উষ্ণ পরিবেশকে শীতল ও আরামদায়ক করার জন্য অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিং কমপ্লেক্স, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনকি বাসা-বাড়িতেও এয়ার কন্ডিশনার (Air Conditioner) বা সংক্ষেপে AC এর ব্যবহার দেশে ও দেশের বাইরে একটি বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কখনও কি ভেবেছি, AC কীভাবে কাজ করে এবং এর আবিষ্কারকই বা কে? ১৯০৪ সালে Willis H. Carrier এর Air Washer আবিষ্কারের মাধ্যমে এবার কন্ডিশনিং ব্যবস্থাপনার সুত্রপাত ঘটে। ফলশ্রুতিতে, ১৯০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৃথিবীর সর্বপ্রথম এয়ার কন্ডিশন্ড অফিস তৈরি হয়। এই অধ্যারে আমরা রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের কম্পোনেন্ট (Component) বা উপাদান ও তাদের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানব এবং প্রয়োজনীয় হ্যান্ড টুলস, ইকুইপমেন্টস, ইলেকট্রিক্যাল টুলস, রেফ্রিজারেশন টুলস চিহ্নিত ও ব্যবহার করে রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে কিছু প্রাথমিক কাজ করতে পারব।
এই অধ্যায় পাঠ শেষে -
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা দু'টি ভাব সম্পন্ন করব। এই দু'টি ভবের মাধ্যমে রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের কম্পোনেন্টগুলো টেষ্ট করা এবং বন্ত্রাংশগুলো চিহ্নিত ও শনাক্ত করার দক্ষতা অর্জন করব। জব দু'টি সম্পন্ন করার আগে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়গুলো জেনে নেই ।
অর্জনের মাধ্যমে আমরা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, টুলস, ইন্সট্রুমেন্টস, ইলেকট্রিক কম্পোনেন্ট, তাপ, তাপের প্রকারভেদ, তাপমাত্রা স্থানান্তরের প্রকারভেদ ও চাপ সম্পর্কে জানৰ ।
অনুসন্ধানমূলক কাজ
তোমার এলাকা অথবা বিদ্যালয়ের আশে পাশের রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং এর ওয়ার্কশপ থেকে নিচে উল্লেখিত কম্পোনেন্টের লোকাল/আঞ্চলিক নাম ও সঠিক নাম জেনে সঠিক নামটি নিচের তালিকায় লেখ।
তাপ (Heat)
গ্রিক শব্দ থার্মো (Thermo) অর্থ তাপ (Heat), তাপ এক প্রকার শক্তি । পরমাণুর সাথে তাপের সম্পর্ক রয়েছে। তাপের প্রভাবে পরমাণু গতিপ্রাপ্ত হয়। বেশি তাপে দ্রুত গতি এবং শূন্য তাপে গতিহীন হয়ে পড়ে। তাপের প্রভাবে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। তাপ এক প্রকার শক্তি, ঘা ঠান্ডা বা গরমের অনুভূতি জন্মায়।
তাপের এককগুলো হল-
তাপের প্রকারভেদ
তাপ প্রধানত দু'প্রকার
১। অনুমেয় তাপ ( Sensible Heat )
২। সুপ্ত তাপ (Latent Heat )
এছাড়া আরো যে ধরনের তাপ রয়েছে তা হল-
১। আপেক্ষিক তাপ
২। পরম তাপ
৩। বিকিরণ তাপ
আপেক্ষিক তাপ আবার দু'ধরনের-
১। ধ্রুব আয়তনে আপেক্ষিক তাপ (Specific Heat in Constant Volume - Cv)
২। ধ্রুব চাপে আপেক্ষিক তাপ (Specific Heat in Constant Pressure - Cp)
তাপ নির্ণয়ের সূত্র-
তাপের পরিমাণ সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা হয়। তাপ পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত সূত্রকে তাপ নির্ণয়ের সূত্র বলে । সূত্রের সাহায্যে তাপ নির্ণয়ের জন্য নিচের তথ্যগুলো জানা প্রয়োজন-
১। পদার্থের ভর (Mass = m )
২। পদার্থটির আপেক্ষিক তাপ (Specific Heat = Cp)
৩। সুপ্ততাপ (Latent Heat = L)
৪ । তাপমাত্রার পার্থক্য বা ব্যবধান (Temperature Difference = Td or <math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mo>∆</mo><mi>t</mi></math> )
তাপ নির্ণয়ের সূত্র দু'টি-
ক) অনুমেয় তাপ নির্ণয়ের সূত্র:
অনুমেয় তাপ = পদার্থের ভর × পদার্থের আপেক্ষিক তাপX তাপমাত্রার ব্যবধান (একক হবে কিলো জুল)।
<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><msub><mi>Q</mi><mi>s</mi></msub><mo>=</mo><mi>m</mi><mo>×</mo><msub><mi>C</mi><mi>p</mi></msub><mo>×</mo><msub><mi>T</mi><mi>d</mi></msub><mi>K</mi><mi>j</mi></math>
খ) সুপ্ততাপ নির্ণয়ের সূত্র
সুপ্ততাপ = পদার্থের ভর × পদার্থের সুপ্ততাপ (একক হবে কিলো জুল) ।
<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><msub><mi>Q</mi><mi>L</mi></msub><mo>=</mo><mi>m</mi><mo>×</mo><mi>L</mi><mo> </mo><mi>K</mi><mi>j</mi></math>
গ) মোট তাপ = [অনুমেয় তাপ + সুপ্ততাপ] (একক হবে কিলো জুল)।
<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><msub><mi>Q</mi><mi>t</mi></msub><mo>=</mo><mi>m</mi><mo>.</mo><msub><mi>C</mi><mi>p</mi></msub><mo> </mo><msub><mi>T</mi><mi>d</mi></msub><mo> </mo><mi>K</mi><mi>j</mi></math>
<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><msub><mi>Q</mi><mi>t</mi></msub><mo>=</mo><mfenced><mrow><msub><mi>Q</mi><mi>s</mi></msub><mo>+</mo><msub><mi>Q</mi><mi>L</mi></msub></mrow></mfenced><mi>K</mi><mi>j</mi></math>
উদাহরণ ১: ৩৫°C তাপমাত্রায় ১৪ কেজি পানিকে ৭৬°C তাপমাত্রায় আনয়ন করতে মোট প্রয়োগকৃত তাপের পরিমাণ কত?
আপেক্ষিক তাপ (Spcific Heat )
একক (1Kg) ভরের কোনবস্তুর তাপমাত্রা 1°C বাড়াতে বা কমাতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় বা অপসারণ করতে হয় তাকে আপেক্ষিক তাপ বলে । কোন পদার্থের আপেক্ষিক তাপ তার তাপ ধারণ ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল ।
কোন নির্দিষ্ট ভর বিশিষ্ট বস্তুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ঐ বস্তুর তাপ ধারণ ক্ষমতা ধরা হয়,
অর্থাৎ তাপ ধারণ ক্ষমতা =<math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mfrac><mi>Q</mi><mrow><mo>∆</mo><mi>θ</mi></mrow></mfrac><mo> </mo><mi>J</mi><mo>/</mo><mi>K</mi></math>
কোন একক ভরের বস্তুর তাপমাত্রা 1°K হ্রাস বা বৃদ্ধিতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে ওই বস্তুর স্বতন্ত্র আপেক্ষিক তাপ বলা হয় ।
অতএব, আপেক্ষিক তাপ = <math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mfrac><mi>Q</mi><mrow><mi>m</mi><mo>∆</mo><mi>θ</mi></mrow></mfrac><mo> </mo><mi>J</mi><mo>/</mo><mi>K</mi><mi>g</mi><mo>-</mo><mi>K</mi><mo> </mo></math>
সংজ্ঞানুযায়ী আপেক্ষিক বা স্বতন্ত্র আপেক্ষিক তাপের একক হল কিলোজুল/ কেজি কেলভিন <math xmlns="http://www.w3.org/1998/Math/MathML"><mfenced><mrow><mi>K</mi><mi>j</mi><mo>/</mo><mi>K</mi><mi>g</mi><mo>-</mo><mi>k</mi></mrow></mfenced></math>
আপেক্ষিক তাপ দুই প্রকার -
১। ধ্রুব আয়তনে আপেক্ষিক তাপ (Cv)
২। ধ্রুব চাপে আপেক্ষিক তাপ (Cp)
বস্তুর এক বিন্দু হতে অন্য বিন্দুতে বা এক বস্তু হতে অন্য কোন বস্তুতে তাপ সঞ্চালিত হওয়াকেই তাপ স্থানান্তর বলে। অর্থাৎ, যে প্রক্রিয়ায় তাপ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর হয় তাকে তাপ সঞ্চালন বা তাপ স্থানান্তরের প্রক্রিয়া বলে।
তাপ স্থানান্তরের প্রকারভেদ
তাপের স্থানান্তর তিন পদ্ধতিতে হয়ে থাকে- ১। পরিবহন (Conduction) ২। পরিচলন (Convection) ৩। বিকিরণ (Radiation)।
১। পরিবহন (Conduction)
কঠিন পদার্থ তথা ধাতব খন্ডের মাধ্যমে তাপের উচ্চমাত্রা থেকে নিম্নমাত্রার দিকে প্রবাহিত হওয়ার পদ্ধতিকে পরিবহন প্রক্রিয়া বলা হয়। এক্ষেত্রে ধাতব দন্ডটি স্থির থাকে আর তাপ এর মাধ্যমে চলাচল বা স্থানান্তর হয়।
২। পরিচলন (Convection)
যে প্রক্রিয়ায় তরল বা বায়বীয় পদার্থের তাপ স্থানান্তর হয় তাকে পরিচলন (Convection) বলে। তাপ প্রয়োগে তরল বা বায়বীয় পদার্থের আন্তঃআণবিক শক্তি কমতে থাকে। এতে ঐ পদার্থস্থিত অণুর গতিশক্তি বেড়ে যায়। ফলে বস্তুর গরম অণুগুলো পরিচালিত (স্থানান্তর) হয়। অণুর স্থানান্তরের সময় তাপও ঐ অণুর সাথে এক স্থান হতে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় ।
৩। বিকিরণ (Radiation)
দৃশ্যমান মাধ্যম ছাড়া অদৃশ্য আলোক তরঙ্গ মাধ্যমে তাপের সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে বিকিরণ প্রক্রিয়া বলে । প্রত্যেক বস্তুই কম-বেশি এই বিকিরণ প্রক্রিয়ায় তাপ শোষণ বা বর্জন করে। কোনরূপ মাধ্যম ছাড়া তাপ এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্তে স্থানান্তরের প্রক্রিয়াই তাপের বিকিরণ বা রেডিয়েশন প্রক্রিয়া ।
কোন বস্তুর তাপীয় অবস্থাকেই তাপমাত্রা (Temperature) বলে । কোন বস্তু যতটুকু শীতল বা উষ্ণ অনুভূতির সৃষ্টি করতে সক্ষম তার পরিমাণকেই উষ্ণতা বা তাপমাত্রা (Temperature) বলে। তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় থার্মোমিটার (Thermometer) দিয়ে।
তাপ ও তাপমাত্রার পার্থক্য
তাপমাত্রার একক
আন্তর্জাতিক বা এস. আই (সিস্টেম ইন্টারন্যাশনাল) ইউনিট
আন্তর্জাতিক বা এস. আই পদ্ধতিতে তাপমাত্রার একক হল কেলভিন (K)। এই একক চালু হবার আগে প্রচলিত একক ছিল ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বা ডিগ্রী সেলসিয়াস যা কেলভিন এককের পাশাপাশি ব্যবহৃত হচ্ছে। এরও আগে তাপমাত্রার ব্রিটিশ পদ্ধতির একক ছিল ফারেনহাইট। কেলভিনকে সেন্টিগ্রেড স্কেলে পরম তাপমাত্রা বলা হয়। সেন্টিগ্রেড স্কেলের 273°C সমান O°K কেলভিন ধরা হয়। অর্থাৎ, পদার্থের পরম শূন্য তাপমাত্রা এস. আই ইউনিটে 273°K এবং সেন্টিগ্রেড ইউনিটে 0°C ধরা হয়।
হিমায়ন চক্রের ইভাপোরেটর তাপ শোষণ করে আর কন্ডেনসার তাপ বর্জন করে। হিমায়ন যন্ত্রের ইভাপোরেটরটি ধাতব নির্মিত টিউব যা - রক্ষিত খাদ্য সামগ্রী হতে পানি বা বায়ুর মাধ্যমে প্রত্যাশিত অঞ্চল থেকে পরিচলন প্রক্রিয়ায় তাপ শোষণ করে। ধাতব টিউবের শোষিত তাপ পরিবহন প্রক্রিয়ায় ইভাপোরেটরের টিউবে চার্জকৃত হিমায়কে ছেড়ে দেয় ।
হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্ট ঐ তাপ গ্রহণ করে। তাপ গ্রহণকারী হিমায়ক কম্প্রেসর হয়ে কন্ডেনসারে আসে। উচ্চ তাপমাত্রার হিমায়ক পরিবহন প্রক্রিয়ায় কন্ডেনসারের ধাতব টিউবে ছেড়ে দেয়া তাপ কুলিং এলিমেন্ট (বাতাস বা পানি) গ্রহণ করে। পানি বা বাতাস পরিচলন প্রক্রিয়ায় উক্ত তাপ অন্যত্র স্থানান্তরিত হয় ।
তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেল
পানির হিমাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ককে কাজে লাগিয়ে তাপমাত্রার স্কেল নির্ধারণ করা হয়।
হিমাঙ্ক (Freezing Point)
যে তাপমাত্রায় পানি বরফে পরিণত হয় তাকেই পানির হিমাঙ্ক (Freezing Point) বলে।
স্ফুটনাঙ্ক (Boiling Point )
যে তাপমাত্রায় পানি ফুটতে শুরু করে তাকেই পানির স্ফুটনাঙ্ক (Boiling Point) বলে। পানির হিমাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্কের মধ্যবর্তী দূরত্বকে বিভিন্ন আদর্শ মানে ব্যবহার করা হয়। এ দূরত্বকে বিভিন্ন সংখ্যায় বা অংশে বিভক্ত করে তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেল নির্ধারণ করা হয়। যেমন-
১। সেন্টিগ্রেড/সেলসিয়াস স্কেল (Centigrade Scale )
পানির হিমাঙ্ককে 0° এবং স্ফুটনাঙ্ককে 100° ধরে মধ্যবর্তী দূরত্ব ১০০ ভাগে বা অংশে ভাগ করে থার্মোমিটারের স্কেল তৈরি করা হয় একে সেন্টিগ্রেড স্কেল বলে। এর ক্ষুদ্রতম এক ভাগকে 1°C (সেলসিয়াস) বা ১° সে. - ধরা হয়।
২। ফারেনহাইট স্কেল (Fahrenheit Scale )
পানির হিমাঙ্ককে 32° এবং স্ফুটনাঙ্ককে 212° ধরে মধ্যবর্তী দূরত্ব ১৮০ ভাগে বা অংশে ভাগ করে থার্মোমিটারের স্কেল তৈরি করা হয় - একে সেন্টিগ্রেড স্কেল বলে । এর ক্ষুদ্রতম এক ভাগকে 1°F (ফারেনহাইট) বা 1°F ধরা হয়।
পরমশূন্য তাপমাত্রা (Absolute Zero Temperature)
কোন আদর্শ গ্যাস থেকে তাপ শোষণ করতে করতে এমন একটা অবস্থায় আনয়ন করা যায় যে, গ্যাসটি আর কোন জায়গা দখল করে না (আয়তন শূন্য হয়)। গ্যাসটির এরূপ অবস্থায় তাপমাত্রার ঐ সর্বনিম্ন মানকে পরমশূন্য তাপমাত্রা (Absolute Zero Temperature) বলে। পানির পরম শূন্য তাপমাত্রাকে - 273°C বা -460°F ধরা হয়।
পরম তাপমাত্রা (Absolute Temperature)
যে তাপমাত্রা পরম শূন্য তাপমাত্রা থেকে গণনা করা হয় তাকে পরম তাপমাত্রা বলে।
পরম তাপমাত্রা স্কেল (Absolute Zero Temperature)
যে স্কেল হতে পরম শূন্য তাপমাত্রা গণনা করা হয় তাকে পরম তাপমাত্রা স্কেল বলে। সেন্টিগ্রেড স্কেলে পরম তাপমাত্রার একক হল কেলভিন আর ফারেনহাইট স্কেলে পরম তাপমাত্রার স্কেল র্যাঙ্কিন (Rankine ) ।
চাপ হল একক ক্ষেত্রফলে একটি বস্তুর পৃষ্ঠতলে সমকোণে প্রযুক্ত বল। এটির প্রতীক হল p বা P। চিত্র ১.২ এখানে বল বা ফোর্স = F এবং ক্ষেত্রফল বা এরিয়া = A
চাপের একক (Unit of Pressure)
১। এস আই পদ্ধতিতে চাপের একক প্যাসকেল (Pascal)। প্যাসকেলের পরিমাণ কম হলে একে কিলো প্যাসক্ষেল (Kpa) আবার বেশি হলে মেগা প্যাসক্ষেল ( Mpa) হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
২। এফ.পি.এস পদ্ধতিতে একক ক্ষেত্রফলের (বর্গ ইঞ্চি) উপর পাউন্ড এককে চাপের পরিমাণ হিসাব করা হয়। যাকে Pound Per Square Inch বা P.S.I বলে।
৩। MKS পদ্ধতিতে একক ক্ষেত্রফলের (বর্গ সেন্টিমিটার) উপর কিলোগ্রাম (কেজি) এককে চাপের পরিমাণ হিসাব করা হয়। যাকে Kilogram Per Centimeter Square বা Kg/cm2 দিয়ে প্রকাশ করা হয় ।
গেজ চাপ
প্রবাহিত চাপ বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে মাপা যায়। এই যন্ত্রগুলোর একটির নাম গেজ (Grange) । পেজ দিয়ে পরিমাপিত চাপকে গেছ চাপ বলে।
পরম চাপ
বায়ুমণ্ডলের চাপ ও গেজ চাপের যোগফলকে পরম চাপ বলে।
শূন্য চাপ
বায়ুর চাপ অপেক্ষা কম চাপকে শূন্য চাপ বলে। আমরা জানি বায়ুর আদর্শ চাপ 76 cm পারদ স্তম্ভ। এখন কোন পাত্রে প্রবাহীর চাপ 72.8 cm পারদ স্তম্ভ পাওয়া পেল। এক্ষেত্রে শূণ্য চাপ = (76-72.8 cm = 3.2 cm পারদ ।
চাপ পরিমাপক যন্ত্রের বর্ণনা
যে যন্ত্রের সাহায্যে বায়বীয় পদার্থের চাপ পরিমাপ করা হয় তাকে চাপ পরিমাপক বা চাপমান যন্ত্র বলে। চাপমান বন্ত্রের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের ঊর্ধ্বের চাপ পরিমাপ করা যায়। সাধারণত তিন ধরনের চাপমান যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
১। হাই প্রেসার গেজ (High Pressure Gauge )
২। লো প্রেসার গেজ বা কম্পাউন্ড গেজ (Low Pressure Gauge)
৩। কম্বিনেশন গেজ (Combination Gauge )
পদার্থের তাপমাত্রা, চাপ ও আয়তন একে অপরের উপর নির্ভরশীল এবং প্রভাব বিস্তার করে। ফলে এমন চক্রে রেফ্রিজারেন্টের ঘনীভবন ও বাষ্পীভবন কাজে চাপের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, যা নিম্নরূপ-
ঘনীভবনের (Condensation) সময় চাপের প্রভাব
যে প্রক্রিয়ায় বাষ্পীয় পদার্থ ঘনীভূত হয় তাকে ঘনীভবন বলে। ঘনীভবনের সময় উচ্চ চাপের গ্যাস তাপ ছেড়ে দেয় এবং ঘনীভূত হয় । বৈশিষ্ট্যানুযায়ী ঘনীভবনের জন্য প্রয়োজন বাষ্পীয় রেফ্রিজারেন্টকে উচ্চ চাপে সংকুচিত হওয়া। কম্প্রেসরের সাহায্যে উচ্চ চাপে তা সংকুচিত হয় এবং চাপ অপরিবর্তিত রেখে কম্প্রেসরের মাধ্যমে তাপ অপসারণ করে তরলে রূপান্তরিত হয়।
বাষ্পীভবনের (Evaporation) সময় চাপের প্রভাব
যে পদ্ধতিতে তরল পদার্থ বাষ্পে পরিণত হয় তাকে বাষ্পীভবন বলে। বাষ্পীভবন কালে তরল পদার্থ নিম্নচাপে প্রচুর সুপ্ততাপ/ ল্যাটেন্ট হিট শোষণ করে। ফলে ঐ এলাকা শীতল হয়। বাষ্পীভবনের জন্য প্রয়োজন তরল রেফ্রিজারেন্টকে নিম্নচাপে সম্প্রসারিত হওয়া। নিয়ন্ত্রকের সাহায্যে নিম্নচাপে তা ইভাপোরেটরে সম্প্রসারিত হয় এবং প্রচুর সুপ্ততাপ শোষন করে সম্পৃক্ত বাষ্পে রূপান্তরিত হয়। তরলের ওপর চাপ কমালে তার স্ফুটনাংক কমে। রেফ্রিজারেন্ট তরলে রূপান্তরের জন্য উচ্চচাপ এবং বাস্পে রূপান্তরের জন্য নিম্নচাপের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।
তাপমাত্রা, চাপ এবং বাষ্পীভবনের সম্পর্ক
পানি ও অন্যান্য আদর্শ গ্যাসের তাপমাত্রা, চাপ ও বাষ্পীভবনের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সমুদ্র সমতলে স্বাভাবিক বায়ুর চাপ সবচেয়ে বেশি (1.03 Kg/cm2 ) এবং এখানে পানি 100°C তাপমাত্রায় ফুটে। সমুদ্র সমতল হতে ১০০০ মিটার উপরে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায় (0.1 Kg/cm) এবং বয়েলিং পয়েন্ট 40°C কমে যায়। পক্ষান্তরে চাপ বেড়ে গেলে বাষ্পীভবনের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ৩০০০ মিটার উপরে বায়ুর চাপ 0.7 Kg/cm2 । উক্ত চাপে 440°C তাপমাত্রায় পানি বাষ্পীভূত হয়। অপরদিকে চাপ দ্বিগুণ হলে পানি 120°C তাপমাত্রায় বাষ্পীভূত হবে । বায়ুশূন্য/ভ্যাকুয়াম অবস্থায় 0.00952 PSI চাপে পানি 5°C উষ্ণতায় বাষ্পীভূত হয়।
এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি, রেফ্রিজারেন্ট বা হিমায়ক এবং রেফ্রিজারেশন ও এয়ার-কন্ডিশনিং ইউনিটে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশসমূহ যেমন- কম্প্রেসর, কন্ডেনসার ইত্যাদি সম্পর্কে জানব ।
রেফ্রিজারেশন শব্দটি রেফ্রিজারেন্ট (Refrigerant) শব্দ হতে এসেছে, যার বাংলা অর্থ হচ্ছে হিমায়ন বা শীতলীকরণ অর্থাৎ, হিমায়িত করা। রেফ্রিজারেশন বা হিমায়ন/ঠান্ডাকরণ/শীতলীকরণ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি, কোন সীমিত বা আবদ্ধ স্থানের তাপমাত্রা (Temperature) এর চারপাশের তাপমাত্রা অপেক্ষা কমিয়ে বস্তু সমূহকে শীতল করে সংরক্ষণ করা। অর্থাৎ, হিমায়ন হল কৃত্রিম উপায়ে শক্তি প্রয়োগে নিম্ন তাপমাত্রা হতে উচ্চ তাপমাত্রায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া। মূলত এটিই রেফ্রিজারেশন। সাধারণত তাপমাত্রা (Temperature) কমাতে হলে তাপ (Heat) কে সরাতে হয়। প্রাকৃতিকভাবে তাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Automatic) উচ্চ তাপমাত্রা হতে নিম্ন তাপমাত্রায় চলে আসে। লো-টেম্পারেচার (Low Temperature) বা নিম্ন তাপমাত্রা, হাই-টেম্পারেচার (High Temperature) বা উচ্চ তাপমাত্রায় স্থানান্তর করতে যে শক্তির প্রয়োজন হয় তাই হিমায়ন (Refrigeration) পদ্ধতি। পানি তাপ গ্রহণ করে বাষ্পীভূত (Evaporation) হয়। তরল যে পাত্র হতে বাষ্পীভূত হয় সে পাত্র হতে তাপ গ্রহণ করে। ফলে পাত্রটি ঠান্ডা হয়। সুতরাং, রেফ্রিজারেশন হল কোনো স্থানের তাপমাত্রা পার্শ্বস্থ তাপমাত্রা হতে কমিয়ে রাখা। টন অব রেফ্রিজারেশন এর সাহায্যে হিমায়ন ক্ষমতা প্রকাশ করা হয়ে থাকে ।
সাধারণত -100°C পরম তাপমাত্রা পর্যন্ত ঠান্ডা করণকে ক্রায়োজেনিক (Cryogenic) তাপমাত্রা বলে ।
রেফ্রিজারেশন বা হিমায়ন তৈরি করার অনেক পদ্ধতি আছে। নিম্নে বহুল প্রচলিত ও কয়েকটি অপেক্ষাকৃত কম প্রচলিত রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির তালিকা দেয়া হল-
১.ড্যাপার কম্প্রেসন রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Vapor Compression Refrigeration System)
২. ভ্যাপার অ্যাবজর্পশন রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Vapour Absorption Refrigeration System )
৩. ইভাপোরেটিভ রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Eevaporative Refrigeration System )
৪. আইস রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Ice Refrigeration System)
৫. ড্রাই আইস রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Dry Ice Refrigeration System )
৬. থার্মো-ইলেকট্রিক রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Thermo Electric Refrigeration System )
৭. স্টিম জেট রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Steam Jet Refrigeration System )
৮. এয়ার এক্সপানশন রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Air Expansion Refrigeration System)
৯. এক্সপেন্ডেবল রেফ্রিজারেন্ট রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Expandable Refrigeration System )
১০. ভোরটেক্স টিউব রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Vortex Tube Refrigeration System)
(১) ভ্যাপার কম্প্রেশন রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Vapour Compression Refrigeration System)
ভ্যাপার কম্প্রেশন পদ্ধতিতে একটি রাসায়নিক পদার্থকে পর্যায়ক্রমে একবার তরল থেকে বাষ্পে রূপান্তরিত করা হয় যাকে আমরা ইভাপোরেশন বা বাষ্পায়ন বলি এবং এ প্রক্রিয়ার ফলে তাপ শোষণ করে শীতল পরিবেশ তৈরি করা হয়। পুনরায় রাসায়নিক পদার্থের বাষ্পকে তরলে রূপান্তরিত করা হয় যাকে আমরা কন্ডেনসেশন (Condensation) বা তরলীকরণ বলি এবং এ প্রক্রিয়াচাপ মুক্ত করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এ আবর্তনকে চারটি পর্যায়ে বিভক্ত করা হয়-
১. সংকোচন প্রক্রিয়া (Compression Process)
২. ঘনীভবন প্রক্রিয়া (Condensation Process )
৩. সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া (Expension Process )
৪. বাষ্পায়ন প্রক্রিয়া (Evaporation Process)
উপরে উল্লেখিত চারটি প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য চারটি মৌলিক অংশের প্রয়োজন হয়। অংশগুলো হল-
১. কম্প্রেসর (Compressor) : বাষ্প সংকোচন করে এবং চক্রে হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্ট সঞ্চালন করে।
২. কন্ডেনসার (Condenser) : বাষ্পীয় হিমায়ক তরলে পরিণত করে।
৩. এক্সপানশন ডিভাইস (Expansion Device / Capillary Tube) : তরল হিমায়কের চাপ কমায় এবং প্রবাহ হার নিয়ন্ত্রণ করে।
৪. ইভাপোরেটর বা কুলিং কয়েল (Evaporator) : তরল হিমায়ককে বাষ্পে রূপান্তর করে।
ভ্যাপার কম্প্রেসন রেফ্রিজারেশন চক্রে উপরে উল্লেখিত চারটি প্রধান অংশ ছাড়াও সহায়ক অংশ হিসেবে ফিল্টার ড্রায়ার, রিসিভার, এ্যাকুমুলেটর প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়।
কাজের প্রণালী
১. কম্প্রেসন (Compression)
ইভাপোরেটর হতে নিম্নচাপ ও তাপমাত্রায় বাষ্পীয় হিমায়ক বাষ্পে রূপান্তর করে এবং কম্প্রেসরে সংকুচিত হয়ে উচ্চচাপ ও তাপমাত্রায় ডিসচার্জ লাইন দিয়ে কন্ডেনসারে চলে যায় ।
২. কন্ডেনসেশন (Condensation)
কম্প্রেসর থেকে আসা উচ্চ চাপ ও তাপমাত্রায় বাষ্পীয় হিমায়ক তাপ বর্জন করে উচ্চ চাপ ও তাপমাত্রায় তরলে পরিণত হয়। ছোট ছোট হিমায়ন যন্ত্রে কন্ডেনসার থেকে তাপ অপসারণের জন্য ফ্যান ব্যবহার করা হয় এবং বড় হিমায়ন যন্ত্রে তাপ অপসারণের জন্য পানি বা ব্রাইন ওয়াটার (লবণ মিশ্রিত পানি) এর মাধ্যমে কন্ডেনসার ঠান্ডা করা হয়।
৩. এক্সপানশন (Expansion )
ইভাপোরেটরে যাতে তরল হিমায়ক সহজে বাম্পে পরিণত হতে পারে সেজন্য এক্সপানশন ডিভাইস রেফ্রিজারেন্টের চাপ কমিয়ে দেয় এবং কোন এক্সপানশন ডিভাইস ইভাপোরেটরের চাহিদামত রেফ্রিজারেন্ট বা হিমায়ক নিয়ন্ত্রণ করে ইভাপোরেটরের পাঠায়।
৪. ইভাপোরেশন (Evaporation)
এক্সপানশন ডিভাইস থেকে নিম্নচাপ ও তাপমাত্রার রেফ্রিজারেন্ট ছোট ছোট কণা আকারে ইভাপোরেটর কয়েলে প্রবেশ করে সম্প্রসারিত হয় এবং হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্ট সুপ্ততাপ বা ল্যাটিন্ট হিট গ্রহণ করে নিম্নচাপ ও তাপমাত্রায় বাষ্পে পরিণত হয়। এভাবে চক্র সম্পন্ন হয় এবং চক্রের পুনরাবৃত্তির ফলে ইভাপোরেটরে নিম্ন তাপমাত্রার সৃষ্টি হয় ।
ভ্যাপার কম্প্রেশন রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র-
(ক) ডোমেস্টিক রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার, বিভিন্ন ধরনের এর কন্ডিশনার;
(খ) ওয়াটার কুলার, ডি-হিউমিডিফায়ার, ইনকিউবেটর;
(গ) ওয়াক-ইন-কুলার, রিচ-ইন-কুলার, ফিশ ও মিট প্রিজার্ভার;
(ঘ) ব্লাড ব্যাংক, ট্রান্সপোর্ট রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনার, আইসক্রিম ফ্যাক্টরিং
(ঙ) ডিসপ্লে কেস, মিল্ক কুলার, বেভারেজ কুলার, আইস প্লান্ট, ডেইরি ফার্ম, আইস মেকার।
(২) ভ্যাপার অ্যাবজর্পশন রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি
অ্যাবজপর্শন রেফ্রিজারেশন সিস্টেম একটি তাপ পরিচালিত ইউনিট যাতে রেফ্রিজারেন্ট পরিবর্তিত ভাবে শোষক পদার্থ কর্তৃক শোষিত মুক্ত হয়। জেনারেটরের মধ্যে অ্যামোনিয়া (NH3) ও পানি (H2O) তরল অবস্থায় থাকে। জেনারেটরে কেরোসিনের বাতি বা গ্যাস বা ইলেকট্রিক হিটারের সাহায্যে তাপ (Heat) প্রয়োগ করা হয়। অ্যামোনিয়ার বাষ্পীভবন তাপমাত্রা পানির বাষ্পীভবন তাপমাত্রা অপেক্ষা অনেক কম হওয়ায় অ্যামোনিয়া অনেক আগেই বাষ্পে পরিণত হয় এবং উপরের নলে ওঠে যায়। উপরে যাওয়ার সময় অ্যামোনিয়া বাম্পের সাথে কিছু পানির বাষ্প নিয়ে যায় (অ্যামোনিয়া পানিতে দ্রবণীয় বলে)। জেনারেটর হতে অ্যামোনিয়া ও পানি উভয়ই জেনারেটরের উপরে অবস্থিত সেপারেটরে পৌঁছায়। এই পাত্রে পানি কিছুটা শীতল হয়, ফলে এটি বাষ্প হতে তরলে পরিণত হয়। কিন্তু অ্যামোনিয়া উচ্চ চাপে বাষ্পীয় অবস্থায় থেকে যায়। সেপারেটরের উপরের নির্গম পথে লিকুইড সিল ব্যবহার করা হলে পানি বা অ্যামোনিয়ার পানির তরল মিশ্রন উপরে কন্ডেনসারের দিকে যেতে পারে না। উষ্ণ পানি সেপারেটরের নিচের দিকের নল দিয়ে অ্যাবজর্বারে চলে যায়। অন্যদিকে বাষ্পীয় অ্যামোনিয়া তাপ হারিয়ে ভরলে পরিণত হয়। এই তরল অ্যামোনিয়া কন্ডেনসারের সরু নির্গম নল দিয়ে নিম্নচাপে ইভাপোরেটরে প্রবেশ করে। অপরপক্ষে, অ্যাবজরবার হতে আগত অপেক্ষাকৃত হালকা হাইড্রোজেন (H2) গ্যাস ইভাপোরেটরে পৌঁছায়। এই প্রায় বিপরীতমুখী প্রবাহের ফলে অ্যামোনিয়ার চাপ কমে যায়। এতে তরল হিমায়ক দ্রুত বাস্পায়নের সময় প্রচুর সুপ্তভাগ গ্রহণ করে। ফলে ইভাপোরেটর করেন শীতল/ ঠাণ্ডা হয়।
জেনারেটর তাপ প্ররোগের জন্য ইলেকট্রিক হিটার ব্যবহার করা হলে এর সাথে সিরিজে একটি থার্মোস্ট্যাট (Thermostat/Th.) ব্যবহৃত হয়, যাতে স্বরেক্রিয়ভাবে (Automatic) এটি অন-অফ (on-off) করা যায়। প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হলে চাপ ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রেগুলেটর ব্যবহৃত হয়। এই রেগুলেটরের সাথে কুলি চেম্বারের সম্পর্ক থাকে।
বাস্তবক্ষেত্রে এই হিমায়নে আবর্তন চক্রের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য একাধিক হিট এক্সচেঞ্জার (Heat Exchanger), এনালাইজার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। হিট এক্সচেয়ারগুলো তাপ বিনিময়ের মাধ্যমে ইউনিটের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে।
ভ্যাপার অ্যাবজর্গশন রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র
সেন্ট্রাল বা কেন্দ্রীয় এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমে, আবাসিক রেফ্রিজারেশন সিস্টেম / রেফ্রিজারেটর, শিল্প ও হাসপাতাল ইত্যাদি।
(৩) ইভাপোরেটিভ রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Evaporative Refrigeration System)
ইভাপোরেটিভ কুলিং সিস্টেমে ওরেটেড অ্যাসপেন প্যাড (Watted Aspen Pads) ব্যবহৃত হয়। স্লোয়ারের মাধ্যমে বাইরে থেকে পরম বাতাস প্যাডের উপর দিয়ে প্রবেশ করিয়ে বাতাসের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস হতে ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এ আনয়ন করা হয় (8°C to 17°C or 15°F to 30°F)। এক্ষেত্রে বেশি গতি সম্পন্ন গ্রোয়ার ব্যবহার করা হয়। আর্দ্রতা বৃদ্ধি করতেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় ।
কৃত্রিম তুষার তৈরিকরণ (Artificial Snow Air and Water Mixture) প্রণালীতে কোন শেলের মধ্যে দিয়ে এক প্রাপ্ত হতে ১৫০ পি.এস.আই ( 150 PSI ) সংকুচিত বাতাস প্রবেশ করানো হয়। অপর প্রান্ত বা মাঝ বরাবর ১০০ পি.এস.আই (100 PSI) ওয়াটার লাইন সংযুক্ত থাকে। লেলের এক প্রাপ্ত খোলা বা উন্মুক্ত থাকে, যে দিক দিয়ে কৃত্রিম তুষার/বরফ বের হয়। অপর দু'প্রান্তে এরার নজেল ও ওয়াটার লাইন প্রবেশ করানো থাকে। নজেলের মাধ্যমে সংকুচিত বাতাস (কম্প্রেসড এয়ার) ১৫০ পি.এস.আই চাপে প্রবেশ করানো হয় । শেলের নীচের অংশে নিয়ে ১০০ পি.এস.আই চাপের ওয়াটার/পানি প্রবেশ করে ফলে খোলা/উন্মুক্ত প্রাপ্ত দিয়ে আর্টিফিসিয়াল শো বা কৃত্রিম বরফ তৈরি হয়।
মরুভূমিতে পানি ঠাণ্ডা করণের জন্য ডেজার্ট ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত লেদার বা চামড়ার তৈরি হয়। ভেতরে সংরক্ষিত পানি (H2O) বাম্পায়ণের (Evaporation) ফলে শীতল হয়।
চিত্র ১.৯: ইভাপোরেটিভ রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (ডেজার্ট ব্যাগ)
ইভাপোরেটিভ রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র
(ক) আগের দিনে মরু ভূমিতে ঠান্ডা পানি বা বরফ তৈরিতে ব্যবহার করা হতো:
(খ) ডিজার্ট কুলার বা ইভাপোরেটিভ কুলারে ব্যবহার করা হয়;
(গ) কৃত্রিম ভূষার তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়।
(৪) ড্রাই আইস রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Dry Ice Refrigeration System)
ড্রাই আইস (Dry Ice) বলতে আমরা সাধারণত কার্বন ডাই অক্সাইডের কঠিন রূপকে (Solid CO2) বুঝি । অর্থাৎ, শুল্ক কার্বন-ডাই-অক্সাইডের কঠিন রূপকেই ড্রাই আইস বলে। অনেক কম তাপমাত্রায় এবং কম চাপে (-56.4 °C তাপমাত্রা এবং 5.13 atm চাপে) গ্যাসীয় কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে রেখে দিলে সেটি তরলে রূপান্তরিত না হয়ে সরাসরি কঠিন পদার্থের আকার ধারণ করে। যে সিস্টেমে ড্রাই আইস এর মাধ্যমে বা কঠিন কার্বন ডাই অক্সাইড এর মাধ্যমে শীতল বা ঠান্ডা করা হয় তাকেই ড্রাই আইস রেফ্রিজারেশন সিস্টেম বলে। এই সিস্টেমে তাপমাত্রা সাধারণত - 78°C এ আনয়ন করা যায়। বিদেশ থেকে মূল্যবান ঔষধ, ভ্যাকসিন, মৃতদেহ সংরক্ষণ করতে এটি ব্যবহৃত হয়।
ড্রাই আইস রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র
(ক) ড্রাই আইস রেফ্রিজারেশন ব্যবহার হয় যেখানে বিদ্যুৎ নেই
(খ) পচনশীল খাদ্যদ্রব্য পরিবহনে
(গ) জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, ভ্যাকসিন ইত্যাদি পরিবহন ও সংরক্ষণে
(ঘ) চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক জমাট বাঁধানোর কাজে,
(ঙ) পরিবহন কন্টেইনার ঠাণ্ডা করার কাজে।
(৫) আইস রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Ice Refrigeration System )
এই পদ্ধতিতে প্রকোষ্ঠের মধ্যে সরাসরি বরফের সাহায্যে ঠান্ডা করা হয়ে থাকে। ইন্সুলেটেড ক্যাবিনেটের উপর ট্রেতে বরফ বা আইস (lce) বসানো থাকে ও নিচের র্যাকে/ কম্পার্টমেন্টে খাদ্য সামগ্ৰী তাক (Shelf) এ রাখা হয়।
ঠাণ্ডা বাতাস (Cold Air) আইস কম্পার্টমেন্ট হতে নিচের দিকে প্রবাহিত হয় এবং নিচে রাখা খাদ্য সামগ্রীকে ঠান্ডা করে। বাতাস গরম হলে ক্যাবিনেট হতে উপরের দিকে প্রবাহিত হয়ে পুনরায় ঠান্ডা অবস্থায় সমগ্র স্থান (Space) কে ঠান্ডা বা শীতল করে। এভাবে 4.4°C হতে 5.5°C এর মধ্যে রাখা হয়। যখন তাপমাত্রা 0°C এর প্রয়োজন হয় তখন বরফের সাথে লবন মেশালে অনেক নিচে তাপমাত্রা নামানো সম্ভব। আইস রেফ্রিজারেশন পদ্ধতিতে ক্যাবিনেটের উপরে সংরক্ষিত বরফ শেষ হলে পরে বাইরে থেকে বরফ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি বরফ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হয় ।
(৬) থার্মো-ইলেকট্রিক রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Thermo - Electric Refrigeration System)
থার্মো-ইলেকট্রিক রেফ্রিজারেশন সিস্টেমে এক ধরনের কাপল কাজ করে। পিএন জাংশন (P-N Junction) এর মাধ্যমে ইলেকট্রনের আদান প্রদানের কোল্ড পয়েন্টে পরিণত হয়। উক্ত কোল্ড পয়েন্ট হতে ফ্যানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত স্থানে/ কন্ডিশন স্পেসে (Condition Space) সরবরাহ করা হয়। ডিসি ভোল্টেজ (D.C Voltage) সরবরাহ করে শীতলতা তৈরি করা হয়ে থাকে। P-N জংশন এক ধরনের সংকর ধাতুর যুগলের তৈরি, যাতে কিছু ইলেকট্রন ঘাটতি থাকায় এতে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে।
কার্যপ্রণালী
থার্মো-ইলেকট্রিক কুলারের পাওয়ার সাপ্লাই-এ ২২০ ভোল্ট এসিকে স্টেপডাউন ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে ২০ ভোল্ট এ.সি. এবং রেক্টিফায়ারের সাহায্যে ২০ ভোল্ট ডি.সি.তে রুপান্তর করা হয়। ২০ ভোল্টের ডাইরেক্ট কারেন্ট থার্মো-ইলেকট্রিক মডিউলের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে রেফ্রিজারেটরের ভেতরের জাংশন ঠান্ডা এবং বাইরের জাংশন গরম হয়। থার্মো-ইলেকট্রিক কুলিং ইউনিট যখন রেফ্রিজারেশনে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে মডিউল (Module) বলে ।
থার্মো- ইলেকট্রিক রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র
(ক) বহনযোগ্য (Portable) রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত হয়।
(খ) বিলাসসামগ্রী হিসেবে (Luxury Type) আংশিক রেফ্রিজারেটর ও ওয়াটার কুলারে ।
(গ) মহাশূন্যযান ও এয়ার ক্রাফটে বৈজ্ঞানিক সামগ্রী ঠান্ডা করার কাজে।
(ঘ) কম্পিউটার ও ইলেকট্রিক সামগ্রী ঠান্ডা করার কাজে ।
(ঙ) যেখানে তাপমাত্রার পার্থক্য কম সেখানে রুম এয়ার কন্ডিশনিং -এর কাজে।
(৭) স্টিম জেট রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Steam Jet Refrigeration System )
স্টিম (Steam) শব্দের অর্থ পানির বাষ্প আর জেট (Jet) শব্দের অর্থ দ্রুত বেগে। এক্ষেত্রে পানির বাষ্পকে (Vapour) দ্রুত বেগে চিকন নালীর মধ্যে প্রবেশ করে শীতলতা আনয়ন করা হয়। ট্যাংকের উপরের অংশে স্টিম/ বাষ্প পানির উপর প্রয়োগ করায় পানির উপরের অংশে দ্রুত বাষ্পায়ন (Evaporation) ঘটে, আর নিচের অংশে চিল্ড ওয়াটার/ঠান্ডা পানি/শীতল পানিতে পরিণত হয় ।
উক্ত শীতল পানি/ চিল্ড ওয়াটার পাম্পের মাধ্যমে শীতল স্থানে (Cooled Area) প্রেরণ করা হয়। কোল্ড স্থান হতে বস্তু (Products) তাপ গ্রহণ করে পুনরায় বাষ্পীয় অবস্থায় ধারণ করে উক্ত পানি চিলারে নজেলের মাধ্যমে অর্পিত হয়। চিলারের পানি কমতি হলে মেকআপ ওয়াটার লাইনের মাধ্যমে পুনরায় পানি মেকআপ করা হয়।
স্টিম জেট রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র
ইন্ডাস্ট্রিতে যেখানে বয়লার আছে এবং প্রচুর স্টিমের ব্যবহার হয় সেখানে এয়ারকন্ডিশনিং-এর জন্য স্টিম জেট রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
(৮) ভোরটেক্স টিউব রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Vortex Tube Refrigeration System )
ভোরটেক্স টিউবের (Vortex Tube) চিকন নালির মধ্যে দিয়ে বাতাস প্রবাহের ফলে ঘুরে ঘুরে যাওয়ার দরুন বাতাস (Air) অনেকটা শীতল আকার ধারণ করে। উক্ত শীতল বাতাস পরবর্তীতে চিকন লাইনের মাধ্যমে স্পেস (Space) বা স্থানে প্রেরণ করায় এর চতুপার্শ্বে শীতল হয়।
ভোরটেক্স টিউব প্রধানত নিচে বর্ণিত অংশগুলো নিয়ে গঠিত হয়-
১। নজেল (Nozzle)
২। ডায়াফ্রাম (Diaphragm)
৩। ভালভ (Valve)
৪ । গরম বাতাস নির্গমন প্রান্ত (Hot air side)
৫। শীতল বাতাস নির্গমন প্রাস্ত (Cold air side)
ভোরটেক্স টিউবের কার্যপ্রণালি
ভোরটেক্স টিউবের নজেলগুলো এমনভাবে সাজানো থাকে যাকে সংকুচিত বাতাস জেনারেশন চেম্বারের পরিধি বরাবর ভীর্যকভাবে ইনজেক্ট করা যায়। এতে সাইক্লোনের মতো বাতাসের ঘূর্ণিপাক সৃষ্টি হয় । নজেলের আকৃতির কারণে বাতাসের চাপ কমে বেগ (প্রার শব্দের গতির সমান বেড়ে যায়। ফলে জেনারেশন চেম্বারে ভোরটেক্স প্রবাহ সৃষ্টি হয় এবং বাতাস কুন্ডলীর আকারে পাকিয়ে পাকিয়ে (Spiral like motion) পাইপের ভেতরের গা বেয়ে পরম প্রান্তের দিকে এগিয়ে যায়। আংশিক বন্ধ এই ভালতের বাধার কারণে বাতাস প্রবাহের চাপ যখন বাইরের চেয়ে কিছুটা বেড়ে যায় তখন পাইপের কেন্দ্র দিয়ে একটি বিপরীতমুখী এক্সিয়াল ফ্লো সৃষ্টি হয়। এই উল্টো স্রোত বেশি চাপ থেকে কম চাপের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় সম্মুখ স্রোত ও বিপরীত স্রোতের মধ্যে শক্তির স্থানান্তর বা বিনিময় ঘটে। ফলে ভোরটেক্স টিউবের কেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত বিপরীত স্রোত শীতল হয়ে, প্রবেশ তাপমাত্রার চেয়ে অনেক নিম্ন তাপমাত্রায় পরিণত হয় এবং টিউবের পাঁ বেয়ে ধাবমান সম্মুখ স্রোত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ঠান্ডা বাতাস ডায়াফ্রামের ছিদ্রপথ হয়ে শীতল প্রায় দিয়ে নির্গত হয় এবং গরম বাতাস ভালভের খোলা পথ দিয়ে বের হয়ে যায়। ভালভ খোলার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, ঠান্ডা বাতাস প্রবাহের পরিমাণ ও তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
ভোরটেক্স টিউৰ রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র
(ক) খনিতে কর্মরত শ্রমিকের শরীর ঠান্ডা করার জন্য পরিষের পোশাকে ভোরটেক্স টিউব ব্যবহৃত হয়।
(খ) যেখানে তরল কুল্যান্ট ব্যবহার অনাকাঙ্খিত সে ক্ষেত্রে টুলবিট ঠান্ডা করা বা অনুরূপ কাজে ভোরটেক্স টিউব ব্যবহার করা হয় ।
(গ) প্যাস টারবাইনের রোটর ব্লেড ঠান্ডা করার কাজে ভোরটেক্স টিউব ব্যবহৃত হয়।
(ঘ) সমান মাপের দুটি যন্ত্রাংশের একটি ঠান্ডা করে সামান্য সংকুচিত অবস্থায় অপরটির ভেতরে ফিট করার কাজে (Shrink fitting) ভোরটেক্স টিউব ব্যবহার করা হয়।
(ঙ) ল্যাবরেটরীতে কোন নমুনা (Sample) নির্দিষ্ট সময় শীতল রাখার কাজে ভোরটেক্স টিউব ব্যবহৃত হয়।
(১) এক্সপেন্ডেবল রেফ্রিজারেন্ট রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি (Expandable Refrigeration System) এই পদ্ধতিটি ট্রান্সপোর্ট রেফ্রিজারেশনে অধিক ব্যবহৃত হয়। তরল হিমায়ক চেম্বার / স্পেসের মধ্যে স্প্রে করানো হয়। লিকুইড নাইট্রোজেন (N2) সিলিন্ডারের মাধ্যমে কন্ডিশন স্পেসে শীতলতা বজায় রাখে।
এক্সপেডেল রেফ্রিজারেন্ট রেফ্রিজারেশন সিস্টেমের ব্যবহার ক্ষেত্র-
কাভার্ড ভ্যান বা ট্রাক রেফ্রিজারেশনে ব্যবহৃত হয় ।
১। ফ্রিজার (Freezer)
২। ওয়াটার কুলার (Water Coolar)
৩। মিল্ক কুলার (Milk Coolar)
৪। ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর (Refrigerator)
৫। সোডা ফাউন্টেইন (Soda Fountain)
৬। আইসক্রিম ক্যাবিনেট (Ice Cream Cabinate)
৭। ডিসপ্লেকেস (Display Case)
৮। আইস মেকার (Ice Maker)
৯। কৌন আইস মেশিন (Cone Ice Machine)
১০। ক্যান্ডি আইস ফ্যাক্টরি (Candy Ice Factory )
১১। আইসক্রিম ফ্যাক্টরি (Ice Cream Factory)
১২। আইস প্ল্যান্ট বা বরফ কল (Ice Plant)
১৩। কোল্ড স্টোরেজ বা হিমাগার (Cold Storage)
১৪। ফিশ প্রিজার্ভার (Fish Preserver)
১৫। প্রসেসিং প্ল্যান্ট(Processing Plant).
১৬। ডেইরি ফার্ম (Dairy Firm)
১৭। ট্রাক বা ট্রান্সপোর্ট হিমায়ন (Track / Transport Refrigerator)
১৮। রুম এয়ারকুলার (Room Air Coolar)
১৯। সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনিং প্ল্যান্ট (Central Air Conditioning Plant).
২০। ডি-হিউমিডিফায়ার (De-Humidifier)
২১। ইনকিউবেটর (Incubator) ইত্যাদি ।
হিমায়ক বা Refrigerant হল তাপ বহনকারী তরল প্রবাহী (Fluid)। রেফ্রিজারেশন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কার্যনির্বাহক বস্তুকেই রেফ্রিজারেন্ট বলে। অর্থাৎ রেফ্রিজারেন্ট একটি অঞ্চল হতে তাপ সংগ্রহ করে এবং বায়ুমন্ডলে সে তাপ নিক্ষেপ বা স্থানান্তর করে।
রেফ্রিজারেন্ট প্রধানত দু'প্রকার-
১. প্রাইমারি রেফ্রিজারেন্ট (Primary Refrigerant )
২. সেকেন্ডারি রেফ্রিজারেন্ট (Secondary Refrigerant )
প্রাইমারি রেফ্রিজারেন্ট
যে রেফ্রিজারেন্ট অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে রেফ্রিজারেশন চক্রে তাপ স্থানাস্তর করে তাকে প্রাইমারি রেফ্রিজারেন্ট বলে। উদাহরণ: CFC 12, HCFC 22, HFC 1342, HC 600a
সেকেন্ডারি রেফ্রিজারেন্ট
যে রেফ্রিজারেন্ট তাপমাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে রেফ্রিজারেশন পদ্ধতিতে তাপ স্থানান্তর করে তাকে সেকেন্ডারি রেফ্রিজারেন্ট বলে। উদাহরণ: ব্রাইন ওয়াটার (লবণ ও পানির মিশ্রণ), পানি, বাতাস।
তাপ গ্রহণ অনুযায়ী রেফ্রিজারেন্ট তিন প্রকার-
১. প্রথম শ্রেণির রেফ্রিজারেন্ট
২. দ্বিতীয় শ্রেণির রেফ্রিজারেন্ট
৩. তৃতীয় শ্রেণির রেফ্রিজারেন্ট
CFC - ক্লোরোফ্লোরো কার্বন গোত্রের রেফ্রিজারেন্ট
HCFC- হাইড্রো ক্লোরোফ্লোরো কার্বন গোত্রের রেফ্রিজারেন্ট
HC- হাইড্রো কার্বন গোত্রের রেফ্রিজারেন্ট
HFC- হাইড্রো ফ্লোরো কার্বন গোত্রের রেফ্রিজারেন্ট
HC- ব্লেন্ড (blend) গোত্রের রেফ্রিজারেন্ট
অ্যাজিও ট্রপিক (Azeotropic) রেফ্রিজারেন্ট [দু'টি (০২) রেফ্রিজারেন্ট এর মিশ্রণ
জিও ট্রপিক (Zeotropic) রেফ্রিজারেন্ট [তিনটি (০৩) রেফ্রিজারেন্ট এর মিশ্রণ]
অজৈব রাসায়নিক পদার্থ (Inorganic Refrigerant )
আদর্শ হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্টের গুনাবলি/ধর্ম
১. রেফ্রিজারেন্ট অবশ্যই বিষহীন হওয়া উচিত ।
২. রেফ্রিজারেন্ট দাহ্য না হওয়া ।
৩. রেফ্রিজারেন্ট টক্সিক হওয়া উচিত নয়।
৪. রেফ্রিজারেন্টের বিস্ফোরণ ক্ষমতা না থাকা উচিত ।
৫. রেফ্রিজারেন্ট এমন হওয়া উচিত যাতে এটি কোন ধাতুর সংস্পর্শে আসলে ক্ষয় না হয় ।
৬. রেফ্রিজারেন্টের বয়েলিং পয়েন্ট কম থাকা উচিত ।
৭. খুব বেশি নয় এবং মাঝামাঝি তাপমাত্রায় ও চাপে রেফ্রিজারেন্ট সহজেই তরলীভূত হয়।
৮. পজেটিভ চাপে রেফ্রিজারেন্ট অপারেট করা উচিত।
৯. রেফ্রিজারেন্টের অবশ্যই উচ্চমাত্রার লীন/সুপ্ততাপ তাপমান থাকা উচিত ।
১০. ডিটেক্টরের ক্ষেত্রে এটি সহজ হওয়া উচিত ।
১১. তেলের সাথে রেফ্রিজারেন্ট সহজেই মিশে যাওয়া উচিত।
১২. আর্দ্রতা রোধক হওয়া উচিত।
১৩. রেফ্রিজারেন্টের ফ্রিজিং পয়েন্ট রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির মধ্যকার যে কোনো রকম তাপমাত্রার চেয়ে কম হওয়া উচিত ।
১৪. রেফ্রিজারেন্টের অপারেশন তাপ এবং তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা থাকা উচিত ।
১৫. রেফ্রিজারেন্টের বাষ্প সমূহের আয়তন যতখানি সম্ভব কম হওয়া উচিত ।
১৬. ইভাপোরেটিং এবং কন্ডেন্সিং এ দু'টির চাপের মধ্যকার পার্থক্য কম হওয়া উচিত।
১৭. রেফ্রিজারেন্ট এর থার্মাল কন্ডাক্টিভিটি বেশি হওয়া উচিত।
১৮. রেফ্রিজারেন্ট এর উচ্চমাত্রায় ইলেকট্রিক্যাল রেজিস্ট্যান্স থাকা উচিত ।
১৯. রেফ্রিজারেন্ট এর ব্যয় কম হওয়া প্রয়োজন ।
২০. এটি সহজ লভ্য হওয়া উচিত।
অধিক ব্যবহৃত হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্টের তালিকা
১. ফ্রেয়ন-12 (ডাই ক্লোরো ডাইফ্লোরো মিথেন - CCl2 F2 )
২. ফ্রেয়ন-22 (মনো ক্লোরো ডাইফ্লোরো মিথেন - CHCIF2)
৩. রেফ্রিজারেন্ট-717 (Ammonia - NH3)
৪. কার্বন-ড্রাই-অক্সাইড (CO2)
৫. সালফার ডাই অক্সাইড (SO2)
৬. মিথাইল ক্লোরাইড (CH3Cl
৭. ইথাইল ক্লোরাইড (C2H5Cl)
৮. ফ্রেয়ন-11 (ট্রাইক্লোরো মনোফ্লোরো মিথেন - CCl3F)
৯. আইসিওল (ISCEON - 134 CH3CF4 )
১০. আইসিওল (ISCEON - 143 C2H5F3 )
১১. R-290 Propane (প্রোপেন) C3H8 or CH3CH2CH
১২. R-410A Penta Fluoroethane CF3CHF2
১৩. R-600a Isobutane C4H10 or CH(CH3)2CH3
১৪. R-718 পানি (Water) H2O
১৫. ব্রাইন প্রবণ (Brine Solution )
প্রত্যেক প্রকার হিসারক বা রেফ্রিজারেন্টের বর্ণনা রেফ্রিজারেন্ট R22
উইন্ডো ও স্প্লিট টাইপ এয়ার কন্ডিশনারে বহুল ব্যবহৃত একটি রেফ্রিজারেন্ট। এটি রংহীন, গন্ধহীন, অবিষাক্ত, অদাহ্য ও অবিস্ফোরক। - 15°C তাপমাত্রার এর সুপ্ততাপ 216.5 KJ/Kg । এটি ওজোন স্তরের ক্ষয় করে বলে উন্নত দেশে এর ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশসমূহের জন্য এর ব্যবহার ২০৩০ সাল পর্যন্ত ধার্য্য করা হয়েছে।
রেফ্রিআারেন্ট R 4100
এটি একটি ব্লেন্ড রেফ্রিজারেন্ট বা HFC-32 এবং HFC 125 এর সমন্বয়ে তৈরি। বয়লিং পয়েন্ট তাপমাত্রা ও চাপ - 52.7°C 101.3KPa | জিনট্রিক্যাল তাপমাত্রা 72.50°C, ক্রিটিক্যাল চাপ 4.96 Mpa। এর ODP 3 GWP এর মান 0.000 এবং 0.29 ।
রেফ্রিজারেন্ট R134a
এটি ক্লোরিনযুক্ত রেফ্রিজারেন্ট বা R-12 এর বিকল্প রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে উদ্ভাবন করা হয়েছে । এ রেফ্রিজারেন্ট ওজোন স্তরের ক্ষতি না করলেও পৃথিবীর উত্তাপ বৃদ্ধি করে। তাছাড়া এটি R-12 এর পরিবর্তে সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। এ রেফ্রিজারেন্ট- এর সাথে পলিএলস্টার অয়েল ব্যবহার করতে হয় যা অতিমাত্রার পানি শোষণ করে। এর গুণাগুণ R-12 এর কাছাকাছি হলেও কোন হিমায়ক যন্ত্র এটি R-12 এর পরিবর্তে এখন আর ব্যবহার হচ্ছে না। অটো এয়ার কন্ডিশনারে এখন R-12 এর পরিবর্তে 134g ব্যবহৃত হচ্ছে। এর সুপ্ততাপ-15°C তাপমাত্রার 205KJ/Kg | R134a এর একটি সাধারণ ফুটন্ত পয়েন্ট রয়েছে - 26.5°C |
রেফ্রিজারেন্ট R 404A
রেফ্রিজারেন্ট R 404 A হল একটি মিশ্র রেফ্রিজারেন্ট যা 48% R 125 এবং 52% R134a এর একটি মিশ্র মাধ্যমিক রেফ্রিজারেন্ট। রেফ্রিজারেন্টটির ODP 0.00 এবং GWP 4,540 হয়। সাধারণভাবে, কন্ডেনসারের ভাগ স্থানান্তর ক্ষমতা R 22 এর তুলনায় 20% থেকে R404A 30% বৃদ্ধি পেয়েছে।
রেফ্রিজারেন্ট R 407C
এটি R 22 এর একটি বিকল্প এবং R 143a, R 125 এবং R 32 মিশ্রিত একটি পণ্য। এটি বর্ণহীন, পরিষ্কার এবং পদ্ধহীন। এর বিশুদ্ধতা > 99.8%, ODP=0, GWP ( 100 yr ) = 1700 R 407C রেফ্রিজারেন্ট এর অণু ফর্মুলা মিশ্রণ CH2FCF3 / CH2F2 / CF3 CHF2 |
রেফ্রিজারেন্ট R 717 (অ্যামোনিয়া)
অ্যামোনিয়া (NH3) নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি রাসায়নিক যৌগ। এটি কটুগন্ধযুক্ত বর্ণহীন গ্যাস। খাদ্য ও সার উৎপাদনকারী অনেক অণুজীবের পুষ্টিগত প্রয়োজন পুরণে অ্যামোনিয়া গ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অ্যামোনিয়া, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, বিভিন্ন ফার্মাসিটিক্যাল পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। এটি অনেক বাণিজ্যিক পরিষ্কারক এজেন্টে ব্যবহার করা হয়। NH, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ এবং -33.34°C (- 28.12°F) তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করে, তাই অ্যামোনিয়াকে নিম্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত অ্যামোনিয়া বা অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড হচ্ছে পানি ও NH3 এর মিশ্রণ।
রেফ্রিজারেন্ট R600a
HC-600a হল- Isobutame প্রোত্রের হিমায়ক, এর বয়লিং পরেন্ট - 11.749°C, কিট্রিক্যাল ानম 134.66°C, ক্রিটিক্যাল চাপ 3.629 Mpa এবং GWP = 11, ODP = 0 |
রেফ্রিজারেন্ট R 502
রেফ্রিজারেন্ট R-502 হল R 22 এবং R 115 এর মিশ্রণ। অত্যন্ত কম তাপমাত্রা বা লো টেম্পারেচারের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি CFC-502, Freon - 502 Genetron - 502, Forane - 502 নামে পরিচিত। এর বক্সলিং পয়েন্ট - 45.3°C, ODP =0.221, GWP = 6200।
বিভিন্ন প্রকার হিমারক বা রেফ্রিজারেন্টের ব্যবহার ক্ষেত্রের বর্ণনা
রেফ্রিজারেন্ট R-12
সাধারণত রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ, ফ্রিজার, ওয়াটার কুলার, ডি-হিউমিডিফারার, এরার কন্ডিশনার ইত্যাদিতে রেসিপ্রোকেটিং- এ রোটারি কম্প্রেসরে ব্যবহৃত হয়। বড় ধরনের বাণিজ্যিক বা কমার্শিয়াল এয়ার কন্ডিশনারে সেন্ট্রিফিউগ্যাল/কেন্দ্রীয় কম্প্রেসরে এটি ব্যবহৃত হয়।
রেফ্রিজারেন্ট R-22
উইন্ডো টাইপ এয়ার কন্ডিশনার, স্প্লিট টাইপ এয়ার কন্ডিশনার এবং প্যাকেজ এয়ার কন্ডিশনারে রেসিপ্রোকেটিং ও রোটারি কম্প্রেসরে ব্যবহৃত হয়।
রেফ্রিজারেন্ট R-134a
আবাসিক রেফ্রিজারেটর, চেস্ট ফ্রিজার, আইসক্রিম ক্যাবিনেট, ইত্যাদিতে রেসিপ্রোকেটিং ও রোটারি কম্প্রেসরে ব্যবহৃত হয় । তাছাড়া বিশেষ ধরনের কম্প্রেসরে ব্যবহার করে অটোমোবাইল এয়ারকন্ডিশনারে ব্যবহৃত হয়।
রেফ্রিজারেন্ট R-502
কেন্দ্রীয়/ সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনারে রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসরের সাথে ব্যবহৃত হয়।
রেফ্রিজারেন্ট 600a
রেফ্রিজারেটরের রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসরের সাথে ব্যবহৃত হয়।
রেফ্রিজারেন্ট R 404A, R-500 এবং R-12 এর পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিকল্প নতুন নতুন রেফ্রিজারেন্ট বা হিমায়ক হিসেবে অনেক ইকুইপমেন্ট ব্যবহৃত হয়।
রেফ্রিজারেন্ট R 407A
R-12 এর বিকল্প নতুন রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে এয়ার কন্ডিশনার ও কমার্শিয়াল ইউনিট সমূহে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রেফ্রিজারেন্ট R717
কোল্ড স্টোরেজ, কনটাক্ট ফ্রিজার, ডেইরি রেফ্রিজারেশনে রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসরের সাথে ব্যবহৃত হয় ।
রেফ্রিজারেন্ট R 718
ইভাপোরেটিভ রেফ্রিজারেশন, ডেজার্ড কুলার, স্টিম জেট এয়ার কন্ডিশনারে এবং লিথিয়াম ব্রোমাইড অ্যাবজরপশন চিলারে প্রাইমারি রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া ইনডাইরেক্ট এয়ারকন্ডিশনিং ইউনিটে সেকেন্ডারি রেফ্রিজারেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কম্প্রেসরের কাজ হল বায়ু বা বায়বীয় পদার্থের অণুসমূহ সংকোচন এর মাধ্যমে চাপ বৃদ্ধি করা। ইভাপোরেটর হতে আগত নিম্নচাপ ও তাপমাত্রার বাষ্পীয় হিমায়ককে সংকুচিত করে উচ্চচাপ ও তাপমাত্রায় ডিসচার্জ লাইন দিয়ে কন্ডেনসারে প্রেরণ করাই হল কম্প্রেসরের কাজ ।
কম্প্রেসরের প্রকারভেদের বর্ণনা
কম্প্রেসর প্রধানত পাঁচ প্রকার-
১। রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসর (Reciprocating Compressor)
২। রোটারি কম্প্রেসর (Rotary Compressor)
৩। রোটারি স্ক্রু কম্প্রেসর (Rotary Screw Compressor )
৪ । সেন্ট্রিফিউগ্যাল কম্প্রেসর(Centrifugal Compressor)
৫। মিসিলানিয়াস কম্প্রেসর(Misalliances Compressor)
(১) রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসরের শ্রেণি বিন্যাস
ঢাকনা বা গাত্রাবরণের দিক অনুযায়ী রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসর তিন প্রকার
১। ওপেন টাইপ কম্প্রেসর (Open Type Compressor)
২। হারমেটিক বা সিল্ড টাইপ কম্প্রেসর ( Sealed or Hermatic Compressor )
৩। সেমি সিল্ড টাইপ কম্প্রেসর (Sami Sealed Compressor)
সিলিন্ডার সাজানোর দিক অনুযায়ী রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসর পাঁচ প্রকার-
১ । ইনলাইন (Inline Compressor)
২ । ভি টাইপ (V-Type Compressor)
৩। ডব্লিউ টাইপ (W-Type Compressor)
৪ । রেডিয়াল টাইপ (Radial Type Compressor )
৫। অপোজ টাইপ (Oppose Compressor)
সংকোচনের ধাপ অনুযায়ী রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসর দু'প্রকার-
১। সিঙ্গেল স্টেজ (Single Stage Compressor)
২। মাল্টি স্টেজ (Multi Stage Compressor)
শীতলীকরণ এর দিক অনুযায়ী রেসিপ্রোকেটিং কম্প্রেসর তিন প্রকার-
১। এয়ার কুল্ড (Air Cooled Compressor)
২। ওয়াটার কুল্ড (Water Cooled Compressor)
৩। সাকশন ভ্যাপার কুল্ড (Suction Vapor Cooled Compressor
২) রোটারী কম্প্রেসর
রোটারী কম্প্রেসর প্রধানত দু'প্রকার-
১। সিঙ্গেল ব্লেড বা ভেইন টাইপ টাইপ (Single Blade or Vane Type Compressor )
২। মাল্টি ব্লেড বা ভেইন টাইপ বা মুস্তাবল ব্রেড টাইপ (Multi Blade or Vane Type or Moveable Blade Type Compressor)
(৩) সেন্ট্রিফিউগ্যাল কম্প্রেসর
সেন্ট্রিফিউগ্যান কম্প্রেসর প্রধানত দু'প্রকার-
১। সিঙ্গেলস্টেজ কম্প্রেসর(Single-Stage Compressor)
২। মাল্টিস্টেজ কম্প্রেসর (Multi-Stage Compressor )
প্রত্যেক প্রকার কম্প্রেসারের মূল যন্ত্রাংশ
১। অ্যাঙ্কশ্যাফট
২। রোটর
কম্প্রেসরের ব্যবহার-
১। রেফ্রিজারেটরে(Refrigerator)
২। এয়ার কন্ডিশনারে (Air Conditioner)
৩। ডি-হিউমিডিফায়ারে (Dehumidifier)
৪ । ওয়াটার কুলারে (Water cooler)
৫। ইনকিউবেটরে (Incubeter)
৬। আইসক্রিম ফ্যাক্টরীতে (Ice Cream Factory)
৭। কোল্ড স্টোরেজে (Cold Storage)
৮। ফিস ফ্রিজিং প্লান্টে (Fish Frizzing Plant)
১.২.৬ কন্ডেনসারের কাজ
হিমায়ন চক্রে কম্প্রেসরের পরেই কন্ডেনসারের অবস্থান। হিমায়ন পদ্ধতির যে অংশে কম্প্রেসর হতে প্রেরিত উচ্চচাপ এবং তাপের বাষ্পীয় হিমায়ক সুপ্ততাপ বর্জন করে তরলে পরিণত করে, তাকে কন্ডেনসার বলে। কন্ডেনসারের কাজ হল- রেফ্রিজারেন্ট বা হিমায়ক এর নিজস্ব ক্রিটিক্যাল চাপের (Critical Pressure) উপরে এবং ক্রিটিক্যাল তাপমাত্রার (Critical Temperature) নিচে ঘনীভূত (Condensation) করা। প্রকৃতপক্ষে এটা কতকগুলো বাঁকা আকৃতির টিউব অথবা পাত্র বিশেষ যাতে তাপ অপসারণের সরঞ্জামাদি সংযুক্ত থাকে ।
কন্ডেনসারের মূল কাজগুলো হল-
১। কম্প্রেসর হতে আগত অধিক উত্তাপ বাষ্পীয় হিমায়ককে ঘনীভবনের মাধ্যমে তরলে পরিণত করা।
২। তরল হিমায়ককে রিসিভারে জমা রাখা ।
৩। প্রয়োজন অনুসারে হিমায়ককে এক্সপানশনে প্রেরণ করা ।
কন্ডেনসারের প্রকারভেদ
কন্ডেনসার প্রধানত চার প্রকার-
১। এয়ার কুল্ড কন্ডেনসার (Air Cold Condenser)
২। ওয়াটার কুল্ড কন্ডেনসার (Water Cold Condenser)
৩। ইভাপোরেটিভ কন্ডেনসার(Evaporative Condenser)
৪। অ্যাটমোস্ফেরিক কন্ডেনসার (Atmospheric Condenser)
১। এয়ার কুল্ড কন্ডেনসার আবার দুই প্রকার-
ক) ন্যাচারাল কনভেকশন কন্ডেনসার
খ) ফোর্সড কনভেকশন কন্ডেনসার
(ক) ন্যাচারাল কনভেকশন কন্ডেনসার আবার তিন প্রকার-
১। ফিনলেস টাইপ কন্ডেনসার
২। ফিল্ড টাইপ কন্ডেনসার
৩। প্লেট টাইপ কন্ডেনসার
(খ) ফোর্সড কনভেকশন কন্ডেনসার আবার দুই প্রকার-
১। চেচিস মাউন্টেড কন্ডেনসার
২। রিমোট টাইপ কন্ডেনসার
(১) ওয়াটার কুল্ড কন্ডেনসার আবার তিন প্রকার-
১। টিউব ইন টিউব টাইপ কন্ডেনসার
২। শেল এন্ড টিউব টাইপ কন্ডেনসার
৩। শেল এন্ড কয়েল টাইপ কন্ডেনসার
শেল এন্ড টিউৰ টাইপ কন্ডেনসার আবার দুই প্রকার-
১। ভার্টিক্যাল টাইপ কন্ডেনসার
২। হরাইজেন্টাল টাইপ কন্ডেনসার ।
প্রত্যেক প্রকার কন্ডেনসারের বর্ণনা
এয়ার কুণ্ড কন্ডেনসার ( Air Cooled Condenser) যে সকল কন্ডেনসারকে কেবল বাতাস দিয়ে ঠান্ডা করা হয় তাকে এয়ার কুল্ড কন্ডেনসার বলে। ছোট থেকে মাঝারি ক্ষমতার হিমায়ন যন্ত্রে এটা ব্যবহৃত হয়।
ওয়াটার যুক্ত কন্ডেনসার (Water Cooled Condenser)
যে সকল কন্ডেনসারের হিমায়কের তাপ পানির সাহায্যে অপসারণ করা হয় তাকে ওয়াটার কৃষ্ণ কন্ডেনসার বলে।
ন্যাচারাল কনভেকশন কভেলার (Natural Convection Condenser)
যে কন্ডেন্সার পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে বায়ুমণ্ডলের ভাগ বর্জন করে তাকে ন্যাচারাল কনভেকশন কন্ডেন্সার বলে। এতে কোন ফ্যান থাকে না।
ফোর্সড কনভেকশন কভেলার (Forced Convection Condenser)
এয়ার কুল্ড কন্ডেন্সারে বাতাস প্রবাহ কোন ফ্যানের সাহায্যে করা হলে তাকে ফোর্সড কনভেকশন কন্ডেন্সার বলে।
কন্ডেনসারের ব্যবহার ক্ষেত্র
১.২.৮ রিসিভার (Receiver )
ব্যবহার ক্ষেত্র রিসিভার একটি ধাতব পাত্র বিশেষ, যা কন্ডেনসারের পরে স্থাপন করা হয়। অধিক পরিবর্তনশীল লোডবিশিষ্ট রেফ্রিজারেশন সিস্টেমে সঠিক অপারেশন নিশ্চিত করার জন্য রিসিভারে রেফ্রিজারেন্ট জমা রাখা হয় ।
সাধারণত যে সব সিস্টেম পরিচালনার জন্য আট পাউন্ড বা অধিক রেফ্রিজারেন্ট প্রয়োজন হয় এবং এক্সপানশন ডিভাইস হিসেবে লো সাইড ফ্লোট এবং থার্মোস্ট্যাট এক্সপানশন ভাল্ভ ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ লোডের অনুসারে সঠিকভাবে রেফ্রিজারেন্ট নিয়ন্ত্রণ করা হয় অথচ অতিরিক্ত রেফ্রিজারেন্ট জমা রাখার জন্য কন্ডেনসারের তলদেশে প্রয়োজনীয় জায়গা রাখা হয়নি ঐ সকল সিস্টেমে রিসিভার ব্যবহার করা হয়।
রিসিভার দু'ধরনের হয়ে থাকে-
১। খাড়া রিসিভার (Vertical Receiver)
২। অনুভূমিক রিসিভার (Horizontal Receiver )
রিসিভারের প্রয়োজনীয়-
১। প্রয়োজনের অতিরিক্ত রেফ্রিজারেন্ট/হিমায়ক জমা রাখা।
২। মেরামতের সময় প্লান্ট এর সমস্ত রেফ্রিজারেন্ট রিসিভারের সংরক্ষণ করা।
৩। লিকুইড লাইন ভালোভাবে সাৰ কুম্ভ করা এবং শুধু তরল রেফ্রিজারেন্ট এক্সপানশন ডিভাইসে সরবরাহ করা।
রিসিভারের ব্যবহার-
১। যে সব রেফ্রিজারেশন ইকুইপমেন্টে সাধারণত আট পাউন্ড বা তার অধিক পরিমাণে রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহৃত হয়।
২। এক্সপানশন ডিভাইসে রেফ্রিজারেন্ট সূক্ষ্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে কমার্শিয়াল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্লান্টে ।
৩। যে সব রেফ্রিজারেশন ইউনিটে রেফ্রিজারেন্ট অতিমাত্রায় পরিবর্তনশীল সে ক্ষেত্রে।
৪। ভ্যাপার কম্প্রেশন রেফ্রিজারেশন সিস্টেম সম্বলিত ট্রান্সপোর্ট রেফ্রিজারেশন ও এয়ারকন্ডিশনার ইত্যাদি।
ইভাপোরেটরে হিমায়ক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়ন্ত্রক বা এক্সপানশন ডিভাইসের প্রয়োজন হয়।
রেফ্রিজারেন্ট নিয়ন্ত্রকের প্রয়োজনীয়তা-
কন্ডেনসারের তরল রেফ্রিজারেন্টের চাপ ও তাপমাত্রা বেশি হয়ে থাকে। তাই ইভাপোরেটর যাতে উপযুক্ত মাত্রায় চাপ হ্রাস করে সহজেই সম্পূর্ণ রেফ্রিজারেন্টকে বাষ্পে পরিণত করতে পারে তার জন্যই মূলত এক্সপানশন ডিভাইস বা রেফ্রিজারেন্ট নিয়ন্ত্রকের প্রয়োজন হয়।
রেফ্রিজারেন্ট নিয়ন্ত্রকের প্রকারভেদ (Types of Refrigerant Flow Control)
১। হ্যান্ড এক্সপানশন ভালভ(Hand Expansion Valve / HEV)
২। অটোমেটিক এক্সপানশন ভাল্ভ (Automatic Expansion Valve/AEV)
৩। থার্মোস্ট্যাটিক এক্সপানশন ভাল্ভ (Thermostatic Expansion Valve / TEV)
৪। ক্যাপিলারি টিউব (Capillary Tube)
৫। লো সাইড ফ্লোট (Low Side Float)
৬। হাই সাইড ফ্লোট(High Side Float)
৭। থার্মাল ইলেকট্রিক এক্সপানশন ভাল্ভ (Thermal Electric Expansion Valve / TEEV)
প্রত্যেক প্রকার রেফ্রিজারেন্ট নিয়ন্ত্রকের বর্ণনা
থার্মোস্ট্যাটিক এক্সপানশন ভাত (TEV) থার্মোস্ট্যাটিক এক্সপানশন ভালভের প্রধান অংশগুলো হল -
১। ডায়াফ্রাম
২। নিডল ভাল্ভ
৩। নিডল ভালভ সিট
৪। স্প্রিং
৫। স্প্রিং প্রেসার অ্যাডজাস্টিং ক্রু
৬। স্ট্রেইনার
অটোমেটিক এক্সপানশন ভালভের ডায়াফ্রামের ওপর দু'টি চাপ কাজ করে -
(ক) স্প্রিং এর চাপ (P1) যা ডায়াফ্রামের ওপর থেকে নিচের দিকে কাজ করে।
(খ) ইভাপোরেটরের গ্যাসের চাপ (P2) উপরের দিকে কাজ করে।
সাধারণ অবস্থায় P1 = P2 । যার ফলে নিডল ভাভটি একটি সাম্য অবস্থায় থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ খোলা থাকে। কম্প্রেসর বন্ধ থাকলে ইভাপোরেটর চাপ স্প্রিং চাপের চেয়ে বেশি থাকে - ফলে নিডল ভালভ বন্ধ থাকে। যখন কম্প্রেসর চালু করা হয় তখন ইভাপোরেটরের চাপের সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইভাপোরেটরে তরল ও আংশিক বাষ্পীভূত তরল হিমায়ক সরবরাহ করে।
ক্যাপিলারি টিউব (Capillary Tube)
ক্যাপিলারি টিউব লম্বা চিকন এক ধরনের টিউব বিশেষ। এটি তামার তৈরি যা কয়েল আকারে পাওয়া যায়। এটি সরু ব্যাস যুক্ত সহজ সরল ও সবচেয়ে ঝামেলা যুক্ত নিয়ন্ত্রণ ডিভাইস। এর মধ্যে কোন চলমান বা মুভিং অংশ নেই। এ ধরনের নিয়ন্ত্রকের নষ্ট হওয়ার কিছু নেই - তবে ভেতরের ছিদ্র খুব চিকন তাই সামান্য ময়লাতেও বন্ধ/চোকিং হয়ে যেতে পারে।
রেফ্রিজারেন্ট নিয়ন্ত্রক বা এক্সপানশন ডিভাইসের ব্যবহার
রেফ্রিজারেশন সাইকেল বা হিমায়ন চক্রের যে অংশে তরল রেফ্রিজারেন্টরা হিমায়ক বাস্পীভূত হয় তাকে ইভাপোরেটর বলে। কম্প্রেসরের আগে এবং এক্সপানশন ডিভাইসের পরে ইভাপোরেটরের অবস্থান । মালামাল বা বাতাস থেকে তাপ গ্রহণ করে রেফ্রিজারেশন হিমায়ন সৃষ্টি করা হয়। অন্য কথায় একে হিট এক্সচেঞ্জার বা ভাগ বিনিময়কারী বলা যায়। এর একে অনেকে বয়লার বলে। ভেতর তরল বাষ্পে পরিণত হয় বলে।
ইভাপোরেটরের শ্রেণিবিভাগ
ইভাপোরেটরে রেফ্রিজারেন্টের অবস্থান অনুসারে ইভাপোরেটরকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়-
১। ফ্লাডেড টাইপ ইভাপোরেটর
২। ড্রাই টাইপ ইভাপোরেটর
বাইরের আবরণ বা পৃষ্ঠদেশ এর দিক থেকে ইভাপোরেটর ৩ প্রকার-
১। বেয়ার টিউব
২। ফিন্ড ইভাপোরেটর
৩। প্লেট টাইপ
পরিচালনা পদ্ধতির দিক থেকে এটি ৩ প্রকার-
১। ফ্রস্টিং কয়েল
২। নন ফ্রস্টিং কয়েল
৩। ডি ফ্রস্টিং কয়েল
বায়ু প্রবাহের দিক থেকে ইভাপোরেটর ২ প্রকার
১। ন্যাচারাল ড্রাফট
২। ফোর্স ড্রাফট।
বিভিন্ন ধরনের ইভাপোরেটরের ব্যবহার ক্ষেত্রে
১.২.১০ আনুষাঙ্গিক যন্ত্রাংশের তালিকা
আনুষাধিক যন্ত্রাংশের বর্ণনা
আরে সেপারেটর (Oil Seperator)
কম্প্রেসর চলাকালীন তার ডিসচার্জ লাইনে রেফ্রিজারেন্টের সাথে কিছু কম্প্রেসর অরেল চলে যায়। রেফ্রিজারেন্ট থেকে তেলকে পৃথক করার জন্যই কম্প্রেসরের ডিসচার্জ লাইনে কন্ডেনসারের আগে অৱেশ সেপারেটর বসানো হয় ।
কম্প্রেসর অয়েল কন্ডেনসারে যাওয়ার আগেই পৃথক করা দরকার হয়। সেজন্য কম্প্রেসরও কভেনসারের মাঝে অয়েল সেপারেটর বসানো হয়। অতি নিম্ন তাপমাত্রার প্লান্ট এবং বড় এয়ারকন্ডিশনিং প্লান্টে (১৫০ টন ক্ষমতা পর্যন্ত) অনেক ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার অপারেশন কালে কম্প্রেসরে জেলের লেভেল ঠিক রাখার জন্য অয়েল সেপারেটর ব্যবহার করে থাকেন।
ডিহাইড্রেটরা (Dehydrator or direr)
সিস্টেম চালু রাখার জন্য প্রায় সব ধরনের হিমায়ন যন্ত্রের লিকুইড লাইনে ডিহাইড্রেটর/ ড্রায়ার ব্যবহার করা হয়। সিস্টেমে অনাকাঙ্খিতভাবে যে জলীয় কণা থাকে ডিহাইড্রেটর/ড্রোয়ার তা শোষণ করে রাখে। ড্রাইং এজেন্ট হিসেবে সাধারণত সিলিকাজে ব্যবহৃত হয়। রেফ্রিজারেন্টের সাথে কোন অপদ্রব্য থাকলে তা পরিষ্কারের জন্য ড্রায়ার ব্যবহৃত হয়।
অ্যাকুমুলেটর (Accumulator)
যে সমস্ত সিস্টেমে এক্সপানশন ডিভাইসের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ খুব বেশি সুক্ষ নয়- সে সকল হিমায়ন যন্ত্রে ইভাপোরেটর এবং কম্প্রেসরের মাঝে ভরল রেফ্রিজারেন্টকে ধরে রাখার জন্য অ্যাকুমুলেটর ব্যবহার করা হয়।
এটি ছোট বড় সকল ধরনের হিমায়ন যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়।
সার্জ ট্যাংক ড্রাম (Sarge Tank)
মাল্টি টেম্পারেচার বিশিষ্ট হিমায়ন চক্রে সাকশন লাইনের সাথে এবং সাকশন লাইনের ওপরে সার্জ ট্যাংক/ড্রোম ব্যবহার করা হয় যাতে চাপের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত কম্প্রেসর মোটর ঘন ঘন বন্ধ ৰা চালু না হয়।
সলিমরেড ভাত (Solenold Valve/SV)
রেফ্রিজারেশন সাইকেল স্বয়ংক্রিয় ( Automatic) ভাবে খোলা বা বন্ধ রাখার জন্য লিকুইড লাইনে সলিনয়েড ভালভ ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া মাল্টিপল ইভাপোরেটরে রেফ্রিজারেন্টের বা হিমায়কের প্রবাহ বন্ধ করতেও সলেনয়ড ভালভ ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে সলিনয়েড ভালভ লিকুইড লাইনে বসানো থাকে, থার্মোস্ট্যাট দিয়ে সলিনয়েড ভালভ নিয়ন্ত্রিত হয়।
১। কম্প্রেসর
২। তেসার
এটি ইভাপোরেটর থেকে নিম্ন চাপের বাষ্পীয় এটি বাম্পির হিমায়কের তাপ বর্জন করে ভরলে হিমারক সংগ্রহ করে উচ্চচাপে পরিনত করে পরিণত করে। কন্সোরে প্রেরণ করে।
সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনারের বিভিন্ন ধরণের কুলার-
১। ইউনিট কুলার
২। ফ্যান কয়েল ইউনিট (FCU)
৩ । এয়ার হ্যান্ডেলিং ইউনিট (AHU)
৪ । তরল শীতলকরণ ইভাপোরেটর (EVAPORATOR)
৫। ডাবল পাইপ কুলার ৬। বোটল কুলার ৭। ট্যাংক টাইপ কুলার
৮। শেল এন্ড টিউব চিলার
৯। শেল এন্ড কয়েল টাইপ কুলার
১০। স্প্রে টাইপ চিলার ।
এই শিখন ফলে আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার করণীয়, Cleanning Meterials এর চিত্র সহ নাম জানতে পারব।
কাজ শুরু করার আগে এবং পরে কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্লিনিং ইকুইপমেন্ট পাওয়া যায়। কার্যকারী ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করলে অতি অল্প সময়ে কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব ।
পারদর্শিতার মানদণ্ড
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(গ) মালামাল (Raw Materials )
(ঘ) কাজের ধারা
১. রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের কম্পোনেন্ট সমুহ চিহ্নিত করো ।
২. রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের কম্পোনেন্ট সমুহ পর্যবেক্ষণ করো।
৩. কোন কম্পোনেন্ট পরীক্ষা করতে কোন ধরণের মেজারিং টুলসের প্রয়োজন তা নির্ধারণ করো।
৪. কম্প্রেসরের টার্মিনাল অ্যাভোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করো ।
৫. কুলিং ফ্যান ও ব্লোয়ার মোটর আলাদা করে পরীক্ষা করো ।
৬. ইউনিটের কন্ডেসার ও কুলিং কয়েল গরম ও ঠান্ডা অবস্থা কিনা তা পর্যবেক্ষণ করো।
৭. যদি কোন কম্পোনেন্ট নস্ট হয় তবে যথা নিয়মে রেফ্রিজারেশন ইউনিটে কম্পোনেন্ট সমূহকে পুন:স্থাপন করো ।
কাজের সতর্কতা
আত্নপ্রতিফলন
রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের কম্পোনেন্ট সমুহ টেষ্ট করে পুনঃস্থাপন করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(গ) মালামাল (Raw Materials)
ঘ) কাজের ধারা
১. প্রথমে একটি রেফ্রিজারেশন ইউনিট নাও।
২. এর ইলেকট্রিক কম্পোনেন্টগুলো চিহ্নিত করো।
৩. যন্ত্রাংশগুলোর তালিকা প্রস্তুত করো।
৪. যন্ত্রাংশগুলোর তালিকা থেকে স্পেসিফিকেশন অনুসারে নিচের তালিকাটি পূরণ করো।
কাজের সতর্কতা
আত্মপ্রতিফলন
রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটের ব্যবহৃত যন্ত্রাংশগুলো চিহ্নিত করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
১। তাপমাত্রা কাকে বলে?
২। স্প্লিট টাইপ এয়ার কন্ডিশনার বলতে কী বোঝায়?
৩। সলিনয়েড ভাল্বের কাজ কী?
৪। অয়েল সেপারেটরের কাজ কী?
৫। কয়েকটি পিপিই এর নাম লেখ।
১। রেফ্রিজারেন্ট নিয়ন্ত্রকের ব্যবহার ক্ষেত্র লেখ ।
২। তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেল বর্ণনা করো ।
৩। পার্জারের কাজ কী?
৪ । এয়ার হ্যান্ডেলিং ইউনিট বলতে কী বোঝায়?
৫। অ্যাজিও ট্রপিক ও জিও ট্রপিক রেফ্রিজারেন্ট কী?
৬। ইভাপোরেটরের শ্রেণি বিন্যাস লেখ।
৭। ৪ টি আনুষাঙ্গিক যন্ত্রাংশের নাম লেখ।
১। রেফ্রিজারেন্টের উপর চাপের প্রভাব ব্যাখ্যা করো ।
২। অধিক ব্যবহৃত হিমায়ক বা রেফ্রিজারেন্টের তালিকা লেখ ।
৩। তাপের প্রকারভেদসহ তাপ নির্ণয়ের সূত্র বর্ণনা করো ।
৪। ঘনীভবনের (Condensation) সময় চাপের প্রভাব বর্ণনা করো।
৫। তাপের একক গুলো লেখ। ৬। তাপ ও তাপমাত্রার পার্থক্য লেক ।
৭। ১০ টি রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির নাম লেখ ।
৮ । চিত্র সহ ভ্যাপার কম্প্রেশন রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির কার্যপ্রণালী লেখ ।
৯। ভ্যাপার অ্যাবজর্পশন রেফ্রিজারেশন পদ্ধতির কার্যপ্রণালী লেখ ।
১০ । আদর্শ হিমায়কের ১০টি গুণাবলি লেখ ।
Read more