অবমূল্যায়ন-Devaluation
(টিকা লিখুন)অবমূল্যায়ন (Devaluation)
সরকার স্বেচ্ছায় বিদেশী মুদ্রায় দেশীয় মুদ্রার বিনিময় মূল্য কমিয়ে দিলে তাকে মুদ্রার অবমূল্যায়ন বলে। মুদ্রার অবমূল্যায়ন করা হলে স্বর্ণ অথবা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে পূর্বাপেক্ষা অধিক পরিমাণে দেশীয় মুদ্রা পাওয়া যায় অর্থাৎ মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে দেশীয় মুদ্রার বিনিময় হারের পরিবর্তন ঘটে এবং বিদেশী মুদ্রায় দেশীয় মুদ্রার বিনিময় হার হ্রাস পায় এবং দেশীয় মুদ্রায় বিদেশী মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধি পায়। এর ফলে স্বদেশে বিদেশী দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পায় এবং বিদেশে স্বদেশী দ্রব্যের দাম হ্রাস পায়।
যত কতিপয় উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অবমূল্যায়নের আশ্রয় নেয়া হয় এবং এই উদ্দেশ্যগুলো সাধিত হলেই অবমূল্যায়ন সমর্থন করা যায়। অবমূল্যায়নের উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপঃ
১. যখন কোন দেশ তার আন্তর্জাতিক লেনদেনের উদ্বৃত্তে ক্রমাগত প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হয় তখন তার পক্ষে মুদ্রার অবমূল্যায়ন সমর্থনযোগ্য। আন্তর্জাতিক অর্থ-তহবিলের নিয়ম অনুসারে কোন দেশের আন্তর্জাতিক লেনদেনের উদ্বৃত্তে মৌলিক তাসামাহীনতা দেখা দিলে সে দেশ মুদ্রার অবমূল্যায়ন করতে পারে।
২. অনেক সময় ক্ষণমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মুদ্রামান হ্রাস করা হয়। ১৯৪৯ সালে যখন স্টার্লিং অবমূল্যায়ন করা হয় তখন স্টার্লিং অঞ্চলে রপ্তানি অক্ষুন্ন রাখার জন্য ভারতকে বাধ্য হয়ে তার মুদ্রামান হ্রাস করতে হয়েছিল।
৩. দেশের কর্মহীনতা দূরীকরণের জন্যও অনেক সময় অবমূল্যায়নের আশ্রয় নেয়া হয়। তবে এখানে একটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যদি দেখা যায় যে, স্বপ্নতর নিয়োগের সাহায্যে ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে এবং পূর্ণ নিয়োগ প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থনীতি সম্প্রসারণ করতে গেলে লেনদেনের উদ্বৃত্তে ঘাটতি দেখা দেবে তাহলে পূর্ণ নিয়োগস্তরে লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য অবমূল্যায়ন সমর্থনযোগ্য। কিন্তু স্বল্পতর নিয়োগস্তরে লেনদেনের অনুকূল উদ্বৃত্ত থাকলে এবং পূর্ণ নিয়োগস্তরে এই অনুকূল উদ্বৃত্ত বজায় রাখার উদ্দেশ্যে অবমূল্যায়নের সাহায্য নেয়া হলে তা সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ এটি প্রতিবেশীকে বঞ্চনার নীতি ছাড়া কিছুই নয়।
৪. অনেক সময় আমদানি-রপ্তানির সরকারি নিয়ন্ত্রণ কিংবা আমদানি শুল্কের সাহায্যে লেনদেনের উদ্বৃত্তে ভারসাম্য বজার রাখা হয়। এই সমস্ত নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হলে লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি দেখা দেয়। এমতাবস্থায় রাখা হয়।