SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

Job

'মোবাইল ব্যাংকিং ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি' বিষয়ে ২৫০ শব্দে একটি রচনা লিখুন।

Created: 1 year ago | Updated: 10 months ago

                                                                                                             মোবাইল ব্যাংকিং ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি

বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবার প্রচলন ও এর বাস্তবায়নের প্রয়াস চলছে বেশ জোরেশোরে। আর একটি উন্নয়নশীল দেশ তথা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক ভুক্তি এবং গ্রামীণ উন্নয়নের গুরুত্ব সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। গ্রামীণ স্বল্প আয়ের জনগণকে আর্থিক সেবার আওতায় এনে গ্রাম তথা দেশের সার্বিক উন্নয়নে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব। এর পরও অস্বীকার করার উপায় নেই, এখনো দেশের ব্যাংকিং খাতের ঋণ ও ব্যাংকিং সুবিধা মূলত ব্যবহার করছে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং বড় ও মাঝারি শিল্প ও বা প্রতিষ্ঠানগুলো। নিম্নবিত্ত সাধারণ জনগণ এবং ছোট শিল্প ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এখনো পর্যন্ত ব্যাংকের ঋণ ও অন্যান্য সুবিধ যথেষ্ট পরিমাণে পৌছানো সম্ভব হয়নি বা সেক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সুযোগ রয়েছে। তবে গত কয়েক বছ বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের প্রচেষ্টায় এবং কিছু ব্যাংকের বিশেষ দক্ষতায় সামগ্রিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। বিশেষত সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাত-সম্পর্কিত নীতিমালায় এ বিষয়গুলো যথাযথভাবে প্রতিস্থাপন করেছে এবং বাংলাদেশে নিম্ন আয়ের মানুষ ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং খাতের সেবার আওতায় আনার জন্য উল্লেখযোগ্য। পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ রকম পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বেশকিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেশের পশ্চাৎপদ জনগণকে আর্থিক সেবার আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের এসব কার্যক্রম ও পদক্ষেপ এরই মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও গ্রামীণ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয় পরিবর্তন এনেছে ব্যাংকিং সেবায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার। মনে করা হচ্ছে, তথ্যনির্ভর ব্যাংকিং সেবা অন্ত ভুক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ের বিকাশে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে সামনের দিনগুলোয়। 

আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রথম পদক্ষেপ হয়ে থাকে ব্যাংকিং খাতকে সম্পৃক্ত করে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা। বিশেষত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে অর্থ লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং এরই মধ্যে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে গ্রামীণ জনজীবনে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে। বিশেষত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অর্জনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব। এ ধরনের লেনদেন বা পেমেন্ট সেবা একেবারে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সংজ্ঞার মূল স্থপতি না হলেও সার্বিকভাবে আর্থিক সেবার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং বলতে আমরা সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রমকে বুঝি না। শুধু মোবাইল ব্যবহার করে লেনদেন কার্যক্রম বা অর্থ স্থানান্তরকে বুঝিয়ে থাকি। দ্রুতগতিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিস্তার আর্থিক লেনদেনকে সহজতর করেছে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। দৈনন্দিন কেনাকাটা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জীবনযাপনে, বিশেষত স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিস্তারের প্রভাব বেশ লক্ষণীয়। এ আর্থিক সুবিধার প্রকৃত প্রভাব এবং পরিবর্তন গ্রামীণ অর্থনীতি বদলে দিয়েছে। যে গতিতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিস্তার লাভ করছে, তাতে আশা করা যায় অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণকে সম্পূর্ণভাবে আর্থিক খাতে অন্ত র্ভুক্ত করা সম্ভব। এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক এবং উৎসাহব্যঞ্জক হলেও এ কথা মনে রাখা প্রয়োজন মোবাইল আর্থিক সেবার অন্তর্ভুক্তি প্রকৃত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রথম ধাপ। এখন সময় এসেছে সর্বজনীন আমানত ও ঋণ সেবা বিস্তারে তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করা এবং সম্পূর্ণ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা। 

আর্থিক অন্তর্ভুক্তি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। দেশের একটি বড় অংশকে এখনো বিদ্যমান ব্যাংকিং আমানত ও ঋণসেবার আওতায় আনা যায়নি। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বেশকিছু ব্যাংকের পদক্ষেপের পরও একটি বড় অংশের নিম্ন আয়ের মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতায় এলেও তাদের ব্যাংকের ঋণসেবার আওতায় আনার জন্য ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন। কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে ঋণ ও আমানত সেবা ব্যতীত আমাদের মতো দেশে একটি টেকসই ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বেশির ভাগ জনগণ এখনো কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত দেশের কৃষি ও গ্রামীণ খাতের প্রয়োজন অনুযায়ী খুব সামান্যই ঋণসেবা প্রদান করতে পেরেছে। প্রকৃতপক্ষে কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি এখনো অনেক ক্ষেত্রে মহাজন বা অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণের ওপর নির্ভরশীল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ব্যাংকিং সেবা যেমন বিশেষ ব্যাকে অ্যাকাউন্ট, এসএমই ঋণ, ক্ষুদ্রঋণ ইত্যাদি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক গৃহীত পদক্ষেপগুলো লক্ষণীয় পরিবর্তন এনেছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এজেন্ট ব্যাংকিং প্রচলনের অনুমতি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ের সূচনা ।

10 months ago

বাংলা

Please, contribute to add content.
Content

Related Question

View More

একজন লেখক তিনিই যিনি লেখেন। তবে সব লেখা লিখেই লেখক হওয়া যায় না। লেখক সব ধরনের হতে পারে। তবে সৃজনশীল লেখকই হচ্ছে আমাদের মূল কেন্দ্রবিন্দু। লেখক হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম একটি স্বাধীন সত্ত্বা।

একজন লেখক পুরোপুরি তার নিজের সত্ত্বার ওপরে বেঁচে থাকে। অনেকেই লেখক হবার সহজ উপায় খোঁজ করে। কিন্তু পড়তে পড়তে আর লিখতে লিখতেই শুধুমাত্র লেখক হওয়া যায়। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। লেখক অনেক ধরনের হতে পারে।

একজন সাংবাদিকও একজন লেখক। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, ছড়া, সাহিত্য, প্রবন্ধ, রম্য, ব্লগ সব ধরনের লেখা যারা লেখে তারাই লেখক। অনেকেই মস্তিষ্কের মধ্যে ওকটা লেখার শক্তি পেয়ে যায় আর অনেকে হয়ত শিখে শিখে লেখক হয়।

সমাজ সভ্যতা কখনোই পুরোপুরি একজন লেখকের পক্ষে থাকে না। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপক্ষে চলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই একজন লেখক তার কলমের আঘাতে জর্জরিত করতে চায় সকল অন্যায়, অপবাদ। তাই হয়ত বেঁধে যেতে পারে সংঘাত। কলমই হচ্ছে একজন লেখকের দাঁড়ানোর জায়গা। কলম ছাড়া লেখকের অস্তিত্ব বিলীন। তবে সবাইকে যে প্রতিবাদ লিখতে হবে এমন কোনো কথা। কেউ কেউ মনোরঞ্জনের জন্যও লেখে। অনেকে আবার চাটুকারিতা করতে লেখে। কেউ আবার কীভাবে পুরষ্কার তুলে নেওয়া যায় সেই ধান্দা করার জন্য লেখে।

একজন লেখক হয়ে উঠতে পারে ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্যকারী। সে কলমের ছোঁয়ায় প্রতিবাদ করতে অন্যায়ের আর ফুটিয়ে তুলবে ন্যায়ের কথা। লেখকের কলমের কালি প্রেরণার সুর হয়ে গান গাইবে। আর অশ্রুসিক্ত নয়নে হাসির ঝলক আনবে লেখকের কলম। একজন লেখকের প্রাণ তার লেখা, তার লেখার ভঙ্গি। সে তার লেখা দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে পারবে অসুস্থ কোনো সভ্যতাকে। লেখক তার কলম দিয়ে জাগ্রত করতে পারবে মানুষের ভীতরে লুকিয়ে থাকা অদম্য সাহস।

একজন লেখক কল্পনাকে নিয়ে আসতে পারে বাস্তবে। আমাদের নিয়ে যেতে পারে কল্পনার গহীন বনে। লেখক আমাদের সবাক যুগ থেকে অবাক যুগে নিয়ে যেতে পারে মুহূর্তের মাঝেই। লেখক জাগাতে পারে প্রেম, লেখক জাগাতে পারে নতুন কাজের স্পৃহা।

অনেকেই মনে করে লেখকের সকল বিষয়ে দ্বায় আছে। কিন্তু লেখকের মূলত কারো কাছেই কোনো দ্বায় নেই। তার দ্বায় থাকে শুধু নিজের মনের কাছে, নিজের বিবেকের কাছে, নিজের সুপ্ত চেতনার কাছে। সমাজ কি ভাববে তা নিয়ে লেখক মাথা ঘামাবে না। লেখক ভয়ে নাথা নোয়াবে না। লেখক যতদিন বাঁচবে বীরের মতোই বাঁচবে।

সারা বিশ্বেই লেখকরা নির্যাতনের শিকার হয়। অনেকেই বলে থাকে লিখে কিছুই হয় না। তাই যদি হতো তাহলে লেখার জন্য লেখকের শাস্তি হতো না। লেখকের ফাঁসি হতো না।

লেখকের কলমে অনেক জোর। সেই জোর ভেঙে চুরে গুড়িয়ে দিতে পারে যেকোনো কিছু। বিশেষ করে সাংবাদিকরা বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত হয় অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে। শাস্তি, সাজা বহু কিছু তাদের সহ্য করতে হয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখলে হুমকি আসে, হামলা মামলা বহু ঘটনাই ঘটে। কারণ শাসক, শোষক আর অন্যায়কারীদের অনেক ক্ষমতা। লেখকের সমাজের দায়মুক্তির জন্য জীবনও দিতে হয়। তাইতো একজন লেখক সমাজের শক্তি, সমাজের সম্পদ।

1 year ago

সাহিত্য হচ্ছে মানুষের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি তথা মানব-অভিজ্ঞতার কথা বা শব্দের বাঁধনে নির্মিত নান্দনিক বহিঃপ্রকাশ। এই অর্থে গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি উচ্চতর গুণাবলি সমন্বিত বিশেষ ধরনের সৃজনশীল মহত্তম শিল্পকর্ম। সাহিত্য-শিল্পীগণ যখন ‘অন্তর হতে বচন আহরণ’ করে আত্মপ্রকাশ কলায় ‘গীতরস ধারা’য় সিঞ্চন করে ‘আনন্দলোকে’ নিজের কথা- পরের কথা- বাইরের জগতের কথা আত্মগত উপলব্ধির রসে প্রকাশ করেন- তখনই তা হয়ে ওঠে সাহিত্য। রবীন্দ্রনাথের কথায় “বহিঃপ্রকৃতি এবং মানব-চরিত্র মানুষের মধ্যে অনুক্ষণ যে আকার ধারণ করিতেছে, যে-সঙ্গীত ধ্বনিত করিয়া তুলিতেছে, ভাষা-রচিত সেই চিত্র এবং সেই গানই সাহিত্য।…সাধারণের জিনিসকে বিশেষভাবে নিজের করিয়া – সেই উপায়ে তাহাকে পুনরায় বিশেষভাবে সাধারণের করিয়া তোলাই হচ্ছে সাহিত্যের কাজ।” [রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্য] সাহিত্য সত্য-সুন্দরের প্রকাশ হিসেবে প্রবহমাণ সময়ে যা ঘটে – সে-সবের মধ্য থেকে যা মহৎ, যা বস্তুসীমাকে ছাড়িয়ে বাস্তবাতীত প্রকাশ করে, যা জীবনের জন্য কল্যাণময় এবং মহৎ আদর্শের দ্যোতক তাকেই প্রকাশ করে। আসলে মহৎ সাহিত্য তাই- যা একাধারে সমসাময়িক-শাশ্বত-যুগধর্মী-যুগোপযোগী-যুগোত্তীর্ণ। সাহিত্য কেবল পাঠককে আনন্দ দেয় না- সমানভাবে প্রভাবিত করে পাঠক এবং সমাজকে।

আভিধানিকভাবে ‘সহিতের ভাব’ বা ‘মিলন’ অর্থে ‘সাহিত্য’ হলো কাব্য, নাটক, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি সৃজনশিল্পের মাধ্যমে এক হৃদয়ের সঙ্গে অন্য হৃদয়ের সংযোগ স্থাপন; সাহিত্য¯্রষ্টা-সাহিত্যের সাথে পাঠকের এক সানুরাগ বিনিময়। কিন্তু আভিধানিক অর্থের নির্দিষ্ট সীমায় সাহিত্যের স্বরূপ-গতি-প্রকৃতি-বৈচিত্র্য ও বিস্তৃতির সম্যক ধারণা দেওয়া যেমন অসম্ভব, কোনো বিশেষ সংজ্ঞায় তাকে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়াও তেমন দুঃসাধ্য। বাচ্যার্থ ও ব্যঞ্জনার্থর সীমাকে অতিক্রম করে নানা রূপে, রসে, প্রকরণ ও শৈলীতে সাহিত্যের নিরন্তর যাত্রা সীমা থেকে অসীমে। প্রত্যক্ষ সমাজপরিবেশ তথা সমকালীন বাস্তব পারিপার্শ্বিক, নিসর্গপ্রীতি ও মহাবিশ্বলোকের বৃহৎ-উদার পরিসরে ব্যক্তিচৈতন্য ও কল্পনার অন্বেষণ ও মুক্তি- আর এইভাবেই শ্রেণিবিভাজন, নামকরণ ও স্বরূপমীমাংসার প্রচেষ্টাকে ছাপিয়ে উঠে সাহিত্যের যাত্রা সীমাহীনতায়। প্রকৃত সাহিত্য তাই যেমন তার সমসময় যা যুগমুহূর্তের, তেমনই তা সর্বকালের সর্বজনের। মার্কসবাদী সাহিত্যতত্ত্বে বাস্তব সমাজজীবনকে ‘ভিত্তি’ আর শিল্প-সাহিত্যকে সমাজের উপরিকাঠামোর [ঝঁঢ়বৎংঃৎঁপঃঁৎব] অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। সাহিত্যের মৌল উপকরণসামগ্রী আহৃত হয় জীবনের ভা-ার থেকে- সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বৈরিতার বিচিত্র-অনিঃশেষ ভা-ার থেকে। সাহিত্যসৃষ্টির মূলে সক্রিয় যে সৃজনী-ব্যক্তিত্ব তা নিছক বিমূর্ত কোনো সত্তা নয়; আত্মপ্রকাশ ও মানবিক সংযোগ ও বিনিময়ের বাসনায় অনুপ্রাণিত সে সত্তা তার ভাব-ভাবনা, বোধ ও বিশ্বাসকে এক আশ্চর্য কৌশলে প্রকাশ করে জনসমক্ষে কোনো একটি বিশেষ রূপ-রীতি-নীতির আশ্রয়ে। ব্যক্তিক অনুুভূতি-যাপিতজীবন-মিশ্রকল্পনার জগৎ থেকেই সৃষ্টি হয় সাহিত্যের; যুগান্তরের আলোকবর্তিকা হিসেবে সাহিত্য সত্যের পথে সবসময় মাথা উঁচু করে থেকেছে- সত্যকে সন্ধান করেছে। আসলে সাহিত্য এমনি এক দর্পণ- যাতে প্রতিবিম্বিত হয় মানবজীবন, জীবনের চলচ্ছবি, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সমাজজীবনে ঘটমান ইতিহাস- ইতিহাসের চোরাস্রােত নানাবিধ কৌণিক সূক্ষ্মতায়।

সাধারণত আত্মপ্রকাশের বাসনা, সমাজ-সত্তার সঙ্গে সংযোগ কামনা, অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ এবং রূপপ্রিয়তা- এই চতুর্মাত্রিক প্রবণতাই মানুষের সাহিত্য-সাধনার মৌল-উৎস। চতুর্মাত্রিক প্রবণতার [আত্মপ্রকাশের কামনা, পারিপার্শ্বিকের সাথে যোগাযোগ বা মিলনের কামনা, কল্প-জগতের প্রয়োজনীয়তা এবং সৌন্দর্য-সৃষ্টির আকাক্সক্ষা বা রূপমুগ্ধতা] মধ্যে সমাজসত্তার সঙ্গে সংযোগ-কামনা এবং অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ- এই উৎসদ্বয়ের মধ্যে নিহিত রয়েছে সাহিত্য ও সমাজের মধ্যে আন্তর-সম্পর্কের প্রাণ-বীজ। সমাজ শিল্পীকে সাহিত্য-সাধনায় প্রণোদিত করে। ‘সহৃদয়-হৃদয় সংবাদ’এর মাধ্যমে সাহিত্যিকগণ লেখক-পাঠকের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেন- উভয়ের হৃদয়বীণার তারগুলোকে একই সুতায় গেঁথে দেন। এর কারণে সাহিত্য দেশ-কাল-সমাজের সীমা অতিক্রম করে সর্বসাধারণের হৃদয়কে আকর্ষণ করে। এর ফলে সাহিত্য হয়ে ওঠে সার্বজনীন-সর্বকালের মানুষের হৃদয়ের সামগ্রী এবং সাহিত্য¯্রষ্টাও হয়ে ওঠেন অনেক বড়। কিন্তু বর্তমান বাংলা সাহিত্যচর্চার গতি-প্রকৃতি, সমস্যা-সংকট-সমাধান কোন দিকে? এসব বিষয়ের সন্ধান- এ প্রবন্ধের অন্বিষ্ট।

1 year ago

আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধটি আমাদের লোককৃষ্টি গ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছে। লেখক এ প্রবন্ধে বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন । এ বর্ণনায় লোকশিল্পের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধের পরিচয় রয়েছে।
আমাদের নিত্যব্যবহার্য অধিকাংশ জিনিসই এ কুটিরশিল্পের ওপর নির্ভরশীল ।

শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের শিল্পকে লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য করা যেতে পারে । পূর্বে আমাদের দেশে যে সমস্ত লোকশিল্পের দ্রব্য তৈরি হতো তার অনেকগুলোই অত্যন্ত উচ্চমানের ছিল। ঢাকাই মসলিন তার অন্যতম। ঢাকাই মসলিন অধুনা বিলুপ্ত হলেও ঢাকাই জামদানি শাড়ি অনেকাংশে সে স্থান অধিকার করেছে।

বর্তমানে জামদানি শাড়ি দেশে-বিদেশে পরিচিত এবং আমাদের গর্বের বস্তু। নকশি কাথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ বিলুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মনের মতো করে কীথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন । কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক-একটি পরিবারের কাহিনী, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাঁথা ।

আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকে। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে।
খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত। আমাদের দেশের এই যে লোকশিল্প তা সংরক্ষণের দায়িত আমাদের সকলের । লোকশিল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।

1 year ago

আমাদের অর্থনৈতিক সম্পদ

 

বাংলাদেশ, একটি দ্রুত উন্নতি লক্ষ্য নির্ধারণ করা দেশ, যা প্রচুর অর্থনৈতিক সম্পদের বেশিরভাগ সম্পদ নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই দেশের অর্থনৈতিক সম্পদ মৌলিকভাবে চারটি প্রধান উৎস থেকে আসে: জমি, কাজ, উদ্যোগ, এবং মানুষের কাজের দক্ষতা। এই সম্পদের বিকাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক, আর্থিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের মূল স্তম্ভ হল কৃষি। দেশটি একটি প্রধানত কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির মূল হিসেবে প্রধানত শস্য ও ফসল চাষ প্রসঙ্গে বিকাশ হয়েছে। বাংলাদেশে প্রধানত ধান, পাট, মশুর ডাল, আখ, পটল, পেঁপে, তেল সহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়। অত্যন্ত উচ্চ মানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনের ফলে এই খাদ্য পণ্য রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক সম্পদের গড়াতে সাহায্য করে।

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উৎস হল প্রবৃদ্ধি ও শিক্ষাগত উন্নতি। বাংলাদেশে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব কমে আসছে এবং মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি করছে। বিশেষত, প্রযুক্তির আগমন এবং বিনিয়োগে বৃদ্ধি নেওয়া হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক সম্পদের উন্নতির পথে সাহায্য করছে।

অন্যান্য উৎস হিসেবে প্রযুক্তিবিদ্যা এবং সেবা অংশ গুলির অগ্রগতি আছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সম্পদ হল তার মানুষের চাকরিভার্থী শ্রমিকেরা। তাদের দক্ষতা, উদ্যোগ, ও সামর্থ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

যদিও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে অনেক উত্সাহজনক প্রগতি হয়েছে, তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ র

য়েছে। প্রধানতঃ গরিব মানুষের জন্য আর্থিক সম্পদের অগ্রগতি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখনও বেশিরভাগ লোকের মধ্যে বৃদ্ধির অভাব আছে। তাছাড়া, পরিবেশের সম্পদ সংরক্ষণের জন্য সঠিক প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা প্রয়োজন।

পুনর্নির্মাণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পদের বিস্তার ও উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে। সঠিক নীতি নির্ধারণ, উদ্যোগের বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত প্রবর্তন এবং শিক্ষাগত উন্নতি এমন পরিবর্তন নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে।

শেষ কথায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা দেশটির সমৃদ্ধি ও উন্নতির সাথে অবিভাজ্যভাবে সংযোগিত। একটি দ্রুত বৃদ্ধির উপায় হল সঠিক পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা এবং উদ্যোগের বৃদ্ধি করা। এই প্রস্তুতি নেওয়ার মাধ্যমে, বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে আরও এগিয়ে যেতে পারে এবং তার মানুষের জন্য আরো উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।

2 months ago
Promotion