হযরত ঈসা (আ) ফিলিস্তিনের ‘বায়তুল লাহাম' নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। ‘বায়তুল লাহাম' স্থানটি বর্তমানে বেথেলহাম নামে পরিচিত। তাঁর আম্মার নাম হযরত মরিয়ম (আ)। আল্লাহর অসীম কুদরতে পিতা ছাড়াই হযরত মরিয়ম (আ)-এর গর্ভে হযরত ঈসা (আ) জন্মগ্রহণ করেন।
মহান আল্লাহর বিশেষ কুদরতে তিনি দোলনায় থাকাকালেই শিশু অবস্থায় কথাবার্তা বলার অলৌকিক শক্তি লাভ করেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে কিছু মোজেযা বা অলৌকিক ক্ষমতা দিয়েছিলেন। যেমন— তিনি আল্লাহর হুকুমে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করতেন। জন্মান্ধকে চোখের দৃষ্টিশক্তি দান করতেন। ধবল, শ্বেত ও কুষ্ঠ রোগীদের তিনি আল্লাহর রহমতে রোগমুক্ত করে দিতেন।
হযরত ঈসা (আ) ছিলেন আসমানি কিতাব প্রাপ্ত একজন নবি ও রাসুল। আল্লাহ তায়ালা তাঁর ওপর ‘ইনজিল' কিতাব নাজিল করেন। সে সময়ে সেখানকার লোকেরা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা দেব-দেবীর পূজা করত। হযরত ঈসা (আ) তাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বান জানালেন। শিরক থেকে বিরত থাকতে বললেন। সকল দুর্নীতি ও খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে বললেন।
সেখানকার লোকজন হযরত ঈসা (আ)-এর কথা মানল না। তারা আল্লাহর ইবাদত করল না। তারা তাঁর ঘোর শত্রুতে পরিণত হলো। তারা তাঁকে আরো নিষ্ঠুর কষ্ট দিতে থাকল। এমনকি তারা তাঁকে হত্যা করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করল। একদিন তারা তাঁকে হত্যা করার জন্য এক ব্যক্তিকে ঘরের মধ্যে পাঠাল। কিন্তু রাখে আল্লাহ, মারে কে। মহান আল্লাহ তাঁর অসীম কুদরতে তাঁকে জীবিত অবস্থায় আসমানে তুলে নিলেন। আর ঘরের মধ্যে যে লোকটি তাঁকে হত্যা করার জন্য প্রবেশ করেছিল, তার আকৃতি হযরত ঈসা (আ)-এর আকৃতির মতো হয়ে গেল। সে ঘর থেকে বের হতেই তার সাথীরা তাকে ঈসা (আ) ভেবে ক্রুশ বিদ্ধ করে হত্যা করল ।
এভাবে আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় রাসুল ও বান্দা হযরত ঈসা (আ) কে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে আসমানে নিরাপদে রাখলেন। শেষ জামানায় কিয়ামতের পূর্বে তিনি পুনরায় পৃথিবীতে আসবেন। মিথ্যাবাদী দাজ্জালকে তিনি হত্যা করবেন। ৪০ বছর পৃথিবীতে অবস্থান করবেন। তিনি পৃথিবীতে এসে আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর উম্মত হিসেবে দীন প্রচার করবেন। তিনি স্বাভাবিকভাবে ইন্তিকাল করবেন। আমাদের মহানবি (স)-এর রওজা মুবারকের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।
আমরা হযরত ঈসা (আ) কে নবি-রাসুল বলে স্বীকার করব। আল্লাহর ইবাদত করব। হযরত ঈসা (আ)-এর মোজেযাসমূহ বিশ্বাস করব।
পরিকল্পিত কাজ : শিক্ষার্থীরা হযরত ঈসা (আ)-এর মোজেযাগুলো খাতায় লিখবে।
আরও দেখুন...