গত সেশনে আমরা কয়েক ধরনের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জেনেছি। এবার আমরা জানব নেটওয়ার্ক কীভাবে কাজ করে। আমরা তো জানি নেটওয়ার্কের কাজ হল তথ্য আদান-প্রদান করা বা যোগাযোগ স্থাপন করা। কিন্তু এই কাজটি কীভাবে হয়? নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান বা যোগাযোগের কাজটিকে রাস্তা দিয়ে গাড়ি বা মানুষ চলাচলের সাথে তুলনা করা যায়। কীভাবে? এসো জেনে নেই।
আমরা তো প্রায় প্রতিদিনই বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে যাই, তাই না? আমাদের প্রত্যেকের বাড়ি থেকেই বিদ্যালয়ের যাওয়ার বিভিন্ন রাস্তা রয়েছে। এই রাস্তাগুলো বিভিন্ন বাড়িঘর এবং প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করেছে। অর্থাৎ এই রাস্তাগুলো ধরেই এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যাওয়া যায়, আমাদের বাড়ি থেকে আমাদের বিদ্যালয়ে যাওয়া যায়, বাজারে যাওয়া যায়, আবার বন্ধুদের বাড়িতেও যাওয়া যায়। রাস্তাগুলো দিয়ে আবার গাড়িতে করে বিভিন্ন পণ্যও আনা-নেওয়া করা যায়। এই পুরো ঘটনাটি যদি আমরা নেটওয়ার্কিং এর সাথে তুলনা করি, তাহলে সহজেই নেটওয়ার্কে কীভাবে তথ্য আদান-প্রদান বা যোগাযোগ হয় তা বুঝতে পারব।
উপরের বর্ণনায় বাড়ি, বাজার, বিদ্যালয় এগুলোকে আমরা এক একটি কম্পিউটার বা ডিভাইসের সাথে তুলনা করতে পারি। গাড়িগুলোকে কল্পনা করা যেতে পারে ডেটা বা তথ্য হিসেবে এবং রাস্তাগুলোকে বিভিন্ন ধরনের সংযোগ প্রদানকারী তার বা ক্যাবলের সাথে। রাস্তা যেমন সরু-প্রশস্ত, কাঁচা-পাকা এমন নানা ধরনের হয় তেমনি তারগুলোও নানা রকম হতে পারে যেমন- কপার ক্যাবল, কো-অ্যাক্সিয়াল ক্যাবল, ফাইবার অপটিক ক্যাবল ইত্যাদি। আবার আমরা জানি, নেটওয়ার্কে যোগাযোগের ব্যাপারটি তারবিহীনও হতে পারে। তারবিহীন যোগাযোগের এই ব্যাপারটিকে আমরা উড়োজাহাজের মাধ্যমে চলাচলের সাথে তুলনা করতে পারি।
উল্লেখ্য, নেটওয়ার্কে ডেটা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সাধারণত বড় ডেটাকে (মূল ডেটা) নির্দিষ্ট আকারের ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে ফেলা হয়, যেটি ডেটা প্যাকেট নামে পরিচিত। প্যাকেটকে ফ্রেম, ব্লক, ডেটাগ্রাম, সেগমেন্ট ইত্যাদি বিভিন্ন নামেও ডাকা হয়ে থাকে।
এখন, রাস্তা দিয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে আমরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছি যে বেশিভাগ রাস্তা উভয়মুখি। অর্থাৎ রাস্তায় দুদিক দিয়েই গাড়ি চলাচল করতে পারে। কিন্তু কখনো কি দেখেছি যে কিছু কিছু রাস্তা থাকে যেগুলোতে দুদিক দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারে না? এমন কিন্তু অনেক রাস্তা আছে যেগুলো একমুখি অর্থাৎ রাস্তাটি দিয়ে কেবল একদিকেই চলাচল করা যায়, বিপরীত দিক দিয়ে কোনো গাড়ি রাস্তাটিতে প্রবেশ করতে পারে না। আবার কখনো কখনো কিছু কিছু রাস্তায় সাময়িকভাবে একদিক দিয়ে গাড়ি চলাচল থামিয়ে রাস্তাটিকে একমুখি করে রাখা হয়, কিছু সময় পর আবার আগের দিকের গাড়ি চলাচল থামিয়ে উল্টো দিকের গাড়িগুলোকে চলতে দেওয়া হয়। ডিজিটাল নেটওয়ার্কে তথ্য চলাচল বা ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যাপারটিও অনেকটা এরকম।
নিচের চিত্রটি লক্ষ করলেই আমরা ঘটনাটি আরো ভালভাবে বুঝতে পারব।
এবার এসো ডেটা ট্রান্সমিশনের কোন ধরনটির সাথে কোন ধরনের রাস্তা চলাচলের মিল রয়েছে তা নিচের ছকে মিল করতে পারি কিনা দেখি-
ছক ৫.৩
তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তথ্য কীভাবে চলাচল করে বা কীভাবে ডেটা ট্রান্সমিশন হয়। চলো তো দেখি নিচের ছকের কোনটি কোন ধরনের ডেটা ট্রান্সমিশন তা নির্ণয় করতে পারি কিনা-
ছক ৫.৪
আরও দেখুন...