বেঁচে থাকার তাগিদে আমাদেরকে অনেক কাজই করতে হয়। যে সকল সুন্দর পরিবেশ আমরা আরো সুন্দর দেখতে চাই। শত কর্মব্যস্ততার মাঝেও যে যার অবস্থানে, নিজের বাসস্থান, আশ-পাশ ও কর্মস্থলের পরিবেশ স্যুন্দর থেকে সুন্দরতর রাখার চেষ্টা করি। এর জন্য প্রয়োজন শুধু পরিচ্ছন্ন মন, সুখাস্থ্য ও ভাল কিছু করার প্রচেষ্টা। সুস্বাস্থ্যের জন্য খাদ্যের বিকল্প নেই, তবে সে খাদ্য হতে হবে পরিমিত, বিশুদ্ধ, পরিচ্ছন্ন ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং তা গ্রহণ করতে হবে নিয়মিত। অভ্যাস ও জীবনধারা প্রযুর মননের শক্তি। এই শক্তিই আমাদের কর্মে সুখ এনে দিতে পারে। একজন মানুষ কখনোই অন্যকে উৎসাহ দিতে পারে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত সে নিজেকে উৎসাহিত করে। আশ-পাশের পরিচ্ছন্নতা ও কাজের পরিবেশ আমাদের কাজের স্পৃহাকে যেমন বৃদ্ধি করে তেমনি উৎসারিত করে। তাই কর্ম পরিবেশ ও টুলস ইন্সট্রুমেন্ট রক্ষণাবেক্ষণে নিচ্ছেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অবগত এবং সচেতন থাকা একান্ত প্রয়োজন। আলো-বাতাস, টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী, ওয়ার্কশপ লে-আউট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। এ অধ্যায়ে জেনারেল মেকানিক্স কাজে ব্যবহৃত টুলস ইন্সট্রুমেন্টও যন্ত্রপাতিকে কিভাবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় তা শিখব এবং দক্ষতা অর্জন করব।
ওয়ার্কশপে কোন মেশিন বা যন্ত্রপাতি নুতন ভাবে বসানোর পর ব্যবহারের কারণে উহার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় বা অকেজো হয়ে পড়ো। তাছাড়া ময়লা, ধুলবালি ইত্যাদি পড়ে মেশিনপত্র নষ্ট বা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যেতে পারে। তাই পর্যায়ক্রমে ওয়ার্কশপের টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতিকে সার্বক্ষণিক ব্যবহার উপযোগী ও অকেজো হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত বা পর্যায়ক্রমে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তা-ই টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও ওয়ার্কশপ রক্ষণাবেক্ষণ। নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রয়োজনীয় অংশে তৈল, গ্রীজ ইত্যাদি প্রয়োগ করা; তবে এটা তার পূর্বনির্ধারিত কাজের ধারাকে সঠিক ও যথার্থভাবে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ধরে রাখতে সমর্থ হয়। উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের ফলে যন্ত্রপাতি নির্ভুলতা সম্পন্ন হয়ে সুক্ষ্মভাবে কার্য সম্পাদন করতে পারে এবং আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাওয়াসহ ব্যবহারকারী স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারে। সামগ্রিকভাবে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। ৫.১.১ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ
নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনরূপ ব্যর্থতা ছাড়াই চলমান কার্যাদী সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া। এ ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ওয়ার্কশপের টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি নিয়মিত পরিদর্শন, মেরামত-সংস্কার ও সার্ভিসিং করা প্রয়োজন হয়।
ওয়ার্কশপের টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি অকেজো হওয়ার পূর্বেই কার্যক্ষম রাখতে রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এছাড়া-
• নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করলে টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি বার বার নষ্ট হয়ে এক সময় সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যেতে পারে;
• যখনই টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির কোনো ত্রুটি দেখা দেয়, যদি দ্রুত মেরামত না করা হয় তবে অনেক বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং কাযক্রম বন্ধ হয়ে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়;
• সঠিক সময়ে রক্ষণাবেক্ষণ না করলে কাজ ব্যাহত হয় এবং চাহিদা মোতাবেক কার্যাদি সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না;
• সঠিকভাবে টুলস-ইন্সট্রুমেন্টও যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ করলে টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়;
• রক্ষণাবেক্ষণে প্রত্যক্ষ খরচ বৃদ্ধি পেলেও সামগ্রিকভাবে কার্যাদি সম্পন্ন করার খরচ হ্রাস পায়;
• যন্ত্রপাতির অবচয় মূল্য কম হয়;
• স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হয়;
• মেকানিক্সের কার্যাদী দ্রুত সম্পন্ন করা যায় এবং দূর্ঘটনার হার কমে যায় 'ইত্যাদি।
ওয়ার্কশপ রক্ষণাবেক্ষণ সাধারণত চারটি উপায়ে করা হয়ে থাকে, যেমন-
(১) পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ (Planned Maintenance)
অপ্রত্যাশিতভাবে কোন ওয়ার্কশপের টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি হঠাৎ বন্ধ/অকেজো হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ দুই প্রকার। যেমন-
ক) প্রতিরোধী রক্ষণাবেক্ষণ: ক্ষয়প্রাপ্ত বা ভালা যন্ত্রাংশসমূহ মেরামত, তৈল বদলানো, গিয়ার ওয়েল, গ্রীজ দেওয়া ইত্যাদি কার্যক্রম প্রতিরোধী রক্ষণাবেক্ষ;
খ) দীর্ঘমেয়াদী রক্ষণাবেক্ষণ: মেশিন নির্মান প্রতিষ্ঠান বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মেশিনের সাথে সরবরাহকৃত মেনুয়্যাল বা নির্দেশিকা অনুযায়ী দীর্ঘদিন পর ঐ মেশিনের কোন অংশের মেরাসজনিত কাজই দীর্ঘমেয়াদী রক্ষণাবেক্ষণ।
(২) তালিকা মাফিক রক্ষণাবেক্ষণ (Scheduled Maintenance) কোনো ওয়ার্কশপ/শিল্প প্রতিষ্ঠানে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতিসমূহ পরিদর্শন, লুব্রিকেশন, সার্ভিসিং, ওভারহলিং ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করাই তালিকা মাফিক রক্ষণাবেক্ষণ।
(১) ব্রেক ডাউন রক্ষণাবেক্ষণ (Brake-down Maintenance) কোনো টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি বা মেশিন হঠাৎ নষ্ট হলে উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রেখে সম্পূর্ণ মেরামত করে কার্যোপযোগী করাই ব্রেক ডাউন রক্ষণাবেক্ষণ।
(২) মুলধন প্রতিস্থাপন রক্ষণাবেক্ষণ (Capital Replacement Maintenance) বিনষ্টকৃত টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি বা মেশিন মেরামত বা খুচরা যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করে সদ্বোধজনক ভাবে ব্যবহার করা যায়; কিন্তু ব্যয় খুব বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, মেরামত খরচ প্রায় নুতন টুলস - ইন্সট্রুমেন্ট ওমেশিন ৰা পাতি ক্রয় করে বসানোর খরচের কাছাকাছি হয়। এমতাবস্থায় বিনষ্টকৃত টুলস- ইন্ট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি বা মেশিন মেরামত না করে পুনরায় সুলধন খাটিয়ে নতুন টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন প্রতিস্থাপন করা হয় তাকে মূলধন প্রতিস্থাপন রক্ষণাবেক্ষণ বলা হয়।
সময়ের উপর ভিত্তি করে রক্ষণাবেক্ষণকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
• সচল ও অচলটুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি চিহ্নিত করা;
• রক্ষণাবেক্ষণ মেনুয়্যাল পর্যালোচনা করে দৈনন্দিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজ সম্পাদন করা;
• চলমান টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির ক্ষয়ের ক্ষেত্রগুলি যেমন- নাট-বোল্ট চেক করা;
• সংশ্লিষ্ট সাহায্যকারী সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ;
• ইরোর পরিমাপ ও কেলিব্রেশন করা;
• খুচরা যন্ত্রাংশ বা যন্ত্রাংশ ফরমায়েশের তালিকা ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করা,
• সংশ্লিষ্ট টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি নির্ধারিত স্থানে রাখা এবং এগুলির ব্যবহার নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
• ক্ষয়সাধিত টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি শনাক্ত করা কার্যোপযোগী করা বা বদল করা। নষ্ট বোষ্ট চেক করা ও প্রয়োজনে পরিবর্তন করা;
• কাজের শেষে টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ ও চেক করা ;
• কাজের শেষে প্রতিবার টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতিগুলি মরিচা প্রতিরোধী আবরণ দেয়া;
• বছরে ন্যূনতম একবার টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি ভেরিফিকেশন করা;
• হারানো ও ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন (ইনভেন্টরী) প্রস্তুত করা এবং তা প্রতিস্থাপন করা ইত্যাদি।
কাজের উপর ভিত্তি করে টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১. ব্রেক ডাউন রক্ষণাবেক্ষণ
২. প্রতিরোধী রক্ষণাবেক্ষণ
প্রতিরোধী রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া সাধারণত পূর্ব প্রস্তুতিমূলক রক্ষণাবেক্ষণ। এ প্রক্রিয়া প্রধানত সম্পদের অকেজো হওয়া, উৎপাদন ব্যাহত হওয়া অথবা অযাচিত টস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি ক্ষয়ক্ষতি হতে রক্ষার জন্য পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। পর্যায়ক্রমে কোনো টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি এগুলির উৎপাদন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত ম্যানুয়েল বা গাইডলাইন মোতাবেক পরিষ্কার করা, সার্ভিসিং করা, পরীক্ষা করা, ক্ষয়প্রাপ্ত যন্ত্রাংশসমূহের মেরামত বা পরিবর্তন ইত্যাদি এই রক্ষণাবেক্ষণের আওতাভুক্ত। আমরা সাধারণত প্রতিরোধী রক্ষণাবেক্ষণ বিভিন্ন কারণে করিনা, যেমন মালিক (তত্ত্বাবধায়ক) মনে করে যেহেতু টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাত্তি সচল আছে সুতরাং এদের লাইক শেষ হওয়া সত্ত্বেও বদলানো প্রয়োজন মনে করে। এছাড়া অনেক সময় মূলধনের অভাবে কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণে ভুল সিদ্ধান্ত একটি বড় কারণ।
টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি নিম্নরুপ হয়ে থাকে-
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতিসমূহ চিপস মুক্ত রাখা;
• কোথাও ক্ষয় বা মরিচা দেখা দিলে সাথে সাথে সেগুলি যুক্ত করে ক্ষয় থেকে রক্ষা করা ;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির মসৃণ ও চকচকে তলসমূহের কাপড়ের টুকরা দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির পরিষ্কার ও চকচকে ভলসমূহে ইন্সট্রুমেন্ট ওয়েলের প্রলেপ দেয়া;
• বিভিন্ন চলন্ত অংশে ক্ষয়রোধ করার জন্য নিপলের মাধ্যমে নিয়মিত তৈলাক্ত করা;
• প্রয়োজনে ত্রুটিযুক্ত যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা;
• ভাঙ্গা ও ক্ষয়প্রাপ্ত যন্ত্রাংশ বদল করা বা রিপেয়ার করার মাধ্যমে কার্যোপযোগী করা;
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতি পরিষ্কার নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত সচরাচর ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় দ্রব্যের নাম নিয়ে উল্লেখ করা হলো- গ্রীজ পান, ওয়েল ক্যান, কেরোসিন তৈল, ক্লিনিং ব্রাশ ইত্যাদি।
• যে সকল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অথবা কারণে দুর্ঘটনা ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকেসেসব অবস্থাকেই বিপদজনক অবস্থা বলা হয়ে থাকে। বিপদজ্জনক অবস্থা যে কারনে সৃষ্টি হতে পারে-
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট এর সঠিক ব্যবহার না জানা;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট এর ম্যানুয়েল ও কোড ফলো না করা :
• অপর্যাপ্ত আলো ও অপর্যাপ্ত স্থান;
• অপর্যাপ্ত বিশুদ্ধ বায়ু চলাচলের পথ;
• বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার ত্রুটি;
• গার্ডবিহীন টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন;
• যন্ত্রাদির ধারালো কাটিং এজ এর অসাবধান ব্যবহার;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির চোখা অংশের অসাবধান ব্যবহার;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও যন্ত্রপাতির ঢিলা বা ভাঙ্গা অংশ থাকা;
• মেঝেতে পড়ে থাকা তৈল, গ্রীজ ও অন্যান্য তরল পদার্থ;
• ধাতব চিপস এবং বিভিন্ন স্ক্র্যাপ মেটাল;
• অনিয়মতান্ত্রিক কার্যাভ্যাস ইত্যাদি।
• যেকোনো টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনটুলে কাজ করার সময় সেফটি গগলস পরিধান করা। এছাড়া-
• সর্বদা শক্ত ও অপিচ্ছিল তলাযুক্ত জুতা পরিধান করা। কারণ চিপ জুতার তল কেটে পায়ের নিচে আঘাত করতে পারে। তা ছাড়া পড়ন্ত বস্তুর হাত থেকে পা-কে রক্ষা করা যায়, স্যান্ডেল পরিধান করে ওয়ার্কশপে কাজ না করা। কারণ যে কোনো সময় ভারী জিনিস পায়ের উপর পড়তে পারে, যা মারাত্মক আঘাতের কারণ হয়;
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে কাজ করার সময় সর্বদা আঁটসাঁট পোশাক পরিধান করা। কারণ ঢিলা এবং ছেঁড়া পোশাক চলমান যন্ত্রাংশে আটকে যেতে পারে;
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে কাজ করার সময় হাতাকাটা বা কনুইয়ের উপর পর্যন্ত ভাঁজ করা জামা ব্যবহার করা। কারণ লম্বা হাতে চলমান যন্ত্রাংশ আটকে যেতে পারে; ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় আংটি, হাত ঘড়ি ও কব্জির অলংকার পরিধান না করা। কারণ এগুলি আঘাতের কারণ হতে পারে;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে কাজ করার সময় নেক-টাই, মাফলার ও চাদর পরিধান না করা। কারণ এগুলি চলমান যন্ত্রাংশে জড়িয়ে যেতে পারে এবং মারাত্মক দূর্ঘটনার কারণ হতে পারে;
• লম্বা চুল অবশ্যই বেঁধে রাখা। কারণ লম্বা চুল চলমান যন্ত্রাংশে জড়িয়ে যেতে পারে এবং মারাত্মক দূর্ঘটনার কারণ হতে পারে;
• সূক্ষ্ম মেশিনিং কাজ করার সময় হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার না করা। কারণ পরিমাপে সমস্যা হয়;
• কাঁচামাল স্ক্র্যাপ ও চিপে হাত লাগাতে হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করা;
• বৈদ্যুতিক কাজ করার সময় রাবারের হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা;
• অ্যাপ্রন পরিধান পূর্বক কাজ করা ইত্যাদি।
টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন অপারেশনে ওয়ার্ক প্রসিডিউর এবং স্যুষ্ঠুভাবে কার্যাদী পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু আদর্শ বিষয় রয়েছে। এ আদর্শ বিষয়সমূহ সঠিকভাবে জেনে কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারলে টুলস - ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন অপারেশন কাজের সাথে সম্পৃক্ত সকল বিষয় সহজ হয়ে যায়। সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণসহ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকি কমে যায়। পক্ষান্তরে মেকানিক্স হাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির যেমন স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়, তেমনি অপারেটরের ঝুঁকি হ্রাস পায় ও কর্মস্থলের পরিবেশ স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়।
• বিদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনপরিচালনায় অবশ্যই গগলস পরিধান করা;
• মেরামত না করে কোনো ত্রুটিযুক্ত টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার না করা;
• ইলেকট্রিক লাইন বিচ্ছিন্ন করার সময় তার ধরে না টেনে প্লাগ ধরে টানতে হবে;
• কার্যবস্তুতে টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট দ্বারা অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগে মোটরের উপর বেশী লোড অপারেশন চলাকালীন টুলস ইন্সট্রুমেন্টও যন্ত্রপাতি অযত্নে ফেলে না রাখা;
• ঘূর্ণায়মান যন্ত্রাংশে টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার না করা;
• লম্বা চুল ও ঢিলা-ঢালা পোষাক পরিহার করতে হবে ইত্যাদি।
• অনুমোদিত চোখের সুরক্ষা পরিধান করা;
• মেশিন অপারেশনের সাথে সংগতিপূর্ণ শোভন পোষাক পরিধান করা ;
• পোষাক ঢিলে ঢালা ও অত্যন্ত দাহ্য না হওয়া;
• হাই-টপ জুতা, চামড়ার অ্যাপ্রন, চামড়ার গ্লাভস পরিধান করা;
• কফলেট প্যান্ট পরা;
• পকেট থেকে সমস্ত কাগজ সরিয়ে রাখা;
• সিন্থেটিক পোষাক ও গয়না না পরা;
• লম্বা চুল বা লম্বা ক্যাপ না রাখা বরং হেলমেট ব্যবহার করা;
• হাতুড়ি ব্যবহারে হাতের আঙ্গুল সাবধানে রাখা;
• জোড়ে কথা না বলা এবং কাজে মন দেয়া;
• কার্যস্থান ও সরঞ্জামাদি পরিষ্কার রাখা;
• প্রস্থানের পথ পরিষ্কার রাখা;
• চর্বিযুক্ত এবং তৈলাক্ত বস্তু মেঝে থেকে পরিষ্কার করা;
• এয়ার ক্লিনার ও এয়ার হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা ;
• সঠিক আকারের ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করা;
• রেঞ্চের জায়গায় কখনো প্লায়ার্স ব্যবহার না করা;
• হাতুড়ি দিয়ে রেঞ্চে আঘাত না করা ;
• কাটিং টুল ধারালো রাখা, ভোঁতা টুল ব্যবহার না করা;
• আঙ্গুলের নখ বড় না রাখা;
টুলস ইকুইপমেন্ট সঠিকভাবে এবং যথাস্থনে সংরক্ষন করা;
• পকেটে ধারালো টুলস ইন্সট্রুমেন্ট বহন না করা; ধারালো প্রাপ্তের সরঞ্জাম অধিক নিরাপদে রাখা;
• ক্ষতিগ্রস্থ টুলসগুলিকে অনিরাপদ হিসাবে চিহ্নিত করা;
• ক্ষতিগ্রস্ত টুলস ইন্সট্রুমেন্ট-কে মেরামত না করা পর্যন্ত ব্যবহার না করা;
• অতি প্রয়োজনে গ্লাভস পড়া, কারণ গ্লাভস পড়ে ভারী টুলস বা সরঞ্জাম ধরতে অসুবিধা হয় ইত্যাদি।
মেশিন অপারেশনে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, টুলস বা সরঞ্জামের একটি পরিচিতি এবং কাজ ও ব্যবহারিক নির্দেশনা প্রদান করার মাধ্যমই হচ্ছে মেনুয়াল কোড, ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড ও ক্লাইন্ট স্পেসিফিকেশন।
মেনুয়্যাল হল একটি নির্দিষ্ট রেফারেন্স বই বা ডকুমেন্ট যেখানে কোন যন্ত্রপাতি বা পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবহার, নিরাপত্তা ও অন্যান্য নির্দেশনা থাকতে পারে। যন্ত্রপাতি বা পণ্যের নির্মাতা সাধারণত যন্ত্রপাতি তৈরি করা প্রতিটি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার একটি মেনুয়্যাল সরবরাহ করে। এটি যন্ত্রপাতি ব্যবহারকারীর জন্য সহায়ক হিসাবে কাজ করে। যদি ব্যবহারকারীর যন্ত্রপাতিসমূহ কীভাবে পরিচালনা, ব্যবহার করা এবং এর যত্ন নেওয়া যায় সে সম্পর্কে পূর্ব ধারণা না থাকে। এটি ব্যবহারকারীকে বুঝতে সহায়তা করে কিভাবে এটির যত্ন নেওয়া যায় এবং অপারেটিংয়ের সময় নিরাপদ রাখা যায়। এগুলিকে প্রায়সই ইউজার মেনুয়ালও বলা হয়।
মেনুয়াল কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন-
• তথ্য ভিত্তিক মেনুয়াল ( Instruction Manual)
• রেফারেন্স মেনুয়াল (Reference Manual)
• প্রোডাক্ট মেনুয়াল (Product Manual)
• ওয়ার্কিং মেনুয়াল (Working Manual)
• ব্যবহারিক মেনুয়াল (Working Mamual )
কোড হলো কতগুলি নিয়মের একটি সেট, যা ক্লায়েন্টকে অনুসরণ করার জন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সুপারিশকৃত গাইডলাইন হিসাবে কাজ করে। এতে প্রোডাক্টের গুণমান ধরে রাখা বা অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্তিতে সহায়তা করে। এটি আইন না হলেও অনুসরণযোগ্য। তবে অনেক ক্ষেত্রে আইনে পরিনত হতে পারে। কোনো দ্রব্য সামগ্রী বা যন্ত্রাংশ নির্মাণ, ব্যবহার বা রক্ষণাবেক্ষনে কোড অনুসরণ করা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। উদাহরণ-
মনে কর একটি বৈদ্যুতিক ক্যাবলের কোড- ABCX Cable 1x16 mm, 19ও
কোন শিল্প-কারখানা বা উৎপাদন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত কোডসমূহের ব্যাখ্যা নির্দেশনা দেয়ার ব্যবস্থাকেই ইন্ডাস্ট্রিজ স্ট্যান্ডার্ড বোঝায়। এতে যন্ত্রাংশ বা পণ্যের তুলনামূলক বিবরণ থাকে। যেমন- নিম্নের সারফেস ফিনিসের তিনটি সিম্বল দ্বারা তিনটি কাজকে নির্দেশ করে।
ক্লায়েন্ট স্পেসিফিকেশন, কোড বা স্ট্যান্ডার্ডের বিপরীত, যা কোনো শিল্প বা ওয়ার্কশপের যন্ত্রপাতি বা পণ্যের জন্য ব্যবহার করা যায়। স্পেসিফিকেশন কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানি বা যন্ত্রপাতির প্রয়োজনীয়তার রূপরেখা উপস্থাপন করে। কোনো যন্ত্রপাতির নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা, কম্পোনেন্টসমূহের সেবার ধারনা স্পেসিফিকেশনে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। অনেক সময় স্পেসিফিকেশনে যন্ত্রপাতি বা উহার উপাংশসমূহের (Components) আদর্শ ইন্সটলেশন প্রক্রিয়া বা ডিজাইন লে-আউট এর নির্দেশনা দিয়ে থাকে।ক্ষেত্র বিশেষে স্পেসিফিকেশন কোড বা স্ট্যান্ডার্ড এর চেয়ে বেশী গুরুত্ব বহন করে। যেমন-
কাৰ্বাইড মিল (Carbide Mill): R390-11 13015E - NL H13আ
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন সম্বন্ধে ভাল জ্ঞান অর্জন করে তারপর চালানো উচিত;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন চালানোর পূর্বে উহা কিভাবে এবং কত সহজে বন্ধ করা যায় তা জানা প্রয়োজন;
• গার্ড খোলা অবস্থায় মেশিন চালানো উচিত নয়;
• শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন চালানো উচিত নয়;
• একাধিক ছাত্র একইটুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন চালানো উচিত নয়;
• চালু মেশিনে ঠেস দিয়ে দাঁড়াতে নেই;
• ওয়ার্কশপে অযথা দৌড়াদৌড়ি করা উচিত নয়;
• মেশিন চালানোর সময় অমনোযোগী হওয়া ও কথাবার্তা বলা উচিত নয়;
• চালু অবস্থায় কোন টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে তৈল, গ্রীজ ইত্যাদি দেয়া, মেরামত করা ও পরিষ্কার করা উচিত নয়;
• বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলে সঙ্গে সঙ্গে মেশিনের সুইচ বন্ধ করতে হবে; মেশিনে অস্বাভাবিক শব্দ হলে তৎক্ষণাৎ তা বন্ধ করে দিতে হবে;
• কোন কারণে টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন খারাপ হলে “Under Repair” কথাটি একটি বোর্ডে লিখে ঐ মেশিনের গায়ে ঝুলিয়ে রাখতে হবে ইত্যাদি।
শিল্প কলকারখানা বা ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় অনেক ক্ষেত্রেই অনাকাঙ্খিত বা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য আমাদেরকে সব সময় সচেতন থাকতে হবে। অনাকাঙ্খিত বা অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য একটি ফরম উদাহরণ হিসাবে দেয়া হলে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে ফর্মের পরিবর্তন হতে পারে। এ ধরনের প্রতিবেদন কার্যক্ষেত্রে সংরক্ষণ থাকা বাঞ্ছনীয়। প্রতিবেদনের আলোকে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক বা মেশিন অপারেটর তার কর্মক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ হিসাবে অর্থনৈতিক সুবিধা পেতে পারে এবং প্রকৃত দোষী ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়।
টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে কাজ করার সময় যেকোনো দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য অবশ্যই নিরাপদ পোশাক ও নিরাপদ সরঞ্জামাদি যেমন- অ্যাপ্রন, গগলস, দস্তানা, চামড়ার জুতা পরিধান করা দরকার। নিরাপদ পোশাক ও সরঞ্জামাদি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হল-
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে কাজ করার সময় সর্বদা আটসাট পোশাক পরিধান করা উচিৎ;
• আংটি, ঘড়ি ও অন্যান্য অলংকার পরিধান করা উচিৎ নয়;
• খালি পায়ে চলাফেরা একেবারেই নিষিদ্ধ;
• শক্ত তলা যুক্ত চামড়ার জুতা পরিধান করা উচিৎ;
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে কাজ করার সময় নেকটাই, মাফলার ও চাদর পরিধান করা উচিৎ নয়;
• কাজ করার সময় সেফটি গগলস পরিধান করা ভাল ইত্যাদি।
সকল টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন রক্ষণাবেক্ষণে সাধারণত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা মেনুয়াল, গাইড, কোড স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করাই শ্রেয়। এছাড়া নিম্নে উল্লেখিত উপায়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা সহজ হয়। যেমন-
• সব সময় টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনের নিরাপত্তা, উৎপাদনশীলতা পরীক্ষা এবং সাধারন সম দুরীকরণ এবং সর্বোপরি মেশিনের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে সদা সতর্ক থাকা
• টুলস-ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ চেকলিস্ট অনুযায়ী সার্ভিসিং করা। এমনভাবে সার্ভির্সিং সিডিউল সেট করতে হবে যেন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক সার্ভিসিং করা সহজ হয়;
• প্রতি এক মাস পর পর টুলস ইন্সট্রুমেন্টে ও মেশিনের ওয়েল চেক করা;
• টুলস ইন্সট্রুমেন্টে ও মেশিনের প্রতিটি পার্টস সঠিকভাবে কাজ করে কিনা তা চেক করা, যদি কোন পার্টস নষ্ট বা ভেঙ্গে যায় সেখানে যথা শীর নতুন পার্টস সংযোজন করা;
• বাধ্যতামুলকভাবে প্রতিটি ইন্টমেন্ট ও মেশিনের সেফটি গার্ড ব্যবহার করা। নিয়মিতভাবে প্রতিটি সেফটি গার্ড চেক করা এবং ভেঙ্গে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে সাথে সাথে নতুন লাগানো;
• নিয়মিতভাবে প্রতিটি টুলস ইন্সট্রুমেন্টে ও মেশিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা;
• প্রয়োজনে টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিনে বৈদ্যুতিক সংযোগ/ব্যাটারী সঠিকভাবে সংযোজন করা হয়েছে কিনা তা নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা;
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণের তত্ত্বাবধানের জন্য একজনকে নির্দিষ্ট করা ;
• টুলস ইন্সট্রুমেন্ট ও মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ চেকলিস্ট অনুযায়ী সার্ভিসিং করা। এমনভাবে সার্ভিসিং সিডিউল সেট করতে হবে যেন প্রতিটি টুলস-ইন্সট্রুমেন্টে ও মেশিন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক সার্ভিসিং করা সহজ হয় ইত্যাদি।
নিম্নে হ্যান্ড টুলসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি আলোচনা করা হলো-
• প্রত্যেক টুলকে উহার জন্য নির্দিষ্ট কাজে ব্যবহার করতে হবে। যেমন- স্ক্রু-ড্রাইভারের সাহায্যে পাঞ্চের কাজ, রেঞ্চের সাহায্যে হাতুড়ির কাজ ইত্যাদি না করা;
• টুলস এর সাহায্যে কাজ করার সময় উহার উপর অতিরিক্ত শক্তি বা চাপ প্রয়োগ করে কাজ না করা;
• ব্যবহারের পর প্রতিটি টুল-কে ময়লা ও চিপস্ মুক্ত করে উহার জন্য নির্ধারিত জায়গায় সংরক্ষণ করা;
• প্রত্যেক টুল-কে সব সময় পৃথক পৃথক ভাবে সংরক্ষণ করা;
• ফাইল দ্বারা কাজ করার পর উহাকে ফাইল কার্ড দ্বারা
• সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে তারপর আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হবে;
• ভাইস, রেঞ্চ, র্যাচেট স্ক্রু-ড্রাইভার প্রভৃতি মাঝে মাঝে পরিষ্কার করে উহার চলনশীল অংশসমূহের সংযোগস্থলে তৈল অথবা গ্রিজ দিতে হবে;
• স্যুনির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্ধারিত মাপের উপযুক্ত হ্যান্ড টুলস ছাড়া অন্য টুলস ব্যবহার না করা। যেমন- বড় স্ক্রু ড্রাইভারের কাজ ছোট স্ক্রু ড্রাইভারের সাহায্যে না করা। নাট বা বোল্টকে টাইট দেওয়া বা ঢিলা করার সময় সঠিক মাপের রেঞ্চ না ব্যবহার করে বড় সাইজের রেঞ্চ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি।
• ভার্নিয়ার ক্যালিপার ব্যবহার করার সময় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা উচিৎ নয়, এতে মাপের সঠিকতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপার দ্বারা মেশিন চলন্ত অবস্থায় কার্যবস্তুর বা যন্ত্রাংশের মাপ নেওয়া উচিত নয়;
• ক্যালিপার ব্যবহার করার পর পরিষ্কার করে যথাযথ স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপারকে কাটিং টুলের সাথে না রাখা, স্থির চোয়াল বা ‘জ’-কে কার্যবস্তুর এক ধারে স্থাপন করে স্লাইডিং ‘জ’ কে ধীরে ধীরে অন্য পাশে স্থাপন করতে হয়;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপার দ্বারা রাফ সারফেসের মাপ গ্রহণ না করা;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপারকে কোন চুম্বকের সংস্পর্শে না রাখা;
• ভার্নিয়ার ক্যালিপারের কোন অংশ যাতে মরিচা না পড়ে এবং চলনশীল অংশ যাতে সহজেই চলাচল করতে পারে সেজন্য বিম স্কেলের উপরিভাগে ও স্ক্রু থ্রেডের বিভিন্ন স্থানে কিছু দিন পর পর মসৃণকারক তৈল বা গ্রিজ প্রয়োগ করা ইত্যাদি।
ইনসাইড মাইক্রোমিটার অতি সুক্ষ্ম পরিমাপের যন্ত্র। ইহা ব্যবহার করার সময় যথেষ্ট সতর্কতা এবং যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। ইনসাইড মাইক্রোমিটার পরিষ্কার করার পর ঠিক আছে কিনা তা দেখে নেয়া। ব্যবহারের সময় যেন কোন আঘাতপ্রাপ্ত না হয় এবং ব্যবহারের পর পরিষ্কার করে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দিতে হবে। ক্যালিপার টাইপ ইনসাইড মাইক্রোমিটার এর 'জ' গুলিতে যাতে কোন আঘাত না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রড টাইপ ইনসাইড মাইক্রোমিটার এর রড সেটের প্রতিটি রডকে কাজ শেষে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। রডগুলিকে একটি প্যাকেটের মধ্যে ভালভাবে রাখতে হবে যেন কোন আঘাত লেগে পরিমাপের স্যুক্ষ্মতা নষ্ট না হয়।
• ডেপথ মাইক্রোমিটার একটি সূক্ষ্ম পরিমাপ যন্ত্র। একে খুব সাবধানে ও যত্ন সহকারে ব্যবহার করতে হয়। ব্যবহার করার পূর্বে একে ভালভাবে পরিষ্কার করে নিতে হয়। ডেপথ মাইক্রোমিটারের কোন অংশে যাতে মরিচা না পড়ে সেজন্য এটির বাহিরে ও ভিতরের স্ক্রু-থ্রেডে এবং এক্সটেনশন রডে কিছু দিন পর পর মসৃণ কারক তৈল দিতে হবে। প্রতিবার কাজ শেষে নির্দিষ্ট স্থানে অর্থাৎ নির্ধারিত বাক্সে সংরক্ষণ করতে হবে।
• ডেপথ মাইক্রোমিটার সর্বদা পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। অন্যথায় ধুলা বা ময়লা জমলে ভুল মাপ দেখার এবং মরিচা পড়ার সম্ভাবনা থাকে;
• মাইক্রোমিটারের কোন অংশে যাতে মরিচা না পরে সেজন্য মাঝে মাঝে ভেতরে ও বাহিরে মসৃণ কারক তৈল দিয়ে রাখতে হয়;
• অ্যানভিল ও স্পিন্ডলকে কার্যবস্তুর সাথে বেশি চাপ দিয়ে ব্যবহার করা উচিত না। র্যাচেট ব্যবহার করতে হবে এবং র্যাচেট না থাকলে কার্যবস্তুকে চাপ না দিয়ে কেবলমাত্র স্পর্শ করা অবস্থায় পরিমাপ নিতে হবে;
• মাইক্রোমিটারকে সর্বদা পরিষ্কার স্থানে যত্ন সহকারে রাখতে হবে;
• মাইক্রোমিটারের সাহায্যে চলন্ত বস্তু এবং রাফ সারফেস- এর মাপ গ্রহণ অনুচিত; মাইক্রোমিটারকে চুম্বকের নিকট রাখা যাবে না;
মাইক্রোমিটারের উপর কোন টুলস রাখা যাবে না; ব্যবহারের পর পরিষ্কার এবং ত্রুটিমুক্ত অবস্থায় সংরক্ষণ করতে হবে
• মাইক্রোমিটারকে সব সময় নির্দিষ্ট আধারে রাখা উচিত;
• মাইক্রোমিটারে ত্রুটি থাকলে স্যুদক্ষ কারিগর দ্বারা সংশোধন করে নিতে হবে;
• মাইক্রোমিটার যাতে টেবিল হতে বা ব্যবহারকালে মেঝেতে পড়ে না যায় সেদিকে সতর্ক থেকে যত্ন সহকারে ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি।
• ভার্নিয়ার হাইট গেজকে সবসময় নির্দিষ্ট বাক্সে সংরক্ষণ করতে হবে;
• ব্যবহারের পূর্বে এবং পরে কাপড় বা ওয়েস্ট কটন দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে রাখতে হবে;
• দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করতে পরিষ্কার করার পর গ্রিজ অথবা মরিচা রোধক তৈল লাগিয়ে তারপর সংরক্ষণ করতে হবে;
• ভার্নিয়ার হাইট গেজের মোভিং অংশগুলি (Moveable Parts )যাতে সহজে চলাচল করতে পারে এবং মরিচা না পরে সেইজন্য মাঝে মাঝে মবিল বা মরিচারোধী তৈল দিতে হবে;
• ব্যবহারের স্থানটি যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, সমতল ও মসৃণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখা;
• কোনো যন্ত্র, ধাতব বস্তু, কাটিং টুল প্রভৃতির আঘাত থেকে ভার্নিয়ার হাইট গেজকে সব সময় রক্ষা করে ব্যবহার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘর্ষণ বা আঘাত লেগে উপরিতল মসৃণতা না হারায়;
• ভার্নিয়ার হাইট গেজকে কোন ম্যাগনেট বা চুম্বকের নিকট রাখা উচিৎ নয়। এতে গেজের বিভিন্ন অংশ চুম্বকত্ব লাভ করে লৌহ কণাকে আকৃষ্ট করে, ফলে ত্রুটিপূর্ণ পরিমাপের আশংকা থাকে। গ্রাইন্ডিং মেশিনের নিকটে এই গেজ ব্যবহার করা উচিৎ নয় ইত্যাদি।
ডায়াল ইন্ডিকেটর অতিসূক্ষ্ম পরীক্ষণ ও পরিমাপ যন্ত্র বিধায় সকল প্রকার আঘাত হতে মুক্ত রাখতে হবে।
এছাড়া-
• ডায়াল ইন্ডিকেটরের স্পিন্ডল ব্যবহারের আগে ও পরে চাপমুক্ত অবস্থায় রাখতে হবে;
• খোলা জায়গায় বা ময়লাযুক্ত স্থানে ডায়াল ইন্ডিকেটর রাখা যাবে না;
• ব্যবহারের পূর্বে ডায়াল ইন্ডিকেটরের চৌম্বক ভিত (Magnetic Base) পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ভাল
• করে মুছে নিতে হবে; কাজ শেষে পরিষ্কার করে আবার নির্দিষ্ট বাক্সের মধ্যে রেখে দিতে হবে ইত্যাদি।
• নির্দিষ্ট বাক্স থেকে নিয়ে কাজ করার শেষে পুনরায় নির্দিষ্ট বাক্সে রাখতে হবে; ব্যবহারের পূর্বে এবং পরে ভাল ভাবে পরিষ্কার করে নিবে;
• কাজ করার সময় খালি জায়গায় না রেখে পরিষ্কার কাপড় বা কাগজের উপর রাখতে হবে;
• খোলা অবস্থায় অন্যান্য যন্ত্রের সাথে রাখবে না ;
• মরিচা যাতে না পড়ে, তার জন্য কটন দিয়ে ভাল ভাবে মুছে তৈলের পাতলা আবরণ দিয়ে রাখতে হবে;
• স্লাইডিং হেড-কে নিয়মিত পরিষ্কার করে লুব্রিকেটিং করতে হবে;
• প্লাঞ্জার গাইড যেন আঘাত প্রাপ্ত না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। যেহেতু এই গাইড ব্রেডের গ্রুভ সর্বদা সমন্বয় করে অন্যান্য অংশকে পরিচালিত করে।
ফিলার গেজের ব্লেডগুলি অতি সূক্ষ্ম মাপের বলে এদের উপর কোন প্রকার আঘাত দেওয়া বা চাপ দেওয়া উচিৎ নয়। মাপ পরীক্ষা করার সময় এই গেজের রেডগুলিকে ফাঁকের মধ্যে প্রবেশ করানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়, যাতে এগুলি বেঁকে গিয়ে ভাঁজ হয়ে ফাঁকের ভিতরে আটকে না যায়।
ওয়্যার গেজের প্লেটের চাকতিকে সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারের পর পরিষ্কার নরম ও পাতলা কাপড় দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করে উত্তমরূপে তৈল বা পাতলা করে গ্রিজ লাগিয়ে যথাস্থানে রাখতে হবে।
টেপার গেজকেও ফিলার গেজের মত সাবধানে ব্যবহার করে ভালভাবে পরিষ্কার করে তৈল বা গ্রিজ লাগিয়ে রাখতে হবে।
এটি ফিলার গেজ ও টেপার গেজের চেয়ে অপেক্ষাকৃত মোটা প্লেটের তৈরি। তাই সেন্টার গেজের রক্ষণাবেক্ষণ একটু সহজ। ব্যবহারের পর পরিষ্কার করে তেল বা গ্রিজ লাগিয়ে যথাস্থানে রেখে দিতে হবে।
এটির ছয়টি গেজ নিয়ে একটি সেট হয়। এদেরকে খুব সাবধানে সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হয়। ব্যবহারের পর নরম জাতীয় কাপড় দিয়ে ভালভাবে পরিষ্কার করে পাতলা তেলের আবরণ দিয়ে নির্দিষ্ট আঁধারে রেখে দিতে হয়।
লেদ মেশিনকে অতি সূক্ষ্মমাত্রা বজায় রেখে যন্ত্রাংশ উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে। লেদের চলন্ত ও স্থির অংশগুলি তাই সব সময় যত্ন সহকারে ব্যবহার করা উচিৎ। নিম্নে লেদ মেশিনের যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কতিপয় দিক নির্দেশনা দেয়া হলো:
• যে সকল লেদ মেশিন প্রতিদিন ব্যবহার করা হয়, সেগুলির নিম্নলিখিত অংশগুলিকে প্রতিদিন লুব্রিকেটিং অয়েল দিতে হবে যথা-
• হেডস্টক বিয়ারিং;
• স্পিন্ডল হতে লীড স্ক্রু পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সকল গিয়ার ও বিয়ারিং;
• মটর বিয়ারিং;
• টেইলস্টক স্পিন্ডল;
• লীড স্ক্রু;
• ফিড রড বিয়ারিং;
• অ্যাপ্রন ও স্যাডল;
• ক্রস ফিড ও কম্পাউন্ড স্লাইড;
• লুব্রিকেটিং অয়েল দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই জুট কটন দিয়ে লেদ মেশিন ভালভাবে পরিষ্কার করা;
• মেশিন স্টার্ট দেওয়ার পূর্বে হেডস্টকে জব দৃঢ়ভাবে বাঁধা;
• লেদের যন্ত্রাংশ ভালভাবে পরিষ্কার করার পর লুব্রিকেটিং করা;
• ফেল্ট প্যাড মাঝে মাঝে চিপস সরিয়ে কেরোসিন দিয়ে ধৌত করা;
• বেডের মধ্যে কোন টুলস না রাখা;
• প্রতিদিন লীড স্ক্রু-এর মধ্যে আটকে থাকা চিপস সাবধানতার সাথে পরিষ্কার করা, যাতে লীড স্ক্রু এর থ্রেড কোনোভাবে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়;
• চিপস্ ব্রেকার ব্যবহার করা ;
• কাটিং টুল হোল্ডারে সঠিক কোণ অনুযায়ী দৃঢ়ভাবে বাঁধা;
• দীর্ঘ (লম্বা) ওয়ার্কপিসে কাজ করতে হলে টেইলস্টক ব্যবহার করা ইত্যাদি।
লেদ মেশিনে নিরাপদে কাজ করার নিমিত্বে পালনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি- চাদর, পায়জামা, পাঞ্জাবী, টাই, কোট ইত্যাদি ঢিলা পোষাক পরিহার করা ;
- লেদে কাজ করার সময় সেফটি গগলস পরিধান করা; শক্ত তলা বিশিষ্ট পা মোড়ানো চামড়ার জুতা পরিধান করা;
• অ্যাপ্রন পরিধান করা;
• লেদ মেশিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও নিয়মিত তৈল প্রদান করা;
গার্ডসমূহ যথাস্থানে লাগিয়ে রাখা;
চাক পরিবর্তন করার সময় যাতে পড়ে না যায় তজ্জন্য সতর্ক থাকা;
ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক সুইচ পরিহার করা ;
ওয়ার্কপিস ও কাটিং টুল ভালভাবে টাইট দেয়া;
লেদ চাক টাইট দেয়ার পর চাক কী সরিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখা;
হেডস্টকের উপর যন্ত্রপাতি না রাখা;
• ওয়ার্কপিস বেঁধে নির্ধারিত স্পিন্ডল স্পিডে লেদ চালানো;
মেশিন চালু অবস্থায় স্পিড পরিবর্তন না করা;
চাক কী হ্যান্ডেল বা অন্য কোন লিভার বা হাতুড়ির আঘাতে টাইট না দেয়া;
লেদ সম্পূর্ণভাবে স্থির হওয়ার পূর্বে হাতে ধরে চাক স্থির করার চেষ্টা না
লেদে ফাইলিং করার জন্য বাম হাতে ফাইল ধরা;
বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে সাথে সাথে মেশিন স্যুইচ অফ করা;
কাজের শেষে মেইন স্যুইচ অফ করা;
কোন কিছু নষ্ট হয়ে গেলে গোপন না করে অনতিবিলম্বে শপ ইনচার্জ বা শিক্ষককে জ্ঞাত
কাজের প্রতি যত্নশীল ও মনোযোগী হওয়া;
কাজের সময় প্রয়োজনে কাটিং ফ্লুইড ব্যবহার করা ;
কাটিং টুলের সেন্টার হাইট ঠিক আছে কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে কাজ করা ইত্যাদি।
গ্রাইন্ডিং হুইল ও ভারের ব্রাশ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত গতির অতিরিক্ত গতিতে পরিচালনা করা ঠিক না। কোনো শ্যাফট বা মোটরে গ্রাইন্ডিং হইল স্থাপনের পূর্বেই অনুমোদিত গতি পরীক্ষা করে নিতে হবে এবং কোনো ফাটল বা ক্র্যাক আছে কিনা দেখে নিতে হবে;
• গ্রাইন্ডিং হইল ও তারের ব্রাশ ব্যাবহারের সকল সময় মুখের শিশু (Shields), নিরাপদ গ্লাস গার্ড এবং চিপারের (Chippers) গগলস ব্যবহার বাধ্যতামূলক ;
● গ্রাইন্ডিং করার সময় হ্যান্ড গ্লাভস বা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে ব্যবহার যাবে না;
• হুইল হুড না থাকলে গ্রাইন্ডিং মেশিন পরিচালনা করা ঠিক না;
• টুলপোস্টকে ও হুইলের উপরের গার্ডকে গ্রাইন্ডিং হুইল থেকে ১/৮ ইঞ্চি দূরত্ব সীমার মধ্যে স্থাপন করা উচিত;
• ভিসক গ্রাইন্ডারের টেবিলকেও ১/৮ ইঞ্চি দূরত্ব সীমার মধ্যে স্থাপন করা;
• যখন একটি গ্রাইন্ডার প্রথম চালু করা হয়, তখন গ্রাইন্ডিং হুইলের সাথে লাইনে দাঁড়ানো যাবে না। যদি কোন নড়াচড়া বা কম্পন লক্ষ্য করা যায়, মেশিনটি বন্ধ করে মেরামত করা;
• স্টিল এবং লোহা গ্রাইন্ডিং করার মেশিনে কাঠ, অ্যালুমিনিয়াম, কপার বা অন্যান্য পদার্থকে গ্রাইন্ডিং না করা ইত্যাদি।
চিপ গার্ড ব্যবহার করা যাতে অপারেটর বা আশেপাশের কেহ বিপদে না পড়ে;
ব্যবহারিক কাজের সময় অবশ্যই চিপ ব্রেকার ব্যবহার করা, টুলের পথকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা ;
লেদ অপারেশন শুরু করার পূর্বেই টুল ও চাকের কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা;
চিপস অপসারণে ব্রাশ বা চিপ গুলার (Chip Pullers) ব্যবহার করা। চিপস অপসারণের জন্য অপারেটরের হাত বা ৩০ পিএসআই (PSI- Pressure Per Square Inch) এর বেশি কম্প্রেসড বাতাস ব্যবহার না করা;
টুল বা অন্যান্য যন্ত্রপাতি হেডন্টকের উপরে সংরক্ষণ না করা;
• অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত ম্যাগনেসিয়াম বা অনুরূপ ধাতু মেশিনিং না করা;
টুলি বিটের কাটিং চলাকালীন গেদ বন্ধ না করা;
• হাতে চাপ দিয়ে চাক বন্ধ না করা ইত্যাদি।
• স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা (পিপিই) ও শোভন পোশাক পরিধান করা;
• প্রয়োজন অনুযায়ী কাজের স্থান প্রস্তুত করা;
• জব অনুযায়ী টুলস, ইকুইপমেন্ট, মেটেরিয়্যাল সিলেক্ট ও কালেক্ট করা;
• ছবি অনুযায়ী ক্যারেজ পরিচালনার যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করা;
• কাজ শেষে ওয়ার্কশপের নিয়ম অনুযায়ী কাজের স্থান পরিষ্কার করা;
• অব্যবহৃত মালামাল নির্ধারিত স্থানে সংরক্ষণ করা;
• নষ্ট মালামাল (Wastage) ও স্ক্র্যাপগুলি (Scrap) নির্ধারিত স্থানে ফেলা;
• কাজ শেষে চেকলিস্ট অনুযায়ী টুলস ও মালামাল জমা দেওয়া ইত্যাদি।
নাম | স্পেসিফিকেশন | সংখ্যা |
---|---|---|
সেফটি হেলমেট | স্ট্যান্ডার্ড | ১ টি |
সেফটি গগলস | ৩.০ আইআর চশমা | ১ টি |
অ্যাপ্রন | প্রয়োজনীয় সাইজ | ১টি |
মাস্ক | তিন স্তর বিশিষ্ট | ১টি |
হ্যান্ড গ্লাভস | কাপড়ের তৈরি | ১ জোড়া |
নিরাপদ জুতা | প্রয়োজনীয় সাইজ | ১ জোড়া |
নাম | স্পেসিফিকেশন | সংখ্যা |
---|---|---|
লেদ মেশিন | যেকোনো ধরনের লেদ | ১ টি |
গ্রীজ গান | নমুনা মোতাবেক | ১ টি |
মেনুয়্যাল | সংশ্লিষ্ট মেশিনসমূহের | ১ টি |
লগবুক | স্ট্রোরে রক্ষিত | ১ টি |
রেঞ্চ বক্স | বিভিন্ন পরিমাপের | ১ সেট |
স্ক্রু ডাইভার সেট | বিভিন্ন সাইজের | ১ সেট |
স্প্রে গান | রং স্প্রে করার জন্য | ১ সেট |
নাম | স্পেসিফিকেশন | সংখ্যা |
---|---|---|
এমারি পেপার | মরিচা উঠানোর জন্য | ৫ টি |
ওয়াস্ট কটন | নমুনা মোতাবেক | পরিমান মত |
কেরোসিন তৈল | সাধারন | পরিমান মত |
রং | সবুজ রং | ১ পাউন্ড |
ডিটারজেন্ট | লিকুইড | পরিমান মত |
গরম পানি | ফুটানো পানি | পরিমান মত |
• প্রয়োজনীয় পিপিই পরিধান করো;
• হকে উল্লেখিত তালিকা ও প্রয়োজন অনুযায়ী মালামাল এবং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করো;
• ওয়ার্কশপে সংরক্ষিত লেদ মেশিনটি বুঝে লঙ;
• লেদ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করার পূর্বে টুলপোস্ট ও চাকের কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা পরীক্ষা করো;
• ঢাকের 'জ' গুলি খুলে পরিষ্কার কর এবং চাক থেকে মরিচা উঠাতে এমারি রুথ পেঁচিয়ে মেশিন চালুকরে পরিষ্কার করো;
• চাক খুলে ভিতরে পরিষ্কার কর এবং টুলপোস্ট খুলে সকল অংশসমূহ ভালভাবে পরিষ্কার করো;
• কম্পাউন্ডরেন্ট, ক্রস স্লাইড ও অন্যান্য অংশ একইভাবে পরিষ্কার করো;
• টুল বা অন্যান্য যন্ত্রপাতি হেডস্টকের উপরে সংরক্ষণ করবে না;
চলন্ত অবস্থায় হাতে চাপ দিয়ে চাক বন্ধ করবে না;
• হেডস্টক এবং টেইলস্টকের মাঝে সিলিড্রিক্যাল কার্যবস্তু ক্ল্যাম্প করে এল্যাইনমেন্ট পরীক্ষা করো; লেদের কাজ শেষ হলে পুরাতন অংশসমূহ পরিষ্কার করে স্প্রে গান দিয়ে রং করো;
• যদি সমস্যা না হয়, চিপ গার্ড ব্যবহার করো; কাজের শেষে চেকলিস্ট অনুযায়ী টুলস ও মালামাল জমা দাও ইত্যাদি।
কাজের স্থান পরিষ্কার করে পিচ্ছিল মুক্ত করো;
মোটা সোলের জুতা, সেফটি ড্রেস ও গগলস্ পরিধান করো;
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ শেষ কর ইত্যাদি।
লেদ মেশিন রক্ষণাবেক্ষণের দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছ। শিল্প, কলকারখানায় বা ওয়ার্কসপে একজন লেদ অপারেটর/জেনারেল মেকানিক্স হিসাবে যন্ত্রাংশ তৈরি বা ফেব্রিকেটিং করার কাজে উপযুক্ত হবে।
লেদ মেশিনসহ অন্যান্য মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে। পেশা হিসাবে একজন রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী হতে পারবে। বিশেষ করে টার্নিং, ফেসিং, গ্রুভিং, পাটিং, থ্রেডিং, ড্রিলং, বোরিং, নার্লিং, ট্যাপিং ইত্যাদি কাজে অধিক যত্নশীল হবে।
১. ওয়ার্কশপ রক্ষণাবেক্ষণ বলতে কী বোঝায়?
২. নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কী?
৩. রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো।
৪. রক্ষণাবেক্ষণের প্রকারভেদ উল্লেখ করো।
৫. পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ কী?
৬. তালিকা মাফিক রক্ষণাবেক্ষণ কী? ৭. ব্রেক ডাউন রক্ষণাবেক্ষণ কী?
৮. মূলধন প্রতিস্থাপন রক্ষণাবেক্ষণ কী?
৯. দৈনন্দিন রক্ষণাবেক্ষণ কী?
১. রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ব্যবহৃত দ্রব্য সামগ্রীর নাম লেখ।
২. ওয়ার্কশপে নিরাপত্তামূলক পোষাক ও সরঞ্জামের গুরুত্ব বর্ণনা করো।
৩. ওয়ার্কশপে পালনীয় কমন প্রসিডিউরসমূহ কি কি?
৪. গ্রাইন্ডিং করার প্রসিডিউরসমূহ কি কি?
৫. লেদ অপারেশনে প্রসিডিউরসমূহ কি কি?
৬. কর্মস্থল নিরাপত্তায় মৌলিক ও সহায়ক তথ্যসমূহ কি কি?
৭. মেনুয়াল বলতে কী বোঝায়?
৮. বিপদমুক্ত কার্যাভ্যাস আয়ত্ত করার কৌশল বা দুর্ঘটনা প্রতিরোধের উপায় ব্যাখ্যা করো।
৯. অনাকাঙ্খিত ঘটনার প্রতিবেদন তেরি করো।
১. একজন রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত কর্মীর দায়িত্ব কি?
২. রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতকর্মী হওয়ার জন্য কী কী দক্ষতা প্রয়োজন?
৩. রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের কাজে সাধারণত যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হতে হয় তা উল্লেখ করো।
৪. মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সাধারণত কি কি সম্ভাব্য ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়?
৫. কর্মস্থলে কি কি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
৬. গ্যাস ওয়েল্ডিং করারসময় কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
৭. কিভাবে একজন দায়িত্বশীল রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী হওয়া যায়?
৮. ওয়েল্ডিং করার সময় ওয়েল্ডারের কী কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করা উচিত?
৯. মানসিক ঝুঁকি এবং চাপের কারণগুলি কি কি হতে পারে?
১০. ওয়ার্কশপ রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীর ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলি কি কি উল্লেখ করো।
১১. রক্ষণাবেক্ষণে রক্ষণাবেক্ষকের ভূমিকা বর্ণনা করো ।
আরও দেখুন...