এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটে ইলেকটিক্যাল সার্কিট ও কন্ট্রোল (Electrical Circuit & Control) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটু ভাবি তো, কেন? রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে কন্ট্রোল বা নিম্নন্ধক সিস্টেম ঠিকমত কাজ না করলে কাঙ্খিত মাত্রার শীতলতা পাওরা সম্ভব নয়। কারণ, এরার কন্ডিশনিং সিস্টেমে হিমায়ন কার্যক্রমের জন্য হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্ট(Refrigerant) প্রবাহের প্রয়োজন হয় - পরিমিত মাত্রায় যার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কাঙ্খিত তাপমাত্রা সংরক্ষণ করা যায় না। এই অধ্যায়ে আমরা এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট ও কন্ট্রোলস সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জন করব।
এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা একটি জব সম্পন্ন করব। এই জবটির মাধ্যমে একটি উইন্ডো টাইপ এয়ার কন্ডিশনারের ফ্যান মোটর পরীক্ষা করার দক্ষতা অর্জন করব। জবটি সম্পন্ন করার আগে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়গুলো জেনে নেই।
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, টুলস, ইন্সট্রুমেন্টস, ইলেকট্রিক কম্পোনেন্ট, রেফ্রিজারেশন কন্ট্রোলস্, প্রেসার কাটআউট (PC) এবং অয়েল প্রেসার কাটআউট সম্পর্কে জানৰ ।
সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) সমূহ হল-
(১) অ্যাপ্রোন (কর্মক্ষেত্রের নিরম মোতাবেক)
(২) হ্যান্ড গ্লাভস
(৩) মাক্স
(৪) গগলস ইত্যাদি।
এয়ার কন্ডিশনারের কম্পোনেন্ট সমূহ
উদাহরণ হিসেবে একটি উইন্ডো টাইপ এয়ার কন্ডিশনারের স্পেসিফিকেশন দেয়া হল-
উদাহরণ হিসেবে একটি স্প্লিট টাইপ এয়ার কন্ডিশনারের স্পেসিফিকেশন দেয়া হল-
উদাহরণ হিসেবে একটি কম্প্রেসর মোটরের স্পেসিফিকেশন দেয়া হল-
উদাহরণ হিসেবে একটি ফ্যান মোটরের স্পেসিফিকেশন দেয়া হল-
২.১.৪ কম্পোনেন্ট সমুহ টেষ্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় টুলস ও মেজারিং ইন্সট্রুমেন্টস্ এর তালিকা-
ইন্সট্রুমেন্টস্
ইলেকট্রিক কম্পোনেন্ট
ইলেক্ট্রনিক্স কম্পোনেন্ট
রেফ্রিজারেশন বা হিমায়ন কার্যক্রমের জন্য হিমায়ক/ রেফ্রিজারেন্ট প্রবাহের (Flow) প্রয়োজন হয়। পরিমিত মাত্রায় রেফ্রিজারেন্ট প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত ইন্সিত/কাঙ্খিত তাপমাত্রা সংরক্ষণ করা যায় না। তাপমাত্রা ও বিদ্যুৎ প্রবাহ দিয়ে এ প্রবাহ মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক্ষেত্রে তাপমাত্রা, চাপ ও বিদ্যুৎ প্রবাহ পারস্পারিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মেকানিক্যাল কার্যক্রম (সুইসিং) নিয়ন্ত্রিত হয়।
ইংরেজি Control শব্দের অর্থ নিয়ন্ত্রণ করা। কন্ট্রোল (Control) শব্দ হতে কন্ট্রোলার (Controller) না নিয়ন্ত্রক শব্দটি এসেছে। যে যন্ত্র কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করে তাকে নিয়ন্ত্রক (Controller or Controlling Device) বলে। কোন ৰঙ্ক বা জায়গা নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠাণ্ডা করার জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষমতার ইউনিট বা প্লাষ্ট ব্যবহার করতে হয়। তা না হলে প্রয়োজনীয় পরিমাণ তাপমাত্রা পাওয়া সম্ভবপর নয় । বেশি ক্ষমতার যন্ত্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রয়োজনীয় পরিমাণ তাপমাত্রা দিয়ে প্রত্যাশিত জায়গা বা বস্তুকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাপমাত্রার এরকম নিয়ন্ত্রণে কন্ট্রোলারের (Controller) বেশ দরকার হয়। তা ছাড়া প্রয়োজন পূরণ হবার পর যখন প্লান্ট (Plant) বা ইউনিট (Unit) বন্ধ ও পুনরায় পরিচালনা করণে/ করতে নিয়ন্ত্রক ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরণের নিয়ন্ত্রক সম্মিলিত রেফ্রিজারেশন বা হিমায়ন সাইকেল নিচে দেখানো হল-
নিয়ন্ত্রক সম্বিলিত রেফ্রিজারেশন সাইকেলে লো হাইপ্রেসার কন্ট্রোলস, ওয়েল প্রেসার সেফটি কন্ট্রোলস, টেম্পারেচার কন্ট্রোলস, ডুয়েল প্রেসার কন্ট্রোলস।
আর এসি (Refrigeration & Air Conditioning- RAC)-এর প্রেসার বৃদ্ধির সাথে সাথে এর ইউনিট ও প্লান্ট সমূহ স্বয়ংক্রিয় ( Automatic) পরিচালনার প্রসঙ্গ দেখা দেয়। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রয়োজনে রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমকে স্বয়ংক্রিয় করতে কিছু সাহায্যকারী যন্ত্র- যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয় যা কন্ট্রোলস নামে পরিচিত। কন্ট্রোলসের সাহায্যে সিস্টেমের হিমায়ক / রেফ্রিজারেন্ট ও কারেন্ট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনাকে স্বয়ংক্রিয় করা হয়। তাই নিম্নোক্ত প্রয়োজনে কন্ট্রোলস ব্যবহার করা হয়-
১। সুষ্ঠুভাবে সিস্টেম চালু ও বন্ধ করা,
২। সিস্টেমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দৃঢ় করা,
৩। সিস্টেমের দূর্ঘটনা কম ঘটে,
৪। সময়ের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা,
৫। দ্রব্যাদি বিনষ্ট বা অপচয় কম করা,
৬। অর্থ ও শ্রম সাশ্রয় করা,
৭। প্রত্যাশিত মাত্রায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব করা,
৮। প্লাস্টের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা ইত্যাদি ।
কাঙ্খিত মাত্রার উষ্ণতা পাবার জন্য দু'টি কাজের প্রয়োজন-
১। হিমায়ক প্রবাহ ও নিয়ন্ত্রণ
২। বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ।
কাজ দু'টি করার জন্য দুই ধরনের নিয়ন্ত্রক ব্যবহার করা হয়-
১। হিমায়ক প্রবাহ নিয়ন্ত্রক এবং ২। বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রক।
১। হিমারক প্রবাহ নিয়ন্ত্রক (Refrigerant Flow Controllers ) -
হিমায়ক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইসের নাম হল হিমায়ক নিয়ন্ত্রক বা রেফ্রিজারেন্ট ফ্লো কন্ট্রোলার (Controllers)। এটি ইউনিটের হিমায়ক প্রবাহ (চাপ) নিয়ন্ত্রণ করে তাপমাত্রা বা টেম্পারেচার নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখে।
২। বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রক (Current Controllers) -
এটি ইউনিটের বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় রাখে। যেযন্ত্র তাপের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে তাকে বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রক বলে। এর সাহায্যে বৈদ্যুতিক বর্তনী বা সার্কিট অন অফ (ON-OFF) করা হয়, একে দুই ভাগে ভাগ করা হয়-
১। পরিচালনা নিয়ন্ত্রক (Operating Controllers )
এর সাহায্যে সাধারণত কম্প্রেসর মোটরকে পরিচালনা (ON-OFF) করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মোটর যখন চলে তখন কম্প্রেসর চলে এবং হিমায়ক প্রবাহিত হয়। তখন ঠান্ডার কাজ সম্পাদিত হয়। মোটর বন্ধ হলে কম্প্রেসর বন্ধ হয়। ফলে হিমায়ক প্রবাহ বন্ধ হয় ।
২। নিরাপত্তামূলক নিয়ন্ত্রক (Protective Controller)
এটি মূলত হিমায়ক প্রবাহের পরিমানের ভিত্তিতে কম্প্রেসর মোটরকে চালু এবং বন্ধ করে অথবা তাপমাত্রার ভিত্তিতে হিমায়ক প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে।
হিমায়ন ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু অর্থবহ পরিচালনার জন্য অনেক নিয়ন্ত্রক ব্যবহার করা হয় । প্রত্যেকটি ডিভাইসের ভিন্ন ভিন্ন কাজ হলেও মূল উদ্দেশ্য অভিন্ন। রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং নিয়ন্ত্রণে (RAC) নিচে নিয়ন্ত্রক গুলোর নাম ও ব্যবহার ক্ষেত্র হল-
প্রেসার শব্দের অর্থ চাপ আর কাট আউট দিয়ে নিয়ন্ত্রক (সংযোগ বিচ্ছিন্ন) বোঝায়। প্রেসারকাট আউট (PC) চাপে চালিত বৈদ্যুতিক বা ইলেকট্রিক্যাল ও নিরাপত্তামূলক যন্ত্র।
কাট আউট মূলত হিমায়ক ও কম্প্রেসর খুব অয়েলের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এতে হিমায়ন চক্রের নিরাপত্তা বজায় থাকে। হিমায়ন চক্রে যে ডিভাইস হিমায়ক বা কম্প্রেসর অয়েলের চাপে বিদ্যুৎ প্রবাহকে অন-অফ এর মাধ্যমে মোটরকে নিয়ন্ত্রণ করে তাকে প্রেসারকাট আউট বলে। এর অপর নাম চাপ নিয়ন্ত্রক (Pressure Controller)
প্রেসার কাটআউটের প্রধান কাজগুলো হল-
১। সাকশন বা লো-প্রেসার সাইডে নির্দিষ্ট নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে এ কম্প্রেসর মোটরকে বন্ধ করে এবং চাপ বাড়লে কম্প্রেসর মোটরকে চালু করে দেয়।
২। ডিসচার্জ যা হাই প্রেসার সাইডে অতিরিক্ত উচ্চচাপ সৃষ্টিজনিত দূর্ঘটনা থেকে হিমায়ন পদ্ধতিকে রক্ষা করে।
৩। কম্প্রেসরের চলমান অংশে ভেলের (Oil) চাপে পর্যাপ্ত না হলে কম্প্রেসর মোটরকে বন্ধ রাখে।
হিমায়ন চক্রে ব্যবহৃত প্রবাহীর উপর ভিত্তি করে প্রেসার কাট-আউট (PC) প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা হয়-
১। হিমায়ক চাপ নিয়ন্ত্রক (Refrigerant Pressure Cut Out / RPC)
২। কম্প্রেসরের তেল চাপ নিয়ন্ত্রক (Compressor Oil Pressure Cut Out/ COPC)
হিমায়ক চাপ নিয়ন্ত্রক তিন প্রকার
১। নিম্নচাপ নিয়ন্ত্রক (Low Pressure Cut Out)
২। উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রক (High Pressure Cut Out)
৩। দ্বৈত চাপ নিয়ন্ত্রক (Dual Pressure Cut Out)
হিমারক চাপ নিয়ন্ত্রক (RPC)
যে যন্ত্র হিমায়ন চক্রে হিমায়কের চাপীয় অবস্থার কারণে বিদ্যুৎ প্রবাহ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কম্প্রেসরকে চালু ও বন্ধ করে ঐ চাপীয় অবস্থাকে চক্রের উপযোগী রাখতে সহায়তা করে তাকে হিমায়ক চাপ নিয়ন্ত্রক বলে।
লো প্রেসার কাট-আউট (LPC)
যে কাট-আউট হিমায়ন পদ্ধতিতে নির্ধারিত নিম্নচাপে কাজ করে তাকে লো প্রেসার কাট-আউট (LPC) বলে। সাকশন বা নিম্নচাপ অংশে সংযোগ দেয়। এর চাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম। এর স্কেলে এটি ০, ১০, ২০, ৩০, ৪০ ও ৫০ PSI এর মান দাগাংকিত থাকে
প্রেসার কাট-আউটের ব্যবহার ক্ষেত্র-
১। হিমাগার বা কোল্ড ষ্টোরেজ
২। বরফ কল
৩। এয়ার কন্ডিশনিং প্লান্ট
৪ । ইনকিউবেটর
৫। বিয়ার, ওয়াটার ও মিল্ক কুলার
৬। ওয়াক-ইন-কুলার ৭। রিচ-ইন-কুলার
৮। ডিসপ্লেকেইস
৯। বড় স্প্লিট টাইপ এসি
১০। ওয়াটার চিলার
১১। ডেইরি কেইস
১২। বেভারেজ উৎপাদন ও বোতলজাতকরণ প্লান্ট ইত্যাদি ।
প্রেসার কাট-আউট অ্যাডজাস্টিং একটা গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয়। প্লান্টে ব্যবহৃত হিমায়কের চাপের উপর প্রেসার কন্ট্রোলের অ্যাডজাস্টমেন্ট নির্ভর করে। একই হিমায়কের বিভিন্ন তাপমাত্রার জন্য কাট-আউটে ভিন্ন স্প্লি কাট-আউট ও ডিফারেন্সিয়াল প্রেসার সেট করতে হয়। আবার এ অ্যাডজাস্টমেন্ট ভিন্ন ভিন্ন কাট-আউটের জন্য ও বিভিন্ন রকম। যেমন- লো প্রেসার কাট-আউটে প্রেসার রেটিং থাকে দু'টি। একটা কাট- ইন বা অন প্রেসার আর অপরটা ডিফারেন্সিয়্যাল প্রেসার। সিস্টেমের সাকশন প্রেসার অনুযায়ী এর কাট-আউট অর্থাৎ ডিফারেন্সিয়াল প্রেসার সেট করা হয়। হাই প্রেসার কাট-আউটে সাধারণত শুধু কাট-আউট প্রেসার সেটিং করতে হয়। এক্ষেত্রে নির্মাতাই কর্তৃক ডিফারেন্সিয়্যাল প্রেসার সেট করা হয় ।
উল্লেখ্য যে, প্রেসার কাট-আউটে যথাক্রমে সাকশনের পরিমিত ও অতি নিম্নচাপ এবং ডিসচার্জের পরিমিত ও অতি উচ্চচাপ পার্থক্যের উপর নির্ভর করে কাট-আউট ও ডিফারেন্সিয়্যাল সংখ্যামান সেট করা হয়। এ কাজের জন্য স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে কার্ট আউটের অ্যাডজাস্টিং ক্রুকে ঘুরিয়ে মেইন স্কেলের ও ডিফারেন্সিয়াল স্কেলের পয়েন্টার প্রয়োজনীয় সংখ্যার উপর উপস্থাপন করা হয়।
কম্প্রেসরের ক্র্যাঙ্ক কেইসের অয়েল প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে কাট-আউট ব্যবহৃত হয় তাকে অয়েল প্রেসার কাট-আউট বলে। ক্র্যাঙ্ককেইসের চাপ ও অয়েল পাম্পের চাপের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে এ কাট- আউট কাজ করে। ক্র্যাঙ্ককেস চাপ ও অয়েল পাম্পের পার্থক্যকে আপেক্ষিক ডিফারেন্সিয়্যাল চাপও বলে। অয়েল লাইনের তেলের চাপ ও ক্র্যাঙ্ককেইসের হিমায়কের চাপের সমষ্টিকে মোট লুব্রিকেশন বা অয়েল চাপ বলে।
পাম্পের নির্গমন চাপ ঐ নির্দিষ্ট (সর্ব নিম্ন) চাপের চেয়ে বেশি হলে খুব ভালো লুব্রিকেশন হয়। তাই ভালো লুব্রিকেশনের জন্য কম্প্রেসরের অয়েল পাম্পের কাট-আউট প্রেসার সাধারণত সাকশন প্রেসার থেকে কমপক্ষে ২.৫ bar বেশি হয়। সুতরাং অয়েল প্রেসার কাট-আউটের বেলায় -
কাট-আউট প্রেসার = সাকশন প্রেসার + ২.৫ বার (bar)।
১। ক্র্যাঙ্ক কেইসে অয়েলের প্রকৃত চাপ সংরক্ষণের জন্য
২। অয়েল পাম্প ব্যবহৃত বড় বড় সকল প্লান্টের লুব্রিকেশনের জন্য
৩। বরফ কলে (Ice Plant )
৪ । হিমাগারে (Cold Storage)
৫। ফিশফ্রিজিং প্লান্টে (Fish Freezing Plant )
৬। এয়ার কন্ডিশনিং প্লান্টে (Air Conditioning Plant )
৭। ফ্লেকার আইস মেকারে (Flaker Ice Maker)
৮। ট্রলার রেফ্রিজারেশন সিস্টেমে (Troler Refrigeration System) ইত্যাদি।
অয়েল প্রেসার কাট-আউটের অ্যাডজাস্টমেন্ট রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর এ্যাডজাস্টমেন্ট ইভাপোরেটরের তাপমাত্রা, রেফ্রিজারেন্টও সিস্টেমের আকারের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। যেহেতু লুব্রিকেশনের জন্য অয়েল ব্যবহৃত হয় সেহেতু যথাযথ লুব্রিকেশনের উপর গুরুত্ব আরোপ কম্প্রেসরের ঘূর্ণয়মান অংশে অয়েল প্রেসার সংরক্ষণ করা হয়। কারণ কম্প্রেসরের সকল অয়েল লাইনার ও গ্যালারিতে সর্বক্ষণ পরিণত পরিমাণ জেল সরবরাহ অপরিহার্য। তাই পাম্পের নির্গম লাইনে অয়েল প্রেসার ঠিক রাখা দরকার। ক্র্যাঙ্কেজের অয়েল প্রেসার ঠিক না থাকলে পাম্পের নির্গম লাইনে ও সঠিক মাত্রায় তেল সরবরাহ সম্ভব নয়।
পরীক্ষার মাধ্যমে কম্প্রেসরের সাকশন প্রেসার রেকর্ড করা হয়। এ প্রেসারের সাথে ২.৫ পি.এস.আই যোগ করে অয়েল প্রেসার কাট-আউটে কাট প্রেসার সেট করা হয়। অরেল পাম্প কম্প্রেসরের ফ্লাই হুইলের বিপরীত দিকে অবস্থিত যার নির্গমন লাইনে একটা প্রেসার পেজ থাকে।
এ পেজের অরেল প্রেসার = সাকশন প্রেসার + কার্ট আউট ডিফারেন্সিয়াল প্রেসার।
ডিফারেন্সিয়্যাল কমপক্ষে ২.৫ বার (bar) বা প্রায় ৩৬ পি. এস. আই রাখা হয়। অয়েল প্রেসার কটি আউট একবার টিশ করলে প্রয়োজনীয় মেরামত বা সার্ভিসিং করার পর কাট-আউটের রিসেট বাটন না চাপা পর্যন্ত কাট-আউট সংযোগ দেবে না ।
সর্বনিম্ন কাট আউট প্রেসার = সাকশন প্রেসার + ২.৫ বার (bar) |
উল্লেখ্য অয়েল প্রেসার কাট-আউটের সাহায্যে মূলত কম্প্রেসর মোটরকে নিরন্ত্রণ করা হয়। কম্প্রেসরের ক্র্যাঙ্কেজের অয়েলের পরিমিত চাপ ও অরেলের অতি নিম্ন চাপ পার্থক্যের উপর নির্ভর করে এই প্রেসার কাট-আউটের কার্ট-ইন ও কাট-আউট এবং ডিফারেন্সিয়াল সংখ্যামান নির্ধারণ পূর্বক এ্যাডজাস্টিং নব বা হু ঘুরিয়ে ছেলে নির্দেশিকা বা শলাকা সেট করা হয়।
কাট- ইন-প্রেসারঃ যে চাগে সার্কিট অন থাকে ।
কাট-আউট প্রেসার যে চাপে সার্কিট অফ থাকে অর্থাৎ বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে না ।
অয়েল প্রেসারকাট-আউটের সর্ব নিম্ন চাপ = সাকশন চাপ + ২.৫ বার।
বিভিন্ন অংশ নিয়ে অয়েল প্রেসার কাট আউট এর সার্কিট গঠিত-
অয়েল প্রেসার কাট আউট ব্যবহৃত প্লান্টে লুব্রিকেটিং অয়েল পাম্প ব্যবহার করা হয়। প্লান্ট চলাকালীন সময়ে এ পাম্প প্রয়োজনীয় তেল ক্র্যাঙ্ককেইস হতে অয়েল প্যালারিতে প্রেরণ করে।
কোন কারণে নির্ধারিত ডিফারেন্সিয়াল চাপ কমলে তাপীয় কারণে Rest Button হিটারের কন্ট্রাক্ট পয়েন্টকে অফ করে কম্প্রেসরকে বন্ধ করে দেয়।
এ সময় টাইম ডিলে সুইচ-এর হিটার উত্তপ্ত হতে থাকে। হিটার বাই মেটালটি বা থেকে ২ মিনিটে ৭০০ সেঃ উষ্ণতায় উপনীত হলে হিটার বাই মেটালিক কন্ট্রাক্ট সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং মোটরকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে। আর যদি উচ্চ সময়ের (২ মিনিটের) আগে চাপ বৃদ্ধি পেয়ে নির্ধারিত পরিমাণে পৌঁছায় তখন পুনরায় মোটর চলতে শুরু করে এবং বাইমেটালের লাইন বন্ধ হয়ে যায়। মোটর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয় না। অরেল পাম্প ও লাইনের যাবতীয় মেরামত করার পর চালু করতে হয়।
চিত্র ২.১০: অয়েল প্রেসারকাট-আউট সার্কিট
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা মেঙ্গারিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্যালিব্রেট করে এয়ার কন্ডিশনারের ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স কম্পোনেন্টের প্রোপার্টিজ পরিমাপ, সলিনয়েড ভাত ও ইলেকটিক কন্ড্যাক্টর সম্পর্কে জানব ।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Automatic) প্রবাহীর প্রবাহ বন্ধ ও চালু করার জন্য বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রটিকে সলিনয়েড ভালভ (SV) বলে।
সলিনয়েড ভালভের প্রয়োজনীয়তা ও কাজ-
১। লিকুইড ফ্লাড ব্যাঙ্ক (Liquid Flood Back);
২। লিংকিং থ্রো (Linking Trough);
৩। ইন্ডিভিজুয়্যাল ইভাপোরেশন (Individual Evaporation);
৪। ক্যাপাসিটি (Capacity);
৫। টেম্পারেচার কন্ট্রোল (Temperature Control);
৬। প্রিভেন্ট ফ্রস্টিং (Prevent Frosting);
৭। প্রবাহী পথের দিক পরিবর্তন (Changing Way of Fluid):
৮। অতিরিক্ত তরল হিমায়ক প্রবাহে ৰাধা (Protect Execive Liquid Refrigerant Flow) ইত্যাদি।
ডাইরেক্ট অপারেটেড সলিনয়েড ভাল্ভের কার্যপ্রনালী
টেম্পারেচার কার্ট আউট বা থার্মোস্ট্যাট বা অদ্য কোন স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রক দিয়ে লিনয়েড করেলে বিদ্যুৎ প্রাপ্ত হয়ে এনার্জাইজড হয়। অর্থাৎ কয়েলে চুম্বকত্বের সৃষ্টি হয়। এই শক্তির প্রভাবে নিডল ও প্লাঞ্চার শিট হতে স্থানান্তর হয়।
এতে সরাসরি যেন পোর্ট খুলে যায় এবং প্রবাহ শুরু হয়। পরিমাণ মতো কাজ (শীতল বা গরম) হবার পর নিয়ন্ত্রক (Controller) কর্তৃক সলিনয়েড (SV) করেলে বিদ্যুৎ বন্ধ হওয়াতে চুম্বকত্ব নষ্ট হয়। ফলে নিডল পূর্বের স্থলে (শীটে) ফিরে যায় বা রিটার্ন করে যার কারণে প্রবাহ বন্ধ হয়। এভাবে প্রবাহ চালু ও বন্ধ হয় প্রয়োজনীয় মাত্রার উষ্ণতা নিয়ন্ত্রিত হয়।
সলিনয়েড ভালভ স্থাপনের জন্য কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন হয়-
১। উদ্দেশ্য ২। ব্যবহার ক্ষেত্র ও ৩। সতর্কতা ইত্যাদি।
১। উদ্দেশ্য
যে উদ্দেশ্যে বা কাজের জন্য সলিনয়েড অকৃত ব্যবহার করতে হবে তারপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় সলিনয়েড ভালভ (SV) নির্বাচন ও সংগ্রহ করতে হবে।
২। ব্যবহার
ক্ষেত্র কোথায় ব্যবহার করতে হবে অর্থাৎ কোনস্থলে এটি স্থাপন করতে হবে, সেই স্থলের কার্যোপযোগী সলিনয়েড ভালভ সংগ্রহ পূর্বক এটি স্থাপন করতে হবে।
৩। সতর্কতা
সলিনয়েড ভাল্ভ স্থাপন বা ব্যবহারের জন্য অনুসরণযোগ্য সতর্কতা-
১। সলিনয়েড ভাল্ভ এর গায়ে নির্দেশিত তীর চিহ্ন অনুযায়ী স্থাপন করা।
২ সলিনয়েড কয়েলের নির্দিষ্ট ভোল্টেজ অনুযায়ী ব্যবহার করা।
৩। 520°C এর উর্দ্ধে তাপমাত্রায় স্থাপন না করা।
৪। সার্বক্ষণিক আর্দ্রতাযুক্ত স্থলে স্থাপন না করা ।
আর এসি সিস্টেমে সলিনয়েড ভাল্ভ খুবই প্রয়োজনীয় একটা নিয়ন্ত্রক। বড় ও মাঝারি ধরনের প্রায় সকল সিস্টেমে হিমায়ক, পানি, ব্রাইন, চিল্ড ওয়াটার, গ্যাস, নিয়ন্ত্রিত বাতাস ইত্যাদির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্লিনয়েড ভাল্ভ ব্যবহার হয়ে থাকে-
উষ্ণ কাজের জন্য সনিয়েড ভাল্ভের ক্ষেত্র সমূহ হল-
কন্টাক্টর (Contactor) এক প্রকার নিরাপত্তা মূলক বৈদ্যুতিক কন্ট্রোলার। বেশি লোভের ও ভোল্টেজে চালিত মেশিনাটি পরিচালনার জন্য ইলেকট্রিক কন্ট্রাক্টরের বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। যে ডিভাইস লোডের (Load) টার্মিনালের সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের কন্টাক্ট পয়েন্টের অন ও অফ (On-Off) প্রজা নিরাপদে সম্পাদন করে তাকে কন্টাক্টর (Contactor) বলে ।
বিভিন্ন প্রকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দিয়ে হিমায়ন ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রপাতি পরিচালিত হয়। যেমন- এসি, ডিসি, সিঙ্গেল ফেজ, থ্রি ফেজ ইত্যাদি।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিভিন্নতা, পরিচালনা, পোলের সংখ্যা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে কন্টাক্টর এর প্রকারভেদ-
১। গোলের দিক থেকে কন্টাক্টর চার প্রকার-
ক) দুই গোল কন্ট্রাক্টর
খ) তিন গোল কন্টাক্টর
গ) চার গোল কন্টাক্টর
ঘ) পাঁচ গোল কন্টাক্টর
২। পরিচালনার দিক থেকে কন্টাক্টর দু'প্রকার, যথা-
ক) চালিত ( Manual Operated) কন্টাক্টর
খ) স্বয়ংক্রিয় চালিত ( Automatic Operated) কন্টাক্টর।
৩। ফেজের উপর ভিত্তি করে কন্টাক্টর দু' প্রকার, যথা-
ক) সিঙ্গেল ফেজে ব্যবহৃত কন্টাক্টর
খ) ব্রিকেজে ব্যবহৃত কন্ট্রাক্টর।
কন্টাক্টরের কার্যপদ্ধতি বলতে এর সকল অংশ সমুহের কার্যপদ্ধতিকে বোঝায়। কন্টাক্টরের অংশসমুহ-
১। মেক কন্টাক্ট পয়েন্ট
২। ব্রেক কন্টাক্ট পয়েন্ট
৩। মেইন কন্টার পয়েন্ট
৪। ম্যাগনেটিক কয়েল
৫। কয়েল টার্মিন্যাল
৬। আয়রন কোর
৭। কন্টাক্ট ব্রেড
৮। ফ্রেম ইত্যাদি।
কন্টাক্টরে NO (Normally Open) কন্ট্যাক্ট ও NC (Normally Close) কন্টাক্ট থাকে। এ অতিরিক্ত কন্টাক্ট গুলোকে সাহায্যকারী কন্টাক্ট বলে। সার্কিটের স্টার্ট সুইচ অন করলে কন্টাক্টরের ম্যাগনেটিক করেলে বিদ্যুতায়িত হয়ে মোটরের সংযোগ দেয়। অতপর স্টপ সুইচ চাপ দিলে কন্টাক্টর কয়েলে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়। যার দরুন ম্যাগনেটিক কয়েল চৌম্বক শক্তি হারায় এবং স্প্রিং আর্মেচার পূর্বের জায়গায় ফিরে আসে। ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে মোটর অফ হয়। এভাবে পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে কন্টাক্টর মোটরকে চালু ও বন্ধ করে।
ইন্ডাক্টিভ (Inductive) লোড হল- সকল প্রকার বৈদ্যুতিক মোটর। সুতরাং বৈদ্যুতিক মোটর ব্যবহৃত সকল ক্ষেত্রেই কন্টাক্টর (Contractor) ব্যবহার করা হয়। তাই কন্টাক্টরের ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ-
১। আইস প্লান্ট
২। কোল্ড স্টোরেজ
৩। এয়ার কন্ডিশনিং প্লান্ট (AC Plant)
৪ । ফ্রিজিং প্লান্ট
৫। কলকারখানা
৬। পাম্প (Pump)
৭। রাইস মিল
৮। আটা ও ময়দা মিল
৯। 'স' মিল ইত্যাদি
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট সমুহ টেষ্ট করতে, থ্রি ফেজ মোটর, স্টার্টার, ব্রোয়ার ফ্যান, স্প্লিট টাইপ এসির বৈদ্যুতিক সার্কিট অংকণ সহ বর্ণনা সম্পর্কে জানব ।
গঠন, কার্যপদ্ধতি, ব্যবহার ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে থ্রি ফেজ মোটরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ গুলো হল-
১। সিংক্রোনাস মোটর
২। ইন্ডাকশন মোটর
ইন্ডাকশন মোটর আবার দু'ভাগে বিভক্ত-
ক) স্কুইরেল কেইস ইন্ডাকশন মোটর
খ) অয়্যার অউন্ড ইন্ডাকশন মোটর
১। সিংক্রোনাস মোটর (Synchronous Motor)
সিংক্রোনাস মোটর
এটি একটি বিশেষ ধরনের মোটর। এর রোটরে যতবেশি লোড দেয়া হোক না কেন এটি সব সময় একই স্পিডে ঘুরতে পারে। এটি কখনই অন্য স্পিডে ঘুরে না। এটি হয় সিংক্রোনাস স্পিডে ঘুরবে নয়তো ঘুরবেই না । কারণ এর মধ্যে সব সময় একই রকম (rmf/Revolving Magnetic Field) কাজ করে। এর রোটর ঘোরে এবং স্টেটর স্থির থাকে। এর রোটর ও স্টেটর উভয়ই কারেন্ট সরবরাহ করা হয়।
২। ইন্ডাকশন মোটর (Induction Motor)
ইন্ডাকশন মোটর
সাধারণ কথায় বলতে গেলে ইন্ডাকশন মোটরের স্টেটরে তিন ফেজ ওয়াইন্ডিং থাকে। এই ওয়াইন্ডিং এর সৃষ্ট পোল সবসময় জোড় হয়ে থাকে যেমন: ২ পোল, ৪ পোল, ৬ পোল ইত্যাদি।
স্টেটরে তিন ফেজ এসি সাপ্লাই দেয়া হয় যার ফলে কারেন্ট প্রবাহিত হয় এবং এতে একটি ঘুরন্ত চুম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয় যা সিনক্রোনাস স্পিডে ঘুরতে থাকে এবং তা মোটরের মধ্যস্থিত কন্ডাক্টরকে কর্তন করে ফলে ফ্যারাডের ইলেক্টো ম্যাগনেট্রিক ইন্ডাকশন নীতিতে রোটর কন্ডাক্টরে ইএমএফ (Emf) আবিষ্ট হয়।
থ্রি ফেজ বৈদ্যুতিক মোটরের কয়েকটি ব্যবহার ক্ষেত্র হল-
মোটরের স্টার্টিং পরিবেশ অনুকুলে রেখে মোটরকে চালু করা স্টার্টারের কাজ বিধায় বর্ণিত কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করণের মাধ্যমে স্টার্টিং এর অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখা যায়-
১। সরবরাহের সাথে লোড (Load) এর নিরাপদ সংযোগ প্রদান করণ
২। সরবরাহের সাথে লোড (Load) এর নিরাপদ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণ
৩। অনিরাপদ সরবরাহ থেকে মোটরকে রক্ষাকরণ।
৪। হঠাৎ সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে লোড চালু হতে বিরত রাখা।
৫। স্টার্ট কালিন অবস্থায় বিদ্যুৎ প্রবাহ সীমিত রাখা
৬। স্টার্ট কালিন মোটরের টর্ক প্রয়োজন মতো রাখা ।
৭। মোটরের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা ।
কাজের ধরন ও প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন ধরনের স্টার্টার ব্যবহার হয়ে থাকে । তিন ফেজ মোটর নিরাপদে স্টার্ট করার জন্য ব্যবহৃত স্টার্টার-
১. ডাইরেক্ট অন লাইন স্টার্টার (Direct Online Starter, DOL)
২. স্টেটর রেজিস্ট্যান্স স্টার্টার (Stator Resistance Starter)
৩. রোটর রেজিস্ট্যান্স স্টার্টার (Rotor Resistance or Slip Ring Motor Starter)
৪. অটো ট্রান্সফর্মার রেজিস্ট্যাল স্টার্টার (Auto Transformer Starter)
৫. স্টার ডেল্টা টাইপ স্টার্টার (Star Delta Starter)
৬. সফট স্টার্টার (Soft Starter)
৭. ভেরিয়্যাবল ফ্রিকুয়েন্সি ড্রাইভ স্টার্টার (Variable Frequency Drive, VFD)
৮. প্রাইমারি রেজিস্ট্যাম্প স্টার্টার (Primary Resistance Starter)
অধিকাংশ স্টার্টারে নিচে উল্লেখিত অংশ নিয়ে গঠিত-
১। মোটরের জন্য তিনটি ফিউজ ২। কন্ট্রোল সার্কিট কিটজ ৩। প্রভারলোড রিলে ৪। স্টপ সুইচ ৫। স্টার্ট সুইচ ৬। ম্যাগনেটিক কন্টাক্টর ৭। কারেন্ট এ্যাডজাস্টার ইত্যাদি।
স্টার্ট সুইচ অন করলে করেলে বিদ্যুৎ প্রাপ্ত হয়। ফলে চুম্বকায়িত হওয়ার কারণে মোটরের সংযোগ দেয় এবং মোটর চালু হয়। অপরপক্ষে স্টপ সুইচ অফ করলে কয়েলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয় হলে মোটর বন্ধ হয়ে যায়।
যে সকল ক্ষেত্রে তিন ফেজ মোটর ব্যবহৃত হয় সে সকল ক্ষেত্রে স্টার্টার ব্যবহৃত হয়। তিন ফেজ মোটরের ব্যবহৃত স্টার্টার ব্যবহার ক্ষেত্র হল-
ব্লোয়ার ফ্যানের প্রয়োজনীয়তা হল-
১. বাভাসকে গতিশীল করা।
২. গতিশীল বাতাসের গতি কম বা বেশি করা।
৩. বাতাসকে প্রবাহিত বা গতিশীল করা।
৪. নিয়ন্ত্রিত বাতাস/বায়ু সরবরাহ করা।
৫. বায়ুমণ্ডলীয় ৰাতাস সংগ্ৰহ বা গতিশীল করা।
৬. ব্যবহৃত বাতাস প্রত্যাবর্তন করা ইত্যাদি।
বিভিন্ন ধরনের ব্লোয়ার ফ্যান ব্যবহার হয়ে থাকে। কাজ, গঠন, প্রয়োজন ইত্যাদির বিভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন ফ্যান দরকার হয়। ব্লোয়ার ফ্যানের শ্রেণিবিন্যাস হল-
১। পরিচালান কৌশল এর উপর ভিত্তি করে ফ্যান দু'প্রকার-
ক) মানুষ চালিত (Manual Operated) বা হস্তচালিত পাখা, যেমন- তালপাতার পাখা ।
খ) শক্তি বা বিদ্যুৎ চালিত ( Power or Electric Operated) যেমন- সিলিং ফ্যান ।
২। ব্যবহার ক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে আবার চার প্রকার-
ক) সিলিং ফ্যান- ছাদে ঝুলানো থাকে ৷
খ) ওয়াল মাউন্টিং (ব্লোয়ার) ফ্যান - দেয়ালে সেট করা থাকে।
গ) টেবিল ফ্যান (Table Fan) - সাধারণত টেবিলে রাখা হয়।
ঘ) স্ট্যান্ড ফ্যান বা প্যাডেস্টাল- স্ট্যান্ডের সাহায্যে একটু উঁচু অবস্থানে দাঁড়ানো অবস্থায় রাখা হয় ।
৩। বাতাস প্রবাহের দিক থেকে দু'প্রকার-
ক) অ্যাক্সিয়াল ফ্লো বা প্রপেলার ফ্যান (Axial Flow or Propeller Fan )
খ) রেডিয়াল ফ্লো বা সেন্ট্রিফিউগাল ফ্যান (Radial Flow or Centrifugal Fan)
৪। ফ্যান ব্লেড বা বাঁকার দিক থেকে দুই প্রকার, যথা-
ক) সামনে বাঁকা ব্লেড বিশিষ্ট ফ্যান (Forward Curved Blade Fan)
খ) পিছনে বাঁকা ব্লেড বিশিষ্ট ফ্যান (Backward Curved Blade Fan )
৫। অ্যাক্সিয়াল ফ্লো ফ্যান আবার দু'প্রকার-
ক) টিউব অ্যাক্সিয়াল ফ্লো ফ্যান
খ) ভেন অ্যাক্সিয়াল ফ্লো ফ্যান
অ্যাক্সিয়াল ফ্লো ফ্যান
কোন স্থান থেকে বাতাস বের বা এগজস্ট (Exhaust) করার জন্য প্রোপেলার ফ্যান ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ টয়লেট, রান্নাঘর, স্টোর কক্ষ ইত্যাদি হতে অথবা অন্য কোন স্থান হতে বাতাস নিষ্কাশনের জন্য এই ফ্যান ব্যবহার হয়ে থাকে।
প্রোপেলার অ্যাক্সিয়াল টাইপ ফ্যান
যে ফ্যানে বাতাসের প্রবাহ দিক ফ্যানটির শ্যাফটের বরাবর হয়ে থাকে তাকে অ্যাক্সিয়াল ফ্লো ফ্যান বলে। এ ফ্যানের ব্লেড গুলো মোটর শ্যাফটের সাথে সরাসরি সংযোগ থাকে।
রেডিয়াল ক্রো বা সেন্ট্রিফিউগাল ফ্যান
বায়ুর গতি ফ্যান শ্যাফ্ট অক্ষের বিপরীত দিকে ঘটলে অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ ফ্যানের রোটর অক্ষর সাথে লম্ব বরাবর হয়ে থাকে তাকে রেডিয়াল ফ্লো বা সেন্ট্রিফিউগাল ফ্যান (Radial Flow or Centrifugal Fan) বলে।
এ ফ্যানের রেড সরাসরি ফ্যান রোটরের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকে না । ব্লেড ইম্পেলার বা হুইলের সাথে সংযুক্ত থাকে। ব্লেড গুলো সামনে অথবা পিছনে বাঁকা থাকে। মোটর সরাসরি ফ্যান শ্যাটের সাথে সংযুক্ত থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে বেল্টের মাধ্যমে সংযোজন থাকে।
২.৩.১১ ব্রোয়ার ফ্যানের ব্যবহার তালিকা
এই শিখন ফলে আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার করণীয়, Cleanning Meterials এর নাম জানতে পারব । কাজ শুরু করার আগে এবং পরে কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্লিনিং ইকুইপমেন্ট পাওয়া যায়। কার্যকরী ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করলে অতি অল্প সময়ে কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব।
যে কাজটি করতে হবে -
পারদর্শিতার মানদন্ড
১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) পরিধান করা;
২। প্রয়োজন অনুযায়ী কাজের স্থান প্রস্তুত করা;
৩। এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের তালিকা তৈরী করা;
৪ । এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ সমূহের অবস্থান চিহ্নিত করে যন্ত্রাংশ সমূহ বিচ্ছিন্ন করা;
৫। এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের যন্ত্রাংশের ত্রুটি চিহ্নিত করা;
৬। এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ স্পেশিফিকেশন অনুযায়ী পরিবর্তন করা;
৭। ত্রুটিপূর্ন যন্ত্রাংশ পরিবর্তন / মেরামতের পর সকল বৈদ্যুতিক সংযোগ পরীক্ষা করা;
৮ । মেরামতের পর এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটে বিধি মোতাবেক বৈদ্যুতিক সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে চালু করা;
৯। মেজারিং টুলসের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক রিডিং সংগ্রহ ও ডাটা শীটে লিপিবদ্ধ করে ইউনিটটির মেরামত কার্য সঠিক ভাবে সম্পন্ন করা;
১০ । কাজ শেষে ওয়ার্কপের নিয়ম অনুযায়ী কাজের স্থান পরিষ্কার করা;
১১। অব্যবহৃত মালামাল নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা;
১২। ওয়েস্টেজ এবং স্ক্যাপ গুলো নির্ধারিত স্থানে ফেলা;
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(গ) মালামাল (Raw Materials )
(ঘ) কাজের ধারা-
১) ফ্যান ব্লেড হাল্কা ঘুরিয়ে ঘুর্ণন অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে।
২) ক্যাপাসিটর পরীক্ষা করতে হবে।
৩) ফ্যান মটরের টার্মিনাল শনাক্ত করতে হবে।
৪) মোটর ওয়্যাইন্ডিং-এর কন্টিনিউটি পরীক্ষার করতে হবে।
৫) যদি মোটরের বডি বা গ্রাউন্ডিং পরীক্ষার ০ (শূন্য) ওম দেখায়-
৬) প্লাগ ও সার্কিটের কন্টিনিউটি পরীক্ষায় কন্টিনিউটি দেখতে হবে
৭) গ্লান্স সংযোগ দিয়ে সিলেক্টর সুইচের সাহায্যে ক্যান মোটর চালু করতে হবে।
৮) যদি চালু হয় ও নির্ধারিত কারেন্ট দেখায় তাহলে এটি ভালো।
৯) আর যদি না দেখায় তাহলে এটি খারাপ।
কাজের সতর্কতাঃ
আত্নপ্রতিফলন
উইন্ডো টাইপ এয়ার কন্ডিশনারের ফ্যান মোটর পরীক্ষা করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
১. রেফ্রিজারেশন কন্ট্রোলসের সংজ্ঞা লেখ ।
২. ইলেকট্রিক কন্ডাকটরের সংজ্ঞা লেখ।
৩. স্টার্টার কত প্রকার ও কী কী?
৪. রিসিভার কী?
৫. হিমায়ন চক্রে একুমুলেটরের অবস্থান কোথায়?
৬। কয়েকটি ইলেকট্রনিক কম্পোনেন্টের নাম লেখ ।
৭। মাইক্রোন গেজের নাম কি ?
৮। HPC বলতে কী বোঝায় ?
৯। P.C অর্থ কি ?
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন
১. ব্লোয়ার ফ্যানের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো?
২. প্রেসার কাট আউটের প্রকারভেদ করো?
৩. ব্লোয়ার ফ্যানের ব্যবহার ক্ষেত্রের তালিকা তৈরী করো?
৪. কন্ডেনসার এর কাজ লেখ।
৫. ইভাপোরেটরের কাজ লেখ।
৬. অয়েল প্রেসার কাটআউটের কয়েকটি ব্যবহার ক্ষেত্র লেখ ।
রচনামূলক উত্তর প্রশ্ন
১. থ্রি ফেজ মোটরের ব্যবহার ক্ষেত্রের তালিকা তৈরী করো ।
২. চিত্রসহ সলিনয়েড ভালভের কার্যপদ্ধতি বর্ণনা করো ।
৩. সলিনয়েড ভাল্ভ স্থাপন করতে কী কী দিক বিবেচনা করতে হয়।
৪. স্টাটার কত প্রকার ও কী কী লেখ।
৫. অয়েল প্রেসার কাটআউটের অ্যাকজাস্টমেন্ট চিত্রসহ বর্ণনা করো ।
আরও দেখুন...