Summary
সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত "গন্তব্য কাবুল" ভ্রমণকাহিনীটি তাঁর 'দেশে বিদেশে' (১৯৪৮) গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই রচনার মাধ্যমে তাঁর ভ্রমণ-সাহিত্যের পাশাপাশি জীবনবোধ, সাহিত্যরুচি ও শিল্প-বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায়। আলী বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে জেগেছিলেন এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন।
গন্তব্য কাবুলের যাত্রা শুরু হয় হাওড়া স্টেশন থেকে, যা শেষ পর্যন্ত পাঠকদের সঙ্গে অসাধারণ রসঘন অভিজ্ঞতা ভাগ করে। যাত্রায় কৌতুক, হাসি-ঠাট্টা ও মানবীয় বন্ধুত্বের ইতিহাসের ক্ষণগুলো ফুটে ওঠে। একদিকে ইংরেজের উক্তি ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাস প্রতিফলিত করে, আবার অন্যদিকে সহযাত্রীরা মানবিকতা ও সৌন্দর্যের এক নতুন ইতিহাস তুলে ধরে।
আলী তাঁর অভিজ্ঞতার একটি তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়ের পরিচয় এখানে দিয়েছেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত “গন্তব্য কাবুল” শীর্ষক ভ্রমণকাহিনিটি তাঁর ‘দেশে বিদেশে' (১৯৪৮) গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই রচনাটির মধ্য দিয়ে আমরা সৈয়দ মুজতবা আলীর অসাধারণ ভ্রমণ-সাহিত্যের সঙ্গেই শুধু পরিচিত হই না, অধিকন্তু তাঁর জীবনবোধ, সাহিত্যরুচি ও নিজস্ব শিল্প-বৈশিষ্ট্যের সঙ্গেও পরিচিত হতে পারি । সৈয়দ মুজতবা আলী বিচিত্র এক জীবন যাপন করেছেন। কত জনপদ, কত মানুষ আর কত ঘটনার সঙ্গে যে তিনি এক জীবনে পরিচিত হয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। আর সেই জনপদ, সেই মানুষ আর সেই সব ঘটনাকেও তিনি দেখেছেন কখনো রসিকের চোখে, কখনো ভাবুকের চোখে এবং কখনোবা বিদগ্ধ পাণ্ডিত্যের মনন ও নিষ্ঠার চোখে। ফলে অনিবার্যভাবেই তাঁর সব সৃষ্টির মতো ভ্রমণ-সাহিত্যও হয়ে উঠেছে তুখোড় এক জীবনচাঞ্চল্যে ভরপুর কথামালা। “গন্তব্য কাবুল” তার ব্যতিক্রম নয়। হাওড়া স্টেশন থেকে কাবুলের উদ্দেশে যে যাত্রাটি তিনি শুরু করেছিলেন তাতে শেষ পর্যন্ত অসাধারণ রসঘন এক অভিজ্ঞতার সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে। এই পরিচয়ের প্রতিটি পর্বে কত যে কৌতুক, কৌতূহল, হাসি-ঠাট্টা, রম্য-রসিকতা আর প্রজ্ঞা ও মনন পাঠকের জন্য অপেক্ষা করে তার কোনো তুলনা চলে না। যাত্রার শুরুতেই গাড়িতে উঠতে গেলে একজন ইংরেজ হাঁক দিয়ে বলেছিলেন “ওটা ইয়োরোপিয়ানদের জন্য”। এই একটি মাত্র উক্তির মধ্যে ব্রিটিশশাসিত দুইশ বছরের ইতিহাসের একটি মাত্রা অনুভব করা যায়। আবার সেই ফিরিঙ্গির সঙ্গেই যখন শান্তিপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ যাত্রা শুরু হয় আর ভাগ-বাঁটোয়ারা করে খাওয়া হয় নিজেদের সঙ্গে করে আনা বিচিত্র খাবার তখন অন্য এক ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে। সেই ইতিহাস মানবিকতার, সাম্যের, সৌন্দর্যের। এই বিচিত্র মানুষ-জনের সঙ্গে মিলেমিশে আছে নানা ধরনের প্রকৃতি, ভূগোল, ইতিহাস ও নানা সংস্কৃতি। এই রচনায় সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর বিপুল অভিজ্ঞতার একটি অতি তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়ের পরিচয় তুলে ধরেছেন।
Read more