Blog

জানা গেল ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সেক্রেটারির পরিচয়, পদ ছিল ছাত্রলীগেও

ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সেক্রেটারি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সেক্রেটারির পরিচয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে মূলত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। সম্প্রতি, দীর্ঘ ১৭ বছর পর ইসলামী ছাত্র শিবিরের একজন নেতা তার পরিচয় প্রকাশ করেন। এই পদক্ষেপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির উপর বিরাট প্রভাব ফেলেছে। সাধারণত শিবিরের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিষিদ্ধ, তাই এই ঘোষণা ছাত্র রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা এবং বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিচ্ছে এবং প্রশাসনও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সেক্রেটারি এস এম ফরহাদের পরিচয় প্রকাশের পর ছাত্ররাজনীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এস এম ফরহাদ ঢাবির সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং কবি জসীমউদ্দীন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তিনি ছাত্রলীগেরও দায়িত্বে ছিলেন। ফরহাদ ২০২২ সালে ঘোষিত ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এস এম ফরহাদছবি: সংগৃহীত

 

ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সেক্রেটারির পদ ছিল ছাত্রলীগেও

ফরহাদের ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে তুমুল আলোচনার সূত্রপাত হয়। বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে একজন ব্যক্তি একসঙ্গে ছাত্রশিবির এবং ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।

গতকাল রাতে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জেনারেল এস এম ফরহাদের পরিচয় সামনে এলে তাঁর পরিচিতজনদের অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন। ফরহাদ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে কবি জসীমউদ্‌দীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ক্লাবে এর ঠিক আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এ এস এম কামরুল ইসলাম। শুধু তা-ই নয়, জসীমউদ্‌দীন হলে চার বছর ধরে ফরহাদের সঙ্গে একই কক্ষে (৩০৮ নম্বর) থেকেছেন তিনি। ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় শুনে বিস্মিত কামরুল রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মানুষ অবাক হয়। মাঝেমধ্যে প্রচণ্ড অবাক হয়। কেউ কেউ অবাক হয়ে আকাশ থেকে পড়ে৷’

ফরহাদের ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসার পর আরেকটি পরিচয়ও সামনে এসেছে; সেটি হলো তিনি ২০২২ সালের নভেম্বরে ঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা দেখা গেছে। ওই কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর তালিকায় তার নাম দেখা গেছে।

২০২২ সালের নভেম্বরে ঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কমিটিতে রয়েছে এস এম ফরহাদের নামছবি: সংগৃহীত
forhad-1
ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকতের সঙ্গে এস এম ফরহাদ। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে, ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করেন। তিনি ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সাদিক তাঁর ফেসবুক পোস্টে ঢাবির ছাত্ররাজনীতির সংস্কার ও একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। এ পোস্টে তিনি ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহল এবং সামাজিক মাধ্যমে এই দুই নেতার পরিচয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলমান। বিশেষ করে, একজন ব্যক্তি কিভাবে ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি পদে আসীন হতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সাদিক কায়েম এবং ফরহাদের এই পরিচয় প্রকাশের পর ছাত্ররাজনীতি ও ক্যাম্পাস সংস্কার নিয়ে নতুন করে ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে, যা ঢাবির বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

582

Author

571 Followers

অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা অসীম মহাকাশের অন্তে

All Comments

Promotion