নেটওয়ার্কে তথ্য চলাচল সম্পর্কে তো আমরা জানলাম, এবার জানা যাক নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতার বিষয়ে। আবারো চলো রাস্তার ব্যাপারে চিন্তা করি। যে রাস্তাটা অনেক প্রশস্ত, সেখানে অনেকগুলো লেন থাকবে এবং অনেকগুলো গাড়ি একসাথে চলাচল করতে পারবে। সবাই নিশ্চয়ই সেই রাস্তাটিই ব্যবহার করতে চাইবে দ্রুত চলাচলের জন্য। কিন্তু রাস্তা প্রশস্ত হওয়াই একমাত্র বিবেচ্য নয়। রাস্তাটিতে যদি জ্যাম থাকে তাহলে সেই রাস্তা সবাই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবে। কারণ সেই রাস্তা ব্যবহার করে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে না।
আবার, দেখা গেল, খুব প্রশস্ত রাস্তা, জ্যামও নেই; কিন্তু, রাস্তার অবস্থা (কোয়ালিটি) ভাল নয়। উঁচু-নিচু, একটু পর পর ভাঙ্গা, প্রবল ঝাঁকুনি লাগে, পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যাত্রীদের সমস্যা হতে পারে, সে রকম রাস্তাও আমরা এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করব। একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতা বা গুণাগুণ বিচার করার ক্ষেত্রে এই ধরনের সমজাতীয় দিকগুলো বিবেচনায় নেয়া হয়ে থাকে। যেমন: প্রতি মিনিটে গড়ে কতটি গাড়ি রাস্তা দিয়ে যেতে পারে সেই হারের সাথে নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইথ, অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে গড়ে কত বিট (বিট/সেকেন্ড) ডেটা সে নেটওয়ার্কে চলাচল করতে পারে, সেটির তুলনা করা যেতে পারে। আবার, রাস্তার ধারণক্ষমতা বা ক্যাপাসিটি সর্বোচ্চ যতই হোক না কেন, বিভিন্ন কারণে (যেমন, দুটি গাড়ির মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব রাখা) ঠিক তত সংখ্যক গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। নেটয়ার্কের ক্ষেত্রেও ব্যান্ডউইথ যাই হোক না কেন, প্রকৃত অর্থে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে যত বিট (বিট/সেকেন্ড) ডেটা সে নেটওয়ার্কে চলাচল করতে পারে, সেটিকে বলা হয় নেটওয়ার্কের খুপুট।
ব্যান্ডউইথ, খুপুট ইত্যাদির মত নেটওয়ার্ক সংশ্লিষ্ট আরো কিছু শব্দ ছক ৫.৫ এর বাম পাশে অর্থসহ দেওয়া আছে। আর ছকটির ডানপাশে রয়েছে রাস্তায় গাড়ি চলাচল সম্পর্কিত কিছু ঘটনার বর্ণনা।
পরের পৃষ্ঠার ছক ৫.৫ বামপাশের শব্দগুলোর অর্থ পড়ে কোন শব্দটি ডানপাশের কোন ঘটনার সাথে মিলে এসো তা বের করার চেষ্টা করি-
তাহলে, নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত বেশ কিছু বিষয় তো আমরা জানলাম। এবার এসো দেখি কিভাবে নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইথ এবং গ্রুপুট নির্ণয় করা যায়।
গাণিতিক সমস্যা: একটি নেটওয়ার্কে ১০ কিলোবাইটের একটি ফাইল গন্তব্যে পাঠাতে সর্বনিম্ন ২ সেকেন্ড সময় লাগে। বিভিন্ন কারণে বিলম্ব হওয়ায় এই নেটওয়ার্কে ১৫ কিলোবাইটের একটি ফাইল পাঠাতে ৫ সেকেন্ড সময় লাগল। নেটওয়ার্কটির ব্যান্ডউইথ এবং থুপুট কত হবে?
আমরা জানি,
১ কিলোবাইট = ১০০০ বাইট
সুতরাং, ১০ কিলোবাইট = (১০ X ১০০০) ১০০০০ বাইট
আবার, ১ বাইট = ৮ বিট
সুতরাং, ১০০০০ বাইট = (১০০০০ X ৮) = ৮০০০০ বিট
অর্থাৎ ১০ কিলোবাইট = ৮০০০০ বিট
নেটওয়ার্কটিতে ১০ কিলোবাইটের ফাইল পাঠাতে সর্বনিম্ন ২ সেকেন্ড সময় লাগে
অর্থাৎ, ২ সেকেন্ডে পাঠানো সম্ভব ৮০০০০ বিটের ফাইল
সুতরাং, ১ সেকেন্ডে পাঠানো সম্ভব ৮০০০০ / ২ = ৪০০০০ বিটের ফাইল
আমরা জানি,
প্রতি সেকেন্ডে গড়ে সর্বোচ্চ যত বিট (বিট/সেকেন্ড) ডেটা চলাচল করতে পারে তাকে ব্যান্ডউইথ বলে।
অর্থাৎ, এখানে নেটওয়ার্কটির বান্ডউইথ = ৪০০০০ বিট/সেকেন্ড বা বিপিএস।
কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে নেটওয়ার্কটির মাধ্যমে ৫ সেকেন্ডে ১৫ কিলোবাইট ফাইল পাঠানো গিয়েছে,
এখানে,
১৫ কিলোবাইট = (১৫ X ১০০০) = ১৫০০০ বাইট = (১৫০০০ X ৮) = ১২০০০০ বিট
সুতরাং, থুপুট = ১২০০০০ বিট। ৫ সেকেন্ড = ২৪০০০ বিট/সেকেন্ড বা বিপিএস।
এবার এসো একইভাবে আমরা নিজেরা একটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান করি-
গাণিতিক সমস্যাঃ একটি নেটওয়ার্কে ১ কিলোবাইটের একটি ভিডিও পাঠাতে সর্বনিম্ন ৫ সেকেন্ড সময় লাগে। নেটওয়ার্কে কনজেশন থাকায় নেটওয়ার্কটির মাধ্যমে ১০ কিলোবাইটের একটি ফাইল পাঠাতে ১ মিনিট সময় লাগল। নেটওয়ার্কটির ব্যান্ডউইথ এবং থুপুট কত হবে?
|
আরও দেখুন...