Job

৪৪তম বিসিএস লিখিত || 2022

All Question

অর্থগতভাবে বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

১. যৌগিক শব্দ

২. রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ এবং

৩. যোগরূঢ় শব্দ

 

যৌগিক শব্দ: যেসব শব্দ প্রকৃতি ও প্রত্যয়যোগে গঠিত হয়ে অভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে, তাদের যৌগিক শব্দ বলে।

উদাহরণ: (i) গৈ + অক = গায়ক (গান করে যে)।

 (ii) মিথ্যা + উক = মিথ্যুক (মিথ্যা কথা বলে যে)। 

(iii) বাবু+আনা = (বাবুর ভাব)। 

(iv) কৃ+তব্য= কর্তব্য (যা করা উচিৎ)। 

(v) দুহিতা + ষ্ণ = দৌহিত্র ।

 

রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ: যে সকল শব্দ প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে মূল শব্দের অর্থের অনুগামী হয়ে অন্য কোনো বিশিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে, তাকে রুঢ় বা রূঢ়ি শব্দ বলে।

উদাহরণ: (i) হস্ত + ইন = হস্তী (হস্ত আছে যার); কিন্তু 'হস্তী' বলতে একটি পশুকে বোঝায়।

 (ii) গো + এমনা = গবেষনা (অর্থ গরু খোঁজা)। কিন্তু বর্তমান অর্থে ব্যপক অর্থায়ন ও পর্যালোচনা এরূপ বাঁশি, তৈল, প্রধান ইত্যাদি।

 

যোগরূঢ় শব্দ: সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অর্থের অনুগামী না হয়ে কোনো নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, সেগুলোকে যোগরূঢ় শব্দ বলে।

উদাহরণ: (i)পঙ্কজ= পক্ষে জন্মে যা পঙ্কজ। অথচ পঙ্কে অনেক কিছুই জন্মে। কিন্তু পঙ্কজ বলতে পদ্মফুলকেই বোঝানো হয়। 

(ii) রাজপুত = রাজার পুত্র কিন্তু যোগরূপ হিসেবে জাতি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এরূপ মহাযাত্রা, জলধি ইত্যাদি।

11 months ago

যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তাকে বাক্য বলে। একটি সার্থক বাক্যের গুণাবলি বা বৈশিষ্ট্য: ভাষার বিচারে একটি সার্থক বাক্যের তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। যথা: আকাঙ্ক্ষা, আসত্তি এবং যোগ্যতা।

আকাঙ্ক্ষা: বাক্যের অর্থ পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা, তা-ই আকাঙ্ক্ষা। যেমন: চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে' বললে বাক্যটি সম্পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে না, আরও কিছু শোনার ইচ্ছা হয়। বাক্যটি এভাবে পূর্ণাঙ্গ করা যায়- চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে'। এখানে আকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি হয়েছে বলে এটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য।

আসত্তি: বাক্যের অর্থসংগতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদ বিন্যাসই আসত্তি। মনোভাব প্রকাশের জন্য বাক্যে শব্দগুলো এমনভাবে পরপর সাজাতে হবে যাতে মনোভাব প্রকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়। যেমন: কাল বিতরণী হবে উৎসব কলেজে আমাদের পুরস্কার অনুষ্ঠিত। এখানে পদগুলোর সঠিকভাবে সন্নিবেশ না হওয়ায় বাক্যের অন্তর্নিহিত ভাবটি যথাযথভাবে প্রকাশিত হয়নি। তাই এটিকে বাক্য বলা যায় না। এ ক্ষেত্রে পদগুলোকে নিচের যথাস্থানে সন্নিবিষ্ট করতে হবে। কাল আমাদের কলেজে পুরস্কার বিতরণী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি আসত্তি সম্পন্ন বাক্য। 

যোগ্যতা: বাক্যস্থিত পদগুলোর অন্তর্গত এবং ভাবগত মিলনবন্ধনের নামই যোগ্যতা। যেমন: বর্ষার বৃষ্টিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়। এটি একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বাক্য। কারণ, বাক্যটিতে পদগুলোর অর্থগত এবং ভাবগত সমন্বয় রয়েছে। কিন্তু বর্ষার রৌদ্র প্লাবনের সৃষ্টি করে বললে বাক্যটি ভাব প্রকাশের যোগ্যতা হারাবে, কারণ রৌদ্র প্লাবন সৃষ্টি করে না।

উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে আমরা বলতে পারি যে এই তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্যের উপর বাক্যের সার্থকতা নির্ভর করে।

11 months ago

শব্দ গঠন: পৃথিবীর অন্যান্য ভাষার মতো বাংলা ভাষায়ও কতকগুলো সুনির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমে নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়। এই শব্দ তৈরির প্রক্রিয়াও যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। বৈচিত্র্যময় শব্দ তৈরির এই প্রক্রিয়াসমূকেই সাধারণভাবে শব্দ গঠন বলা যেতে পারে। নিচে বাংলা ভাষায় শব্দগঠনের উল্লেখযোগ্য ৫টি প্রক্রিয়া উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো-

১. সমাসের সাহায্যে শব্দ গঠন: এই প্রক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক পদ একপদে পরিণত হয়ে নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে। যেমন: মহৎ যে জন = মহাজন, জায়া ও পতি = দম্পতি ইত্যাদি।

২. উপসর্গযোগে শব্দ গঠন: এ ক্ষেত্রে ধাতু বা শব্দের পূর্বে উপসর্গ যুক্ত হয়ে নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে। যেমন: প্র+হার=প্রহার, পরা+জয়-পরাজয় ইত্যাদি।

৩. সন্ধির সাহায্যে শব্দ গঠন: পাশাপাশি দুটি বর্ণের একত্রীকরণের ফলে এই প্রক্রিয়ায় নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়। যেমন: বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়, পর + উপকার = পরোপকার ইত্যাদি।

৪. প্রত্যয় যোগে শব্দ গঠন: ধাতু বা শব্দের শেষে প্রত্যয় যুক্ত করেও নতুন নতুন শব্দ গঠন করা যায়। যেমন: 

ক) কৃৎ প্রত্যয় যোগে: পড় + আ=পড়া, পঠ + অক পাঠক ইত্যাদি। 

খ) তদ্ধিত প্রত্যয়যোগেঃ কলম দানি= কলমদানি, নাম + তা = নামতা ইত্যাদি। 

৫. বিভক্তির সাহায্যে শব্দ গঠন: শব্দের শেষে বিভক্তি যোগ করেও নতুন শব্দ গঠন করা যায়। যেমন: কর + এ= করে, রহিম + এর = রহিমের ইত্যাদি।

11 months ago

মূলভাব: সকল উপাসনালয় থেকে শ্রেষ্ঠ মানুষের হৃদয় বা মন। কেননা পবিত্র হৃদয়েই অবস্থান করেন স্রষ্টা মানব জীবনের হৃদয়ের থেকে বড় মন আর কোথাও নেই। তাইতো কবি বলেছেন এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।

সম্প্রসারিত ভাব: মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব –আশরাফুল মাখলুকাত। কারণ মানুষকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ বিবেক বিবেচনা ও বুদ্ধি সহকারে অপর সব জীব অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ করে সৃষ্টি করেছেন। তাই মানুষ অন্য প্রাণী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আর সেজন্য মানুষকে ন্যায়- অন্যায়, পাপ – পুণ্য বিচার করে জীবন পরিচালনা করতে হয়। সকল পাপ-পুণ্য, ভালো-মন্দ ধর্ম – অধর্মের পার্থক্য নির্ধারণে মানুষ কে পরিচালিত করে তার মন। এই মন বা হৃদয় দ্বারা পরিচালিত হয়ে মানুষ সৎ কাজ করে এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে। মানুষ নিজেকে সততা, সত্যবাদিতা, ন্যায়নিষ্ঠা, দয়া প্রভৃতি সৎ গুণাবলীর মাধ্যমেই কল্যাণের পথে বা মঙ্গলের পথে পরিচালিত হয়। অপরের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করার যে প্রবণতা মানুষের মধ্যে জাগ্রত হয় তার উৎস স্থল হচ্ছে মন বা হৃদয়।

মানুষের যদি মন বা হৃদয় নাই থাকতো তাহলে মানুষ আর মানুষ থাকত না। স্রষ্টার আরাধনা করার পবিত্র ও উৎকৃষ্ট স্থান মসজিদে, মন্দিরে দিনরাত অবস্থান করে প্রার্থনা করার তাৎপর্য এইযে, সুন্দর মোহমুক্ত পবিত্র পরিবেশে হৃদয়কে ষড়রিপুর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা এবং আল্লাহর নির্ধারিত পথে চলে তার গুণ-কীর্তন করা।

সুতরাং, এই হৃদয়ই সমস্ত উপাসনালয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান। হৃদয় কলুষিত করে দিন রাত- ভর উপাসনা করলেও কোনো ফল হবে না। কাজেই সব উপাসনালয় থেকেই শ্রেষ্ঠ হলো মানুষের হৃদয়। মানুষের নির্মল হৃদয়ই শ্রেষ্ঠ ইবাদত খানা। হৃদয় মানুষকে ন্যায়ের পথে, সত্যের পথে, ধর্মের পথে পরিচালিত করে। মসজিদ- মন্দিরের উপাসনাকে সার্থক করে তোলে।


মন্তব্য: বহু অর্থব্যয়ে সুশোভিত অট্টালিকায় নির্মিত মন্দির বা মসজিদ অপেক্ষা নিষ্কলুষ হৃদয়ের স্থান অনেক ঊর্ধ্বে। মানুষের হৃদয় বা মন অপেক্ষা বড় কোন মন্দির কাবা নাই। মানুষের মনই হচ্ছে এক একটা মসজিদ। 

4 months ago