বসতি স্থাপনের নিয়ামক (Factors of settlement)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ভূগোল ও পরিবেশ - মানব বসতি | NCTB BOOK
2.7k
Summary

বাংলাদেশে জনবসতি গঠনের কারণসমূহ:

  1. ভূপ্রকৃতি: সমতলভূমিতে কৃষিকাজ সহজ, পাহাড়ি এলাকায় কষ্টকর। কৃষিজমির নিকটে বসতি গড়ে উঠে, ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতির ঘনত্ব কম।
  2. পানীয় জলের সহজলভ্যতা: বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্রাপ্যতার কারণে মানুষ জলপ্রাপ্ত স্থানে বসতি গড়ে তোলে, যেমন মরুময় অঞ্চলে ঝরনার চারপাশে।
  3. মাটি: উর্বর মাটিতে ঘন জনবসতি গড়ে ওঠে, অনুর্বর হলে বিক্ষিপ্ত জনবসতি।
  4. প্রতিরক্ষা: প্রাচীনকালে শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পুঞ্জীভূত বসতি গঠিত হতো।
  5. পশুচারণ: পশুচারণ এলাকায় বিক্ষিপ্ত বসতি দেখা যায় কারণ বড় এলাকা প্রয়োজন।
  6. যোগাযোগ: প্রাচীনকাল থেকে যাতায়াতের সুবিধার ভিত্তিতে বসতি গড়ে ওঠে, যেমন নদী তীরবর্তী এবং সমতল এলাকার স্থানগুলোতে।

১। ভূপ্রকৃতি : জনবসতি গড়ে ওঠার পেছনে ভূপ্রকৃতি ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে। সমতলভূমিতে কৃষিকাজ সহজে করা যায়, কিন্তু পাহাড় এলাকার ভূমি অসমতল হওয়ায় কৃষিকাজ করা কষ্টকর। ফলে যাতায়াতের সুবিধার জন্য কৃষিজমির নিকটে জনবসতি তৈরি হয়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসতির ঘনত্ব সমতলভূমির তুলনায় কম ।

২। পানীয় জলের সহজলভ্যতা : জীবন ধারণের জন্য মানুষের প্রথম ও প্রধান চাহিদা হলো বিশুদ্ধ পানীয় জল। এজন্যই নির্দিষ্ট জলপ্রাপ্যতার স্থানে মানুষ বসতি গড়ে তোলে। মরুময় এবং উপমরুময় অঞ্চলে ঝরনা অথবা প্রাকৃতিক কূপের চারদিকে মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে বসতি স্থাপন করে। পানীয় জলের প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা এই সমস্ত বসতিকে আর্দ্র অঞ্চলের বসতি বলে।

৩। মাটি : মাটির উর্বরা শক্তির উপর নির্ভর করে বসতি স্থাপন করা হয়। উর্বর মাটিতে পুঞ্জীভূত জনবসতি গড়ে ওঠে, কিন্তু মাটি অনুর্বর হলে বিক্ষিপ্ত জনবসতি গড়ে ওঠে।

৪। প্রতিরক্ষা : প্রাচীনকালে প্রতিরক্ষার সুবিধার জন্যই মানুষ পুঞ্জীভূত বসতি স্থাপন করে। বহিরাগত শত্রুর
আক্রমণ বা বন্যজন্তুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানুষ একত্রে বসবাস করত।

৫। পশুচারণ : পশুচারণ এলাকায় সাধারণত বিক্ষিপ্ত বসতি দেখা যায়। পশুচারণের জন্য বড় বড় এলাকার দরকার হয়। ফলে নিজেদের সুবিধার জন্য তারা বিক্ষিপ্তভাবে বসতি স্থাপন করে থাকে।

৬। যোগাযোগ : প্রাচীনকাল থেকে যাতায়াত ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে বসতি গড়ে উঠছে। যেমন— নদী তীরবর্তী স্থানে নৌচলাচলের এবং সমতলভূমিতে যাতায়াতের সুবিধা থাকায় এরূপ স্থানগুলোতে পুঞ্জীভূত বসতি গড়ে উঠেছে। যোগাযোগের সুবিধার্থে মিশরের নীলনদের তীরে নীল সভ্যতা এবং সিন্ধু নদের তীরে সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছে।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...