নিচে কয়েকটি পরিস্থিতির উল্লেখ আছে। এসব পরিস্থিতিতে কী ধরনের যোগাযোগ হয়, ছোটো ছোটো দলে ভাগ হয়ে আলোচনা করো এবং ভূমিকাভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করো।
রাতের খাওয়া শেষে পরিবারের সবাই মিলে একসাথে কথা বলছি। সারাদিন কে কী করেছি, তা নিয়ে কথা হচ্ছে।
মায়ের সঙ্গে ছেঁড়া জুতা সেলাই করাতে গিয়েছি। একজন মুচি রাস্তার মোড়ে বসে আছেন। তাঁর সাথে আমার ও মায়ের কথা হচ্ছে।
হাসপাতালে অসুস্থ আত্মীয় ভর্তি হর্তি য়ে আছেন। বাবার সঙ্গে তাঁকে দেখতে গিয়েছি এবং তাঁর চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছি।
বাড়ির পাশের দোকানে এসেছি কিছু জিনিসপত্র কিনতে। দোকানদারের সাথে কথা বলছি।
পরিস্থিতি ৫
কয়েকজন বন্ধু স্কুল থেকে বাসায় ফিরছি। একজন অপরিচিত লোক আমাদের কাছে এসে ঠিকানা জানতে চাইলেন।
পরিস্থিতি ৬
কিছুদিন অসুস্থ থাকায় স্কুলে যেতে পারিনি। শ্রেণি-শিক্ষক বাড়িতে ফোন করে আমার সাথে কথা বলছেন।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিবেচ্য
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মর্যাদা বজায় রেখে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত বলে তোমার মনে হয়, সেগুলো নিচে লেখো।
ক. ____________________
খ._____________________
গ. _____________________
তুমি যেভাবে পরিবার এবং পরিবারের বাইরের মানুষের সাথে যোগাযোগ করো, সে অনুযায়ী নিচের ছকটি পূরণ করো। পূরণ করা ছকের মিল-অমিল নিয়ে সহপাঠীর সাথে আলোচনা করো।
কী বলি | কাদের বলি |
---|---|
তুমি, তোমার, তোমাকে, তোমরা, তোমাদের | |
আপনি, আপনার, আপনাকে, আপনারা, আপনাদের | |
তুই, তোর, তোকে, তোরা, তোদের | |
সে, তার, তাকে, তারা, তাদের | |
তিনি, তাঁর, তাঁকে, তাঁরা, তাঁদের | |
ও, ওর, ওকে, ওরা, ওদের |
নানা কারণে পরিবারের সবার সঙ্গে সবার কথা বলতে হয়। আত্মীয় ও প্রতিবেশীর সঙ্গেও কথা বলার দরকার হয়ে থাকে। এছাড়া সহপাঠীর সঙ্গে, শিক্ষকের সঙ্গে, বন্ধুর সঙ্গে, দোকানদারের সঙ্গে, অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে নানা সময়ে কথা বলার দরকার হয়। এই যোগাযোগের ধরন এক রকমের হয় না। তা ছোটোদের সাথে এক রকম, সমবয়স্কদের সাথে এক রকম, বড়োদের সাথে এক রকম, আবার অপরিচিত লোকের সাথে আর এক রকম।
নিচের বাক্যগুলো দেখো। বাক্যগুলোতে কোন কোন শব্দে পরিবর্তন হয়েছে, তা চিহ্নিত করো।
তুমি, আপনি, তুই, সে, তিনি, ও-এগুলো সর্বনাম শব্দ। সর্বনাম শব্দ নামের বদলে বসে। সর্বনাম মূলত তিন ধরনের:
১. সাধারণ সর্বনাম
২. মানী সর্বনাম
৩. ঘনিষ্ঠ সর্বনাম
তুমি বলা যায় ভাই-বোনকে, ঘনিষ্ঠজনকে, বাবা-মাকে, বন্ধুকে। এগুলো সাধারণ সর্বনাম । আপনি করে বলতে হয় শিক্ষককে, বয়সে বড়ো আত্মীয়-স্বজনকে, অপরিচিত লোককে। এগুলো মানী সর্বনাম । কারো সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠতা থাকলে অথবা কাউকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে তুই বলা হয়। এগুলো ঘনিষ্ঠ সর্বনাম ।
সাধারণ সর্বনাম | মানী সর্বনাম | ঘনিষ্ঠ সর্বনাম |
---|---|---|
তুমি, তোমার, তোমাকে তোমরা, তোমাদের | আপনি, আপনার, আপনাকে আপনারা, আপনাদের | তুই, তোরা, তোকে তোরা, তোদের |
সে, তার, তাকে তারা, তাদের | তিনি, তাঁর, তাঁকে তাঁরা, তাঁদের | ও, ওর, ওকে ওরা, ওদের |
বাক্যে যেসব শব্দ দিয়ে কাজ করা বোঝায়, সেগুলোকে ক্রিয়া বলে। যেমন--শোনা, বলা, পড়া, লেখা, খেলা, গাওয়া এগুলো ক্রিয়া শব্দ। মর্যা দা অনুযায়ী সর্বনর্বামের যেমন পরিবর্তন হয়, র্ত ক্রিয়ারও তেমন পরিবর্তন হয়। র্ত নিচে সর্বনর্বাম অনুযায়ী ‘করা’ ক্রিয়ার কয়েকটি রূপ দেখানো হলো।
সাধারণ সর্বনাম | মানী সর্বনাম | ঘনিষ্ঠ সর্বনাম |
---|---|---|
তুমি করো, তুমি করছ, তুমি করেছ, তুমি করতে, তুমি করেছিলে, তুমি করবে, তুমি কোরো। | আপনি করুন, আপনি করছেন, আপনি করেছেন, আপনি করতেন, আপনি করেছিলেন, আপনি করবেন। | তুই করিস, তুই করছিস, তুই করেছিস, তুই করতিস, তুই করেছিলি, তুই করবি। |
সে করে, সে করছে, সে করেছে, সে করত, সে করেছিল, সে করবে। | তিনি করেন, তিনি করছেন, তিনি করেছেন, তিনি করতেন, তিনি করেছিলেন, তিনি করবেন। | ও করে, ও করছে, ও করেছে, ও করত, ও করেছিল, ও করবে। |
নিচের ছকের সর্বনাম অনুযায়ী যেকোনো ক্রিয়া ব্যবহার করে বাক্য তৈরি করো।
সর্বনাম | ক্রিয়া | বাক্য |
---|---|---|
১. তুমি/তোমরা | ||
২. আপনি/আপনারা | ||
৩. তুই/তোরা | ||
৪. সে/তারা | ||
৫. তিনি/তাঁরা | ||
৬. ও/ওরা |
মানুষ নানা প্রয়োজনে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করে। যোগাযোগ মূলত দুইভাবে হয়:
১. ভাষিক যোগাযোগ
২. অভাষিক যোগাযোগ
ভাষিাষিক যো যোগাযোগ: ভাষিক যোগাযোগের প্রধান রূপ চারটি-- শোনা, বলা, পড়া ও লেখা। এর মধ্যে বলা ও শোনার কাজে মুখ ও কানের ভূমিকা প্রধান। যন্ত্র থেকে তৈরি শব্দও আমরা কান দিয়ে শুনে থাকি। অন্যদিকে লেখা ও পড়ার কাজে হাত ও চোখ প্রধান ভূমিকা রাখে। যন্ত্রে লেখা শব্দও আমরা চোখ দিয়ে পড়তে পারি। কথা বলা, বই পড়া, ফোনে আলাপ করা ও বার্তা পাঠানো, রেডিও-টেলিভিশন শোনা ও দেখা, কাগজে লেখা বা কম্পিউটারে টাইপ করা ইত্যাদি ভাষিক যোগাযোগের উদাহরণ।
অভাষিাষিক যো যোগাযোগ: যোগাযোগের ক্ষেত্রে কথা বলা ও লেখার পাশাপাশি কিছু অভাষিক কৌশলও কাজে লাগানো হয়। তখন মুখভঙ্গি ও শারীরিক অঙ্গভঙ্গি, হাত ও চোখের ইশারা, হাতের স্পর্শ, ছবি ও সংকেত ইত্যাদির ব্যবহার হয়।
এবার দলে ভাগ হয়ে নিচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ভূমিকাভিনয় করো। কথোপকথনের সময়ে খেয়াল রাখবে মর্যা দা অনুযায়ী যেন সর্বনর্বাম ও ক্রিয়ার ব্যবহার হয়।
১. বাইরে থেকে মাত্র বাড়ি ফিরেছ। এমন সময়ে তোমার ছোটো ভাই তোমার সাথে খেলার জন্য বায়না ধরেছে। এ নিয়ে তার সাথে কথা হচ্ছে।
২. আজ নতুন বই হাতে পেয়েছ। খবরটি তোমার দাদা বা নানাকে ফোন করে জানাও।
৩. তোমার চাচা টেলিফোন করে জানালেন, তোমার দাদি অসুস্থ। এ নিয়ে চাচার সঙ্গে আলাপ করছ।
৪. বাসার কাছের দোকানে খাতা ও কলম কিনতে গিয়েছ। সবগুলো জিনিস কেনা শেষে দেখা গেল, তোমার কাছে কিছু টাকা কম পড়েছে। এ নিয়ে দোকানির সাথে কথা বলছ।
৫. তোমার ক্লাসে একজন নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হর্তি য়েছে। তুমি তার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছ এবং তোমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছ।
৬. পাশের বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠান হচ্ছে। তুমি দাওয়াত পেয়েছ। সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে তুমি তোমার মায়ের সাথে কথা বলছ।
অনেক সময়ে জরুরি প্রয়োজনে কারো সঙ্গে বা কোনো সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। নিচে কিছু জরুরি পরিস্থিতি দেওয়া হলো। এমন পরিস্থিতিতে তুমি বা তোমরা কার সাথে যোগাযোগ করবে তা নিচে লেখো।
জরুরি পরিস্থিতি | কার সঙ্গে যোগাযোগ করব |
---|---|
1. তোমার এলাকার কোনো বাড়িতে আগুন লেগেছে। | |
2. খেলার মাঠে এক বন্ধু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। | |
3. ঝড়ের পরে বিদ্যুতের তার রাস্তায় পড়ে আছে। | |
4. হারিয়ে যাওয়া কোনো শিশুকে খজেুঁ পাওয়া গেছে। |