট-বড় লক্ষাধিক উদ্যোক্তার মনোভাব পরিবর্তন হবে। এতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) গতি আসবে। 
২. বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এত অন্যান্য দেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
৩. বিশ্বায়নের ফলে উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এতে করে দেশীয় পণ্যে বৈচিত্র্য আসবে। এতে দক্ষ শ্রমিক ও উদ্যোক্তা তৈরি হবে।
৪. অভ্যন্তরীণ বাজার বাড়বে, এতে করে নতুন ভোক্তা তৈরি হবে । ৫. উল্লিখিত কারণে দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে, যা অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে উঠতে সাহায্য করবে।

এছাড়া বাংলাদেশ ২০২৪ সালে LDCs থেকে বেরিয়ে গেলেও ২০২৭ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের Everything but Arms উদ্যোগের আওতায় পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ মানবাধিকার ও শ্রমঅধিকার, পরিবেশ ও সুশাসন বিষয়ে ইউ'এর শর্ত পূরণ করলে জিএসপি প্লাস বাণিজ্য সুবিধা পাবে।

চ্যালেঞ্জসমূহঃ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ উত্তরণ ঘটলে প্রথম প্রভাব পড়বে রপ্তানি খাতে। উত্তরণে সীমা শেষ হওয়া মাত্র উন্নত দেশগুলো থেকে পাওয়া চলমান সুবিধাগুলো স্থগিত হয়ে যাবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে রপ্তানিতে। যার ফলে বাংলাদেশকে অন্য দেশের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। LDCs দেশগুলোর তুলনায় ১০০ টাকার রপ্তানিতে ৬.৭% হারে বেশি শুল্ক প্রদাণ করতে হবে। UNCTAD এর এক জরিপে দেখা যায়, রপ্তানি ৫.৫% থেকে ৭.৫% পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

দ্বিতীয় সম্ভাব্য ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিশ্বের উন্নত দেশ ও দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশ যে সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ পেত তা বন্ধ হবে। ঋণের জন্য উচ্চ হারে সুদ দিতে হবে। এতে করে বিভিন্ন বিদেশি প্রকল্পে খরচ বেড়ে যাবে, যা বাংলাদেশের জন্য নতুন করে ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে হবে। এতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। সেই সাথে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা বা বাজার তৈরি করতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ এক সময় উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশ হবে।

10 months ago

সাধারণ জ্ঞান

Please, contribute to add content.
Content

Related Question

View More
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.